Recent post

সোমবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৬

কুশ কুশে কাশি


ঠাণ্ডায় কাশি হয়েছে!
কিছুক্ষণ পরপর ‘খকখক’, ‘খকখক’ করতে করতে বিরক্ত! পরিত্রাণের জন্য রয়েছে সহজ পন্থা।

শুকনা কাশি সারানোর জন্য রয়েছে বেশ কিছু ঘরোয়া টোটকা। 
স্বাস্থবিষয়ক একটি ওয়েবসাইট অবলম্বনে সেসব পন্থা এখানে দেওয়া হল।

লবণ-পানি দিয়ে গড়গড়া: 
এক কাপ পানি কুসুম গরম করে তাতে এক চিমটি লবণ ছড়িয়ে দিন। এই লবণ মেশানো পানি দিয়ে গড়গড়া করলে দ্রুত ফল পাবেন।

মধু: 
মাত্র এক চামচ মধু রাতের বেলার বিরামহীন কাশি উপশম করবে। ধারণা করা হয় মধু গলা আর্দ্র করে এবং কাশি কমায়।

আদা চা:
 রাতে শুতে যাওয়ার আগে আদা চা পান করলে কাশি কমে আসবে। সবুজ চা-ও বেশ কার্যকর।

মাথা উঁচুতে রেখে শোয়া: 
কাশি হলে শোবার সময় মাথা কিছুটা উঁচুতে রেখে শুতে হবে। এজন্য অতিরিক্ত বালিশ ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি কাশির অস্বস্তি ও যন্ত্রণা উপশমে সাহায্য করে।

'বাম' লাগান:
 নাসারন্ধ্র পরিষ্কার রাখতে নাকের ওপর বাম লাগানো যেতে পারে। এটি কিছু সময়ের জন্য কাশি থেকে মুক্তি দেবে।

রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৬

Samsung Galaxy J7 Wifi

Samsung Galaxy J7 is an affordable sub-15k smartphone by Samsung, featuring average to above average specifications; 
Samsung is finally making attempts to fill in the gap between brand reliability, performance and affordability.

But, smartphone has a persistent WiFi Issue that forces it to constantly connect and disconnect from the network and people have reported it to be quite irritating at moments. 
But, I have a solution for you guys, and it will return your smartphone functioning to normal just after a few clicks. Here you go:
1) Go to the Dialer app.
2) Type in *#0011#
3) Secret Service menu will open.



4)Go to three dots overflow, click on WiFi.

4) You’ll be greeted by WiFi Stats with WiFi Power Saver Mode.



5) Turn WiFi power saver mode OFF.

6) From now, you won’t expereince any WiFi issue whatsoever.


How did you like this article? Was this helpful? Did it actually help your Galaxy J7? Let us know in the comment section below.

বুধবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৬

Bangladesh Hero Alam News



বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবারও আলোচনায় উঠে এসেছেন ‘হিরো আলম’। এবার শুধু দেশেই নয়, পাশের দেশ ভারতেও তাঁকে নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব ভারতীয়রা হিরো আলমকে বাংলাদেশের ‘সুপারস্টার’-এর তকমা দিয়ে দিয়েছেন। এমনকি এই তকমার ভিত্তিতে ভারতীয় কিছু সংবাদমাধ্যমও তাঁকে নিয়ে প্রতিবেদন করতে শুরু করেছে।
দেশের বাইরে হিরো আলমের নাম ছড়িয়ে পড়ে যখন তিনি ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ছবি তোলেন এবং এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে একটি পত্রিকা। 
সেই ছবি ও প্রতিবেদনের জের ধরে ১৬ ডিসেম্বর বিবিসি হিন্দি প্রতিবেদন প্রকাশ করে হিরো আলমকে নিয়ে। এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পাশাপাশি একে একে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ সংবাদমাধ্যমগুলোতেও তিনি খবরের শিরোনাম হন। 
জি নিউজ, এনডিটিভি, ডেইলি ভাস্কর, মিড-ডের মতো প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমগুলো তাঁকে নিয়ে প্রতিবেদন করে। 
সেখানে অনেকেই হিরো আলমকে বাংলাদেশের বিনোদনজগতের অন্যতম তারকা বলে অভিহিত করেন। তাঁরা বলেন, এ পর্যন্ত ৫০০ মিউজিক ভিডিও এবং র‍্যাপ গান তৈরি করেছেন হিরো আলম।
 তাঁর ফেসবুকের অনুসারীর সংখ্যার ওপর ভিত্তি করেও ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো তাঁকে তারকা বলে ধরে নিয়েছে। এ জন্যই মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে গুগলে হিরো আলমকে সালমান খানের চেয়ে বেশিবার খোঁজা হয়েছে। 
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে হিরো আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমিও শুনেছি। এ জন্যই বিদেশ থেকে ভক্তদের ফোন আসছে অনেক।’
তবে এ ধরনের প্রচারের কারণে বাংলাদেশের শিল্পীদের ব্যাপারে যে নেতিবাচক বার্তা ভারতে যাচ্ছে, তা নিয়েও হচ্ছে সমালোচনা। 
টুইটার ও ফেসবুকে ‘হিরো আলম’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে অনেকেই শেয়ার করছেন নানা ধরনের আপত্তিকর কৌতুক। 
এর সঙ্গে অনেকে আবার হ্যাশট্যাগ দিয়ে ‘বাংলাদেশ’ ও ‘বাংলাদেশি অ্যাক্টর’ প্রসঙ্গটিও জুড়ে দিচ্ছেন। হিরো আলমের সঙ্গে ভারতীয়দের কৌতুকের সঙ্গে জুড়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও দেশের শিল্পীদের ভাবমূর্তিও। ইউটিউবে প্রকাশিত হিরো আলমের মিউজিক ভিডিওতে তাঁর ব্যক্তিত্ব, অভিব্যক্তি ও বাচনভঙ্গি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভারতীয় বিভিন্ন পেজ ও গণমাধ্যম রসিকতা করছে।
 গুটি কয়েক গণমাধ্যম হিরো আলমকে ‘সামাজিক মাধ্যমের তারকা’ বলে আখ্যায়িত করছে বটে, কিন্তু অধিকাংশ মানুষই তাঁকে বাংলাদেশের বিনোদনজগতের তারকার কাতারেই ফেলছে এবং গুগলে তাঁকে খুঁজেই যাচ্ছে।এই খোঁজাখুঁজিতে হিরো আলম হয়তো বহুদূর যেতে পারবেন, কিন্তু এতে বাংলাদেশের শিল্পীদের ভাবমূর্তি বাইরের দেশে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আলোচিত হয়ে উঠতে পারে অনাকাঙ্ক্ষিত অনেক ব্যক্তিত্ব। 
সেই শঙ্কার কথাই জানালেন গণমাধ্যম বিশ্লেষক মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর। 
তিনি বললেন, ‘এগুলো হচ্ছে ভারতে আমাদের চ্যানেল দেখা না যাওয়ার প্রভাব এবং আমাদের সিনেমা সেখানে নিয়মিত প্রদর্শিত না হওয়ার প্রভাব। যেকোনো লোক যেকোনো কিছু ক্লেইম করতে পারে। সমস্যাটির সমাধান হতে পারে ওই দেশে আমাদের টিভি অনুষ্ঠান-সিনেমা নিয়মিত প্রদর্শিত হলে।
 নইলে এ রকম বহু হিরো আলম বের হবে ভবিষ্যতে।’
উল্লেখ্য, বগুড়া জেলায় স্থানীয় কেব্‌ল সংযোগ স্থাপনের ব্যবসা রয়েছে আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের। 
সেই সুবাদেই তিনি নিজের স্থানীয় সংযোগগুলো প্রচারের জন্য কিছু মিউজিক ভিডিও তৈরি করেছিলেন বিভিন্ন সময়। যা এ বছরের মাঝামাঝি সময়ে ইউটিউবে ছড়িয়ে পড়ে। 
দেশজুড়ে হিরো আলমের ভিডিও নিয়ে কৌতুক শুরু হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় তাঁর ভিডিও নিয়ে হয় ট্রল ও মিম। 
কিন্তু এখন দেশের বাইরেও বাংলাদেশের শিল্পীদের প্রতিনিধি হিসেবে হিরো আলমের নাম ছড়িয়ে পড়ায় সেই কৌতুক শঙ্কায় পরিণত হচ্ছে।

নবজাতকের যত্ন



শিশু জন্মের পর অনেক মা এবং পরিবারের সদস্যদের দেখা যায় তার যত্ন ও পরিচর্যা নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় পড়ে যেতে।
 এ সময় সঠিক যত্ন না পেলে শিশুটির বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। আজ ২৩ মার্চ এনটিভির স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২০১৪তম পর্বে এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের অধ্যাপক ডা. সাঈদা আনোয়ার।

প্রশ্ন : নবজাতক বলতে আমরা কী বুঝি?

উত্তর : চার সপ্তাহের মধ্যে যে বাচ্চার বয়স সে নবজাতকের মধ্যে পড়ে।

প্রশ্ন : নবজাতকের যত্ন ও পরিচর্যা কখন থেকে শুরু হওয়া উচিত এবং কী কী ধরনের হবে?

উত্তর : এটি আসলে জন্মের সঙ্গে সঙ্গে হওয়া উচিত। তবে এর আগে থেকেই বিষয়টি অনেকটা শুরু হয়ে যায়। শিশু পেটে থাকতেই মাকে অ্যান্টিনেটাল পরামর্শ দিতে হবে, চেকআপে থাকতে হবে। তখন থেকেই আসলে বাচ্চার যত্ন শুরু হয়। এ সময়টায় মাকে শেখাতে হবে বাচ্চার জন্মের পর পর মা শিশুটিকে কী খাওয়াবেন। মা বাচ্চার জন্য কী করতে পারেন। প্রথম থেকে যেটি শিশুর পরিচর্যার জন্য দরকার, শিশুর পুষ্টির দরকার, সেটি হলো মায়ের বুকের দুধ। দুধটা যেন বাইরের না হয়। বাচ্চা হওয়ার পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এক ঘণ্টার মধ্যে আমরা দুধ খাওয়াতে বলি। মায়ের যে শালদুধ বের হয়, সেটি কোনোভাবেই ফেলে দেওয়া উচিত না। শালদুধ বাচ্চার জন্য প্রথম টিকা। যেহেতু ওখানে প্রোটিন বেশি, রোগ প্রতিরোধক্ষমতার জন্য যে বিষয়গুলো দরকার সেটিও বেশি।

প্রশ্ন : কত বয়স পর্যন্ত শুধু বুকের দুধ খাওয়ানো উচিত?


উত্তর : ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শুধু বুকের দুধ খাওয়ানো উচিত। ছয় মাস বয়সের পর থেকে বুকের দুধের পাশাপাশি বাড়তি খাবার দিতে হবে।

প্রশ্ন : অনেক ক্ষেত্রে দেখো যায় শিশু জন্মের পর মধুর মতো মিষ্টি কথার জন্য মধু বা চিনির পানি খাওয়ানো হয়, এগুলোকে কতটা যৌক্তিক বলে মনে করেন?

উত্তর : এগুলোর আসলে কোনো যুক্তি নেই। এগুলো বাচ্চার জন্য দরকার নেই। বাচ্চার জন্য দরকার হলো মায়ের দুধ। এটাই প্রকৃতগতভাবে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। তাই বুকের দুধের সঙ্গে কোনো কিছুরই তুলনা হয় না। বুকের দুধের মধ্যে পানি রয়েছে। কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, চর্বি সব রয়েছে। মিনারেলস, ভিটামিন এসবও আছে। যেখানে একটু পানিরও দরকার পড়ে না।

প্রশ্ন : ছয় মাস পর থেকে অনেকে চিন্তার মধ্যে থাকে কী খাবার দেব?


উত্তর : তখন অবশ্যই বাড়তি খাবার দিতে হবে। বাড়তি খাবার মানে ঘরের খাবার, সলিড ফুড। নইলে অপুষ্টি হয়ে যাবে।

প্রশ্ন : গরুর দুধ, টিনের দুধ খাওয়ার প্রবণতা আসলে কতটুকু ঠিক?


উত্তর : এটা একদমই ঠিক না। মায়ের দুধ খাওয়াতে হবে। আর বাড়তি খাবারের কথা যেটা বলছিলাম, তখন নরম জিনিস খাওয়াতে হবে। যেমন : ফলের জুস দিতে পারে। কমলার রস দিতে পারে। কলা খাওয়াতে পারে। ডিমটা আধা সিদ্ধ করে দিতে পারে। প্রথমে ডিমের কুসুম শুরু করবে। তারপর ধীরে ধীরে সাদা অংশ খাওয়া শুরু করবে। যেহেতু প্রোটিন তাই অ্যালার্জি হতে পারে। একসাথেই সব কিছু খাওয়াবে না। ধীরে ধীরে একটার পর একটা খাওয়াবে। এরপর চাল, ডাল, তেল মিলে খিচুড়ি খেতে দিতে হবে। অনেক মায়েরা রয়েছেন, যাঁরা শিশুকে সেরেলাক খাওয়ান। সেরেলাক ডাল, সেরেলাক ভাত ইত্যাদি খাওয়ায়। জিজ্ঞেস করলে বলে, ওখানে তো সব পুষ্টি রয়েছে ম্যাডাম। সেগুলো মূলত কমার্শিয়াল খাবার। আমরা যেটা দেব ওখানে তো সেই জিনিসগুলো নেই। তাই পুষ্টিসম্পন্ন ঘরে তৈরি খাবার দিতে হবে।

প্রশ্ন : নবজাতকের যত্নের মধ্যে গোসল খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। কখন থেকে এই গোসল শুরু করতে হবে। কীভাবে গোসল করাতে হবে সেটিও সবাই পুরোপুরি জানে না। কী মনে করেন আপনি?


উত্তর : আসলে নবজাতককে গোসল করাতে হবে এট খুবই ঠিক। তবে শিশু জন্মের পরপরই যে গোসল করাতে হবে সেটিও নয়। এতদিন শিশুটি মায়ের গর্ভে ছিল, একটা উষ্ণতার ভেতর ছিল। বাইরের বাতাসের সঙ্গে সমন্বয় করতে তার একটু সময় লাগবে। তাই আমরা বলি সঙ্গে সঙ্গে গোসল না করাতে। ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা পরে গোসল করতে পারে। পানির মধ্যে স্যাভলন, ডেটল এসব জিনিস দেওয়ার দরকার নেই। কুসুম গরম পানি দিয়ে যেই ঘরে হাওয়া বাতাস নেই এ রকম জায়গায় গোসল করাতে হবে।

প্রশ্ন : শিশুটিকে যেই ঘরটিতে রাখবে, এর পরিবেশ কেমন হবে?


উত্তর : বাইরের বাতাস বেশি আসে এ রকম ঘরে শিশুটিকে না রাখাই উচিত। এক সপ্তাহ ধরে অন্তত শিশুটি ওই বাতাস সহ্য করতে পারবে না। বাচ্চাকে পাতলা কাপড় পরাতে হবে। বেশি ঘামতে দেওয়া উচিত না। কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে রাখাটা আমাদের দেশের জন্য প্রযোজ্য না। শীতপ্রধান দেশে প্রযোজ্য।

প্রশ্ন : নবজাতকের নাভি নিয়েও অনেক কুসংস্কার রয়েছে। এটি নিয়ে কী বলবেন?

উত্তর : নাভি নিজে নিজেই পড়ে যায়। নাভিকে ফেলতে হয় না। কিছু করতে হয় না। এমনিতেই শুকিয়ে যায়। তবে এখন আমরা প্রথম অবস্থায় বলি একবার একটু হেক্সিসল দেওয়ার জন্য। তারপর আর কিছু না দিলেও হয়।

সোমবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৬

বুকের দুধ


সন্তান জন্মানোর পর নতুন মায়েরা এমনিতেই উদ্বিগ্ন থাকেন। এই উদ্বেগ আর অস্থিরতা থেকে প্রায় সময় মায়েরা বলেন যে, তাদের সন্তান ঠিক মতো দুধ পাচ্ছে না।
 অনেকে আবার মনে করেন সিজারিয়ান অপারেশন করালে বুকের দুধ দেওয়া যাবে না। এটা একেবারেই ভুল ধারণা। প্রসবের পর নতুন মা ও নবজাতক শিশু উভয়ের কাছে বুকের দুধ সঠিকভাবে পান করানোর বিষয়টি রপ্ত করতে কিছুটা সময় লাগে। 
যথেষ্ট সময় নিয়েও যদি শিশু বুকের দুধ পান করতে না পারে, তখনই মায়েদের সাহায্য করতে হবে। যত দিন শিশু বুকের দুধ খেতে না চায়, তত দিন শিশুকে বুকের দুধ টিপে বের করে কাপে বা চামচে করে খাওয়াতে হবে।
কখনো বা দেখা যায়, শিশু কিছুতেই মায়ের বুকে যেতে চাইছে না বা মায়ের দুধ খেতে চাইছে না। মা যখনই বুকে নিতে চান, অমনি শিশু কান্নাকাটি করে। 
শিশুকে দুধ পান করানোর সময় মা বা অন্য কেউ যদি শিশুর মাথা পেছন থেকে বুকে চেপে রাখে বা সে চেষ্টা করে, শিশু তখন বিরক্তি বোধ করে। পরবর্তী সময়ে এই শিশু আর মায়ের বুকে যেতে চায় না।
 শিশুকে জোর করে খাওয়ানো থেকে কিছুক্ষণের জন্য অব্যাহতি দিতে হবে। পরে সঠিক নিয়মে চেষ্টা করতে হবে।

যদি কোনো শিশুকে চুষনি বা বোতল দেওয়া হয়, তাহলে শিশু নিপল ও স্তনের বোঁটা দিয়ে দুধপানে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগে। বোতলের নিপলে একটু চাপ লাগাতেই দুধ পেয়ে যায়।
 অথচ স্তনের বোঁটা চুষে টেনে পরিশ্রম করে খেতে হয়। উপরন্তু টিনের দুধ বুকের দুধের চেয়ে বেশি মিষ্টি। ফলে শিশু আর মায়ের দুধ খেতে চায় না।

মাকে যতটুকু সম্ভব বেশি পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার (যেমন- মাছ, ডিম, দুধ প্রভৃতি) খেতে হবে। 
অতিরিক্ত দুধ তৈরিতে যে খাবারগুলো সরাসরি সহযোগিতা করে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে গাজর, শিম, বাদাম (চীনাবাদাম, কাজুবাদাম), কালোজিরার ভর্তা, লাউ, ডুমুর, পালংশাক, কলমিশাক, টমেটো প্রভৃতি। বুকের দুধ বাড়ানোর জন্য লেকটোহিল নামের দুধ পাওয়া যায়।

‘হলিসিড’ নামের কালাজিরার ক্যাপসুলও পাওয়া যায়। ফার্মেসি থেকে এই দুধ কিংবা ক্যাপসুল কিনে খেলে অনেক ক্ষেত্রে উপকার পাওয়া যায়।

কিছু পরামর্শ

বুকের দুধ বাড়াতে আরো কিছু পরামর্শ এখানে তুলে ধরছি -
* স্তনের বোঁটাকে শিশুর জন্য পাঁচ মিনিট করে চুষতে দিতে হবে, একেবারে একফোঁটা দুধ না এলেও এই কাজটা নিয়মিত করেই যেতে হবে। একবারে ১০-২০ মিনিট বা তারও বেশি সময় ধরে দুধ দেবেন।

* বাচ্চাকে যত ঘন ঘন দুধ দেবেন তত বেশি দুধ আসতে থাকবে। বাচ্চা যদি খুব কম দুধ পান করে সে ক্ষেত্রে পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখে দুধ চিপে ফেলে দেবেন।

* একবারে এক স্তন থেকেই দুধ খাওয়াতে হবে। দুই দিক থেকে খাওয়াবেন না। কারণ, প্রথম দিকের দুধে পানির পরিমাণ বেশি থাকে আর শেষ দিকের ঘন দুধে পুষ্টি বেশি থাকে। এতে বাচ্চার পেটও ভরে। কিন্তু অর্ধেক খাওয়ানোর পর পরিবর্তন করে আরেক দুধে চলে গেলে বাচ্চা শেষ দিকের পুষ্টিকর দুধ থেকে বঞ্চিত হয়।

* শিশু স্তন চুষবার সময় মাকে অবশ্যই নিরুদ্বিগ্ন এবং চিন্তামুক্ত থাকতে হবে। শিশু যদি মায়ের বুক না টানতে চায় তবে জোরাজুরি করা উচিত নয়। বরং নিরিবিলি ঘরে বসে মা আস্তেআস্তে তার মাথায় হাত বুলিয়ে কথা বলে ধৈর্যের সাথে চেষ্টা করবেন। যখন সে মুখ হা করবে তখন শিশুকে বুকের সাথে মিশিয়ে ধরতে হবে। মায়ের শিশুর দিকে ঝুঁকে যাওয়ার দরকার নেই।

*কোনো কারণে যদি বুকের দুধ খাওয়ানো সাময়িকভাবে বন্ধ থাকে তবে মা যখনই আবার খাওয়াতে চাইবেন তখনই শিশুকে বুকের দুধ টানাতে হবে। শিশু চুষলেই আস্তে আস্তে আবার আগের মতো দুধ আসবে।

* কোনো অবস্থাতেই শিশুর মুখে বোতল বা চুষনি দেওয়া উচিত নয়। তাহলে শিশু তার মায়ের স্তনের বোঁটা মুখে নিতে চাইবে না। সে ওই নরম রাবারের বোঁটা বেশি পছন্দ করবে।

* মাকে পর্যাপ্ত খাবার দিতে হবে। তার ঘুম ও বিশ্রামের ব্যাঘাত ঘটানো যাবে না। স্তন্যদানের ১৫ মিনিট আগে মা দুই গ্লাস পানি পান করে নিলে স্তন্যদান সহজ হবে।

* বেশি পরিমাণে জোরে দুধ এলে খাওয়ানোর সময় চোখেমুখে দুধ ছিটিয়ে পড়ে, তাই শিশুকে খাওয়ানোর আগে কিছুটা দুধ টিপে ফেলে নিতে পারেন। এতে বোঁটাও তার নিজের আকার ফিরে পাবে। শিশুর বোঁটাসহ কালো অংশ ধরতে সুবিধা হবে।

* মাকে সম্পূর্ণ নিশ্চিত করা অভিভাবকদের দায়িত্ব হিসেবে নিতে হবে। তাকে কখনোই তিরস্কার বা হতাশ করা যাবে না।

* ডেলিভারির দুই সপ্তাহ পর এসব ব্যবস্থা নেওয়ার পরও যদি মায়ের বুকে পর্যাপ্ত দুধ না আসে বা কম আসে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তবে প্রায় সময় দেখা যায় ওপরের নিয়মগুলো পালন করলে আর এক থেকে দুই সপ্তাহ ধৈর্য ধরলে এমনিতেই এই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। এ সময় শিশু কম দুধ পাচ্ছে বলে উদ্বিগ্ন হয়ে কৌটার দুধ দেওয়া হবে আত্মঘাতী। কারণ, প্রথম দিকে এমনিতেই শিশুর চাহিদা কম থাকে আর একবার কৌটার দুধ দিলে তাকে বুকের দুধ খাওয়াতে খুব কষ্ট হয়। আজকাল সরকারি হাসপাতালগুলোতে এবং ক্লিনিকেও ‘ব্রেস্ট ফিডিং কাউন্সেলিং’-এর জন্য আলাদা সেন্টার বা বুথ থাকে। এসব স্থানে গিয়ে মায়েরা সাহায্য চাইতে পারেন।

বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৬

বেশি ক্ষতি হয় দাঁতের



শীতকালে মসলাযুক্ত ও পানিজাতীয় খাবার বেশি খাওয়া হয়। আর এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় দাঁতের। অনেক সময় দাঁতের যত্ন নিতে গিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে দাঁত মাজি। কিন্তু বেশি সময় ধরে দাঁত মাজলে ক্ষতিই হয়।

আইএএনএসের খবরে বলা হয়েছে, আমেরিকান ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশনের (এডিএ) বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শীতকালে দুই থেকে তিন মিনিটের বেশি সময় ধরে দাঁত মাজবেন না। মুখকে শরীরের প্রতিবিম্ব বলা হয়। আর এ কারণেই দাঁতের যত্ন সব সময় নিতে হয়। বেশি সময় ধরে দাঁত ব্রাশ করলে ক্ষতি হতে পারে। এ ছাড়া কার্বনেটেড পানীয় এড়িয়ে চলতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব কাজ করলে শীতকালে বিস্ময়কর ফল পাবেন।

ক্লোভ ডেন্টালের অতিথি পরামর্শক সাগ্রিকা শুক্লা বলেন, এই শীতে দাঁতের বাড়তি যত্ন প্রয়োজন। শরীরের অন্যান্য অংশের মতোই দাঁতেরও যত্ন নিতে হবে।

মার্কিন ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশন বলছে, দাঁত মাজতে হবে, কিন্তু দীর্ঘ সময়ের জন্য নয়। দুই থেকে তিন মিনিটের বেশি সময় ধরে দাঁত মাজা যাবে না। কারণ, বেশি সময় ধরে মাজলে দাতে সংবেদনশীলতা তৈরি হতে পারে।

শীতকালে মানুষ একটু বেশি খায়। কিন্তু এ সময় অনেকে কার্বনেটেড পানীয়ের বদলে গরম পানীয় খেতে পছন্দ করেন, যা দাঁতের ক্ষয় হতে পারে। শীতকালে ছুটির দিনগুলোতে মসলাযুক্ত খাবার এবং চুমুক দিয়ে খাবার খাওয়া হয়। আর এতে কিছু কণা দাঁতের ফাঁকে জমে যায়। তাই তা পরিষ্কার করার জন্য হালকা কুসুম গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে মুখে দিয়ে কুলকুচি করতে হবে। এতে দাঁতের ব্যথা উপশম হয় দ্রুত। শীতকালে দাঁতের যত্ন নিতে চিনি খাওয়া কমাতে হবে।

বৃহস্পতিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৬

Earn Money

Hi,
would you like to earn money by trying new free apps and games?

1.) Install CashPirate from https://play.google.com/store/apps/details?id=com.ayet.cashpirate

2.) Enter my referral code "👉VHIWXC👈" at signup.👌

3.) You get +50% coins for the first 1000 coins you earn (= 500 coins bonus) and can start making money right away!

শনিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৬

দৈনিক একাত্তর: আমি শুনেছি সেদিন তুমি

দৈনিক একাত্তর: আমি শুনেছি সেদিন তুমি

আমি শুনেছি সেদিন তুমি


আমি শুনেছি সেদিন তুমি সাগরের ঢেউয়ে চেপে,
নীল জল দিগন্ত ছুয়ে এসেছো;
আমি শুনেছি সেদিন তুমি নোনাবালি তীর ধরে,
বহুদূর বহুদূর হেটে এসেছো।
আমি কখনো যাইনি জলে, কখনো ভাসিনি নীলে;
কখনো রাখিনি চোখ, ডানামেলা গাঙচিলে।
আবার যখন তুমি সমুদ্রস্নানে যাবে,
আমাকেও সাথে নিও, নেবে কি আমায়;
বলো নেবে কি আমায়।
আমি শুনেছি সেদিন নাকি, তুমি তুমি তুমি মিলে;
তোমরা সদলবলে সভা করেছিলে।
আর সেদিন তোমরা নাকি, অনেক জটিল ধাধা;
না বলা অনেক কথা কথা বলেছিলে।
কেন শুধু ছুটে চলা, একই একই কথা বলা;
নিজের জন্য বাচা নিজেকে নিয়ে।
যদি ভালবাসা নাই থাকে, শুধু একা একা লাগে;
কোথায় শান্তি পাবো কোথায় গিয়ে;
বলো কোথায় গিয়ে।
আমি শুনেছি তোমরা নাকি, এখনো স্বপ্ন দেখো;
এখনো গল্প লেখো, গান গাও প্রাণ ভরে;
মানুষের বাচামরা এখনো ভাবিয়ে তোলে,
তোমাদের ভালোবাসা এখনো গোলাপে ফোটে।
আস্থা হারানো এই মন নিয়ে আমি আজ,
তোমাদের কাছে এসে দু’হাত পেতেছি;
আমি দু’চোখে, শূন্যতা দেখি শুধু;
রাতঘুমে আমি কোন স্বপ্ন দেখিনা।
তাই স্বপ্ন দেখবো বলে,
আমি দু’হাত পেতেছি;
তাই তোমাদের কাছে এসে,
আমি দু’হাত পেতেছি।
তাই স্বপ্ন দেখবো বলে,
আমি দু’হাত পেতেছি।

শুক্রবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৬

একতাই বল


আমার কলিজা করিলো ছিদ্র

মন মাতানো বিচ্ছেদের গান ।
শুনেই দেখুন।


বেয়াদব মেয়ের উপযুক্ত জবাব

বেয়াদব মেয়ের  উপযুক্ত জবাব দিল এক মুসলিম  ভাই।
না দেখলে মিস।

Hindhi supper movie don't miss it.

খুব সুন্দর একটি ছবি ।
হিন্দি ডাবিং ।
Watch hindi  dubbed movie .Supper hindi move

সোমবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৬

অনলাইনে যে ৭ কাজ করবেন না



এক সময় ইন্টারনেট এতটা ব্যবহারবান্ধব ছিল না।
মানুষকে কষ্ট করে ইন্টারনেটে যেতে হতো। তখন ইন্টারনেটের নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে এত বেশি দুশ্চিন্তারও কিছু ছিল না। কিন্তু আধুনিক কালের উচ্চগতির ওয়াই-ফাই বা সামাজিক যোগাযোগের যুগে শিশু থেকে বৃদ্ধরাও ইন্টারনেটে আসতে পারছেন। অনলাইনে কেনাকাটা, আর্থিক লেনদেন, সামাজিক যোগাযোগ থেকে শুরু করে নানা কাজ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে বিপদ। তাই ইন্টারনেটের কিছু বিষয়ে মানুষকে আগের চেয়ে বেশি সচেতন হতে হবে। ইন্টারনেট নিরাপত্তা সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ক্যাসপারস্কির তথ্য অনুযায়ী, সাতটি বিষয়ে মানুষকে এখন বেশি সচেতন থাকতে হবে। এ বিষয়গুলো সহজ হলেও মানুষকে বোকা বানাতে এগুলো ব্যবহার করা হয়।

১. মুক্ত ওয়াই-ফাইয়ের ওপর ভরসা করা
মুক্ত ওয়াই-ফাই বা বিনা মূল্যের ওয়াই-ফাই পেলেই ঝাঁপিয়ে পড়া ঠিক নয়। মুক্ত ওয়াই-ফাইয়ের ওপর আস্থা রাখলে ঝুঁকিতে পড়তে হতে পারে। অনেক সময় সাইবার দুর্বৃত্তরা পরিচিত নেটওয়ার্কের নাম দিয়ে ওয়াই-ফাই হটস্পট তৈরি করে রাখে। কোনো নেটওয়ার্ক পরিচিত হলেও তাতে আর্থিক লেনদেন, কেনাকাটা করা ঠিক হবে না। এ ছাড়া যেসব সাইটে লগইন করার দরকার পড়ে, সেগুলোয় উন্মুক্ত ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কে বিশ্বাস করে ঢোকা ঠিক হবে না। সম্ভব হলে ভিপিএন ব্যবহার করুন।

২. সহজ, অনুমানযোগ্য পাসওয়ার্ড ব্যবহার
পোষা প্রাণীর নাম, জন্মদিন, পারিবারিক নামের মতো সহজে অনুমানযোগ্য পাসওয়ার্ডগুলো অনিরাপদ। যে পাসওয়ার্ড সহজে ধারণা করা যায় না, এমন জটিল পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন। সহজে মনে রাখতে পারেন, কিন্তু অন্যরা সহজে ধরতে পারবে না, এমন কৌশলী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন।

৩. পাসওয়ার্ড পুনর্ব্যবহার
হয়তো জটিল পাসওয়ার্ড ব্যবহার করলেন, কিন্তু কোনো এক অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়ার ফলে ওই পাসওয়ার্ড হাতছাড়া হতে পারে। তাই একই পাসওয়ার্ড আবার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।

৪. ই-মেইলে আসা লিংকে ক্লিক
ই-মেইলে নানা প্রলোভন দেখানো মেইল আসতে পারে। আবার অনেক মেইলে নানা অফারের লিংক আসে। মেইলে অপরিচিত কিংবা পরিচিত কোনো উৎস থেকে আসা লিংকে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকুন। কোনো স্প্যাম বা ফিশিং ই-মেইলের লিংকে ক্লিক করলেও এমন কোনো সাইটে চলে যেতে পারেন, যেখান থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ম্যালওয়্যার ডাউনলোড হতে পারে। এমনকি এমন কোনো ভুয়া সাইটে চলে যেতে পারেন, যা দরকারি পাসওয়ার্ড হাতিয়ে নিতে পারে। এসব লিংকে ক্লিক করলে স্প্যামার বুঝতে পারে, কেউ ফাঁদে পা দিয়েছে। ই-মেইলে আসা লিংকের মতোই ফেসবুকে লাইক সংগ্রহ করে—এমন লিংকগুলোয় ক্লিক করা থেকেও বিরত থাকুন। আইফোন জেতার অফার কিংবা কোনো নির্যাতনের ভিডিও দেখিয়ে মন্তব্য বা শেয়ার করতে যেসব লিংকে বলা হয়, সেগুলো এড়িয়ে যেতে হবে।

৫. কারও সঙ্গে লগইন তথ্য আদান-প্রদান না করা
যত ঘনিষ্ঠ হোক না কেন, অনলাইনের লগইন তথ্য আদান-প্রদান না করাই ভালো। কারও কাছে লগইন তথ্য থাকলে অ্যাকাউন্ট বেহাত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

৬. অবস্থানগত তথ্য অনলাইনে না জানানো
অনেকেই কোথাও বেড়াতে যাওয়ার আগে বা বাড়ির বাইরে থাকলে ফেসবুক-টুইটারে জানিয়ে দেন। অবস্থানগত তথ্য অনলাইনে জানিয়ে দেওয়ার ফলে দুর্বৃত্তদের অসৎ উদ্দেশ্য পূরণে সুবিধা হতে পারে। কোথাও বেড়াতে গেলে বিশ্বস্ত বন্ধুদের জানাতে পারেন, তবে তা ইন্টারনেটের পুরো দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিলে নানা ঝুঁকি বাড়ে।

৭. সামাজিক যোগাযোগের সাইটের ডিফল্ট সেটিংস রেখে দেওয়া
এখন অনেক মানুষ ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগের সাইট ব্যবহার করেন।
এ ধরনের সাইট ব্যবহারের সময় প্রাইভেসি সেটিংস নিয়মিত পরিবর্তন করা উচিত। নতুন অ্যাকাউন্ট খোলার সময় অন্তত পাঁচ মিনিট প্রাইভেসি ও নিরাপত্তা সেটিংস নিয়ে কাজ করুন। যাঁদের অনলাইন অ্যাকাউন্ট আছে, তাঁরা প্রতি মাসে প্রাইভেসির বিষয়টি একবার পরিবর্তন করুন। ফেসবুক, টুইটার, লিংকডইনে কোনো কিছু পোস্ট করার আগে দ্বিতীয়বার ভাবুন। অপরিচিত কারও কাছে ব্যক্তিগত তথ্য তুলে দেওয়ার আগে একটু ভাবনা অনেক ক্ষতি থেকে বাঁচিয়ে দিতে পারে।
তথ্যসূত্র: জিনিউজ।

শনিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৬

কোমরে ব্যথা মানেই কিডনির সমস্যা?



কোমরের পেছন দিকে হালকা চিনচিনে ব্যথা—এমন উপসর্গ নিয়ে অনেকে আতঙ্কিত হয়ে ছোটেন চিকিৎসকের কাছে।
 আমার কিডনি কি খারাপ হয়ে গেল? 
শুনেছি কিডনির সমস্যায় পেছনে ব্যথা হয়? কোমরব্যথার বেশির ভাগ রোগী মনে করেন, তাঁদের কিডনিতে সমস্যা হয়েছে। 
কিন্তু সত্যি বলতে কি, কিডনিতে পাথর বা খারাপ ধরনের সংক্রমণ না হলে ব্যথা করার কথা নয়। অপর দিকে কোমরব্যথারও আছে নানা কারণ ও উৎস।
 বেশির ভাগ কোমরব্যথা সাধারণত মাংসপেশি, মেরুদণ্ডের হাড়, ডিস্ক, সন্ধি ও স্নায়ুসম্পর্কিত। 
এটি নির্দিষ্ট অংশজুড়ে হয়। মেরুদণ্ডের নড়াচড়া, যেমন ওঠাবসা, সামনে ঝোঁকা, হাঁটা বা দাঁড়ানো, অনেকক্ষণ ধরে কাজ করা বা শুয়ে থাকার সঙ্গে এই ব্যথা বাড়ে-কমে।

এ বিষয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নেফ্রোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহবুব মোর্শেদ বলেন, কোনো রকম ব্যথা-বেদনা ছাড়াও কিডনি খারাপ হতে পারে।
 কারণ, কিডনি সমস্যার উপসর্গ সাধারণত দেরিতে দেখা দেয়। তাই যাদের পরিবারে কিডনির অসুখ আছে, তাদের বেশি সচেতন থাকা উচিত।
 আর সাধারণ কোমরব্যথায় সাধারণত জ্বর হয় না (তবে টিউমার, টিবি ইত্যাদি ছাড়া)। 
দুর্বলতা, রক্তশূন্যতা, অরুচি, বমির ভাব ইত্যাদি আনুষঙ্গিক সমস্যা সাধারণত থাকে না। 
বিশ্রাম ও ব্যথানাশক ওষুধ সেবনে ভালো হয়; বন্ধ করলে ব্যথা আবার ফিরে আসে।

কিডনি রোগের উপসর্গ বা ব্যথা
*কিডনিজনিত ব্যথা সাধারণত মেরুদণ্ড থেকে একটু দূরে ডান বা বাম পাশে হয়। 
এটি পেছনের পাঁজরের নিচের অংশে অনুভূত হওয়ার কথা। এই ব্যথা নড়াচড়া করে এবং কোমরের দুই পাশেও যেতে পারে। এই ব্যথা থেকে থেকে আসে, শোয়া-বসা বা কোনো কিছুতেই আরাম মেলে না।

* কিডনি সমস্যায় ব্যথা মূল উপসর্গ নয়, এতে শরীরে পানি আসা, দুর্বলতা, অরুচি, বমির ভাব দেখা দেয়।
* সংক্রমণ হলে জ্বর হতে পারে এই ব্যথার সঙ্গে।
* প্রস্রাব ঘোলাটে হয়, দুর্গন্ধ বা রক্ত থাকতে পারে।
*প্রস্রাবের পরিমাণ কম-বেশি হয়। রক্তশূন্যতা থাকতে পারে।

কিডনি রোগের ঝুঁকি
দীর্ঘদিনের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, সংক্রমণ, ব্যথানাশক বড়ি খাওয়া এবং পরিবারের কারও কিডনি অসুখ হওয়ার ইতিহাস, হার্টের সমস্যা, স্ট্রোক করলে, অতিরিক্ত ওজন, ধূমপান। 
এসব ঝুঁকির মধ্যে যাঁরা আছেন, তাঁদের উচিত নিয়মিত কিডনি পরীক্ষা করানো বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শে থাকা।

কিডনি অসুখ কি বিরল এবং শুধু কি বড়দের হয়?

কথাটি একেবারে সঠিক নয়। বরং এটি একটি খুব সাধারণ অসুখ। সব বয়সের হতে পারে। বিভিন্ন মাত্রায় উপসর্গহীনভাবে চলতে থাকে। শেষ অবস্থায় গিয়ে ধরা পড়ে। যখন হয়তো তেমন কিছু করার থাকে না।

কিডনি অসুখ হলেই কি তা জানতে পারি?
না, জানতে না-ও পারতে পারি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রাথমিক বা মাধ্যমিক মাত্রার অসুখ পর্যন্ত তেমন কোনো উপসর্গ প্রকাশ পায় না। দেখা যায়, শেষ অবস্থায় ধরা পড়ছে অসুখ।

কিডনি অসুখের ঝুঁকির মধ্যে থাকলে কি আগাম কিছুই করার নেই?
ঝুঁকির মধ্যে থাকলেও কিডনি অসুখ প্রতিরোধ করার যায়। সচেতন হলেই প্রতিরোধ সম্ভব। কিডনিবান্ধব স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ, নিয়মিত ব্যায়াম, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, ওজন নিয়ন্ত্রণ, ধূমপান পরিহার, অতিরিক্ত ব্যথার ওষুধ সেবন পরিহার করলেই ঝুঁকি সত্ত্বেও কিডনি অসুখ প্রতিরোধ সম্ভব।

কিডনি পরীক্ষা কি ব্যয়বহুল?
কিডনি পরীক্ষা মোটেও ব্যয়বহুল নয়। খুব সাধারণ দুটি পরীক্ষার মাধ্যমে অল্প খরচে, অতি সহজে দেশের সবখানেই জানা যেতে পারে কিডনির সর্বশেষ অবস্থা।

পানি বেশি খেলে কি কিডনি ভালো থাকে?
একজন মানুষের পানি কতটুকু খেতে হবে, তা নির্ভর করে তার কাজের ধরন, দেহের আকার, পরিবেশ, আবহাওয়া ইত্যাদির ওপর। পর্যাপ্ত পানি পান কিডনিকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। 
তবে জানেন কি অতিরিক্ত পানি পান করলে কিন্তু কিডনির ওপর চাপ পড়ে, যা ক্ষতির কারণ হতে পারে। স্বাভাবিক আবহাওয়ায় দৈনন্দিন আট গ্লাস পানি পানই যথেষ্ট। তবে অতিরিক্ত ঘাম হলে পানি খাওয়ার পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে।
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খেলে কিডনিতে পাথর হয় না এবং এর স্বাভাবিক কার্যক্রম ঠিক থাকে।

ধেয়ে আসছে চীনের মহাকাশ স্টেশন




নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধীরে ধীরে পৃথিবীর দিকে এগিয়ে আসছে ‘তিয়ানগং-১’ নামের চীনের প্রথম মনুষ্যবাহী মহাকাশ স্টেশন। 
গত কয়েক মাসে এ নিয়ে নানা খবর বের হলেও চীন তা এত দিন গুজব বলেই উড়িয়ে দিয়ে এসেছে। সেপ্টেম্বর মাসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি স্বীকার করে নেন চীনের মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্রের বিশেষজ্ঞরা।
 ২০১৭ সাল নাগাদ পৃথিবীর বুকে তিয়ানগং-১ আছড়ে পড়বে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা। 
বর্তমানে মহাকাশ স্টেশনটি নিজস্ব কক্ষপথে পৃথিবী থেকে প্রায় ২৩০ মাইল ওপরে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছে।
পৃথিবীর বুকে পতনের সময়ে মহাকাশ স্টেশনটির বেশির ভাগ অংশ পুড়ে যাবে বলেও জানান চীনের মনুষ্যবাহী মহাকাশ প্রকৌশল কার্যালয়ের উপপরিচালক উ পিং। 
তিয়ানগং-১-এর গতিবিধি সর্বক্ষণ পর্যবেক্ষণ করছে দেশটির মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্র।
 এটি কবে ও কোথায় পতিত হবে, তা পরবর্তী সময়ে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
তিয়ানগং-১ নামের অর্থ ‘স্বর্গীয় প্রাসাদ’। 
২০১১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর পৃথিবী থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় ৩৪ ফুট লম্বা এই মহাকাশ স্টেশন। এরপর অনেক জ্যোতির্বিজ্ঞানী এর গতিবিধির ত্রুটি লক্ষ করলেও চীন সরকার তা আমলে নেয়নি। তিয়ানগং-১-এর কতটুকু অংশ এখন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে, তা এখনো নিশ্চিত করে বলেনি চীন।
এদিকে গত সপ্তাহে চীন তাদের নতুন পরীক্ষামূলক মহাকাশ স্টেশন তিয়ানগং-২ উৎক্ষেপণ করেছে।

সূত্র: আইএফএল সায়েন্স

চাকরি ছেড়ে উদ্যোক্তা


কোয়েলের খামার করে স্বাবলম্বী আবদুর রহমান 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাট চুকানোর পর আবদুর রহমান চাকরি নেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। পরিবারের বড় সন্তান হিসেবে দায়িত্বও ছিল বেশি।
 তাই অন্য কিছু ভাবার অবকাশ ছিল না। 
কিন্তু উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্নটা তাঁকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছিল। একসময় সাহস করে চাকরি ছাড়েন। 
হাত দিলেন কোয়েলের খামার গড়ার কাজে। এখন তিনি সফল খামারি। 
চাকরি ছাড়ার সেই সাহসে পূরণ হলো উদ্যোক্তার স্বপ্ন।
লোহাগাড়া উপজেলার বড়হাতিয়া কুমিরাঘোনার সিকদারপাড়ার বাসিন্দা আবদুর রহমানের কাজ এখন এলাকার তরুণদেরও আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে। 
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে চুনতি ইউনিয়নের সিরাত মাঠসংলগ্ন স্থানে তাঁর খামার ‘এআরবি কোয়েল ফার্ম’।
 কোয়েল চাষের জন্য বগুড়া ও নওগাঁ গিয়ে বিভিন্ন হ্যাচারি পরিদর্শন করে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেই খামার গড়ার কাজে হাত দেন। এ বছরের জানুয়ারি মাসে দেড় হাজার কোয়েল দিয়ে শুরু করেন।
 তিন মাসেই সাফল্যের দেখা পান। দিনে দিনে বেড়েছে কোয়েলের সংখ্যা, এখন দাঁড়িয়েছে ২০ হাজারে।
সম্প্রতি খামারে গেলে কথা হয় আবদুর রহমানের সঙ্গে। তিনি জানান, সাত লাখ টাকা মূলধন নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। প্রতি মাসে ১৪ হাজার টাকায় ২০ শতক জায়গা ভাড়া নেন।
 খামারের জন্য কেনেন দুটি জেনারেটর, ইনকিউবেটর মেশিনসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি।
এত দিন করেছেন চাকরি, হঠাৎ করে হাত দিলেন খামার গড়ার কাজে। অভিজ্ঞতা ছিল কি না? বললেন, ‘আমি আগে কোনো ধরনের খামার করিনি। ইন্টারনেট ও পত্রিকায় ছাপানো বিভিন্ন খামারের সফলতার গল্প পড়েই মূলত উদ্বুদ্ধ হয়েছি।’
খামার ঘুরে দেখা গেছে, বড় তিনটি শেডে চলছে কোয়েলের চাষ। সার্বক্ষণিক কাজ করেন চারজন কর্মচারী। এরপরও আবদুর রহমান খামারের কাজে হাত লাগান, তদারকি করেন।
আবদুর রহমান জানান, কোয়েলের ডিম থেকে বাচ্চা হতে প্রায় ১৮ দিন সময় লাগে। প্রতিটি কোয়েল ১০০-১৫০ গ্রাম হলেই বিক্রির উপযুক্ত হয়। প্রতিদিন তিন বেলা পানি ও খাদ্য দিতে হয়। সাধারণত একটি কোয়েল জন্মের ৩৫-৪০ দিনের মধ্যে বিক্রি করা যায়। প্রতিটি কোয়েল বর্তমানে ৩২ টাকায় বিক্রি করেন তিনি। প্রতি মাসে গড়ে ১৫-১৭ হাজার কোয়েল বিক্রি করেন। তাঁর খামারে উৎপাদিত কোয়েল বটতলী, চুনতি, কেরানীহাট, চকরিয়া, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম শহরেও বিক্রি হয়। খরচ বাদে প্রতি মাসে তাঁর আয় ৩০ হাজার টাকা।
বটতলী বাজারের স্থানীয় বিক্রেতা আবদুল কুদ্দুছ জানান, প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৫০০ কোয়েল তিনি আবদুর রহমানের খামার থেকে কেনেন। 
কোয়েল বিক্রি করে তিনিও ভালো লাভ করেন।
চুনতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন বলেন, আবদুর রহমান এলাকার তরুণদের পথ দেখাচ্ছেন। 
তাঁর সাফল্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে এলাকায় অনেকে খামার গড়তে আগ্রহী হয়েছেন।
লোহাগাড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম দেওয়ান বলেন, কোয়েলের মাংস ও ডিম প্রোটিনসমৃদ্ধ। বাজারেও রয়েছে ভালো চাহিদা। 
কোয়েলের খামার গড়ে স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ রয়েছে। আবদুর রহমানের খামার সম্পর্কে শুনেছি। খামার পরিদর্শন করে তাঁকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ, প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা প্রদান করা হবে।
 আবদুুর রহমান তাঁর খামারের পরিধি আরও বাড়াতে চান। 
এই অঞ্চলে কোয়েলের চাষ ছড়িয়ে দিতেও তিনি কাজ করছেন। খামার গড়তে স্থানীয় তরুণদের নানা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। 
তিনি বলেন, ‘বড় কিছু করব এই চিন্তা নিয়ে বসে থাকলে হবে না।
 কম পুঁজি দিয়ে ছোট পরিসরে হলেও শুরু করতে হবে।’

শুক্রবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৬

বাবাকে ‘আঙ্কেল’ ডাকছেন খাদিজা



বাবা মাশুক মিয়াকে খাদিজা কখনো ‘আব্বু’ ডাকেন, কখনোবা ডাকেন ‘আঙ্কেল’।
 মাকেও কখনো চিনতে পারেন, কখনো পারেন না। মাকে মাঝেমধ্যে ‘আন্টি’ ডাকেন। 
কখনো কখনো একা বিড়বিড় করেন। কী বলছেন, ভালো করে বোঝা যায় না।

মেয়ে কেমন আছেন—জানতে চাইলে উত্তরে এভাবেই বর্ণনা দেন বাবা মাশুক মিয়া।
 আজ শনিবার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে তিনি এসব কথা জানান।

বাবা মাশুক মিয়া জানান, খাদিজা এখন অল্প অল্প খাচ্ছেন। 
চিকিৎসকেরা তাঁকে জানিয়েছেন, আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে খাদিজার বাঁ হাতে অস্ত্রোপচার করা হবে। এর আগে ১৭ অক্টোবর তাঁর ডান হাতে অস্ত্রোপচার হয়েছে।

মাশুক মিয়া জানান, চিকিৎসকেরা বলেছেন, খাদিজার স্মৃতিশক্তি পুরোপুরি ফিরে আসতে আরও সময় লাগবে। 
খাদিজা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে চিকিৎসকেরা আশাবাদী।

৩ অক্টোবর সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের (ডিগ্রি) ছাত্রী খাদিজা বেগম পরীক্ষা দিয়ে ফেরার পথে বদরুল আলমের হামলার শিকার হন। 
মাথায় গুরুতর আঘাত নিয়ে প্রথমে খাদিজাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর অচেতন অবস্থাতেই খাদিজাকে ওই দিন রাতে তাঁর স্বজনেরা স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সংকটজনক অবস্থাতেই খাদিজার মাথায় দ্বিতীয় দফা অস্ত্রোপচার হয়। অস্ত্রোপচারের ৯৬ ঘণ্টা পর চিকিৎসকেরা জানান, খাদিজার আর জীবনসংশয় নেই।
 তিনি এখনো রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গত বৃহস্পতিবার তাঁকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে।

ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলমকে গত রোববার (২৩ অক্টোবর) শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়। 
তিনি এখন কারাগারে।

How to add time in your website or blog

To display Date and time in your website follow this tips.
copy below html code and save it in your website.

<!doctype html>
<p id="demo"></p>

<script>
document.getElementById("demo").innerHTML = Date();
</script>



</!doctype>



it will be displaying [Sat Oct 29 2016 12:42:40 GMT+0800 (Malay Peninsula Standard Time)]


its always show local time by identify IP address.

বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৬

নাসার নতুন ‘চমক’ কি এলিয়েন?

হাবল টেলিস্কোপ ব্যবহার করে ইউরোপা উপগ্রহে অদ্ভুত কার্যক্রম লক্ষ করেছেন গবেষকেরা।
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার বিজ্ঞানীরা শিগগিরই নতুন একটি ‘চমক’ হাজির করতে যাচ্ছেন।
এমন আভাস দিয়ে বলা হচ্ছে, এ চমক হতে পারে আমাদের এই সৌরজগতে এলিয়েন বা ভিনগ্রহের প্রাণীর গতিবিধি আবিষ্কারের তথ্য।
বৃহস্পতির চাঁদ ইউরোপার ছবি বিশ্লেষণ করে নাসার গবেষকেরা আসছে সোমবার নাগাদ ওই উপগ্রহপৃষ্ঠের নিচে থাকা সমুদ্র সম্পর্কে তথ্য জানাতে পারেন। 
১ হাজার ৯০০ মাইল প্রশস্ত এই উপগ্রহের বরফাছাওয়া খোলসের নিচে বিশাল সমুদ্র থাকতে পারে বলে মনে করছেন গবেষকেরা।
 এই সমুদ্র গবেষকেদের আরও বেশি আকৃষ্ট করছে ইউরোপার পাথুরে আবরণ। যার মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটানোর মতো উপাদান থাকতে পারে।
হাবল টেলিস্কোপ ব্যবহার করে ইউরোপার নতুন এই ছবিগুলো তোলা হয়েছে। 
এর পাশাপাশি ইউরোপার রহস্য উদ্‌ঘাটনে সেখানে নভোযান পাঠানোর পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন গবেষকেরা। ওই মিশনে নভোযান ১ হাজার ৭০০ মাইল থেকে শুরু করে ১৬ মাইল উচ্চতায় ৪৫ বার ইউরোপাকে চক্কর দেবে।
 ওই মিশনের ফলেই ইউরোপার বর্তমান অবস্থার কথা জানা যাবে।
গত মে মাসে নাসার প্লানেটারি ভূপ্রকৃতিবিদ স্টিভ ভ্যান্স বলেন, পৃথিবীর মতোই ইউরোপার সমুদ্রে অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন চক্র সেখানকার সামুদ্রিক রসায়ন ও সেখানকার সম্ভাব্য জীবনের জন্য মূল চালিকা রূপ হতে পারে।
 তথ্যসূত্র: আইবিটাইমস

সেরা অ্যাপ খুঁজে নেওয়ার ৫ উপায়




অ্যান্ড্রয়েড, আইওএস কিংবা উইন্ডোজ ফোন হোক, দৈনন্দিন কাজ সহজ করে তুলতে স্মার্টফোনে তৃতীয় পক্ষের অ্যাপ ব্যবহারের বিকল্প নেই।
 তবে কয়েক লাখ অ্যাপের মধ্যে আপনার জন্য সঠিক এবং কার্যকরী অ্যাপ নির্বাচন করাটা একটা চ্যালেঞ্জ বটে। 
সহজে দরকারি অ্যাপটি খুঁজে পাওয়ার কিছু পরামর্শ এখানে দেওয়া হলো।
১. অ্যাপ স্টোরের সুপারিশ
গুগল প্লে স্টোরে যে ধরনের অ্যাপ, আপনার দরকার সে বিভাগ নির্বাচন করলেই সেরা অ্যাপগুলো সুপারিশ হিসেবে দেখাবে। নামানোর পরিমাণ, জনপ্রিয়তা, ব্যবহারকারী এবং ডেভেলপারদের পছন্দের ওপর ভিত্তি করে প্লেস্টোর সেরা অ্যাপগুলো নামানোর সুপারিশ করে। উইন্ডোজ এবং আইওএসের অ্যাপস্টোরে ‘ফিচার’ এবং ‘অ্যাপস ইউ মাইট লাইক’ অংশে সুপারিশকৃত অ্যাপ পাওয়া যাবে।
২. জনপ্রিয় অ্যাপের তালিকা
অ্যাপলের অ্যাপ স্টোর কিংবা গুগলের প্লেস্টোরে একটি অ্যাপ নির্বাচন করলে নিচের দিকে ‘ইউজার অলসো ইনস্টলড’ অংশে নির্বাচিত অ্যাপের মতোই একই ধরনের অন্যান্য জনপ্রিয় অ্যাপ দেখাবে। এই অংশে এ ধরনের কোন অ্যাপগুলো ব্যবহারকারীরা বেশি নামাচ্ছেন, তা দেখায়।

৩. পর্যালোচনা মাথায় রাখুন
অ্যাপ স্টোরগুলোতে কোনো অ্যাপের পাতা খুললে সেই অ্যাপ সম্পর্কে অন্য ব্যবহারকারীদের পর্যালোচনা দেখাবে। সেগুলো পড়লেই অ্যাপটি সম্পর্কে ধারণা পেয়ে যাবেন। এ ছাড়া রেটিং দেখে অ্যাপটির গুণগত মান নিয়ে ধারণা পাবেন।

৪. একই ডেভেলপারের অন্য অ্যাপ
কোনো অ্যাপ ব্যবহার করে ভালো লাগলে সে অ্যাপ নির্মাতার তৈরি অন্য অ্যাপগুলোতেও একবার নজর বোলাতে পারেন। সেখানে হয়তো আপনার প্রয়োজনীয় কোনো অ্যাপ পেয়ে যাবেন। অ্যাপ স্টোরের কোনো অ্যাপের পাতায় গিয়ে ‘মোর বাই ডেভেলপার’ অথবা ‘ডেভেলপার্স অ্যাপস’ অংশে প্রবেশ করলে একই নির্মাতার তৈরি অন্যান্য অ্যাপ পেয়ে যাবেন।

৫. শেষ কবে হালনাগাদ করা হয়েছে?
সর্বশেষ এক মাসের মধ্যে হালনাগাদ করা হলে অ্যাপটি নামাতে পারেন। তবে গত এক বছর বা তার বেশি সময়ে হালনাগাদ না হলে বুঝতে হবে অ্যাপটি পরিত্যক্ত করেছেন এর নির্মাতারা। এ ছাড়া নামানোর আগে দেখে নিন অ্যাপটি আপনার স্মার্টফোনে সমর্থন করবে কি না।

 সূত্র: টেকরাডার

মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

ভুঁড়ির মাপ বেশি?


যকৃৎ হলো আমাদের শর্করা, চর্বি, আমিষসহ সব ধরনের খাদ্য উপাদানের বিপাকক্রিয়ার কারখানা। কখনো যকৃৎ এই উপাদান ভেঙে প্রয়োজনীয় শক্তি উৎপাদন করে, কখনো আবার তা জমিয়ে রাখে। আজকাল এই কথাটা প্রায়ই শোনা যায় যে যকৃতে চর্বি জমেছে।
 এটা কি আসলে কোনো রোগ?
যকৃতে চর্বি জমাকে বলা হয় ফ্যাটি লিভার। ৯০ শতাংশ স্থূল বা ওজনাধিক্য ব্যক্তির এই সমস্যা পাওয়া যায়। স্থূলতা ছাড়াও টাইপ-২ ডায়াবেটিস, রক্তে চর্বির আধিক্য আছে এমন ব্যক্তি, অ্যালকোহল পানকারী ব্যক্তিদের যকৃতে চর্বি জমতে দেখা যায়। 
ওজন বেড়ে গেলে দেহে ইনসুলিন হরমোনের অকার্যকারিতা দেখা দেয়, ফলে যকৃৎ সঠিকভাবে চর্বিকে বিপাক করতে বা নিষ্কাশন করতে ব্যর্থ হয়। এতে সেখানে চর্বি জমে। 
সাধারণভাবে এতে শারীরিক কোনো সমস্যা দেখা দেয় না। কখনো অন্য কারণে আলট্রাসনোগ্রাম বা যকৃতের এনজাইম পরীক্ষা করলে বিষয়টা ধরা পড়ে। এমনিতে এই চর্বি হয়তো তেমন ক্ষতি করে না, কিন্তু কখনো কখনো এটি যকৃতে প্রদাহ করে, যাকে বলে ন্যাশ। কিছু কিছু ন্যাশ আবার পরে লিভার সিরোসিসে পরিণত হয় ও জটিল আকার ধারণ করে।
এ ছাড়া যকৃতে চর্বি জমা মানে আপনার দেহে ইনসুলিন অকার্যকারিতা রয়েছে; যার ফলে পরবর্তী সময়ে ডায়াবেটিস, হৃদ্‌রোগ, পলিসিস্টিক ওভারি, রক্তে চর্বি সমস্যা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে বা ইতিমধ্যে দেখা দিয়েছে।
 তার মানে যকৃতে চর্বি জমাটা ভালো লক্ষণ নয়।
তাহলে এই সমস্যা থেকে প্রতিকার কী? 
প্রথম কথা হলো ওজন বাড়তে দেবেন না। 
উচ্চতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ওজন স্বাভাবিক রাখতে চেষ্টা করুন। কেবল ওজন নয়, পেটে চর্বি বাড়লে অর্থাৎ ভুঁড়ির মাপ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হলে এসব সমস্যা বাড়ে।
 তাই পেট মেদহীন রাখতে হবে। যত বেশি কায়িক শ্রম ও ব্যায়াম করবেন, তত ইনসুলিন অকার্যকারিতার সমস্যাটি কমবে। 
তাই সচল থাকুন। যকৃতে চর্বি কমানোর নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ নেই, তাই হাঁটুন, খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করুন, দেহের মেদ কমান।

অধ্যাপক খাজা নাজিমুদ্দিন

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ

বৃহস্পতিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৬

গর্ভবতী মায়ের সেবা

প্রসবপূর্ব সেবা

একজন নারী যখন গর্ভধারন করেন তখন তার দেহে বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটে৷ এ সময় অনাগত শিশু ও মায়ের বিশেষ যত্ন প্রয়োজন হয়৷ একজন গর্ভবতী মায়ের গর্ভধারণ থেকে শুরু করে সন্তান জণ্ম দেওয়া পর্যন্ত কী কী বিশেষ সেবা প্রযোজন সে সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো-
১. কখন মা হবেন

বিয়ের পর স্বাভাবিক নিয়মেই সবাই মা হতে চান৷ তবে সবার মনে রাখতে হবে একজন সুস্থ মা-ই জণ্ম দিতে পারেন একটি সুস্থ সুন্দর শিশু৷ শিশু সবার কাছেই অনেক আশা আকা•ক্ষার ধন৷ সেই আশা যেন নষ্ট না হয়ে যায় সেজন্য বাচ্চা নেওয়ার পূর্বে কিছু বিষয় বিবেচনা করা উচিত৷

গর্ভধারণের পূর্বে যে বিষয় বিবেচনা কার উচিত

* গর্ভধারণে ইচ্ছুক মহিলার বয়স অবশ্যই ১৮ বছরের বেশি হওয়া উচিত৷
* বর্তমানে মহিলার কয়টি শিশু আছে৷ অধিক বাচ্চার মাকে পরিবার পরিকল্পনায় উদ্বুদ্ধ করুন৷
* ছোট বাচ্চার বয়স যেন কমপক্ষে ২ বছরের বেশি হয়৷
* পূর্বের গর্ভকালীন সময়ের ইতিহাস৷
* পূর্বের প্রসবকালীন সময়ের বিস্তারিত ইতিহাস (বিশেষ করে কোনও জটিলতা হয়ে থাকলে)
* পূর্বে গর্ভপাতের কোনও ঘটনা আছে কিনা
* পূর্বে মৃত বাচ্চা প্রসব হয়েছিল কিনা
* পূর্বে জমজ বাচ্চা প্রসব হয়েছিল কিনা
* পূর্বে অপারেশনের মাধ্যমে বাচ্চা জণ্ম হয়েছিল কিনা
* আগের বাচ্চা জণ্মের সময় ওজন কত ছিল
* গর্ভধারণে ইচ্ছুক মহিলার শারীরিক উচ্চতা ও ওজন
* তার শারীরিক কোনও অক্ষমতা আছে কিনা পরীক্ষা করে দেখতে হবে
* তার দীর্ঘস্থায়ী কোনও রোগ আছে কিনা (ডায়াবেটিস, যক্ষা, ম্যালেরিয়া, হৃদরোগ, কিডনি রোগ, জটিল ধরনের জন্ডিস ইতাদি)
* তার রক্তের গ্রুপ, রক্তশূন্যতা পরীক্ষা করা প্রয়োজন৷


ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসুত্র-ড্রাগ ডিরেক্টরী,
ডা. সুমন চৌধুরী :

২. গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ ও পরীক্ষা

গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ ও পরীক্ষা

উর্বর সময়ে কোনও সক্ষম মহিলার ডিম্বাণু এবং কোনও সক্ষম পুরুষের শুক্রাণু মিলিত হলে ভ্রূণের সঞ্চার হয় অর্থাত্‌ মহিলা গর্ভবতী হয়৷ ভ্রূণ জরায়ুতে বড় হতে থাকে, এই অবস্থাকে গর্ভাবস্থা বলা হয়৷ একটি সুস্থ বাচ্চা জণ্ম দেয়ার জন্য গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মহিলাকে বিভিন্ন ধরনের সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়৷ গর্ভধারণের সময় শরীরের অনেক ধরনের পরিবর্তন লক্ষ করা যায়৷

গর্ভাবস্থার লক্ষণ

* মাসিক স্রাব বন্ধ হওয়া
* বমি বা বমি বমি ভাব
* ঘন ঘন প্রস্রাব ত্যাগ
* স্তনের পরিবর্তন
* জরায়ুর পরিবর্তন
* তলপেটে ও মুখে কালো দাগ দেখা যায়, তল পেটের ত্বক টান ধরেল পেটের ত্বকে সাদা দাগ দেখা যায়
* শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায়
* গর্ভস্থ শিশুর নড়াচড়া টের পাওয়া (৪ মাস পর)৷
* গর্ভস্থ শিশুর হৃদস্পন্দন (৫ মাস পর)৷

গর্ভাবস্থা পরীক্ষা

* নিয়মিত তারিখে মাসিক না হবার আরও ২ সপ্তাহ পর প্রস্রাব পরীক্ষা করে গর্ভাবস্থা বোঝা যায়৷
* যে সব মহিলার মাসিক অনিয়মিত বা অন্য কোনও সমস্যা থাকে তাদের আল্ট্রাসনোগ্রামের মাধ্যমে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যায় (নিয়মিত তারিখে মাসিক না হবার কমপক্ষে ৪ সপ্তাহ পর)৷


ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসূত্র -
নারী, ডা. সুমন চৌধুরী
ড্রাগ ডিরেক্টরি,


৩. গর্ভাবস্থায় যে সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন

গর্ভাবস্থায় যে সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন

পরিশ্রম
গর্ভাবস্থায় একজন মহিলা কতোটা পরিশ্রম করবেন তা সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয়৷ সাধারণভাবে বলা যায়, মা গর্ভাবস্থায় তার স্বাভাবিক সংসারের সব কাজই করবেন৷ তবে প্রথম তিন মাস এবং শেষের দু-এক মাস খুব ভারী বা পরিশ্রমের কাজ না করাই ভালো৷ যেমন- কাপড় কঁাচা, ভারী জিনিস তোলা, পানি আনা, ধান ভানা ইত্যাদি না করা৷ গর্ভাবস্থায় সিঁড়িতে ওঠা-নামার সময় যথেষ্ট সতর্ক থাকা উচিত৷
বিশ্রাম
গর্ভবতী মায়ের যেন ভালো ঘুম হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে৷ গর্ভবতীকে দৈনিক নয় থেকে দশ ঘন ঘণ্টা ঘুমোতে হবে৷ দিনে দুঘণ্টা এবং রাতে আট ঘণ্টা ঘুমাতে হবে৷ যদি কারো ঘুমের অসুবিধা থাকে, তা হলে তাকে অবশ্যই চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিতে হবে, গর্ভাবস্থায় রক্তচাপ বৃদ্ধি পেলে চিকিত্‌সকের পরামর্শ অনুযায়ী বিশ্রাম নিতে হবে৷ দীর্ঘক্ষণ দাড়িয়ে অথবা বসে (৪/৫ ঘণ্টার বেশি) কাজ করা উচিত নয়৷
খাদ্য
স্বাভাবিক খাবারের চেয়ে একটু বেশি (প্রতিবারে অন্তত স্বাভাবিকের চেয়ে ১ মুঠো খাবার বেশি) খাওয়া উচিত৷ গর্ভবতীর পুষ্টিকর ও পরিমিত খাবার খাওয়া উচিত৷ সেই সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করা উচিত৷ প্রতিদিন যথেষ্ট পরিমান সবুজ ও হলুদ সবজী, যেমন পালংশাক, লাল শাক, মুলাশাক, সজনে শাক, মিষ্টি কুমড়া, লাউ ইত্যাদি খেতে হবে৷ এছাড়া হলুদ ফলমুল, দুধ, ডাল, ছোটমাছ, ডিম, মাংস অধিক পরিমাণে খেতে হবে৷ আয়োডিনযুক্ত লবণ খেতে হবে তবে বেশি নয়৷
গোসল
প্রতিদিন ভালোভাবে গোসল করা উচিত৷ তবে পুকুরে সঁাতার কাটা বা পানিতে ঝঁাপ দেওয়া ঠিক নয়৷ গ্রীষ্মকালে শারীরিক পরিচ্ছন্নতা ও আরামের জন্য প্রয়োজন হলে একাধিকবার গোসলে করতে পারেন তবে ঠান্ডা যেন না লাগে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে৷
পোশাক
গর্ভাবস্থায় যাতে পেটের ওপর চাপ কম পড়ে এবং চলাফেরায় আরাম পাওয়া যায় সেজন্য ঢিলেঢালা পোশাক পরা উচিত৷ অন্তর্বাস প্রয়োজনানুপাতে ঢিলা থাকতে হবে৷ এ সময় সিনথেটিক ব্যবহার না করে সুতির পোশাক পরাই ভালো৷
জুতা
গর্ভাবস্থায় উঁচু হিলের জুতা ব্যবহার করা উচিত নয়৷ জুতা নরম এবং ঠিক মাপমতো হওয়া উচিত৷ জুতা পরে স্বাচ্ছন্দো চলাফেরা করতে যেন কোন রকম ব্যাঘাত না ঘটে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে৷ এসময় শরীরের ওজন ক্রমশ বাড়তে থাকে৷ তাই ভারসাম্য রক্ষার জন্য নিচু অথবা মাঝারি ধরনের হিলওয়ালা জুতা পরাই ভাল৷
দঁাতের যত্ন
গর্ভাবস্থায় দঁাতের যত্ন নেয়া খুবই প্রয়োজন৷ এসময় দঁাত পরিষ্কার রাখতে হবে৷ গর্ভাবস্থায় অনেক সময় মাড়ি ফুলে রক্তপাত হয়৷ তাই এ সময়ে মাড়ির যত্ন প্রথম থেকেই নেওয়া উচিত৷ প্রতিদিন সকালে ও রাতে শোয়ার আগে দঁাত ব্রাশ করা প্রয়োজন৷ দঁাত বা মাড়ির কোনও সমস্যা থাকলে দন্ত চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ দঁাত খারাপ থাকলে ক্যালশিয়ামযুক্ত খাবার যেমন - দুধ, ঘি, মাখন, ছোট মাছ (কাটামাছ) ইত্যাদি খেলে ক্যালশিয়ামের অভাব পূরণ হয়৷ প্রয়োজনে চিকিত্‌সকের পরামর্শ অনুযায়ী ক্যালশিয়াম ট্যাবলেট ব্যবহার করা যায়৷ মাড়ি থেকে রক্তপাত হলে ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ খাবার খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়৷
স্তনের যত্ন
গর্ভাবস্থায় গর্ভের প্রথম হতে শেষ পর্যন্ত স্তনের বিশেষ যত্ন নেওয়া উচিত৷ সাবান ও কুসুম গরম পানির সাহায্যে পরিষ্কার করে পরে ঠাণ্ডা পানিতে ভেজানো কাপড় দিয়ে মুছে ফেলে শুকনো নরম তোয়ালে দিয়ে মোছা উচিত৷ তা ছাড়া স্তনের বেঁাটা বা নিপল যাতে ফেটে না যায় এবং গঠন সুঠাম হয় সেজন্য গ্লিসারিন মাখতে পারেন অথাব বেঁাটা সামনের দিকে একটু টেনে আঙুলে তেল (অলিভ ওয়েল হলে ভালো হয়) নিয়ে বুড়ো আঙুলের সাহায্যে আস্তে আস্তে ম্যাসেজ করতে পারেন৷ এতে পরে নবজাতকের স্তন্যপানের সুবিধা হয়৷
ত্বকের যত্ন
গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন গোসলের পরে তলপেটে আস্তে আস্তে কুসুম গরম তেল মালিশ করা ভালো৷ তাহলে পেটের ত্বক সহজে প্রসারিত হবে এবং ত্বকে টান কম পড়ার কারণে সাদা সাদা দাগ কম হবে৷
চাকরি
গর্ভবতী মা চাকরিজীবী মহিলা হলে, কী ধরনের কাজ এবং কতদিন ঐ কাজ আপনি করতে পারবেন তা নিয়ে আপনার চিকিত্‌সকের সঙ্গে পরামর্শ করুন৷ আপনার স্বাস্থ্য ও গর্ভকালীন আপনার শরীরের অবস্থার ওপর কাজ করা বা না করা নির্ভর করবে৷
ব্যায়াম
শরীর সুস্থ রাখা এবং সহজ প্রসবের জন্য গর্ভাবস্থায় ব্যায়াম করা একান্ত প্রয়োজন৷ প্রত্যহ সকল-সন্ধায় এক ঘণ্টা করে হঁাটলে ঠিকমতো রক্ত চলাচলে সহায়তা করে এবং পেশিগুলোও সুস্থ ও সবল অবস্থায় থাকে৷ব্যায়াম কতোটা শ্রমসাধ্য হওয়া উচিত সে বিষয়ে কিছু সাধারণ জ্ঞান সকলেরই থাক ভালো৷ যাদের আসবাবপত্র পরিষ্কার বা রান্না এ ধরণের কাজ করতে হয় তাদের আলাদাভাবে ব্যায়ামের প্রয়োজন হয় না৷যারা কর্মজীবী তারা চাকরি থেকে ছুটি না নিলে পৃথকভাবে ব্যায়ামের প্রয়োজন হয় না৷ তবে গর্ভাবস্থায় শেষ দিকে কাজ কমে গেলে দুবেলা কিছুক্ষণ হঁাটা উচিত৷ যাদের অফিসে সারাক্ষণ বসে কাজ করতে হয় তাদের অনেকক্ষণ বসে থাকার জন্য দিনের শেষে ক্লান্তি আসে৷ এ অবস্থায় এক সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বসে না থেকে কাজ করার ফঁাকে ফঁাকে একটু বিশ্রাম নেয়া ভালো৷ সাধারণ ব্যায়ামের মধ্যে সমান রাস্তায় বা জমিতে হঁাটা খুবই উপকারী৷ তবে হঁাটার দূরত্ব এমনভাবে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত যাতে অহেতুক ক্লান্তি না আসে৷
সহবাস
সহবাস সাধারণভাবে বলা যায়, গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাস সহবাস থেকে বিরত থাকাই ভালো৷ দ্বিতীয় তিনমাসে দম্পতির ইচ্ছেমতো সহবাস করা যায়৷ তবে তাও নির্ভর করে গর্ভবতীর শারীরিক অবস্থার ওপর৷ প্রয়োজনে নিয়মিত চেকআপকারী ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া ভালো৷ শেষ তিন মাস গর্ভবতীর শারীরিক অবস্থার জন্য সহবাসে অসুবিধা হতে পারে৷ তা ছাড়া সহবাসের ফলে জীবাণুর সংক্রমণ হতে পারে৷ তাই শেষ তিন মাসও সহবাস না করাই ভালো৷
মানসিক শান্তি
গর্ভাবস্থায় সব সময় মন ভালো রাখার চেষ্টা করতে হবে৷ অনেকের ধারণা এ সময় সত্‌ চিন্তা করলে সন্তান সত্‌ চিন্তার অধিকারী হয়৷ তবে এটা ঠিক গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত মানসিক দুশ্চিন্তা, রাগ, ভয় বা শোকের ফল গর্ভবতী মায়ের পক্ষে ক্ষতিকর হতে পারে৷
ভ্রমণ
বর্তমানে অনেক মহিলাই কর্মজীবী৷ কর্মজীবী মহিলাদের একেবারে ঘরে বসে থাকা চলে না৷ কাজের জন্য বাইরে যেতেই হয়৷ তবে ভ্রমণ বলতে আমরা বুঝি দূরে কোথাও বেড়াতে যাওয়া৷ দূরে কোথাও বেড়াতে হলে সাবধানে যাতায়াত করতে হবে৷ যে ভ্রমণে বেশি ঝঁাকুনি লাগে (যেমন খারাপ রাস্তায় রিকশা, স্কুটার বা বাসে চলা) ও বেশি পরিশ্রম বোধ হয়, তা না করাই ভালো৷ লম্বা, ক্লান্তিকর ভ্রমণ (প্রথম ৩ মাস এবং শেষ দেড় মাস) এড়িয়ে চলুন৷ একান্ত যদি ভ্রমণ করতে হয় তবে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত৷
গর্ভাবস্থায় ওষুধ
গর্ভাবস্থায় যতটা সম্ভব সব রকমের ওষুধ বর্জন করা উচিত: বিশেষ করে ঘুমের ওষুধ, ব্যথা নিরোধন ওষুধ, মৃগীরোগের ওষুধ, হরমোন, থাইরয়েডের ওষুধ, অ্যান্টিবায়োটিক ইত্যাদি৷ এসব ওষুধের কিছু না কিছু বিরূপ প্রতিক্রয়া থাকে৷ তবে কোনও ওষুধ ব্যবহারের একান্ত প্রয়োজন হলে চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ ডাক্তারের অনুমতি ছাড়া নিজ থেকে কোনও ওষুধই ব্যবহার করা উচিত নয়৷
ধূমপান
গর্ভাবস্থায় ধূমপান করা মোটেও উচিত নয়৷ ধূমপায়ী মায়েদের ক্ষেত্রে শিশুর ওজন কম হয়৷ এ ওজনের কমের কারণে মাতৃগর্ভে শিশুর বিকাশের বিঘ্নের সৃষ্টি হয়৷ এ ঘটনা সরাসরি ধূমপানের মাত্রার ওপর নির্ভরশীল৷ গর্ভবতী মায়েদের পাশে বসে যদি তার স্বামী অথবা অন্যান্য আত্মীয়স্বজন ধূমপান করেন তা হলেও গর্ভস্থ সন্তানের ওপর প্রভাব পড়তে পারে৷
যোনিপথের কোন রোগ
গর্ভাবস্থায় যোনির নিঃসরণ বেড়ে যায়৷ কিন্তু অতিরিক্ত যোনি নিঃসরণ, দুর্গন্ধযুক্ত বা সঙ্গে চুলকানি থাকলে অথবা অন্য কোনও রোগ থাকলে তা চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিয়ে প্রসবের আগেই সম্পূর্ণ সারিয়ে ফেলতে হবে৷ তা না হলে প্রসবের সময় যোনিপথের রোগ শিশুর চোখে, নাভিতে বা শরীরের অন্য কোনও জায়গায় আক্রমণ করতে পারে৷ যেমন - গনোরিয়া রোগ যোনিপথ থেকে শিশুর চোখে সহজেই সংক্রমিত হয় এবং কয়েক দিনের মধ্যে শিশুর চোখের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে৷

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসূত্র - নারী, ডা. সুমন চৌধুরী
ড্রাগ ডিরেক্টরি,


৪. গর্ভবতী মায়ের খাবার

গর্ভবতী মায়ের খাবার

গর্ভাবস্থায় শিশুর বৃদ্ধি অনেকাংশে নির্ভর করে মায়ে ওপর৷ অর্থাত্‌ সুস্থ মা মানেই সুস্থ শিশু৷ শিশুর পরিপূর্ণ বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় সকল প্রকার খাদ্যের যোগান দিতে হয় মাকে৷ মা যে খাবার খাবেন শিশুও সেই খাবার খেয়ে পুষ্টি লাভ করে৷ এ কারণে স্বাভাবিক মহিলাদের তুলনায় একজন গর্ভবতী মায়ের খাবারের প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি৷ সঠিক পরিমাণে খাবার গ্রহণ না করলে সন্তান ঠিকমত বৃদ্ধি পাবে না৷ ফলে সন্তান অপুষ্টি নিয়ে জণ্মাবে৷ এ ধরনের শিশুর মৃতু্যর ঝুঁকি অনেক বেশি৷ গর্ভবতী অবস্থায় কী খাবেন এবং কোন খাবার গর্ভের সন্তান এবং মায়ের জন্য প্রয়োজন তা নিচে আলোচনা করা হলো-

প্রোটিন বা আমিষ
প্রোটিন শরীরের গঠন ও বৃদ্ধিতে সহায়তা করে৷ গর্ভাবস্থায় মায়ের প্রোটিনে চাহিদা স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে বেশি হয়৷ প্রোটিন মাছ, মাংস, ডিম, দুগ্ধজাত দ্রব্য, মটরশুটি, ডাল, বাদাম, ইত্যাদি বেশি পরিমানে খাবেন৷

ক্যালসিয়াম
গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরে ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি৷ গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাসে শিশুর হাড় ও দঁাতের গঠনের জন্য অনেক ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন হয়৷ দুধ, দুগ্ধজাত দ্রব্য, মাছ, বাদাম, কমলালেবু, শুকনো ফল, সবুজ পাতাসহ শাক-সবজি, ফুলকপি ও তৈলবীজ খাবারে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম আছে৷

আয়রন
আমাদের দেশের বেশির ভাগ গর্ভবতী মহিলাই রক্তশূন্যতায় ভুগে থাকেন৷ গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরে রক্তের পরিমাণ দ্বিগুণ বেড়ে যায়৷ এই সময় যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন গ্রহণ করা না যায় তাহলে রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে৷ তাই রক্ত স্বল্পতা প্রতিরোধ করার জন্য মাকে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে৷ গরু কিংবা খাসির কলিজা, বাচ্চা মুরগি, ডিম, মাছ, কলা, কচুশাক, পালং শাক এ সবের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আয়রন আছে৷

ফলিক এ্যাসিড
কোষ বিভাজনে ফলিক এ্যাসিডের বড় ধরণের ভূমিকা থাকার কারণে গর্ভাবস্থায় প্রচুর পরিমাণে ফলিক এ্যাসিড দরকার৷ ফলিক এ্যাসিড শিশুর মেরুদন্ড গঠনে সহায়তা করে৷ কোন কারণে ফলিক এ্যাসিডের অভাব হলে শিশুর মেরুদণ্ডে জণ্মগত ত্রুটি থাকতে পারে৷ সবুজ সবজিতে পাওয়া যায় ফলিক এসিড৷

ভিটামিন-এ
ভিটামিন এ-এর অভাবে বাচ্চাদের রাত কানা রোগ হয়৷ এ ছাড়া হাড় ও অভ্যন্তরীণ অঙ্গসমূহের গঠনের জন্য ভিটামিন এ প্রয়োজন৷ এ কারনে গর্ভবতী মায়েদের ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত, যেমন - মাংস, ডিম, তৈলাক্ত মাছ, দুগ্ধজাত দ্রব্য, তেল ও বাদাম৷

ভিটামিন-বি
এ সময় অনেক গর্ভবর্তী মহিলাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা যায়৷ এই ভিটামিন কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং শwক্ত বাড়ায়৷ যেমন - কলিজা, মাংস, মুরগির মাংস, যকৃত, মাছ, দুধ, দই, ডিম, ডাল, আটা, গম, ভুট্টা, কলা, পাকা বেল, পেয়ারা, পাকা েঁপপে, জাম, কঁাঠাল, লিচু, বাদাম, সবুজশাক সবজি, ঢেঁকি ছাটা চাল, সয়াবিন, সবুজ ফুলকপি, সিম, বঁাধাকপি ইত্যদি৷

ভিটামিন-সি
ভিটামিন সি শিশুর হাড় তৈরিতে সাহায্য করে৷ ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার যেমন - আমলকী, পেয়ারা, কমলা লেবু, বাতাবি লেবু, সবুজ শাক-সবজি, টমেটো এবং আলু খেতে হবে৷ মনে রাখবেন বেশিক্ষণ রান্না করলে ভিটামিন নষ্ট হয়ে যায়৷

ভিটামিন-ই
ভিটামিন ই রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে৷ আপেল, বাদাম, গাজর, বঁাধাকপি, ডিম, অলিভ তেল ও ও সূর্যমুখি বীজে ভিটামিন ই পাওয়া যায়৷

জিন্ক
গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস জিংক এবং ফলিক এ্যাসিডের ভূমিকা অপরিসীম৷ জিংক গর্ভপাত প্রতিরোধ করে এবং শিশুর ওজন বাড়ায়৷ এই জিন্ক পাওয়া যাবে প্রানিজ প্রোটিনে৷ তাছাড়াও চিনে বাদাম, মিষ্টি কুমড়ার বীজ, গম এসবে প্রচুর পরিমাণ জিন্ক থাকে যা আপনার গর্ভাবস্থায় চাহিদা পূরণে সক্ষম৷

ভিটামিন ট্যাবলেট
গর্ভাবস্থায় শরীরে অতিরিক্ত ভিটামিনের প্রয়োজন হয়৷ এই অতিরিক্ত ভিটামিনের চাহিদা খাবারের মাধ্যমে পূরণ করা সম্ভব না হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন ট্যাবলেট গ্রহণ করতে হবে৷

গর্ভবতী মহিলাদের প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় খাদ্যের পরিমাণ
খাদ্যের নাম খাদ্যের পরিমাণ
চাল/আটা ৪২৫ গ্রাম
ডাল ৬০ গ্রাম
মাছ/মাংস/ডিম ৬০ গ্রাম
আলু/মিষ্টি আলু ৬০ গ্রাম
শাক ১৮০ গ্রাম
সবজি ঌ০ গ্রাম
ফল ১ টা
তেল/ঘি ৬০ মিলিলিটার



ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসূত্র - নারী কিশোর থেকে বৃদ্ধা, ডা. সুমন চৌধুরী
১০ ই জানুয়ারি ২০০৫, দৈনিক জনকণ্ঠ
পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা৷


৫. গর্ভকালীন সময় কতদিন পর পর ডাক্তারের কাছে যাবেন

গর্ভকালীন সময় কতদিন পর পর ডাক্তারের কাছে যাবেন

গর্ভধারণের প্রথম ৭ মাসে প্রত্যেক মাসে ১ বার, পরবর্তী ২ মাসে ১৫ দিন পর পর এবং শেষের মাসে সপ্তাহে ১ বার করে প্রসবের পূর্ব পর্যন্ত একজন গর্ভবতী মহিলার ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত৷ কিন্তু আমাদের দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এতবার ডাক্তারের কাছে যাওয়া সম্ভব নয়৷ একারণে অন্তত পক্ষে ৪ বার একজন গর্ভবতী মহিলাকে সেবা কেন্দ্রে অথবা ডাক্তারের কাছে আসাতে হবে৷

নিম্নলিখিত ৪ বার স্ব্যাস্থ্য কেন্দ্রে আসতে হবে (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুযায়ী )
১ম ভিজিট - প্রথম ১৬ সপ্তাহ (৪ মাসের) মধ্যে
২য় ভিজিট - ২৪-২৮ সপ্তাহ (৬-৭ মাসের) মধ্যে
৩য় ভিজিট- ১ম মাস পর (৮ মাসের)মধ্যে
৪র্থ ভিজিট- ৩৬ সপ্তাহ (ঌ মাসের) দিকে

গর্ভাবস্থায় ইনজেকশন নেওয়া
গর্ভধারণের পর ৫ থেকে ৮ মাসের মধ্যে এক মাসের ব্যবধানে দুটি টি. টি ইনজেকশন নিতে হয়৷

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসুত্র-ড্রাগ ডিরেক্টরী,


৬. গর্ভকালীন বিপদজনক লক্ষণ

গর্ভকালীন বিপদজনক লক্ষণ

* চোখের পাতা, জিভ, দাঁতের মাড়ি, হাতের তালু ফ্যাকাশে হয়ে গেলে৷ সব সময় ক্লান্তি অনুভব করলে এবং ঘনঘন শ্বাস নিলে বা শ্বাসকষ্ট হলে
* সন্তান প্রসবের আগে ব্যথাহীন বা ব্যথাসহ যে কোনও অতিরিক্ত রক্তস্রাব শুরু হলে
* উচ্চ রক্তচাপ (১৪০/ঌ০ মিলিমিটার পারদ চাপের চেয়ে বেশি হলে)
* অতিরিক্ত মাথাব্যথা হলে, ঝাপসা দেখলে এবং চোখে অস্পষ্ট দেখলে
* গোড়ালি, হাত, মুখ ফুলে গেলে
* শরীরে খিঁচুনি হলে অথবা অজ্ঞান হয়ে গেলে৷
* জন্ডিসে চোখ হলদেটে হয়ে গেলে এবং প্রস্রাবের রং গাঢ় হলুদ বা লালচে হয়ে গেলে
* মাত্রাতিরক্তি বমি করলে
* প্রচন্ড জ্বর (স্থায়ী জ্বর, ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটের ওপরে)-৩ দিনের বেশি থাকলে
* তলপেটে প্রচন্ড ব্যথা করলে
* যোনিপথ দিয়ে কোন তরল পদার্থ বের হলে
* নির্দিষ্ট তারিখের ৩ সপ্তাহ বা তারও আগে পানি ভেঙে গেলে (গর্ভকালের ৩৭ সপ্তাহের আগে)
* প্রলম্বিত প্রসব (প্রসবকাল ১২ ঘন্টার বেশী),
* বাধাপ্রাপ্ত প্রসব হলে
* বাচ্চার অস্বাভাবিক অবস্থান থাকলে
* প্রসবের সময় গর্ভস্থ বাচ্চার নাড়ী কিংবা হাত-পা বেরিয়ে যাওয়া
* যৌনিপথের ঘন সবুজ স্রাব৷
* প্রসবের অনেকক্ষণ পরও গর্ভফুল না পড়া
* প্রসবোত্তর অত্যাধিক রক্তস্রাব

প্রসবকালে

* যৌনিপথ বা জরায়ুর মুখ ব্যাপকভাবে ছিঁড়ে যাওয়া
* জরায়ু ছিঁড়ে যাওয়া (ক্রমাগত প্রচণ্ড ব্যথা এবং অতিরিক্ত রক্তস্রাব)

পরামর্শ
যদি কোনও মহিলার গর্ভকালীন অবস্থায় উপযু©ক্ত লক্ষণসমূহ দেখা দেয় তবে তাকে দ্রুত স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে৷ একারণে সকল গর্ভবতী মায়ের জানা উচিত স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বা হাসপাতাল কোথায় এবং কীভাবে যেতে হবে৷

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসূত্র -
নারী, ডা. সুমন চৌধুরী,
ড্রাগ ডিরেক্টরি

৭. গর্ভাবস্থায় মায়ের সাধারণ সমস্যা কিভাবে নিরাময় করা যায়

গর্ভাবস্থায় মায়ের সাধারণ সমস্যা কিভাবে নিরাময় করা যায়

গর্ভাবস্থায় মায়ের ছোটখাটো অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে৷ অনেক সময় গর্ভবতী মা সেগুলো কাউকে বলেন না, আবার কখনও কখনও পরিবারের অন্য সদস্যরা তাতে গুরুত্ব দেন না৷ অথচ এসব সমস্যার সময়মতো উপশম না হলে গর্ভবতীর নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে৷ তাই গর্ভবর্তী মায়ের যেকোন স্বাস্থ্য সমস্যায় তাকে চিকিত্‌সকের কাছে অথবা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিত৷

গর্ভবর্তী মায়ের কিছু সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যার প্রতিকার ও পরামর্শঃ

বমি, বমির ভাব বা খাওয়ার অরুচি

বমি সাধারণত সকালের দিকেই বেশি হয় বেল সকালে কম খেয়ে দুপুর বা বিকালে একটু বেশি খেতে পারেন৷ তিন মাসের পর থেকে আস্তে আস্তে বমি কমে যায়৷ এ উপসর্গ সাধারণত মায়ের শরীরের খুব বেশি ক্ষতি করেনা৷ তবে খাওয়া দাওয়া কমে যাওয়ার জন্য দুর্বলতা দেখা দিতে পারে৷

বমি বা বমি ভাব প্রতিকারের জন্য প্রয়োজন

১৷ গর্ভবর্তী মাকে আশ্বস্ত করতে হবে

২৷ ঘুম থেকে উঠে শুকনা খাবার খেতে হবে যেমন- মুড়ি, বিস্কুট

৩৷ খাবারের অন্তত ঃ ১/২ ঘণ্টা পর পানি খেতে হবে

৪৷ বারেবারে অল্প করে খেতে হবে৷

৫৷ তাড়াতাড়ি ঢকঢক করে দুধ বা পানি পান করবেন না

৬৷ প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৷

রক্তস্বল্পতা
অনেক সময় গর্ভাবস্থায় রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়৷

১৷ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী প্রথম মাস থেকে ফলিক এসিড এবং ৩ মাসের পর থেকে পরিমাণমতো আয়রন ও ক্যালসিয়াম খেতে হবে৷

২৷ আয়রন সমৃদ্ধ খাবার যেমন- কচুর শাক, কলার মোচা, তেঁতুল, তরমুজ, কলিজা, ডিম ইত্যদি খেতে হবে৷ ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ খাবার যেমন- আমলকি, লেবু, কাঁচামরিচ, পেয়ারা, আঁনারস এবং কঁাচা ফলমূল খেতে হবে৷

৩৷ প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৷

* গলা ও বুক জ্বালা

গলা ও বুক জ্বালা গর্ভাবস্থায় মায়েদের একটা সাধারণ সমস্যা৷ অল্প ভোজন, দুশ্চিন্তা, অধিক পরিশ্রম এবং যথেষ্ট পরিমাণে পানি না করার জন্য এ ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে৷

* প্রতিকারের জন্য প্রয়োজন

সহজপাচ্য খাবার বারে বারে অল্প অল্প খেতে হবে

১৷ খাওয়ার পর পরেই শোয়া চলবে না, শোয়ার প্রয়োজন বেশি হলে মাথার নিচে দুটি বালিশ দিয়ে অর্ধ শয়ন অবস্থায় শুতে হবে

২৷ মসলাযুক্ত ভাজা খাবার খাওয়া যাবে না

৩৷ প্রচুর পরিমাণে ঠাণ্ডা পানি পান করতে হবে

৪৷ প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৷

কোষ্ঠকাঠিন্য

গর্ভাবস্থায় অনেকেই কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন৷ অনুপযুক্ত খাবর গ্রহণ, প্রয়োজনমতো পানি পান না করা ও অনিয়মিত পরিশ্রমের ফলে এ ধরনের সমস্যা দেখা দেয়৷
প্রতিকারের জন্য প্রয়োজন

১৷ প্রচুর পwরমাণে পানি পান করা৷

২৷ প্রচুর পরিমাণ শাক-সবজি ও টাটকা ফল খেতে হবে৷ যেমন - কলা, আম, গাছপাকা পেয়ারা, খেজুর, পেঁপে, আপেল ইত্যাদি৷ এছাড়াও দুধ-ভাত, কলা কিংবা আটার রুটি ও দুধ খাওয়া যেতে পারে৷

৩৷ নিয়মিত ঘরের কাজ ও হঁাটাচলা করতে হবে

৪৷ প্রয়োজনে চিকিত্‌সকের পরামর্শ অনুযায়ী ইসবগুলের ভুষি খেতে পারেন৷
অনিদ্রা
গর্ভাবস্থার শেষের দুই-তিন মাস অনিদ্রার ভাব হয়৷
প্রতিকারের জন্য প্রয়োজন

১৷ বিকেলে হঁাটা, শোবার আগে গরম দুধ খাওয়া বা বই পড়া ইত্যাদিতে উপকার হতে পারে৷

২৷ ঘুমের অসুবিধা হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন৷

হাত-পায়ে টান ধরা

বিশেষ করে রাতে অনেক সময় পায়ে টান ধরে৷ হালকা ম্যাসেজ বা গরম সেক দিলে উপকার পাওয়া যায়৷ এ অবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ নিন৷
পিঠে ব্যথা
গর্ভের প্রথমাবস্থা থেকে এ কষ্ট অনেক সময় দেখা দেয় যা শেষের দিকে খুব বেড়ে যেতে পারে৷
প্রতিকারের জন্য প্রয়োজন

১৷ শক্ত বিছানা ঘুমালে উপকার পেতে পারেন

২৷ শিরদঁাড়ায় ম্যাসেজ করতে পারেন

৩৷ হঁাটাচলার সময় কোমরে বেল্ট ব্যবহারে উপকার পাওয়া যায়৷

৪৷ সামনে ঝুঁকে কোনও কাজ করা যাবে না৷

৫৷ ভারী জিনিস উঠানো যাবে না৷

৬৷ ব্যথার ওষুধ বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া খাওয়া উচিত নয়৷

৭৷ প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৷

পায়ের শিরা ফুলে যাওয়া
অনেক সময় গভবর্তী মায়ের পায়ের শিরা ফুলে যেতে পারে৷

প্রতিকারের জন্য প্রয়োজন

১৷ দীর্ঘ সময় দঁাড়ানো যাবে না

২৷ পা তুলে বসতে হবে

৩৷ প্রয়োজনে ক্রেপ ব্যান্ডেজ বাঁধতে হবে৷

৪৷ প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৷
পা ফোলা

গর্ভাবস্থায় পা ফুলতে পারে, বিশেষ করে গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস সময়ে পা ফুলে গেছে কিনা দেখার জন্য উভয় গোড়ালির চারপাশে বুড়ো আঙুল দিয়ে চাপ দিন৷ যে পয়েন্টে চাপ দেওয়া হয় সেখানে যদি একটি ছোট গর্ত হয়ে যায় এবং শীঘ্র তা মিলিয়ে যায় তবে বুঝতে হবে পায়ে পানি নেমেছে৷ শরীরে লবণ বৃদ্ধির ফলে পায়ের গোড়ালি ফুলে যায় ও পানি জমে৷ শরীরে পানি জমলে বা শরীর ফুলে গেলে, ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী রোগীর রক্তচাপ, প্রস্রাব পরীক্ষা করা ও ওজন দেখা উচিত৷
প্রতিকারের জন্য প্রয়োজন

পা উঁচুতে রেখে বিশ্রাম নেওয়া

খাবারের সাথে বাড়তি লবন না খাওয়া

প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৷
বুক ধড়ফড় ও নিঃশ্বাসের কষ্ট

গর্ভাবস্থায় হার্টের কাজ বেড়ে যায়৷ কারণ মা ও শিশু দুইয়ের শরীরের রক্ত সঞ্চালনের প্রয়োজন হয়৷ অনেক সময় মায়ের রক্তশুন্যতা দেখা দেয়৷ এসব কারণে বুক ধড়ফড় করে৷ জরায়ুর বৃদ্ধির ফলে ফুসফুসের ওপর চাপ পড়ে এবং তার স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হয়৷ তাই নিঃশ্বাসের নিতে কষ্ট হয়৷
মূত্র নালীর সংক্রমণ

গর্ভবস্থায় প্রসাবে জ্বালা পোড়া হতে পারে৷ তাই

১৷ প্রচুর তরল পানীয় খেতে হবে

২৷ প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৷
জ্বর

গর্ভাবস্থায় খুব জ্বর হলে মা ও বাচ্চার উভয়ের জন্যে খুব বিপজ্জনক হতে পারে৷ এরূপ হলে হাসপাতালে বা ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত৷
অর্শ

কোষ্ঠকাঠিন্য ও অর্শ যদি একই সঙ্গে থাকে তবে তা গর্ভাবস্থায় বেড়ে যায়৷ সুতরাং পায়খানা পরিষ্কার হওয়া দরকার৷ এ অবস্থায় দেরী না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৷
মাথাব্যথা

অতিরিক্ত পরিশ্রম, ক্ষুদা এবং গরম লাগলে মাথা ব্যথা হতে পারে৷ একারণে এগুলো এড়িয়ে চলা উচিত৷


ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসুত্র-ড্রাগ ডিরেক্টরী,
নারী , ডা. সুমন চৌধুরী :



৮. প্রসবপূর্ব রক্তপাত

প্রসবপূর্ব রক্তপাত

যে কোন ধরনের জননেন্দ্রিয়ের রক্তপাত যাহা গভধারনের ২৮ সপ্তাহ পর থেকে শুরু হয় কিন্তু বাচ্চা প্রসবের পূর্বে হয়ে থাকে৷

কারণসমূহ

* সময়ের আগে গর্ভফুল বিচ্ছিন্ন হওয়া
* গর্ভফুর যথাস্থানে না থাকা একলামসিয়া
* জরায়ু ছিড়ে যাওয়া
* রক্ত জমাট বঁাধার সমস্যা
* অধিক বাচ্চা ধারণ অধিক বয়সে বা””া ধারণ
* মায়ের অপুষ্টিজনিত কারণ
* আঘাত জনিত কারণ৷

লক্ষণসমূহ

* হঠাত্‌ করে জননেন্দ্রিয় থেকে রক্তপাত শুরু হওয়া
* ব্যাথা থাকে না (প্রসব বেদনা থাকতে পারে৷
* রক্তক্ষরণের কারণে রোগীকে সাদা/ ফ্যাকাসে দেখাতে পারে৷
* রোগী শক্ এ চলে যেতে পারে৷

করণীয়
যতদ্রুত সম্ভব নিকটবর্তী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে৷
দাই দ্বারা জননেন্দ্রিয় হাত দিয়ে পরীক্ষা করা থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে৷

প্রতিরোধ

* ২ বা ৩ এর অধিক বাচ্চা না নেওয়া
* অধিক বয়সে বাচ্চা না নেওয়া
* গর্ভকালীন নিয়মিত চেক আপে থাকা
* পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করা
* অতিরিক্ত ভারী কাজ না করা৷


ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসূত্র :
Aids to Principles of Obstetrics and GynaecologyDr. C M Enayet (Pintu)

৯. গর্ভবতী মায়ের আলট্রাসনোগ্রাফি

গর্ভবতী মায়ের আলট্রাসনোগ্রাফি

গর্ভকালীন আলট্রাসনোগ্রাফির ব্যবহার অনেক বছর ধরে চলে আসছে৷ গর্ভবতীর জন্য আলট্রাসনোগ্রাফি একটি অতিপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা এবং গর্ভকালীন যে কোন সময়ে এ পরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে৷ গবেষণায় দেখা গেছে, আলট্রাসনোগ্রাফি গর্ভকালীন সময়ে নিরাপদ৷

স্বাভাবিক গর্ভাবস্থায় আলট্রাসনোগ্রাফির প্রয়োজনীয়তা :
গর্ভাবস্থায় কখন আলট্রাসনোগ্রাফি করাতে হবে, এ ব্যাপারে রোগীর ডাক্তার বা স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের মতামতই গুরুত্বপূর্ণ৷

প্রধানত তিনটি পর্যায়ে গর্ভবতীর আলট্রাসনোগ্রাফি করা উচিত-

প্রথম পর্যায় : মাসিক বন্ধ হওয়ার আট সপ্তাহের মধ্যে৷ যদিও মাসিক বন্ধ হওয়ার পঁাচ-ছয় সপ্তাহের মধ্যে আলট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে গর্ভধারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়৷ এ পর্যায়ে আলট্রাসনোগ্রাফি করার কারণগুলো হচ্ছে-

* গর্ভধারণ হয়েছে কি না তা নিশ্চিত হওয়া
* গর্ভধারণের নিশ্চিত সময় বের করা
* গর্ভধারণ স্বাভাবিক অর্থাত্‌ জরায়ুর মধ্যে না অস্বাভাবিক অর্থাত্‌ জরায়ুর বাইতে তা জানা
* গর্ভস্থ সন্তান একটি, যমজ বা ততধিক কি না তা জানা
* জরায়ুর ভ্রূণের এক ধরনের টিউমার অর্থাত্‌ মোলার প্রেগনেন্সি কি না তা নির্ধারণ
* গর্ভধারণকালে উপসর্গগুলোর মতো তলপেটের কিছু টিউমার এবং হরমোন নিঃসৃতকারী কিছু ডিম্বাশয়ের টিউমার নিরূপণের জন্য৷
* জরায়ুর এক ধরনের টিউমার যা স্বাভাবিক গর্ভধারণকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে৷ যেমন - মায়োমা বা ফাইব্রয়েড আছে কি না তা নির্ণয় করা৷

দ্বিতীয় পর্যায় :

গর্ভধারণের ১৮-২২ সপ্তাহের মধ্যে -

*

গর্ভধারণের সঠিক সময় নির্ধারণ
*

গর্ভস্থ সন্তান একটি, যমজ বা ততধিক কিনা তা নির্ধারণ৷
*

গর্ভস্থ সন্তানের কোনও জণ্মগত অস্বাভাবিকতা আছে কিনা তা নির্ণয় করা৷
*

গর্ভফুলের সঠিক অবস্থান জানা৷ গর্ভফুল স্বাভাবিক অবস্থানের চেয়ে নিচে অবস্থান করলে যেসব গর্ভবতীকে উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন গর্ভবতী বলা হয়৷ তাদের ক্ষেত্রে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বনের জন্য আলট্রাসনোগ্রাফি জরুরি৷
*

মায়োমা বা ফাইব্রয়েড আছে কিনা তা নির্ণয় করা৷


তৃতীয় পর্যায় :

গর্ভধারণের ৩২-৩৬ সপ্তাহের মধ্যে-

*

গর্ভস্থ সন্তানের স্বাভাবিক বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে কিনা তা নির্ণয়

গর্ভস্থ সন্তানের কোনও জণ্মগত ত্রুটি বা অস্বাভাবিকতা নির্ণয় যা আগের আলট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষায় ধরা পড়েনি৷

*

গর্ভস্থ সন্তানের মাথা ও পা স্বাভাবিক অবস্থানে আছে কিনা তা দেখা৷
*

গর্ভফুলের অবস্থান সঠিকভাবে নির্ণয়৷
*

গর্ভফুলের মধ্যস্থিত তরল পদার্থের পরিমাণ জানা৷

সম্ভাব্য জটিলতা যেমন- মায়োমা বা ফাইব্রয়ের এবং ডিম্বাশয়ের টিউমার ইত্যাদি নিরূপণ৷ এ যুগে সন্তান ছেলে না মেয়ে হবে তা গুরুত্বপূর্ণ নয়৷ বরং নিরাপদ মাতৃত্ব তথা সুস্থ সন্তান প্রসবই বেশি গুরুত্বপূর্ণ৷ তাই সন্তান ছেলে না মেয়ে হবে শুধু তা জানার জন্য আলট্রাসনোগ্রাফি করা ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়৷

আলট্রাসনোগ্রাফির জন্য আগাম প্রস্তুতি
মায়ের প্রস্রাবের চাপ থাকতে হবে৷ এ জন্য পরীক্ষার এক ঘণ্টা আগে রোগীকে চার-পঁাচ গ্লাস পানি বা অন্য কোনও পানীয় পান করাতে হবে৷ আল্ট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষার আগে রোগী যেন প্রস্রাব না করেন সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে৷

শেষ কথা
একটি বিষয় বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, গর্ভকালে মাসে কিংবা প্রস্রবের আগে প্রতি ডাক্তারের সঙ্গে প্রতি সাক্ষাতেই আলট্রাসনোগ্রাফি করা জরুরি নয়৷ যদি না না গর্ভবতীর কোনো জটিলতার আশন্কা থাকে৷ এ বিষয়ে সংশি­ষ্ট চিকিত্‌সকের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে৷

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্য সূত্র:
দৈনিক প্রথম আলো

১০. ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভ

ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভ

একজন সুস্থ মা একটি সুস্থ শিশুর জণ্ম দিতে পারে৷ গর্ভকালীন সময় ঝুঁকির কারণ এবং লক্ষণগুলো জেনে নিন৷

ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভের কারণ

* প্রথম গর্ভধারণের সময় নারীর বয়স ২০ বছরের কম বা ৩৫ বছরের বেশি বয়সে বাচ্চা হলে
* মায়ের উচ্চতা ৪ ফুট ১০ ইঞ্চি (১৪৫ সেন্টিমিটার) এর কম হলে
* গর্ভে বাচ্চা অস্বাভাবিকভাবে অবস্থান (বাচ্চা গর্ভে আড়াআড়িভাবে অবস্থান এবং বাচ্চার মাথা ওপর দিকে অবস্থান) করলে৷
* প্রি-একলাম্পসিয়া এবং একলাম্পসিয়া হলে
* রক্তস্বল্পতা (হিমোগ্লোবিন ৫০% এর নিচে)
* গর্ভস্থ যমজ বাচ্চা
* গর্ভে পানির পরিমাণ বেশি
* পূর্বে মৃত বাচ্চা প্রসবের ইতিহাস, গর্ভে বাচ্চা মরে থাকা এবং স্বাভাবিকভাবে ফুল বের না হলে হাত দিয়ে বের করার ইতিহাস থাকলে৷
* অধিক সন্তান জণ্ম দেওয়া বয়স্ক মা
* বিলম্বিত গর্ভ (সম্ভাব্য প্রসবের তারিখের ১৪ দিন পরেও বাচ্চা প্রসব না হওয়া)
* গর্ভের সঙ্গে অন্যান্য সাধারণ অসুখ যেমন - হার্টের অসুখ, কিডনির অসুখ, ডায়াবেটিস, যক্ষ্না, জন্ডিস এবং উচ্চ রক্তচাপ অসুখ ইত্যাদি৷
* পূর্বে সিজারিয়ান অথবা যন্ত্রপাতির সাহায্যে প্রসব হয়ে থাকলে গর্ভকালীন অবস্থায় মহিলাদের যে সমস্ত ঝুঁকিপূর্ণ লক্ষণ দেখা যেতে পারে-
* রক্ত স্রাব (প্রসবপূর্ব, প্রসব পরবর্তী)৷
* প্রি-একলামশিয়া বা একলামশিয়া (গর্ভবতী মহিলার ৬ মাসের পরে উচ্চ রক্তচাপ, হাত পা ফুলে যাওয়া এবং প্রসাবে এ প্রোটিন গেলে প্রি-একলামশিয়া বলে৷ আর প্রি-একলামশিয়ার সঙ্গে যদি খিঁচুনি হয় তখন তাকে একলামশিয়া বলে) হতে পারে৷
* গর্ভস্থ শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি কম হতে পারে
* নির্ধারিত সময়ের আগে অপরিণত প্রসব হওয়া
* নির্ধারিত সময়ের আগে পানি ভাঙ্গা (গর্ভকালের ৩৭ সপ্তাহের আগে)৷
* প্রসববেদনা ১২ ঘণ্টার বেশি স্থায়ী হওয়া
* বাধাগ্রস্ত প্রসব৷
* মৃত সন্তান প্রসব৷
* গর্ভফুল আটকে যেতে পারে
* ৪৮ ঘণ্টা (২ দিন) মধ্যে শিশুর মৃতু্য হলে
* ফিস্টুলা (যৌনি ও মূত্রথলির ফিস্টুলা অথবা যোনি ও মলদ্বারের ফিস্টুলা)

পরামর্শ
আপনি গর্ভধারনের জন্য ঝঁুকির মধ্যে আছেন কিনা তা জানার জন্য গর্ভধারণের পূর্বে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন৷ গর্ভ অবস্থায় ডাক্তার অথবা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে নিয়মিত চেকআপ করাতে পারেন৷ গর্ভ সময় উপর্যু্ক্ত সমস্যা দেখা দিলে বিলম্ব না করে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন৷ সম্ভাব্য ঝঁুকি এড়াতে হলে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন৷ আশেপাশে ডাক্তার না থাকলে সেই মূহূর্তে স্বাস্থ্যকর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করুন৷ গর্ভ অবস্থায় কাছাকাছি কোনও ডাক্তার বা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঠিকানা জেনে রাখবেন এবং জরুরি যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত থাকুন৷

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্য সূত্র - নারী
ডা. সুমন চৌধুরি
ড্রাগ ডিরেক্টরি,


১১. নিরাপদ প্রসব স্থান

নিরাপদ প্রসব স্থান

বাচ্চা প্রসবের স্থান স্বাস্থ্যসম্মত হওয়া উচিত৷ কারণ বাচ্চা প্রসবের সময় মা ও শিশুর অনেক রোগ সংক্রমণ হতে পারে৷ হাসপাতাল, স্বাস্থ্য কেন্দ্র, মাতৃসদন প্রসবের জন্য নিরাপদ স্থান বলা যায়৷ তবে এ রকম কোনও সুযোগ না থাকলে বাড়িতে বাচ্চা প্রসবের স্থান ঠিক করা উচিত৷

প্রসবের ঘরটা কেমন হওয়া উচিত -
এমন একটি জায়গা প্রসবের জন্য নির্ধারণ করতে হবে যেখানে পর্যাপ্ত আলো বাতাস পায় এবং জায়গাটা শুকনো হয়৷ ঘর এবং ঘরের আসবাবপত্র এবং বিছানার চাদর বালিশের কাভার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে৷ একজনের উপযুক্ত একটি চৌকি বা খাট থাকতে হবে৷ চৌকির উপর নরম বিছানার ব্যবস্থা করতে হবে৷ প্রসবের সরঞ্জাম রাখার জন্য একটি টেবিল রাখতে হবে৷ বাচ্চার জিনিস পত্র রাখার জন্য আরেকটি টেবিল রাখলে ভাল হয়৷ বৈদু্যতিক আলো চলে গেলে ঘরে আলোর ব্যবস্থা করতে হবে৷
প্রসবের আগে যে সব জিনিসপত্র তৈরি রাখতে হবে

* অনেকগুলো খুব পরিষ্কার কাপড় বা কঁাথা৷
* পরিষ্কার তুলা এক প্যাকেট৷
* গজ এক প্যাকেট৷
* নাড়ি কাটার জন্য একটা নতুন কঁাচি (নড়ি কাটার আগে সেটা ফুটিয়ে নিন)৷
* নাড়ি চাপা দেওয়ার জন্য জীবাণুমুক্ত গজ বা পরিষ্কার কাপড় কয়েক টুকরা৷

* নাড়ি বঁাধার জন্য দুটি পরিষ্কার ফিতা বা সূতা৷
* শিশুর জামা-কাপড় (ধোয়া, পরিষ্কার ও মোলায়েম)৷
* ছোট তোয়ালে -২টা৷
* রবার ক্লাথ৷
* বিছানার চাদর৷
* স্যানিটারি প্যাড বা পরিষ্কার কাপড় প্যাকেট৷

বাড়িতে প্রসবের জন্য হাতের কাছে যে সমস্ত জিনিসপত্র রাখা উচিত

* রবার বা অয়েল ক্লথ (১.৫(১.৫ গজ) -২টা
* এনামেলের গামলা বড় ২টা, ছোট-২টা
* এনামেলের হাঁড়ি (পানি ফুটাবার জন্য) -১টা
* ডুস সেট (ক্যান, রবারের নল ইত্যাদি) -১টা
* গরম পানির ব্যাগ -১টা
* পানি খাওয়ানোর কাপ -১টা
* কঁাচি -১টা
* সেফটি পিন (বড় ও ছোট) -১ ডজন
* সঁুই সূতা - প্রয়োজন অনুযায়ী
* পরিশুদ্ধ তুলা - দুই প্যাকেট
* শিশুর নাভি বঁাধবার জন্য পরিষ্কার সূতা- প্রয়োজনমতো
* স্পিরিট/ডেটল
* সাবান -১টি৷

পরামর্শ
প্রসবব্যথা শুরু হলে চুলায় পানি ফুটাতে আরম্ভ করা প্রয়োজন, যাতে প্রয়োজন হলেই গরম পানি পাওয়া যায়৷ ঘরের সব জিনিসপত্র এমনভাবে গুছিয়ে রাখতে হবে যাতে প্রসবের সময় তাড়াতাড়ি সব জিনিস হাতের কাছেই পাওয়া যায়৷

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসুত্র-ড্রাগ ডিরেক্টরী,
নারী ,ডা. সুমন চৌধুরী :


১২ প্রসব

প্রসব

প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ
গর্ভের মোট সময় কাল ধরা হয় ৪০ সপ্তাহ বা ২৮০ দিন বা ঌ মাস ৭ দিন৷ শেষ মাসিকের প্রথম দিনটিকে গর্ভধারনের প্রথম দিন ধরে প্রসবের তারিখ নির্ধারন করা হয়ে থাকে৷ যেমন - গর্ভধারণের শেষ মাসিকের প্রথম দিন যদি ২০ ডিসেম্বর হয় তবে প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ হবে ২৭ সেপ্টম্বর৷ এ ক্ষেত্রে প্রতি মাসকে ৩০ দিন হিসেবে ধরা হয়৷ প্রসবের প্রস্তুতির জন্য এভাবে প্রসবের তারিখ নির্ণয় করা যায়৷ এই তারিখের ২ সপ্তাহ আগে বা পরে যে কোনও তারিখে সাধারণত প্রসব হয়ে থাকে৷

প্রসব আরম্ভের লক্ষণ

প্রসব শুরু হওয়ার ৪টি লক্ষণ রয়েছে
১.প্রসব বেদনা ও সঙ্গে সঙ্গে জরায়ুর সংকোচন
২.যোনীপথে রক্ত মিশ্রিত স্রাব বের হওয়া
৩.জরায়ুর মুখ খুলে যাওয়া
৪.পানিপূর্ণ থলি

প্রসব বেদনা
একজন গর্ভবতীর প্রসব বেদনা ছাড়াও অন্যান্য অনেক কারণে পেটে ব্যথা হতে পারে৷ প্রসব বেদনা হলে ব্যথার সঙ্গে জরায়ুও সংকুচিত হবে৷ জরায়ুর সংকোচন হচ্ছে কিনা বোঝার উপায় হচ্ছে, যখন ব্যথা হয় ঠিক তখনই জরায়ুও সংকুচিত হয়৷ তখন পেটে হাত দিলে অনুভব করা যাবে যে জরায়ু শক্ত হয়ে আছে৷ আর ঠিক তার পরক্ষণেই যখন ব্যথা নেই অর্থাত্‌ জরায়ু স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে তখন পেটে চাপ দিলে হাতে অনুভব করা যাবে যে জরায়ু নরম হয়ে আছে৷ প্রসব বেদনার আরো একটি চরিত্র আছে৷ এই ব্যথা একবার আসে আর চলে যায়, আবার আসে৷ এটা বারবার হতে থাকে৷ সময় যত যায় বেদনার তীব্রতা তত বাড়তে থাকে এবং দুই ব্যথার মাঝখানে বিরতির সময়ও কমে আসতে থাকে৷ প্রসব বেদনা শুরু হয় পিঠের দিকে এবং ধীরে ধীরে তা সামনের (উরুর) দিকে এগিয়ে আসে৷

যোনিপথে রক্ত মিশ্রিত স্রাব নির্গমণ
প্রসব বেদনা শুরু হলে যোনিপথ থেকে অল্প অল্প পরিমাণ রক্ত মিশ্রিত স্রাব বের হতে থাকে৷ একে চিকিত্‌সা পরিভাষায় শো বলে৷ গর্ভাবস্থায় জরায়ুর মুখ সাধারণত ঢাকা থাকে৷ ঢাকনাটি জরায়ুর মধ্যের শিশুটিকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে৷ এই ঢাকনাটি প্রসবের আগে খুলে বেরিয়ে আসে এবং তখনই এই রক্তস্রাব শুরু হয়৷

জরায়ুর মুখ খুলতে থাকা
গর্ভকালে জরায়ু মুখ পুরোপুরি বন্ধ থাকে কিন্তু প্রসব বেদনা শুরু হলেই জরায়ুর মুখ ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করে৷

পানিপূর্ণ থলি
গর্ভস্থ শিশু একটি থলির মধ্যে থাকে৷ থলিটা একটি বিশেষ জলীয় পদার্থে ভর্তি থাকে৷ প্রসবকালে জরায়ুর মুখ খুলে গেলে গর্ভফুলের পর্দা কিছু পরিমাণ ঐ জলীয় পদার্থসহ জরায়ুর মুখ দিয়ে দিয়ে নিচের দিকে ঝুলে পড়ে৷ শিশু ভূমিষ্ঠ হবার পূর্বে এই পানির থলি ভেঙে যায় এবং যোনিপথে পানির মতো জলীয় পদার্থ বের হয়ে আসে৷

স্বাভাবিক প্রসব প্রক্রিয়া
প্রসবের তিনটি স্তর

প্রথম স্তর
প্রসবের প্রথম স্তর হলো প্রসব বেদনা শুরু হওয়া থেকে জরায়ুর মুখ সম্পূর্ণ খুলে যাওয়া পর্যন্ত সময় বা অবস্থা৷ প্রথম সন্তানের ক্ষেত্রে প্রথম জরায়ুর মুখ খুলতে সময় লাগে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টার মতো৷ দ্বিতীয় বা পরবর্তী সন্তানের ক্ষেত্রে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা সময় লাগে৷

দ্বিতীয় স্তর
জরায়ুর মুখ সম্পূর্ণভাবে খোলা থেকে শিশু সম্পর্ণ ভূমিষ্ট হওয়া পর্যন্ত সময় বা অবস্থা৷ এই সময় পানির থলি ফেটে যায় এবং শিশু জরায়ু থেকে প্রসব পথে ভূমিষ্ট হয়৷ প্রসবের এই স্তর সম্পন্ন হতে ২ ঘণ্টার বেশি সময় লাগে না৷

তৃতীয় স্তর
শিশু ভূমিষ্ঠ হবার পর গর্ভফুল বের হয়ে যাওয়া পর্যন্ত সময় বা অবস্থা৷ সাধারণত ৫ মিনিট থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে গর্ভফুল বেরিয়ে আসে৷ গর্ভফুল বের হওয়ার পরে দেখা উচিত তা সম্পূর্ণরূপে বের হয়েছে কিনা৷ গর্ভফুলের কোনও অংশ ছিঁড়ে জরায়ুতে রয়ে গেলে প্রসূতিকে নিকটতম স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে৷ প্রসবের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে অর্থাত্‌ প্রসব বেদনা শুরু হওয়া থেকে গর্ভফুল বের হওয়া পর্যন্ত প্রথম গর্ভবতীর জন্য সময় লাগে সর্বোচ্চ ২৪ ঘণ্টা এবং দ্বিতীয় বা তার পরের গর্ভবতীর সর্বোচ্চ ১২ ঘণ্টা সময় লাগে৷ এই সময়ের মধ্যে প্রসব সম্পন্ন না হলে গর্ভবতীকে দ্রুত নিকটস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে ৷

অস্বাভাবিক প্রসব
স্বাভাবিক প্রসবের ব্যতিক্রম যে কোন প্রসবকে অস্বাভাবিক প্রসব বলা যায়৷ গর্ভস্থ ভ্রূণের সংখ্যা, অস্বাভাবিক অবস্থান অস্বাভাবিক প্রসবের কারণ৷ অস্বাভাবিক প্রসবের ব্যবস্থাপনা হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে করতে হবে৷ তাই রোগীকে যত দ্রুত সম্ভব স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে৷ নিম্নে কিছু অস্বাভাবিক প্রসব সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো৷ গর্ভস্থ শিশুর অস্বাভাবিক অবস্থানপ্রসবের সময় জরায়ুতে শিশুর অবস্থানের ওপর প্রসবের সুবিধা-অসুবিধা নির্ভর করে৷ শিশুর মাথাটি যদি নিচের দিকে অর্থাত্‌ জরায়ুর মুখে থাকে তাহলে তা স্বাভাবিক অবস্থা৷ কখনো কখনো আবার মাথা নিচের দিকে না থেকে শিশুর দেহের অন্য অংশও নিচের দিকে থাকতে পারে৷ এগুলোকে অস্বাভাবিক অবস্থান বলে এবং এগুলো অস্বাভাবিক প্রসবের কারণ৷ অস্বাভাবিক অবস্থা অনেক রকম হতে পারে-

* শিশুর পাছা জরায়ুর মুখে ও মাথা ওপর দিকে থাকলে
* শিশুটি জরায়ুতে আড়াআড়িভাবে থাকতে পারে
* শিশুর মুখ নিচের দিকে থাকতে পারে

গর্ভে যমজ শিশু
একই গর্ভকালে জরায়ুর ভেতরে একটির পরিবর্তে দুটি সন্তান হলে তাকে যমজ সন্তান বলে৷ এক্ষেত্রে গর্ভবতীর পেট স্বাভাবিকের চেয়ে বড় থাকে, পেট হাত দিয়ে পরীক্ষা করলে দু'টো মাথা বুঝতে পারা যায়৷ যমজ সন্তান নিশ্চিত হলে প্রসূতিকে অবশ্যই প্রসবের জন্য হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠাতে হবে৷ কারণ যমজ সন্তানের প্রসবে অনেক জটিলতা দেখা দিতে পারে৷

দীর্ঘস্থায়ীপ্রসব
যদি কোন কারণে প্রথম গর্ভের ক্ষেত্রে প্রসবে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় লাগে এবং দ্বিতীয় বা তার পরের গর্ভের ক্ষেত্রে ১২ ঘণ্টার বেশি সময় লাগে তবে তাকে দীর্ঘস্থায়ী প্রসব বলে৷ গর্ভে সন্তানের অবস্থান অস্বাভাবিক হলে, বস্তিকোটরের হাড়ের গঠন অস্বাভাবিক হলে, গর্ভবতীর মারাত্মক অপুষ্টি থাকলে প্রসব দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে৷ এ অবস্থায় রোগীকে হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে৷ আমাদের দেশে গর্ভবতী মায়ের মৃতু্য, মৃত প্রসব ও শিশু মৃতু্যর একটি অন্যতম কারণ দীর্ঘস্থায়ী প্রসব৷ সময়মত রোগীকে হাসপাতালে বা স্বাস্থ্যকেন্দ্র পাঠলে মা ও শিশুর মৃতু্যহার অনেকাংশে কমানো সম্ভব৷

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসুত্র-ড্রাগ ডিরেক্টরী,
ডা. সুমন চৌধুরী :


{mospagebreak title=প্রসবোত্তর সেবা }

প্রসবত্তোর সেবা

সন্তান জণ্ম দেওয়াই শেষ নয়৷ সন্তান জণ্ম দেওয়ার পর দায়িত্বটা আরো একগুন বেড়ে যায়৷ সন্তান এবং নিজেকে কীভাবে সুস্থ রাখা যায় সে জন্য কি করণীয় তা জানা প্রয়োজন৷
সে সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো


১. প্রসবোত্তর পরিচর্যা

মায়ের এবং শিশুর স্বাভাবিক স্বাস্থ্য ফিরিয়ে আনতে প্রসূতি মায়ের বিশেষ যত্ন -

* সন্তান জণ্মানের পর মায়ের অন্তত ছয় ঘণ্টা বিশ্রাম নিতে হবে৷ এ সময়ে অত্যধিক রক্তস্রাব বা অন্য কোনও কষ্ট হলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিতে হবে৷ মায়ের ক্ষিদে থাকলে সামান্য কিছু খাবার দেওয়া যেতে পারে৷
* ছয় বা আট ঘণ্টা বিশ্রামের পর বাথরুমে যাওয়া, নবজাতককে বুকে নেওয়া ইত্যাদি কাজ শুরু করা উচিত৷ যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব হঁাটাচলা শুরু করা উচিত তাহলে নিজেকে সুস্থ মনে হবে যেমন
* অসুস্থ ভাব চলে গিয়ে সদ্য মা হওয়ার সুখ অনুভূত হয়৷
* পায়খান বা প্রস্রাব করতে কম অসুবিধা হয়
* জরায়ুতে রক্ত ও অন্যান্য স্রাব জমা না থেকে সহজে বেরোতে পারে৷ ফলে জরায়ু দ্রুত ছোট হয়ে স্বাভাবিক অবস্থানে ফিরে আসে৷
* শিরাতে রক্ত জমাট বেঁধে মারাত্মক ক্ষতির সম্ভাবন কমে যায়৷ তবে কোনও অবস্থাতেই অন্তত ছয় সপ্তাহের আগে মায়েদের সম্পূর্ণ স্বাভাবিক কাজকর্ম শুরু করা উচিত নয়৷ এ সময়ে যতটা সম্ভব বিশ্রাম নিতে হবে৷ দিনের বেলা খাওয়ার পর অবশ্যই দু-ঘণ্টা ঘুমানো দরকার৷ এ ছাড়া কোনও ভারী জিনিস তোলা বা ঠেলা অথাবা বেশি পরিশ্রমের কাজ করা উচিত নয়৷
* সন্তান জণ্মানোর দিন সাধারণত হাল্কা খাবার দিলেও পরদিন থেকেই মায়েদের স্বাভাবিক খাবার েদওয়া উচিত৷ কারণ বাচ্চাকে বুকের দুধ দেওয়ার জন্য বেশি পরিমাণে প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন, খনিজ পদার্থ এবং প্রচুর পরিমাণ তরল পানীয় খেতে দিতে হবে৷
* অনেক সময় মূত্রথলিতে জমা থাকলেও প্রস্রাবের অসুবিধা হতে পারে৷ সেজন্য সন্তান জণ্ম হওয়ার ছয়-আট ঘণ্টা পর এবং তারপর প্রতি চার থেকে ছয় ঘণ্টায় মেয়েদের নিজের চেষ্টায় প্রস্রাব করা উচিত৷ অন্যথায় মূত্রনালীতে সহজেই জীবাণু সংক্রমণ ঘটতে পারে৷ প্রয়োজনে চিকিত্‌সকের পরামর্শ নেওয়া উচিত৷
* সন্তান জণ্ম হওয়ার পর কোষ্ঠকাঠিন্য একটি সাধারণ সমস্যা৷ পেট এবং কোমরের মাংসপেশীর শিথিলতা, জননদ্বার ও তার চারপাশের ব্যথা ইত্যাদি কারণে পায়খানা করতে অসুবিধা হতে পারে৷ তবে স্বাভাবিক খাবার ও প্রচুর পানি খেলে এবং তাড়াতাড়ি হঁাটাচলা শুরু করলে এ অসুবিধা দূর হয়৷ প্রয়োজনে চিকিত্‌সকের পরামর্শ নেওয়া উচিত৷
* এ সময়ে শারীরিক ও মানসিক বিশ্রাম অত্যন্ত জরুরি৷ অত্যধিক কায়িক শ্রম অথবা দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত থাকার জন্য যথেষ্ট ঘুম দরকার৷ প্রয়োজনে চিকিত্‌সকের পরামর্শ নেওয়া উচিত৷
* সন্তান জণ্ম হওয়ার পরপরই জননদ্বার/মলদ্বার এবং তার চারপাশ পরিষ্কার সাবান পানি বা ডেটল পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার কাপড় বা স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করা৷ প্রতিবার পায়খানা/প্রস্রাবের পর একইভাবে যত্ন নেওয়া উচিত৷ জায়গাগুলো যতটা সম্ভব শুকনো রাখা এবং নিয়মিত কাপড় বা প্যাড পাল্টানো উচিত৷ এ ছাড়া অনেক ক্ষেত্রে জননদ্বারে সেলাই দেওয়া থাকে৷ সেক্ষেত্রে বেশি সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত৷ দিনে অন্তত দুবার গরম পানিতে ডেটল এসব অঙ্গ ধোয়া উচিত৷
* জননদ্বার সেলাই থাকলে সাধারণত পঁাচ থেকে সাত দিনের মধ্যে তা শুকিয়ে যায়৷ যতদিন পর্যন্ত ক্ষত না শুকোয় বা জরায়ু থেকে স্রাব বন্ধ না হয় ততদিন পুকুরে গোসল করা উচিত নয়৷
* স্তনের যত্ন বিশেষভাবে নেওয়া উচিত৷ কারণ শিশুর জন্য মায়ের দুধ আদর্শ খাবার৷ তাছাড়া শিশু দুধ ঠিকমতো না টানতে পারলে দুধ জমে স্তনে ব্যথা বা মারাত্মক ফেঁাড়া হতে পারে৷ প্রতিবার শিশুকে স্তনে দেওয়ার আগে পরিষ্কার পানি দিয়ে স্তনের বেঁাটা ধুয়ে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে নিতে হয়৷ শিশুর খাওয়া শেষ হলে শুকনো কাপড়ে মুছে পরিষ্কার পাতলা কাপড়ে দিয়ে স্তনের বেঁাটা ঢেকে রাখ দরকার৷
* মা যদি সুস্থ থাকেন, তবে শিশুকে মায়ের কাছেই রাখা উচিত৷ এতে মা ও শিশু দুজনেরই মানসিক ও শারীরিক ঘনিষ্ঠতা সহজে তৈরি হয়৷
* প্রতিদিন অন্তত কিছুক্ষণ উপুড় হয়ে শোয়ার অভ্যাস করা উচিত৷ এতে জরায়ু স্বাভাবিক অবস্থানে সহজে ফিরে আসে৷
* সন্তান জণ্ম হওয়ার পর ছয় সপ্তাহ স্বামী সহবাস বন্ধ রাখা উচিত৷
* সন্তান হওয়ার পর দু থেকে চারwদন পর্যন্ত তলপেটে মাঝে মাঝে কামড়ে ধরার মতো ব্যথা হয়৷ দুটি কারণে এ রকম হতে পারে৷ প্রথমত, জরায়ুর মধ্যে রক্ত জমে থাকলে তা বের করে দেওয়ার জন্য জরায়ুতে সংকোচন হয়৷ একাধিকবার সন্তানের জণ্ম দিয়েছেন এমন মায়েদের সন্তান হওয়ার পর জরায়ুর অতি সংকোচনের ফলে জরায়ুতে রক্ত চলাচল কমে যাওয়ার জন্য ব্যথা হয়৷ উভয় ক্ষেত্রেই শিশুকে দুধ খাওয়ানোর সময় ব্যথা সামান্য বাড়তে পারে৷ তলপেটে আলতো করে চাপ দিয়ে জরায়ুতে ম্যাসেজ করলে অনেক সময় জমে থাকা রক্ত বেরিয়ে যায়৷ প্রয়োজনে চিকিত্‌সকের পরামর্শ নেওয়া উচিত৷
* জননদ্বার বা তার চারপাশে সন্তান জণ্মের সময় অত্যধিক চাপ পড়ায় যে আঘাত লাগে, তার জন্য কয়েকদিন ব্যথা থাকতে পারে৷ যদি ব্যথা খুব বেশি হয় বা ক্রমশ বাড়তে থাকে, তবে দ্রুত চিকিত্‌সকের পরামর্শ নেওয়া উচিত৷
* আমাদের দেশে সব মহিলা কমবেশি রক্তাস্বল্পতায় ভোগে৷ সন্তান জণ্মানোর পর তা হঠাত্‌ বেড়ে যেতে পারে৷ রক্তাস্বল্পতা থাকলে চিকিত্‌সকের পরামর্শ অনুযায়ী আয়রন ট্যাবলেট খাওয়া যেতে পারে৷

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসুত্র-ড্রাগ ডিরেক্টরী,
নারী, ডা. সুমন চৌধুরী


২. প্রসবোত্তর মা ও শিশুর সাধারণ সমস্যার সমাধান


মায়ের সাধারণ সমস্যা বা করণীয় দুধ জমে যাবার কারণে স্তন ফুলে উঠলে আপনার করণীয়-

* নিয়মিতভাবে দুধ বের করে ফেলা এবং বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যেতে হবে৷
* প্রয়োজন হলে চিপে বা পাম্প দিয়ে জমাট দুধ বের করে ফেলতে পারেন
* বুকের দুধ খাওয়ানোর পদ্ধতি মাকে জানতে হবে এবং প্রয়োজনে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের স্বাস্থ্যকর্মীদের পরামর্শ নিতে পারেন৷


স্তনের বোঁটায় ঘা বা ফেঁটে যাওয়া

* স্তনের বোঁটা শুস্ক এবং পরিষ্কার রাখতে হবে৷
* তৈলাক্ত জিনিস ব্যবহার না করা যেমন - ভেসলিন, ক্রিম, অলিভ অয়েল ইত্যাদি৷
* বুকের দুধ খাওয়ানোর পদ্ধতি মাকে জানতে হবে
* আয়রন ও ক্যালসিয়াম সমৃন্ধ খাবার খেতে হবে (সবুজ শাক-সব্জি, সীম, ডিম, দুধ, মাছ, মাংস)৷
* প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৷

পিঠের ব্যথা, শরীরের ব্যথা, তলপেটের ব্যথায় করণীয়

* মাকে আশ্বস্ত করতে হবে যেন দুশ্চিন্তা না করে
* গরম পানিতে গোসল বা গরম সেক নিতে হবে৷
* ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খেতে হবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এবং পাশাপাশি ভিটামিন ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে৷
* যৌনীপথে ক্ষত থাকলে ডাক্তারের পরামশ নিতে হবে

প্রসোবত্তর মায়ের জটিল স্বাস্থ্য সমস্যা

* প্রসব পরবর্তী রক্তস্রাব (যৌনীপথে অস্বাভাবিক রক্তপাত)
* প্রসব পরবর্তী খিঁচুনি
* পেরিনিয়াম (জননেন্দ্রিয়ের মধ্যবর্তী স্থান) বা সারভিক্স ছিঁড়ে যাওয়া
* প্রসব পরবর্তী সংক্রমণ
* দুর্গন্ধযুক্ত যোনিস্রাব
* জরায়ুর বাইরের দিকে বেরিয়ে আসা
* যোনিপথে মল বা প্রস্রাব বের হওয়া (ভেসিকো/রেক্টো ভেজাইনাল ফিস্টুলা)
* স্তনে প্রদাহ, ফেঁাড়া বা চাকা
* মূত্রনালীর সংক্রমণ

পরামর্শ
এ ধরনের যে কোনও সমস্যায় যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের সঙ্গে সঙ্গে যোগযোগ করতে হবে

নবজাতক শিশুর সাধারণ সমস্যা
নাভির সংক্রমণ হলে কী করবেন

পরামর্শ
ক্ষত স্থানটি দিনে ২-৩ বার বিশুদ্ধ ফুটানো পানি ঠাণ্ডা করে অথবা স্পিরিট দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে এবং খোলা রাখতে বলেত হবে৷ প্রয়োজনে শিশু ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে এবং হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে
নবজাতকের জণ্মগত জন্ডিস (২-৫ দিন)হলে করণীয়

মাকে আশ্বস্ত করতে হবে৷ বুকের দুধ খাওয়া চালিয়ে যেতে হবে, শিশুকে সকালে খালি গায়ে চোখ ও যৌনাঙ্গ ঢেকে রোদে রাখতে হবে (৩০-৬০ মি.)

প্রয়োজনে শিশু ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে এবং হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে

শিশুকে উষ্ঞ রাখতে হবে৷

জণ্মকালীন কম ওজনের শিশু (২.৫ কে.জি) হলে করণীয়

* মাকে আশ্বস্ত করতে হবে৷
* বুকের দুধ যদি চুষে খেতে না পারলে বুকের দুধ চেপে বের করে ঘন ঘন খাওয়াতে হবে৷
* নিয়মিত ওজন নিতে হবে৷
* প্রয়োজনে শিশু ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে এবং হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে নবজাতক শিশুর জটিল সমস্যা
* জণ্মগত ত্রুটি
* জণ্মের সময় আঘাত পাওয়া
* শ্বাসকষ্ট
* অপরিণত শিশু
* বাচ্চা যদি সবসময় কান্না করে এবং খেতে না চায়
* বাচ্চার খিঁচুনি
* জণ্মের সময় জণ্ডিসে আক্রান্ত হওয়া এবং ১০ দিনের বেশী স্থায়ী হওয়া পরামর্শ িশু ডাক্তারের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ করতে হবে এবং হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে

বাচ্চার জ্বর হলে করণীয়
প্রয়োজনে শিশু ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে এবং হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে

শরীরের তাপ কমে গেলে করণীয়

* শিশুর শরীর উষ্ঞ বা গরম রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে
* প্রয়োজনে শিশু ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে এবং হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে চোখে পুঁজ নিঃসরণ হলে করণীয়
* চোখ পরিস্কার রাখতে হবে৷ ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রয়োজনে চোখের মলম বা ড্রপ ব্যবহার করতে হবে৷
* প্রয়োজনে শিশু ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে এবং হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসুত্র-ড্রাগ ডিরেক্টরী,


৩. প্রসূতি মায়ের খাবার

প্রসূতি মায়ের খাবার

প্রসূতি মায়ের খাবার বলতে বুঝায় মা ও তার নবজাতক শিশুর খাবার৷ সন্তান প্রসবের সময় এবং তারপর প্রায় ছয় সপ্তাহ বা প্রায় দেড় মাস পর্যন্ত বিভিন্নভাবে মায়ের শরীর ক্ষয়প্রাপ্ত হয়৷ এর মধ্যে প্রধান হলো রক্তক্ষয়৷ এ ছাড়াও দুধ তৈরির জন্য মায়ের শরীর ক্ষয় হয়৷ এসব ক্ষয়পূরণের জন্য মা যদি বাড়তি খাবার গ্রহণ না করে, তবে তার দেহের ক্ষয়পূরণ হবে না অর্থাত্‌ তার জীবনীশক্তি কমে যাবে৷ মা দূর্বল হয়ে পড়বে ও নানা অসুখে ভুগবে৷ সন্তানের জন্য প্রয়োজনের তুলনায় কম দুধ তৈরি হবে এবং দুধে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের পরিমাণও কমে যাবে৷ এমতাবস্থায় শিশু উপযুক্ত পুwষ্ট না পেয়ে জীবনের শুরু থেকেই অপুষ্টিতে ভুগতে শুরু করবে৷

প্রসূতি মাকে তার চাহিদা পূরণের জন্য স্বাভাববিক অবস্থার তুলনায় বাড়তি খাবার খেতে হয়৷মা যদি স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি পরিমাণে সব কয়টি খাদ্যোপাদান সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করেন তবে তার (মা) নিজের স্বাস্থ্য অটুট রেখে শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় দুধ তৈরি করতে সক্ষম হবেন৷ মায়ের নিজের দেহের পুষ্টি রক্ষা এবং তার বুকে শিশুর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে দুধ তৈরির জন্য প্রসূতিকে সবরকম খাবার খেতে দিতে হবে৷ যেমন

* প্রচুর পরিমাণে পানি, শাক-সব্জি, তাজা ফলমূল, ডিম, মাছ, মাংস, দুধ অথবা দুগ্ধজাত খাদ্য গ্রহণ করতে হেব৷ টক ফলমূল ও খেতে হবে৷
* প্রতিদিন স্বাভাবিক খাবারের অতিরিক্ত একমুঠো চালের ভাত ও এক কাপ ডাল, এক চা চামচ তেল, যে কোন মৌসুমী ফল খেতে হবে৷
* আয়রন, ফলিক এসিড ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে৷
* প্রসব পরবর্তী দু�সপ্তাহের মধ্যে একটি ভিটামিন-এ ক্যাপসুল (২ লক্ষ আইইউ) মাকে খেতে হবে৷
* রান্নায় আয়োডিন যুক্ত লবণ ব্যবহার করতে হবে তবে অতিরিক্ত লবণ খাবার প্রয়োজন নেই৷
* ধূমপান, জর্দা, তামাকপাতা এবং মদ পরিহার করতে হবে৷ যে কোনও ধরনের ঔষধ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া যাবে না৷

প্রসূতি মায়ের দৈনিক খাদ্য তালিকা
খাদ্যের নাম খাদ্যের পরিমাণ
চাল/আটা ৪৪০ গ্রাম
ডাল ৭০ গ্রাম
আলু ৬০ গ্রাম
মাছ/মাংস/ডিম ৬০ গ্রাম
শাক ১৮০ গ্রাম
সবজি ঌ০ গ্রাম
তেল/ঘি ৬০ মিঃ লিঃ
ফল ১ টা

তথ্যসূত্র: পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসুত্র-ড্রাগ ডিরেক্টরী,
নারী কিশোরী থেকে বৃদ্ধা, ডা. সুমন চৌধুরী :


৪. প্রসবের পর ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ

প্রসবের পর ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ

প্রসব পরবর্তী সময়ে মা ও শিশুর দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠাকে নিশ্চিত করতে প্রসব পরবর্তী ভিজিট প্রয়োজন৷ মা এই সময় বুকের দুধ খাওয়ানো, টিকা দান, যৌন সম্পর্ক ও পরিবার পরিকল্পনা সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জেনে নিতে পারেন৷

* প্রসবের ৬ সপ্তাহের মধ্যে মাকে অন্তত দুবার হাসপাতালে বা ডাক্তারের কাছে যেতে হবে৷
* প্রথম বার যাওয়া উচিত প্রসবের প্রথম সপ্তাহের৷ প্রথম তিন দিনের মধ্যে হলে ভাল হয় (অধিকাংশ সময় প্রসব পরবর্তী জটিলতা এই তিন দিনের মধ্যেই দেখা যায়)৷
* দ্বিতীয় বার যাওয়া উচিত প্রসবের ৬ সপ্তাহ পরে৷


ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসুত্র-
ড্রাগ ডিরেক্টরী,


৫. প্রসোবত্তর বিপদজনক লক্ষণ

প্রসোবত্তর বিপদজনক লক্ষণ

*

জ্বর ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তার চেয়ে বেশি৷
*

রক্তস্রাব হ্রাস না পেয়ে যদি বৃদ্ধি পায় তবে
*

জমাট রক্ত বা গর্ভফুলের অংশ দেখা যায় বা বের হয়ে আসে৷
*

যোনিপথে দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব৷
*

তলপেটে প্রচণ্ড ব্যথা অথবা ব্যথা যদি ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে৷
*

মারাত্মক রক্তস্বল্পতার চিহ্ন (হিমোগ্লোবিন ৭ গ্রাম %বা তারচেয়ে কম, শ্বাস কষ্ট হওয়া, বুক ধড়ফড় করা, ক্লান্তিভাব)
*

মূর্ছা, ফিট বা খিঁচুনি৷
*

প্রচণ্ড বুকে ব্যথা, স্তনে লালচে ভাব, বা ফুলে যাওয়া৷
*

সেলাইয়ের স্থানে ফোলা, লালচে হওয়া এবং সেলাইয়ের জায়গা থেকে পুঁজ বা রক্ত বের হওয়া (যদি ঐ মহিলার সিজারিয়ান অপারেশন বা এপিসিওটমি হয়)
*

বমি এবং ডায়রিয়া - ঘন ঘন হলে৷
*

যোনিপথ ছিঁড়ে প্রস্রাব বা মল বের হওয়া (RVF অথবা VVF)৷
*

প্রস্রাব করার সময় ব্যথা বা জ্বালা অনুভূত হওয়া৷

পরামর্শ
যদি কোনও মহিলার প্রসোত্তর কোনও একটি বিপদজনক লক্ষণ দেখা দেয়, তবে দ্রুত স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া উচিত৷

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসুত্র-ড্রাগ ডিরেক্টরী,
ডা. সুমন চৌধুরী :

৬. প্রসবের পর রক্তপাত

প্রসবের পর রক্তপাত

বাচ্চা প্রসবের পর জননেন্দ্রিয় থেকে অতিরিক্ত রক্তপাত (৫০০ মি.লি) হওয়া৷
প্রকার প্রাথমিক প্রসবের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রক্তপাত শুরু হওয়া

সেকেন্ডারি : প্রসবের ২৪ ঘণ্টা হতে ৬ সপ্তাহের মধ্যে রক্তপাত হওয়া

কারণসমূহ
১.প্রাথমিক রক্তপাতের কারণসমূহ

* গর্ভফুলের স্থান হতে
* জননেন্দ্রিয়ের আঘাত জনিত কারণে
* অধিক বাচ্চা ধারণ
* জমজ বাচ্চা
* অধিক সময় প্রসব ব্যাথা
* গর্ভফুল তাড়াতাড়ি বের করে আনা
* রক্ত জমাট বাধাজনিত সমস্যা৷

২.সেকেন্ডারি

* গর্ভফুলের অংশ বিশেষ জরায়ুতে থেকে গেলে
* জরায়ু রোগজীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হলে৷

লক্ষণসমূহ

* জননেন্দ্রিয় থেকে অতিরিক্ত রক্তপাত হওয়া
* রোগীকে ফ্যাকাসে দেখানো
* জ্বর আসা
* রোগী শক এ চলে যেতে পারে৷

করণীয়
রোগীকে দ্রুত নিকটবর্তী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে৷

প্রতিরোধ
গর্ভকালীন রক্তশূন্যতা যাতে না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা৷
গর্ভকালীন নিয়মিত চেক আপে থাকা৷
হসপিটালে/ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রসব করানো৷
প্রসব ব্যথা অধিক সময় ধরে হতে থাকলে অবশ্যই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে রোগীকে নিয়ে যাওয়া৷

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবেনা৷

তথ্যসূত্র :
Aids to Principles of Obstetrics and GynaecologyDr. C M Enayet



বুধবার, ১৩ জুলাই, ২০১৬

রক্তের গ্রুপ ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য

আমাদের বেঁচে থাকার অন্যতম উপাদান হচ্ছে রক্ত।
শরীরের মোট ওজনের শতকরা ৭ ভাগ রক্ত থাকে।
আর সেই রক্তের শতকরা ৯২ ভাগই থাকে জলীয় পদার্থ দ্বারা তৈরি।
ঈষৎ ক্ষারীয় রক্ত আপাত দৃষ্টিতে একই রকম মনে হলে ও আন্তর্জাতিক রক্ত পরিসঞ্চালন সোসাইটির মতে তা থাকে ৩২টি ভিন্ন ভিন্ন ভাগে বিভক্ত।
এ ভিন্নতার কারণ হল নানা রকমের এন্টিজেনের উপস্থিতি।
এন্টিজেন হল সেই পদার্থ যা সুনির্দিষ্ট এন্টিবডির সঙ্গে বন্ধনে আবদ্ধ হয় আর এন্টিবডি হল বিশেষ ধরনের প্রোটিন (আমিষ) যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি করে।
৩২টি ভিন্ন ভিন্ন বিভাজন থাকলেও ব্যবহারিক দিক থেকে রক্তকে প্রধানত ABO এবং RhD এন্টিজেন এ দুটি উপায়ে ভাগ করা হয়।
রক্তের গ্রুপ সাধারণত পরিবর্তন হয় না।

ABO রকমের শ্রেণী বিভাজন

AB:
এ ধরনের রক্তের লোহিত কণিকার গায়ে A এবং B এন্টিজেন উপস্থিত থাকে এবং রক্তের জলীয় অংশে A এবং B এন্টিজেনের বিরুদ্ধে কোনো এন্টিবডি থাকে না। এ গ্রুপের রক্তধারীরা প্রয়োজনে যে কারও রক্ত নিতে পারে, তবে AB ছাড়া অন্য কাউকে রক্ত দিতে পারে না।
গ্রুপ A:
এ ধরনের রক্তের লোহিত কণিকার গায়ে শুধু A এন্টিজেন থাকে এবং রক্তের জলীয় অংশে এন্টিজেন B এর বিরুদ্ধে এন্টিবডি থাকে। গ্রুপের রক্তধারীরা অ এবং ঙ গ্রুপের যে কারও কাছ থেকে রক্ত নিতে পারে এবং A এবং O এর বাইরে অন্য কাউকে রক্ত দিতে পারে না।
গ্রুপ B:
 এ গ্রপের ক্ষেত্রে রক্তের লোহিত কণিকার গায়ে শুধু B এন্টিজেন থাকে এবং রক্তের জলীয় অংশে A এন্টিজেন বিরোধী এন্টিবডি থাকে। এ গ্রুপের রক্তধারীরা AB এবং B গ্রুপের রক্ত নিতে পারে এবং AB এবং B গ্রুপধারীকে রক্ত দিতে পারে।
গ্রুপ O:
এ গ্রুপের রক্তের লোহিত কণিকার গায়ে A বা B কোনো ধরনের এন্টিজেন থাকে না, তবে রক্তের জলীয় অংশে এন্টিজেন A ও এন্টিজেন B বিরোধী এন্টিবডি থাকে। O গ্রুপধারীরা কেবল মাত্র O গ্রুপের রক্তই নিতে পারে কিন্তু যে কোনো গ্রুপকেই রক্ত দিতে পারে।

 Rh পদ্ধতির শ্রেণী বিভাজন

Rh পদ্ধতি হল রক্ত বিভাজনের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ উপায়। এ বিভাজন উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে কার্লল্যান্ড স্টেইনার ও আলেক জেন্ডার উইনার Rhes Monkey (বানর) ব্যবহার করেছিলেন বলে এর নাম Rh পদ্ধতি।
কারও রক্তের লোহিত কণিকার গায়ে Rh factor/D এন্টিজেন থাকলে Rh পজেটিভ এবং না থাকলে Rh নেগেটিভ। অর্থাৎ ABO পদ্ধতির মাধ্যমে কারও রক্তের গ্রুপ পাওয়া গেল B এবং তার রক্তে Rh factor/D এন্টিজেন পাওয়া গেল না তাহলে তার রক্তের গ্রুপ হল B নেগেটিভ আর যদি D এন্টিজেন পাওয়া যায় তাহলে তা হবে B পজেটিভ।
 এভাবে ABO এবং Rh পদ্ধতি ব্যবহার করে A পজেটিভ/নেগেটিভ, B পজেটিভ/নেগেটিভ, O পজেটিভ/নেগেটিভ এবংAB পজেটিভ/নেগেটিভ রক্তের গ্রুপ নির্ধারণ করা হয়।
 উল্লেখ্য, Rh পজেটিভধারীরা Rh পজেটিভধারীর এবং Rh নেগেটিভধারীরা Rh নেগেটিভধারীর সঙ্গে রক্ত বিনিময় করতে পারবে যদি তারা ABO পদ্ধতির শর্তের মধ্যে থাকে।

রক্তের গ্রুপ ও মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যঃ

 বিভিন্ন ধরনের গবেষণার মাধ্যমে রক্তের গ্রুপের সঙ্গে মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের যোগসূত্র খোঁজা হয়েছে এবং সর্বাংশে মিল না হলেও প্রতিটি গ্রুপের মানুষের কিছু কমন বৈশিষ্ট্য পাওয়া গেছে।

গ্রুপ O:
 মোট জনসংখ্যার শতকরা ৩৮ ভাগের রক্তের গ্রুপ O পজেটিভ এবং শতকরা ৬ ভাগের O নেগেটিভ। এ
ই ব্লাড গ্রুপের মানুষেরা স্বচ্ছ দৃষ্টিসম্পন্ন, গভীর মনোযোগী, উচ্চাকাঙ্খাক্ষী, স্বাস্থ্যবান, বাকপটু, বাস্তববাদী, রোমান্টিক এবং অত্যন্ত বুদ্ধিমান হয়ে থাকে।

 ব্লাড গ্রুপ A:

শতকরা ৩৪ ভাগ জনগোষ্ঠীর ব্লাড গ্রুপ A পজেটিভ। A নেগেটিভ ব্লাড গ্রুপের লোকসংখ্যা শতকরা ৬ ভাগ।
 এ ব্লাড গ্রুপের মানুষেরা গোছগাছপ্রিয়, দক্ষ চাকুরে এবং খুতখুতে স্বভাবের হয়ে থাকে, এরা আত্মকেন্দ্রিক, সুবিচারক, শান্ত, নিয়মতান্ত্রিক, বিশ্বস্ত, নিয়মানুবর্তী ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন।

 ব্লাড গ্রুপ B:

 শতকরা ৯ ভাগ জনগোষ্ঠীর ব্লাড গ্রুপ B পজেটিভ এবং B নেগেটিভের ক্ষেত্রে এই হার মাত্র ২ ভাগ।
 এ ব্লাড গ্রুপের মানুষেরা স্বাধীনচেতা, মেধাবী, নমনীয়, মনোযোগী, স্বাস্থ্যবান, সরল, দক্ষ, পরিকল্পনাবাদী, বাস্তববাদী, আবেগপ্রবণ এবং খুব বেশি রোমান্টিক হয়ে থাকে।

 ব্লাড গ্রুপ AB:

 শতকরা ৪ ভাগ লোকের রক্তের গ্রুপ AB পজেটিভ এবং মাত্র ১ ভাগ লোকের রক্তের গ্রুপ AB নেগেটিভ।
 এ ব্লাড গ্রুপের মানুষেরা সাধারণত সুবিবেচক, বুদ্ধিসম্পন্ন, হিসাবি, পরিকল্পনাবাদী, কৌশলী সংবেদনশীল, সৎ, নিরেট এবং খুব চমৎকার সাংগঠনিক ক্ষমতাসম্পন্ন হয়ে থাকে।

 রক্তের গ্রুপের সঙ্গে বিবাহের যোগসূত্র:

বিবাহের পূর্বে পাত্র-পাত্রীর রক্তের গ্রুপ জানা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে রক্তে Rh অসামঞ্জস্যতা সম্পর্কে অনুমান করা সম্ভব হয়। Rh পজেটিভ ও Rh নেগেটিভ পাত্রপাত্রীর বিবাহ হলে Rh অসামঞ্জস্যতা হতে পারে। স্বামী-স্ত্রীর Rh অসামঞ্জস্যতা হলে তাদের সন্তানের নানা রকমের সমস্যা দেখা দিতে পারে যার মধ্যে রক্তস্বল্পতা, মারাত্মক জন্ডিস প্রভৃতি। তাই সন্তান ধারণের আগেই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

Popular Posts