Recent post

বুধবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৭

শিশুর পাতলা পায়খানা ঘরোয়া চিকিৎসা

অধ্যাপক ডা. তাহমীনা বেগম
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ

প্রচণ্ড গরম আর তার সঙ্গে মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হচ্ছে। স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া।
এই সময়ে নবজাতকসহ শুরু করে সব শিশু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে।
ডায়রিয়া পানি বা খাদ্যবাহিত রোগ।
 অর্থাৎ রোগ-জীবাণু খাদ্য বা পানির মাধ্যমে শিশুর শরীরে প্রবেশ করে।
 শিশুর দিনে দুই-তিনবার পাতলা পায়খানা হলে, সবুজ পায়খানা হলে বা সঙ্গে মিউকাস থাকলে মা-বাবা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।
শিশুকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান, ওষুধ খাওয়ান। অনেক ক্ষেত্রে কোনও ওষুধের প্রয়োজন হয় না।
শিশু দুই-তিনদিনের মধ্যেই ভালো হয়ে যায়।
ডায়রিয়ার সবচেয়ে বড় জটিলতা হল পানিশূন্যতা। পানিশূন্যতা হলে শিশু দুর্বল হয়ে পড়ে।
অস্থিরতা দেখা দেয়, প্রস্রাব কমে যায় এমনকি শিশু অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারে।
কী দেখে বোঝা যাবে শিশুর পানিশূন্যতা হয়েছে
অস্থির ভাব, খিটখিটে মেজাজ বা নিস্তেজ হয়ে যায়।
চোখ ভেতরে ঢুকে যায়।
তৃষ্ণার্ত ভাব বা একেবারেই খেতে না পারা।
চামড়া ঢিলে হয়ে যাওয়া।
যদি পানিশূন্যতার লক্ষণ থাকে তাহলে শিশুকে হাসপাতালে নিতে হবে।
আর না হলে বাড়িতেই শিশুর চিকিৎসা সম্ভব।

বাড়িতে কী করবেন ?
পানিশূন্যতা রোধ করার জন্য খাবার স্যালাইন ও অন্যান্য তরল খাবার বারবার দিন।

পানি, ভাতের মাড়, চিড়ার পানি, ডাবের পানি, টক দই, ঘোল, ফলের রস ও লবণ-গুড়ের শরবত খেতে দিতে হবে।
অনেকে মনে করেন স্যালাইন খাওয়ালেই ডায়রিয়া বন্ধ হয়ে যাবে। এমন ধারণা সত্য নয়।
শরীর থেকে যে পানি ও লবণ বের হয়ে যায় স্যালাইন তা পূরণ করে মাত্র।
সঙ্গে অবশ্যই স্বাভাবিক খাবার দিতে হবে।
শিশুর বয়স ছয় মাসের কম হলে তাকে বারবার মায়ের দুধ খেতে দিন। 
সঙ্গে স্যালাইন অবশ্যই দিতে হবে এবং স্যালাইন খাওয়াতে হবে ধীরে ধীরে।
শিশুর বয়স ছয় মাসের বেশি হলে বুকের দুধের পাশাপাশি পরিষ্কার সব খাবার শিশুকে দিতে ভুলবেন না।
খিচুড়ি, ডাল-ভাত, মাছ, মাংস, ডিম, সবজি, পাকা কলা, তাজা ফল এবং পরিষ্কার সব ধরনের খাবার শিশু খেতে পারবে।
 অন্যান্য খাবারের সঙ্গে কাঁচাকলা সিদ্ধ করে গরম ভাতের সঙ্গে চটকিয়ে দিন।
কাঁচাকলা ডায়রিয়ার তীব্রতা কমাতে সাহায্য করে। খাবার রান্না করার সময় তেল দিতে ভুলবেন না। সারা দিন কমপক্ষে ছয়বার খেতে দিন (৩-৪ ঘণ্টা পরপর) অল্প অল্প করে বারবার খাবার দিলে শিশুর পক্ষে তা হজম করা সহজ হবে।
১৫ দিনের জন্য জিংক সিরাপ বা বড়ি দিতে পারেন।
কখন শিশুকে হাসপাতালে নিতে হবে

  • খুব বেশি পরিমাণ পানির মতো পাতলা পায়খানা হলে
  • বারবার বমি হলে, 
  • স্যালাইন খেয়ে না রাখতে পারলে
  • স্যালাইন বা অন্যান্য খাবার খেতে না পারলে
  • অতিরিক্ত তৃষ্ণা ভাব থাকলে
  • ডায়রিয়ার সঙ্গে জ্বর থাকলে
  • পায়খানার সঙ্গে রক্ত গেলে
  • ১৪ দিনের বেশি ডায়রিয়া থাকলে।

ডায়রিয়া হলে সব সময় মনে রাখবেন
ডায়রিয়া চিকিৎসায় সাধারণত কোনো ওষুধের প্রয়োজন হয় না।
 পাঁচ-ছয় দিনের মধ্যে এমনিতেই ভালো হয়ে যায়।
 ধৈর্য ধরুন।
জ্বর থাকলে প্যারাসিটামল দিন, বমি হলে ডমপেরিডন জাতীয় ওষুধ দেবেন।
ফুটানো পানি দিয়ে শিশুর মুখ-হাত ধোয়াবেন।
 বাটি, চামচ ধোবেন।
প্রয়োজনে ফুটানো পানি দিয়ে শিশুকে গোসল করাবেন।
শিশুকে কোনওভাবেই বাসি বা বাইরের খাবার খাওয়াবেন না।
ফলমূল ধুয়ে খাওয়াবেন।
জন্মের পর শিশুকে শালদুধ দিন।
বুকের দুধ দিন, কখনও বোতলে দুধ খাওয়াবেন না। বোতলের মাধ্যমে জীবাণু ছড়ায়।
খাবারের আগে শিশুর হাত ধুয়ে দিন।
শিশুকে খাওয়ানোর আগে আপনার নিজের হাতও ধুয়ে নিন।

৩টি মন্তব্য:

Unknown বলেছেন...

বাচ্চার বয়স ২ বছর ৬ মাস
আজ ৬/৪/২০ তারিখ হঠাৎ দুই বার পাতলা পায়খানা হলো এখন কী করবো?

Mahabubur Rahman বলেছেন...

শিশুর পাতলাপায়খানা হলে তাকে তরল জাতীয় খাভার দিন এবং ঘন ঘন পায়খানা করলে দ্রুত নিকটস্থ উপজেলা চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যান ।

Mahabubur Rahman বলেছেন...

https://thedaily71.blogspot.com/2017/04/blog-post_12.html

Popular Posts