একরকম বাধ্য হয়েই নির্ভর করতে হয় ফ্রিজের ওপর।
কিন্তু এভাবে ফ্রিজে রেখে খাবার খাওয়া কি ঠিক?
কোন খাবার কীভাবে সংরক্ষণ করা যেতে পারে?
এ নিয়ে কথা হয় পুষ্টিবিদ আখতারুন নাহারের সঙ্গে।
ফ্রিজে কাঁচা খাবার সংরক্ষণের পদ্ধতি এক রকম আবার রান্না করা খাবার সংরক্ষণের পদ্ধতি আরেক রকম।
এ দুই ধরনের খাবার ফ্রিজে আলাদা করে রাখা উচিত।
আবার খুব বেশি খাবার একসঙ্গে না রেখে প্রয়োজন অনুযায়ী ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে রাখতে পারেন।
একসঙ্গে যদি বেশি খাবার রেখে দেন, তাহলে বের করে রান্নার আগে কাঁচা মাছ বা মাংস পুরোটাই আপনাকে ভিজিয়ে রাখতে হবে।
আবার রান্না করা খাবার পুরোটাই জ্বাল দিতে হবে।
এতে করে খাবারের পুষ্টি ও স্বাদ দুটোই নষ্ট হয়।
অবশ্যই ফ্রিজের তাপমাত্রার দিকে খেয়াল রাখবেন।
প্রয়োজন অনুযায়ী কমাবেন এবং বাড়িয়ে দেবেন।
ফ্রিজে খাবার যদি আপনি বাক্সে করে রাখতে অভ্যস্ত হন, তাহলে বাক্সগুলোর মাঝে কিছুটা জায়গা ফাঁকা রাখবেন।
তাহলে ভেতরে বাতাস চলাচল করতে পারবে।
অনেকে মাসের পর মাস ডিপ ফ্রিজে মৌসুমি ফলমূল রেখে দেন।
সে ক্ষেত্রে অবশ্যই সংরক্ষণের নিয়মাবলি মেনে তারপর রাখতে হবে।
তবে বেশি দিন রাখার ফলে ফলের স্বাদ এতটাই নষ্ট হয়ে যায় যে, পরে আর রস করে ছাড়া মুখে তোলাই দায় হয়ে যায়।
খাবার রাখার নিয়মকানুন নাহয় মানলেন।
স্বাদের ক্ষেত্রেও না হয় ছাড় দেওয়া হলো।
কিন্তু পুষ্টিমান? সেটা তো মাথায় রাখতেই হবে।
কেননা, খাবারে যদি পুষ্টি না থাকে, তবে আর থাকল কী?
পুষ্টিবিদ আখতারুন নাহার বলেন, ‘অনেকের ফ্রিজেই এক বছরের কোরবানি ঈদের মাংসের দেখা পরের বছরের কোরবানি ঈদেও মেলে।
আমের মৌসুম শেষ হওয়ার ছয় মাস পরও আম হাজির হয় প্লেটে।
এভাবে দীর্ঘদিন রাখার ফলে খাবারের পুষ্টি তো নষ্ট হয়ই, সঙ্গে স্বাস্থ্যঝুঁকিও বেড়ে যায়।’তাঁর মতে, মাংস দুই থেকে সর্বোচ্চ তিন মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করাই যৌক্তিক।
আর মাছ রাখা যেতে পারে সর্বোচ্চ ১৫ দিন।
তবে মাছের মাথাগুলো আরও দ্রুত রান্না করে ফেলা ভালো।
স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখলে যেমন কিছু খাবারে ব্যাকটেরিয়া জন্ম নেয়, তেমনি কিছু কিছু ব্যাকটেরিয়া জন্ম নেয় ঠান্ডা জায়গায়।
আবার কোনো খাবার যদি আপনি জীবাণুসহ ফ্রিজে রাখেন, তাহলে ওই জীবাণুও খাবারে থেকেই যায়। তাই ফ্রিজে রাখার আগেই দেখে নেবেন খাবারটা ঠিক আছে কি না।
তা ছাড়া ফ্রিজে রাখার পর যদি কখনো কোনো খাবারের বর্ণ, গন্ধ ও স্বাদ পরিবর্তন হয়ে যায়, তাহলে সেটা আর না খাওয়ার পরামর্শ দেন আখতারুন নাহার।
ফ্রিজ আছে আপনার কাজটাকে সহজ করে তুলতে। তার মানে তো আর এই নয় যে পুষ্টিহীন, মানহীন খাবার খেয়েই জীবনধারণ করতে হবে। জেনে রাখুন, কোন খাবার কত দিন রাখতে পারবেন ফ্রিজে।
সে অনুযায়ীই ফ্রিজ ব্যবহার করুন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন