গ্যাসের সমস্যা হলে কি করবেন, কিভাবে মুক্তিপাবেন এ সমস্যা থেকে। না আমি রান্নারগ্যাসের কথা বলছিনা। পেটের গ্যাসের যন্ত্রণায়ভোগেননি বা প্রচলিত ভাষায় “পেট ফেঁপে”যায়নি এমন ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া কঠিন।
পেটে গ্যাসের আক্রমণ কেন হয়, সে সম্পর্কেপরিষ্কার ধারণা থাকলে আপনি সহজেইঅপ্রীতিকর অবস্থা এড়াতে পারেন। আঁশযুক্তখাবার ও শাকসবজি বেশি খেলে পাকস্থলী তারসবটা সহজে পরিপাক করতে পারে না। কিছুখাবার অপরিপাক অবস্থায় চলে যায় ক্ষুদ্রান্ত্রে।সেখানে কিছু ব্যাকটেরিয়া ওসব খাবার খায়।এদের আয়ু খুব কম। মৃত ব্যাকটেরিয়াগুলোথেকে গ্যাস তৈরি হয়। আর অস্বস্তির কারণএটাই।
সম্পূর্ণ গম বা আটা দিয়ে তৈরি খাবারগুলোপেটে গ্যাস সৃষ্টি করে। আটা বা ময়দা দিয়েতৈরি বিভিন্ন পিঠা, বিস্কিট ও অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যপরিত্যাগ করুন।
ফল এবং সবজি কাঁচা খাওয়ার পরিবর্তে সেদ্ধ বারান্না করে খান। পেটের গ্যাস এতে কমে যাবেঅনেকটাই।
পেটে গ্যাস হলে তরকারিতে সামান্য বেশিপরিমাণে হলুদ দিন। হলুদ পেটের গ্যাস কমাতেখুবই সাহায্য করে।
গ্যাস এড়াতে যা যা খাবেন না
১) ডাল ও ডাল জাতীয় খাবার
ডাল, বুট, ছোলা, বীণ, সয়াবিন ইত্যাদি ধরণেরখাবার গ্যাস উদ্রেকককারী খাবার। এগুলোতেরয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, সুগার ওফাইবার যা সহজে হজম হতে চায় না। ফলেগ্যাসের সমস্যা সৃষ্টি করে পেটে।
২) ব্রকলি, পাতাকপি, বাঁধাকপি
এইধরনের সবজিগুলোতে রয়েছে ‘রাফিনোজ’নামক একধরণের সুগার উপাদান যা পাকস্থলীরব্যাকটেরিয়া ফারমেন্ট না করা পর্যন্ত হজম হয়না। এবং এই অবস্থায় পেটে গ্যাসের সমস্যা বৃদ্ধিপায়।
৩) দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার
দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার পর যদি দেখেন পেটেগ্যাস হচ্ছে তার অর্থ হচ্ছে আপনি লাক্টোজইন্টলারেন্ট অর্থাৎ আপনার দুধ ও দুগ্ধজাতখাবার হজমে সমস্যা রয়েছে। হজম হয় নাবলেই এগুলো আপনার পেটে গ্যাস উদ্রেকেরজন্য দায়ী।
৪) আপেল ও পেয়ারা
আপেল ও পেয়ারাতে রয়েছে ফাইবার এবংফ্রক্টোজ ও সরবিটোল নামক সুগার উপাদান যাসহজে হজম হতে চায় না। এতে করেও গ্যাস হয়পেটে।
৫) লবণাক্ত খাবার
লবণের সোডিয়াম অনেক বেশি পানিগ্রাহী।অতিরিক্ত লবণাক্ত খাবার খেলে দেহে পানিজমার সমস্যা দেখা দেয়। পাকস্থলীতেও সমস্যাশুরু হয় ও খাবার হজম হতে চায় না।
এছাড়াও ধীরে ধীরে ও ভাল করে চিবিয়ে খাবারখান , চুইংগাম ও শক্ত ক্যান্ডি পরিহার করুন,কার্বনেটেড কোমল পানীয় ও বিয়ার এড়িয়েচলুন। এগুলো কার্বন ডাই-অক্সাইড ত্যাগ করে।
গ্যাস সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে যা যা খাবেন :
১) শসা
শসা পেট ঠা-া রাখতে অনেক বেশি কার্যকরীখাদ্য। এতে রয়েছে ফ্লেভানয়েড ও অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি উপাদান যা পেটে গ্যাসের উদ্রেককমায়।
২) দই
দই আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তাকরে। এতে করে দ্রুত খাবার হজম হয়, ফলেপেটে গ্যাস হওয়ার ঝামেলা দূর হয়।
৩) পেঁপে
পেঁপেতে রয়েছে পাপায়া নামক এনজাইম যাহজমশক্তি বাড়ায়। নিয়মিত পেঁপে খাওয়ারঅভ্যাস করলেও গ্যাসের সমস্যা কমে।
৪) কলা ও কমলা
কলা ও কমলা পাকস্থলীর অতিরিক্ত সোডিয়ামদূর করতে সহায়তা করে। এতে করে গ্যাসেরসমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়াও কলারস্যলুবল ফাইবারের কারণে কলা কোষ্ঠকাঠিন্যদূর করার ক্ষমতা রাখে।
৫) আদা
আদা সবচাইতে কার্যকরী অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরিউপাদান সমৃদ্ধ খাবার। পেট ফাঁপা এবং পেটেগ্যাস হলে আদা কুচি করে লবণ দিয়ে কাঁচা খান,দেখবেন গ্যাসের সমস্যা সমাধান হবে।
খাবার খাওয়ার সময় মাঝে মাঝে অল্প অল্প করেপানি পান করুন, কিন্তু খাবার শেষে একটু দেরিকরে (১ ঘণ্টা পরে) পানি পান করুন। এবংকোনো ওষুধ খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শগ্রহণ করুণ।
=====================================
আজকাল পেটে গ্যাস বা গ্যাস্ট্রিক নেই এমনএকজনকেও বোধ হয় খুঁজে পাওয়া যাবে না!
অতিরিক্ত তেলেভাজা ও তেল জাতীয় খাবার,সফট ড্রিংকস, ঝাল খাবার, খাবার ভালোভাবেচিবিয়ে না খাওয়া, হজমে সমস্যা এমনকিঅতিরিক্ত দুশ্চিন্তার জন্যও পেটে গ্যাস জমতেপারে।
পেটে জমা গ্যাস তাড়াতে নানা ধরনের ওষুধব্যাগে রাখতে হচ্ছে প্রতিনিয়তই। ভারী খাবারখাওয়ার পরই মনে জমছে শঙ্কা, এই বুঝি শুরুহবে অস্বস্তি আর বুকে-পেটে ব্যথা।
হঠাৎই পেটে গ্যাস জমলে আপনি ভেষজ কিছুউপাদান ব্যবহার করেই ফিরিয়ে আনতে পারেনস্বস্তি।
পেটে গ্যাসের আক্রমণ কেন হয়, সে সম্পর্কেপরিষ্কার ধারণা থাকলে আপনি সহজেইঅপ্রীতিকর অবস্থা এড়াতে পারেন। আঁশযুক্তখাবার ও শাকসবজি বেশি খেলে পাকস্থলী তারসবটা সহজে পরিপাক করতে পারে না। কিছুখাবার অপরিপাক অবস্থায় চলে যায় ক্ষুদ্রান্ত্রে।সেখানে কিছু ব্যাকটেরিয়া ওসব খাবার খায়।এদের আয়ু খুব কম। মৃত ব্যাকটেরিয়াগুলোথেকে গ্যাস তৈরি হয়। আর অস্বস্তির কারণএটাই।
সম্পূর্ণ গম বা আটা দিয়ে তৈরি খাবারগুলোপেটে গ্যাস সৃষ্টি করে। আটা বা ময়দা দিয়েতৈরি বিভিন্ন পিঠা, বিস্কিট ও অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যপরিত্যাগ করুন।
ফল এবং সবজি কাঁচা খাওয়ার পরিবর্তে সেদ্ধ বারান্না করে খান। পেটের গ্যাস এতে কমে যাবেঅনেকটাই।
পেটে গ্যাস হলে তরকারিতে সামান্য বেশিপরিমাণে হলুদ দিন। হলুদ পেটের গ্যাস কমাতেখুবই সাহায্য করে।
গ্যাস এড়াতে যা যা খাবেন না
১) ডাল ও ডাল জাতীয় খাবার
ডাল, বুট, ছোলা, বীণ, সয়াবিন ইত্যাদি ধরণেরখাবার গ্যাস উদ্রেকককারী খাবার। এগুলোতেরয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, সুগার ওফাইবার যা সহজে হজম হতে চায় না। ফলেগ্যাসের সমস্যা সৃষ্টি করে পেটে।
২) ব্রকলি, পাতাকপি, বাঁধাকপি
এইধরনের সবজিগুলোতে রয়েছে ‘রাফিনোজ’নামক একধরণের সুগার উপাদান যা পাকস্থলীরব্যাকটেরিয়া ফারমেন্ট না করা পর্যন্ত হজম হয়না। এবং এই অবস্থায় পেটে গ্যাসের সমস্যা বৃদ্ধিপায়।
৩) দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার
দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার পর যদি দেখেন পেটেগ্যাস হচ্ছে তার অর্থ হচ্ছে আপনি লাক্টোজইন্টলারেন্ট অর্থাৎ আপনার দুধ ও দুগ্ধজাতখাবার হজমে সমস্যা রয়েছে। হজম হয় নাবলেই এগুলো আপনার পেটে গ্যাস উদ্রেকেরজন্য দায়ী।
৪) আপেল ও পেয়ারা
আপেল ও পেয়ারাতে রয়েছে ফাইবার এবংফ্রক্টোজ ও সরবিটোল নামক সুগার উপাদান যাসহজে হজম হতে চায় না। এতে করেও গ্যাস হয়পেটে।
৫) লবণাক্ত খাবার
লবণের সোডিয়াম অনেক বেশি পানিগ্রাহী।অতিরিক্ত লবণাক্ত খাবার খেলে দেহে পানিজমার সমস্যা দেখা দেয়। পাকস্থলীতেও সমস্যাশুরু হয় ও খাবার হজম হতে চায় না।
এছাড়াও ধীরে ধীরে ও ভাল করে চিবিয়ে খাবারখান , চুইংগাম ও শক্ত ক্যান্ডি পরিহার করুন,কার্বনেটেড কোমল পানীয় ও বিয়ার এড়িয়েচলুন। এগুলো কার্বন ডাই-অক্সাইড ত্যাগ করে।
গ্যাস সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে যা যা খাবেন :
১) শসা
শসা পেট ঠা-া রাখতে অনেক বেশি কার্যকরীখাদ্য। এতে রয়েছে ফ্লেভানয়েড ও অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি উপাদান যা পেটে গ্যাসের উদ্রেককমায়।
২) দই
দই আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তাকরে। এতে করে দ্রুত খাবার হজম হয়, ফলেপেটে গ্যাস হওয়ার ঝামেলা দূর হয়।
৩) পেঁপে
পেঁপেতে রয়েছে পাপায়া নামক এনজাইম যাহজমশক্তি বাড়ায়। নিয়মিত পেঁপে খাওয়ারঅভ্যাস করলেও গ্যাসের সমস্যা কমে।
৪) কলা ও কমলা
কলা ও কমলা পাকস্থলীর অতিরিক্ত সোডিয়ামদূর করতে সহায়তা করে। এতে করে গ্যাসেরসমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়াও কলারস্যলুবল ফাইবারের কারণে কলা কোষ্ঠকাঠিন্যদূর করার ক্ষমতা রাখে।
৫) আদা
আদা সবচাইতে কার্যকরী অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরিউপাদান সমৃদ্ধ খাবার। পেট ফাঁপা এবং পেটেগ্যাস হলে আদা কুচি করে লবণ দিয়ে কাঁচা খান,দেখবেন গ্যাসের সমস্যা সমাধান হবে।
খাবার খাওয়ার সময় মাঝে মাঝে অল্প অল্প করেপানি পান করুন, কিন্তু খাবার শেষে একটু দেরিকরে (১ ঘণ্টা পরে) পানি পান করুন। এবংকোনো ওষুধ খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শগ্রহণ করুণ।
=====================================
আজকাল পেটে গ্যাস বা গ্যাস্ট্রিক নেই এমনএকজনকেও বোধ হয় খুঁজে পাওয়া যাবে না!
অতিরিক্ত তেলেভাজা ও তেল জাতীয় খাবার,সফট ড্রিংকস, ঝাল খাবার, খাবার ভালোভাবেচিবিয়ে না খাওয়া, হজমে সমস্যা এমনকিঅতিরিক্ত দুশ্চিন্তার জন্যও পেটে গ্যাস জমতেপারে।
পেটে জমা গ্যাস তাড়াতে নানা ধরনের ওষুধব্যাগে রাখতে হচ্ছে প্রতিনিয়তই। ভারী খাবারখাওয়ার পরই মনে জমছে শঙ্কা, এই বুঝি শুরুহবে অস্বস্তি আর বুকে-পেটে ব্যথা।
হঠাৎই পেটে গ্যাস জমলে আপনি ভেষজ কিছুউপাদান ব্যবহার করেই ফিরিয়ে আনতে পারেনস্বস্তি।
সেসব ভেষজ উপাদানের খোঁজ দিতেই এ আয়োজন।
হলুদ
হলুদ গ্যাসের ভালো ওষুধ। প্রতিদিন একগ্লাসদুধে দুই চা চামচ হলুদ বাটা মিশিয়ে খেলেউপকার পাবেন।
পেয়ারা পাতা
পেয়ারা খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনি এর পাতাওবেশ উপকারি। ৫ থেকে ৬টি পেয়ারা পাতাপানিতে ১০ মিনিট সেদ্ধ করুন। তারপর ছেঁকেঠাণ্ডা করে পানি পান করুন। গ্যাস্ট্রিক সারাতেএটি সবচেয়ে সহজ সমাধান।
আলুর রস
খাওয়ার আগে ১/২ কাপ আলুর রস পান করুন।দিনে তিনবার খেলে উপকার পাবেন।
আদার রস
খাওয়ার পর আদা চটকিয়ে খেতে পারেন।এছাড়াও আদা সেদ্ধ পানিতে লবণ দিয়েও খেতেপারেন। আদা চা খেলেও একই উপকার পাওয়াযাবে।
বেকিং পাউডার
বেকিং সোডা শুধু মজাদার খাবারেই ব্যবহৃতহয় না, গ্যাস তাড়াতেও এটি খুব ভালো কাজকরে। একগ্লাস পানিতে ১/৪ চা চামচ বেকিংপাউডার মিশিয়ে পান করুন। এছাড়াও এক গ্লাসপানিতে লেবুর রস ও এক চিমটি বেকিংপাউডার মিশিয়ে খেলেও উপকার পাবেন।
আপেল সাইডার ভিনেগার
এক গ্লাস গরম পানিতে দুই টেবিল চামচ আপেলসাইডার ভিনেগার মিশিয়ে স্বাভাবিকতাপমাত্রায় রেখে ঠাণ্ডা করুন। ঠাণ্ডা হয়ে এলেধীরে ধীরে পান করুন।
দারুচিনি
এক গ্লাস দুধে ১/২ চা চামচ দারুচিনি গুড়া ও মধুমিশিয়ে খান, পেটের গ্যাস উধাও হয়ে যাবে।
পেটে গ্যাস ও বুকের জ্বালা পোঁড়ায় কি করবেন
এটা খেলে পেটে গ্যাস হয়, ওটা আমি খেতেপারি না, আমার গ্যাসের সমস্যা আছে ইত্যাদিঅভিযোগ রোগীদের। তাঁদের ভাষায়, গ্যাস্ট্রিকসমস্যায় ভুগছেন তাঁরা। পেটে গ্যাস, এসিডিটিবা বুকজ্বলা নিয়ে লিখেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবমেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিবিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান ডা. এ এস এমএ রায়হান
চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় যদিও গ্যাস্ট্রিক নামেকোনো রোগ নেই, গ্যাস্ট্রিক নামে যে অঙ্গটিআছে তা বাংলায় পাকস্থলী নামে পরিচিত।গ্যাস্ট্রিক নামে রোগ না থাকলেও যেসব সমস্যানিয়ে রোগীরা আসেন সেগুলোও কিন্তু অসুখ।এর কোনোটি স্রেফ গ্যাস হওয়া। আবারকোনোটি এসিডিটি হওয়া।
প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ হ্যারিসনবলেছিলেন, 'আমার কাছে সব রোগের ব্যাখ্যাআছে, শুধু ব্যাখ্যা নেই একটি রোগের, তা হলোগ্যাস।'
মেডিসিনে হ্যারিসনের কথা বাইবেলের বাণীরমতো। তাই এই মহান চিকিৎসকের কাছে যখনএই রোগের কোনো ব্যাখ্যা নেই, আমাদের মতোক্ষুদ্র মানুষের কাছে তার ব্যাখ্যা না থাকাইস্বাভাবিক। তাই কোনো রোগী যখন পেট ফুলেযাওয়া বা বেশি বেশি ঢেঁকুর তোলা বা পেটেঅস্বস্তির সমস্যা নিয়ে আসেন, চিকিৎসকরাচোখ বন্ধ করে রেনিটিডিন বা ওমিপ্রাজল ওষুধদেন। অথচ গ্যাসের চিকিৎসায় বাস্তবে এসবওষুধের কোনো ভূমিকা নেই।
গ্যাসের সমস্যা আসলে কী আর এসিডিটিই বাকী? এসবের লক্ষণ ও চিকিৎসায় পার্থক্য কী?
গ্যাস হওয়া
আমেরিকান রিসার্চ সেন্টার অবগ্যাস্ট্রোএন্টারোলজির মতে, পৃথিবীর মোটজনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশই গ্যাসের সমস্যায়ভুগছে।
মনে রাখতে হবে, খাবার পর অন্ত্রে (ক্ষুদ্রান্ত্র ওবৃহদান্ত্র) গ্যাস তৈরি হওয়া স্বাভাবিক একটিপ্রক্রিয়া। ২৪ ঘণ্টায় অন্তত এক থেকে চার পাইন্টগ্যাস অন্ত্রে তৈরি হয়। এই গ্যাস ২৪ ঘণ্টায়সাধারণত ১৪ বারে ঢেঁকুর হিসেবে বা পায়ুপথেবের হয়। আমরা যেসব খাবার খাই তা হজমহয়। এই হজম হওয়ার প্রক্রিয়াতেই উপজাত বাবাইপ্রোডাক্ট হিসেবে গ্যাস উৎপন্ন হয়। আবারবৃহদন্ত্রে (যেখানে হজম হওয়া খাবার মলহিসেবে জমা থাকে) থাকে অনেক ব্যাকটেরিয়া।এগুলোও গ্যাস তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।যে গ্যাসগুলো অন্ত্রে তৈরি হয় তার মধ্যে আছেকার্বন ডাই-অক্সাইড, হাইড্রোজেন ও মিথেনগ্যাস। কখনো কখনো সালফাইড জাতীয়গ্যাসও তৈরি হয়। কোনো কারণে স্বাভাবিকেরচেয়ে গ্যাস তৈরি হলে গ্যাস সমস্যা তৈরি হয়।গ্যাস তৈরি হওয়ার সমস্যা সাধারণত তিনধরনের।
* বেলচিং বা ঢেঁকুর ওঠা
* ব্লটিং বা পেট ফুলে যাওয়া
* ফাস্টিং বা পায়ুপথে গ্যাস বের হওয়া
বেলচিং বা ঢেঁকুর ওঠা
ঢেঁকুর ওঠা স্বাভাবিক, তবে স্বাভাবিকের চেয়েবেশি ওঠা অস্বস্তিকর ও কষ্টকর। সাধারণতনিচের কারণগুলোর জন্য স্বাভাবিকের চেয়েবেশি ঢেঁকুর ওঠে।
* খাবার গ্রহণের সময় অপ্রয়োজনে বেশি বেশিঢোক গিললে, কথা বেশি বললে, বারবার পানিপান করলে পাকস্থলীতে বাড়তি বাতাসপরিবেশ থেকে প্রবেশ করে। এগুলো পরে বেরহয়।
* ধূমপান, হুঁকো বা পাইপ খেলে।
* কোল্ডড্রিংকস বা সোডা-জাতীয় পানীয় বেশিবেশি পান করলে।
* জুস বা কোনো ড্রিংকস পানের সময় স্ট্রব্যবহার করলে।
* চুইংগাম বা চিবিয়ে খেতে হয় এমন খাবারবেশি খেলে।
* ঠিকমতো ফিট হয়নি এমন নকল দাঁত ব্যবহারকরলে। এ ক্ষেত্রে ঢোক গেলার হার বেশি হয় ওআটকে পড়া বাতাস পাকস্থলীতে ঢুকে যায়।
* অভ্যাসের কারণেও অনেকের বেশি ঢেঁকুরওঠে।
* কিছু অসুখের কারণে বেশি বেশি ঢেঁকুর উঠতেপারে। যেমন_
জিইআরডি বা গ্যাস্ট্রো ইসোফেজাল রিফ্লাক্সডিজিজ (বুকজ্বলা), হায়াটাস হার্নিয়া, ফ্রুক্টোজম্যাল অ্যাবজর্বশন বা চিনি-জাতীয় খাদ্যশোষণজনিত সমস্যা, ইউরেমিয়া, ক্রনিকরেনাল ফেইলিওর ও ডায়াফ্রামের ইরিটেশন।
ব্লটিং বা পেট ফুলে যাওয়া
এই রোগে পেট ফুলে যায়, বুকে অস্বস্তি বোধ হয়,সব সময় পেট ভরা ভরা অনুভূত হয়, অনেকসময় বুকে চাপ ধরা ব্যথার মতো মনে হয়।কোনো কোনো সময় বুকের ব্যথা বা অস্বস্তিকেরোগী ও চিকিৎসক উভয়ই হার্টের অসুখ বাএনজাইনা বলে বিভ্রান্ত হন, আতঙ্কিত হয়েপড়েন।
নিচের কারণগুলোর জন্য ব্লটিং হয়_
* কিছু খাবারের কারণে, যেমন_
শিমের বীজ, মটরশুঁটি, ডালজাতীয় খাবার,চর্বিজাতীয় বা তৈলাক্ত খাবার, দুধ ও দুগ্ধজাতখাবার_ঘি, পনির, দই ইত্যাদি।
কিছু সবজি যেমন_ওল, আলু, পেঁয়াজ ইত্যাদি।
কিছু ফল যেমন_আপেল, কলা ইত্যাদি।
সিরিয়াল (যেমন কর্নফ্লেক্স), কেক, পেস্ট্রি,চকোলেট, কোল্ডড্রিংকস ইত্যাদি।
* কিছু কিছু অসুখের কারণে, যেমন_
জিইআরডি বা গ্যাস্ট্রো ইসোফেজিয়ার রিফ্লাক্সডিজিজ (বুকজ্বলা)
পিইউডি বা পেপটিক আলসার ডিজিজ।
পিত্তথলির পাথর বা গলস্টোন।
আইবিএস বা ইরিটেবল বাওল সিনড্রোম।
কী করণীয়
এ ধরনের সমস্যায় পড়লে ডাক্তার দেখাতে হবে।তিনি পরীক্ষা করে যদি বলেন, আপনার পেটেরঅস্বস্তি কোনো অসুখের কারণে নয়, সে ক্ষেত্রেআপনি কয়েকটি নিয়ম মেনে চললে ভালোথাকবেন।
১. পরীক্ষা করে নিজেই নিশ্চিত হোন কোনখাবারের কারণে আপনার সমস্যা হচ্ছে। এটিদুটি পদ্ধতিতে নিশ্চিত করা যায়_
ক. আপনার যদি মনে হয় বিশেষ ধরনেরখাবারের জন্য সমস্যা হচ্ছে, তার একটিতালিকা তৈরি করুন। ধরা যাক, আপনার দুধ ওদুগ্ধজাত খাবারে সমস্যা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রেযেকোনো এক ধরনের (ধরুন দুধ ও দুগ্ধজাতখাবার) খাবার অন্তত সাত দিন বন্ধ রাখুন। যদিদেখেন এতে আপনার সমস্যা কমে গেছে,তাহলে বুঝবেন এটিই আপনার অস্বস্তির কারণ।কিন্তু যদি আপনার সমস্যা একই রকম থাকে,তবে এটি খাওয়া আবার শুরু করে তালিকারঅন্য ধরনের খাবার অন্তত সাত দিন বন্ধ রাখতেহবে। এ প্রক্রিয়ায় নিশ্চিত হোন নির্দিষ্ট কোনোখাবারে আপনার সমস্যা হচ্ছে কি না।
খ. দ্বিতীয় পদ্ধতি হলো সন্দেহজনক সব খাবারসাত দিন বন্ধ রাখা। এরপর প্রতিদিন ওইসন্দেহভাজন খাদ্য এক এক করে যোগ করুনএবং লক্ষ করুন তাতে সমস্যা হচ্ছে কি না।যেমন_সবজি যোগ করুন এবং খেয়াল করুনকোনো সমস্যা হচ্ছে কি না। সমস্যা হলে তোবুঝেই গেলেন, না হলে এর সঙ্গে আবার অন্যখাবার যোগ করুন। এভাবে বন্ধ করে দেওয়াখাবারগুলো আবার এক এক করে যোগ করেদেখুন নির্দিষ্ট কোন খাবারে সমস্যা হচ্ছে।
২ . অনিয়ম ও টেনশন করলে পেটে গ্যাস হওয়াবেড়ে যায়।
তাই কিছু নিয়ম মেনে চলুন_
* চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করুন।
* ধূমপান করবেন না।
* দুগ্ধজাত খাবার কম খাবেন।
* খুব দ্রুত খাবার খাবেন না। খাবার ধীরে ধীরেসময় নিয়ে ও অল্প অল্প করে খান।
* খাবারের মাঝখানে কখনো পানি খাবেন না।এমনকি খাবারের পর এক থেকে দুুুই ঘণ্টারমধ্যেও পানি না খাওয়াই ভালো। কারণ এতেডাইজেসটিভ জুস পাতলা হয়ে যায়, খাবারহজম হতে দেরি হয় বা বদহজম হয়।
* হাঁটা অবস্থায় অথবা কোনো কাজ করা অবস্থায়খাবেন না। এমনকি টিভি দেখতে দেখতেওখাবেন না। শান্তভাবে বসে খাবার খান।
* খাবার দুই ঘণ্টার মধ্যে ঘুমাতে যাবেন না।
* কখনো একবারে খুব বেশি খাবেন না। পেটযেন অল্প একটু খালি থাকে, সেটা খেয়াল রাখুন।
* অল্প অল্প করে বারবার খান।
* আদা চা, লবণ ইত্যাদি খান। এতে গ্যাস তৈরিহওয়া কমে যায়।
* রাত জাগবেন না।
* কখনো হঠাৎ বুকে ব্যথা হলে, চাপ চাপ ব্যথাহলে অবহেলা করবেন না। হার্টের ব্যথা কি নাতা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হোন।
ফাস্টিং বা পায়ুপথে গ্যাস বের হওয়া
এটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া কিন্তু কখনো বেশি হলেঅস্বস্তি ও বিরক্তির কারণ হয়ে থাকে। এটিসাধারণত কোনো অসুখের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়।
* গ্যাসের সমস্যার সঙ্গে আলসার না থাকলেকখনোই রেনিটিডিন বা ওমিপ্রাজল খাওয়ারপ্রয়োজন নেই। বরং সিমেথিওন বা মোটিলিটিস্টিমুল্যান্ট-জাতীয় ওষুধ দিন।
এসিডিটি বা বুকজ্বলা
পাকস্থলীতে খাদ্য হজমের জন্য সহায়কহাউড্রোক্লোরিক এসিড তৈরি হয়। এই এসিডযাতে পাকস্থলীর ভেতরের গাত্রকে হজম বা ক্ষয়(আলসার) করে না ফেলে সে জন্য পাকস্থলীরভেতরের দিকে একটি পিচ্ছিল আবরণ থাকে। এআবরণটিতে থাকে মিউকাস লেয়ার বামিউকাসের আস্তর। কোনো কারণে এসিডনিঃসরণ বেড়ে গেলে বা পাকস্থলী রক্ষাকারীগাত্রটি ক্ষয়প্রাপ্ত (আলসার) হলে পেটেরউপরিভাগ জ্বলে। পাকস্থলী ওপরের দিকেইসোফেগাসের (খাদ্যনালীর অংশ) সঙ্গে যুক্তথাকে। কোনো কারণে এই এসিড যদিইসোভেগাসে আসে, তবে বুকজ্বলা সমস্যাটিদেখা দেয়। বুকজ্বলা সমস্যাটি হার্টবার্ন নামেওপরিচিত। বাংলাদেশে এসিডিটিতে আক্রান্ত ৯০শতাংশ লোকেরই পাকস্থলীর মিউকাস স্তরক্ষয়ের বড় কারণ হেলিকোব্যাকটার পাইলোরিনামের ব্যাকটেরিয়া। সাধারণত খালি পেটেইএই জ্বলাভাব বেশি হয়। এর সঙ্গে মুখ টক টকহয়, কখনো কখনো বমি-বমি ভাবও হয়।
যাদের আলসার আছে তাদের রক্তবমি, কালোরঙের পায়খানা হতে পারে। এ ছাড়া অতিরিক্তরক্তক্ষরণে রোগী শক বা অজ্ঞান হয়ে যেতেপারে।
এসিডিটি বা বুকজ্বলার চিকিৎসা
এসিডিটি বা বুকজ্বলা সমস্যায় অ্যান্টাসিড,রেনিটিডিন, ওমিপ্রাজল, ইসোমিপ্রাজল,প্যানটোপ্রাজল, ল্যান্সোপ্রাজল, র্যাবেপ্রাজল-জাতীয় ওষুধ সেবন করতে হয়। যাদের আলসারহেলিকোব্যকটার পাইলোরির জন্য হয়, তাদেরজন্য অ্যান্টিবায়োটিক থেরাপির সঙ্গে অ্যান্টিআলসারেন্ট দেওয়া হয়। অ্যান্টিবায়োটিকহিসেবে ইরাথ্রোমাইসিন, নিটাজক্সামাইডইত্যাদি দেওয়া হয়।
এসিডিটি-সংক্রান্ত ভুল ধারণা
অনেকেই ভাবেন রাতে ঠাণ্ডা দুধ খেলে বুকজ্বলাকমে। তাই রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস দুধখান। কিন্তু দুধ কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ওচর্বিসংবলিত একটি ভারী খাবার। এতেপাকস্থলীতে এসিড নিঃসরণের পরিমাণ বেড়েযায়। আর সে কারণে পাকস্থলীতে ক্ষয় বেশিহয়।
অনেকে মনে করেন, এসিডিটি থাকলে ফলখাওয়া ঠিক নয়। কিন্তু পেঁপে, আনারস, আমইত্যাদি ফলে ডাইজেস্টিভ এনজাইম থাকে, যাহজমে সাহায্য করে ও এসিডিটি কমায়।
যে কারণে এসিডিটি বেশি হয়
* ঝাল খাবার
* টক খাবার, যেমন_তেঁতুল, আমড়া
* ভাজাপোড়া খাবার
* অ্যালকোহল
* কফি, চা, চকোলেট-জাতীয় উত্তেজক পানীয়
* সিগারেট, বিড়ি ইত্যাদি তামাকজাত দ্রব্য
এ ছাড়া টেনশনে থাকলে, ব্যথানাশক ওষুধখেলে বুক জ্বলতে পারে
গ্যাসের ব্যথার থেকে রেহাই পেতে
লক্ষণ ও উপসর্গ
১. দুর্গন্ধযুক্ত বা গন্ধহীন ঢেকুর ওঠা |
২. পেট ফেঁপে ওঠা |
৩. পেট ফেঁপে ওঠার দরূন
তলপেটে বা উদরে ব্যথা হওয়া |
কী করা উচিত
১. গ্যাসের ব্যথার থেকে রেহাই
পেতে পিপারমিন্ট, কেমোমাইল
কিংবা ফিনেল
দিয়ে চা বানিয়ে খেতে পারেন|
২. যদি আপনি গ্যাস নির্গমনের চাপ
অনুভব করেন
সেক্ষেত্রে সেটা চেপে রাখবেন না,
প্রয়োজনে রুমের বাইরে গিয়ে হলেও
কাজটা সেরে ফেলুন!
৩. যদি পেটে গ্যাস হবার
কারণে আপনার ব্যথাটা তীব্র
হয়ে ওঠে সেক্ষেত্রে চিত
হয়ে শুয়ে পড়ে পা দুটোকে বুকের
সাথে মেলাতে পারেন
এবং ওভাবে কিছুক্ষণ অবþহান
নিতে পারেন, এই ব্যায়াম চর্চার
মাধ্যমে পেটে জমে থাকা গ্যাস বের
হওয়া সহজ হয়।
কখন ডাক্তার দেখাবেন
১. যদি পেটে গ্যাস হবার
কারণে ব্যাথা আপনার নাভির কাছ
থেকে শুরু হয়ে তলপেটের নিচের দিকের
ডান পাশে পর্যন্ত
সরতে থাকে সেক্ষেত্রে এটা হয়তো
এপেনডিসাইটিসের লক্ষণ|
২. যদি আপনার তিনদিনেরও বেশি সময়
ধরে ক্রমাগত আপনার পেটের
স্ফিতী থেকে যায়|
৩. যদি গ্যাস নির্গমনের সময়
কিংবা মল ত্যাগের সময় আপনার
তলপেটে তীব্র ও আকস্মিক
ব্যথা জেগে ওঠে সেক্ষেত্রে এটা হয়তো
আইবিএস বা ইরিটেবল বাউয়েল
সিনড্রম-এর লক্ষণ।
৪. যদি আপনার পেটে প্রায়ই গ্যাস
জন্মায়, এবং আপনার ওজন
যদি কমতে থাকে, এবং আপনার মলের
রঙ যদি ম্লান হয় এবং দুর্গন্ধ যুক্ত হয়
সেক্ষেত্রে আপনি হয়তো বদহজমের
সমস্যায় ভুগছেন (ম্যালএ্যাবজরশন
ডিজওর্ডার বা স্নেহ জাতীয় পদার্থ
হজমে অসমর্থতা)।
কীভাবে প্রতিরোধ করবেন
১. তীব্র গ্যাস এবং গ্যাস সংক্রান্ত
ব্যথা থেকে আপনি কেবল আপনার খাদ্য
তালিকা পরিবর্তন করেই
মুক্তি পেতে পারেন। মনে রাখবেন
যে যদিও বেশি আঁশযুক্ত
খাবারগুলো গ্যাস তৈরি করে কিন্তু এই
খাবারগুলোই আবার একটি স্বাþহকর
খাদ্য তালিকার জন্যে অপরিহার্য
খাবার। ফল
এবং শাকসব্জি এবং বিচি জাতীয় খাবার
এবং আস্ত
খাদ্যকণা যেগুলো সেগুলো বাদ
না দিয়ে বরং পেটে যাতে গ্যাস না হয়
সেজন্যে খাদ্য তালিকায় নিম্নোক্ত
পরিবর্তনগুলো চেষ্টা করে দেখতে পারেন
:
২. শুকনো সিমের বিচি কিনুন।
সারারাত
সেগুলো পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এবার
পানি ফেলে দিয়ে পরিস্কার
পানিতে বিচিগুলো রান্নার
জন্যে চড়িয়ে দিন। লক্ষ্য রাখবেন
বিচিগুলো যেন পুরোপুরি সেদ্ধ হয়।
৩. প্রচুর পরিমাণ পানি বা পানীয় পান
করুন।
৪. যেসব খাবার বা স্ন্যাকস-
কে মিষ্টি করার জন্যে ফন্সুকটোজ
(ফলের চিনি) ব্যবহার করা হয়
বা সরবিটল (কৃত্তিম চিনি) ব্যবহার
করা হয় সেগুলো পেট ফাঁপার
জন্যে দায়ী।
৫. আস্তে আস্তে খান, খাবার
পুরোপুরি চর্বন করুন,
এবং বেশি খাওয়া পরিত্যাগ করুন।
(মনে রাখবেন যে খাবার পর পেট
ভরেছে এই অনুভূতি আসতে প্রায় ২০
থেকে ৩০ মিনিট সময় লাগে।)
৬. খাবার পর হালকা হাটা চলার
অভ্যাস গড়ে তুলুন। মধ্যম ধরনের শরীর
চর্চা হজমি শক্তিকে বাড়িয়ে তোলে
এবং গ্যাস দ্রুত নির্গমনে সহায়ক
ভূমিকা রাখে।
৭. কার্বোনেটেড পানীয় (যেমন
কোকা কোলা, পেপসি ইত্যাদি),
চুইং গাম, এবং স্ট্র দিয়ে সিপ
করে করে পান করার অভ্যাস ত্যাগ
করুন। এগুলোর প্রত্যেকটিই আপনার
পাকস্থলীতে গ্যাসের পরিমাণ
বৃদ্ধি করে।
=====================================
১। যেসব খাবার খেলে পেটে গ্যাস হয় সেগুলোকম খাবেন। কিছু কিছু ফল আছে যেমন আপেল, নাশপাতি প্রভৃতি ; ব্রকলি, পেয়াজইত্যাদি সবজি ; শস্য দানা, দুগ্ধজাত খাবার,পনির, আইসক্রিম ইত্যাদি খাবার কম খাবেন।এসব খাবারে ফাইবার, চিনি, শ্বেতসার উপাদানথাকে যা কিনা সহজে শোষিত ও হজম হয় না।যার ফলে অন্ত্রে পরিশেষে গ্যাস উতপন্ন হয়। যদিদেখেন কার্বনেটেড সফট ড্রিংক্স, ফলের জুসখেলে গ্যাস হয়ে যায় তবে এগুলোকে খাবারেরতালিকা থেকে বাদ দিতে হবে।
২। খাবারের পূর্বে পানি পান করুন। আপনি যদি খাবারের সময় বেশী পানি পান করেন তাহলে পাকস্থলীতে এসিড নিঃসরণ কম হবে, ফলেখাদ্য পরিপাকে সমস্যা হবে। চিকিৎসকেরা বলেথাকেন, খাবার গ্রহন করার ৩০ মিনিট পর পানিপান করা উচিত।
৩। ধীরে সুস্থে খাবার গ্রহন ও পানি পান করুন।তাড়াতাড়ি খাবার খেলে খাবারের সাথে পেটেবাতাস ঢুকে পড়ে।
৪। যাদের খাবার খেলেই গ্যাস হয় তাদেরখাবারের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এসিড ব্লকার কিংবা এন্টাসিড জাতীয় ঔষধখাওয়া উচিত। beano এক ধরনের ডাইজেস্টিভএনজাইম। ফাইবার কিংবা ল্যাকটোজেরকারনে গ্যাস হলে beano গ্যাস কমাতেসহায়তা করে।
৫। এক্টিভেটেড চারকোল বা কাঠকয়লা গ্যাসকমায়। ব্যাপারটা শুনতে অদ্ভুত মনে হলেওএক্টিভেটেড চারকোল অতিরিক্ত গ্যাস এবংপেটফুলা কমায়। এজাতীয় ঔষধ পাবেনফার্মেসী তে।
৬। ধুমপান, চুইংগাম চিবানোর ফলে পেটেঅতিরিক্ত বাতাস ঢুকে পড়ে। স্ট্র দিয়ে তরল পানকরলেও বাতাস প্রবেশ করে যা কিনা পরবর্তীতেগ্যাস বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়। তাই এদিকে লক্ষ্যরাখবেন।
৭। সুগার ফ্রী জাতীয় খাবার, সফট ড্রিংস, গামইত্যাদি কৃত্রিম সরবিটল যুক্ত মিষ্টি জিনিসওগ্যাস হওয়ার জন্য দায়ী। এ ব্যাপারে খেয়ালরাখবেন।
হলুদ
হলুদ গ্যাসের ভালো ওষুধ। প্রতিদিন একগ্লাসদুধে দুই চা চামচ হলুদ বাটা মিশিয়ে খেলেউপকার পাবেন।
পেয়ারা পাতা
পেয়ারা খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনি এর পাতাওবেশ উপকারি। ৫ থেকে ৬টি পেয়ারা পাতাপানিতে ১০ মিনিট সেদ্ধ করুন। তারপর ছেঁকেঠাণ্ডা করে পানি পান করুন। গ্যাস্ট্রিক সারাতেএটি সবচেয়ে সহজ সমাধান।
আলুর রস
খাওয়ার আগে ১/২ কাপ আলুর রস পান করুন।দিনে তিনবার খেলে উপকার পাবেন।
আদার রস
খাওয়ার পর আদা চটকিয়ে খেতে পারেন।এছাড়াও আদা সেদ্ধ পানিতে লবণ দিয়েও খেতেপারেন। আদা চা খেলেও একই উপকার পাওয়াযাবে।
বেকিং পাউডার
বেকিং সোডা শুধু মজাদার খাবারেই ব্যবহৃতহয় না, গ্যাস তাড়াতেও এটি খুব ভালো কাজকরে। একগ্লাস পানিতে ১/৪ চা চামচ বেকিংপাউডার মিশিয়ে পান করুন। এছাড়াও এক গ্লাসপানিতে লেবুর রস ও এক চিমটি বেকিংপাউডার মিশিয়ে খেলেও উপকার পাবেন।
আপেল সাইডার ভিনেগার
এক গ্লাস গরম পানিতে দুই টেবিল চামচ আপেলসাইডার ভিনেগার মিশিয়ে স্বাভাবিকতাপমাত্রায় রেখে ঠাণ্ডা করুন। ঠাণ্ডা হয়ে এলেধীরে ধীরে পান করুন।
দারুচিনি
এক গ্লাস দুধে ১/২ চা চামচ দারুচিনি গুড়া ও মধুমিশিয়ে খান, পেটের গ্যাস উধাও হয়ে যাবে।
পেটে গ্যাস ও বুকের জ্বালা পোঁড়ায় কি করবেন
এটা খেলে পেটে গ্যাস হয়, ওটা আমি খেতেপারি না, আমার গ্যাসের সমস্যা আছে ইত্যাদিঅভিযোগ রোগীদের। তাঁদের ভাষায়, গ্যাস্ট্রিকসমস্যায় ভুগছেন তাঁরা। পেটে গ্যাস, এসিডিটিবা বুকজ্বলা নিয়ে লিখেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবমেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিবিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান ডা. এ এস এমএ রায়হান
চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় যদিও গ্যাস্ট্রিক নামেকোনো রোগ নেই, গ্যাস্ট্রিক নামে যে অঙ্গটিআছে তা বাংলায় পাকস্থলী নামে পরিচিত।গ্যাস্ট্রিক নামে রোগ না থাকলেও যেসব সমস্যানিয়ে রোগীরা আসেন সেগুলোও কিন্তু অসুখ।এর কোনোটি স্রেফ গ্যাস হওয়া। আবারকোনোটি এসিডিটি হওয়া।
প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ হ্যারিসনবলেছিলেন, 'আমার কাছে সব রোগের ব্যাখ্যাআছে, শুধু ব্যাখ্যা নেই একটি রোগের, তা হলোগ্যাস।'
মেডিসিনে হ্যারিসনের কথা বাইবেলের বাণীরমতো। তাই এই মহান চিকিৎসকের কাছে যখনএই রোগের কোনো ব্যাখ্যা নেই, আমাদের মতোক্ষুদ্র মানুষের কাছে তার ব্যাখ্যা না থাকাইস্বাভাবিক। তাই কোনো রোগী যখন পেট ফুলেযাওয়া বা বেশি বেশি ঢেঁকুর তোলা বা পেটেঅস্বস্তির সমস্যা নিয়ে আসেন, চিকিৎসকরাচোখ বন্ধ করে রেনিটিডিন বা ওমিপ্রাজল ওষুধদেন। অথচ গ্যাসের চিকিৎসায় বাস্তবে এসবওষুধের কোনো ভূমিকা নেই।
গ্যাসের সমস্যা আসলে কী আর এসিডিটিই বাকী? এসবের লক্ষণ ও চিকিৎসায় পার্থক্য কী?
গ্যাস হওয়া
আমেরিকান রিসার্চ সেন্টার অবগ্যাস্ট্রোএন্টারোলজির মতে, পৃথিবীর মোটজনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশই গ্যাসের সমস্যায়ভুগছে।
মনে রাখতে হবে, খাবার পর অন্ত্রে (ক্ষুদ্রান্ত্র ওবৃহদান্ত্র) গ্যাস তৈরি হওয়া স্বাভাবিক একটিপ্রক্রিয়া। ২৪ ঘণ্টায় অন্তত এক থেকে চার পাইন্টগ্যাস অন্ত্রে তৈরি হয়। এই গ্যাস ২৪ ঘণ্টায়সাধারণত ১৪ বারে ঢেঁকুর হিসেবে বা পায়ুপথেবের হয়। আমরা যেসব খাবার খাই তা হজমহয়। এই হজম হওয়ার প্রক্রিয়াতেই উপজাত বাবাইপ্রোডাক্ট হিসেবে গ্যাস উৎপন্ন হয়। আবারবৃহদন্ত্রে (যেখানে হজম হওয়া খাবার মলহিসেবে জমা থাকে) থাকে অনেক ব্যাকটেরিয়া।এগুলোও গ্যাস তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।যে গ্যাসগুলো অন্ত্রে তৈরি হয় তার মধ্যে আছেকার্বন ডাই-অক্সাইড, হাইড্রোজেন ও মিথেনগ্যাস। কখনো কখনো সালফাইড জাতীয়গ্যাসও তৈরি হয়। কোনো কারণে স্বাভাবিকেরচেয়ে গ্যাস তৈরি হলে গ্যাস সমস্যা তৈরি হয়।গ্যাস তৈরি হওয়ার সমস্যা সাধারণত তিনধরনের।
* বেলচিং বা ঢেঁকুর ওঠা
* ব্লটিং বা পেট ফুলে যাওয়া
* ফাস্টিং বা পায়ুপথে গ্যাস বের হওয়া
বেলচিং বা ঢেঁকুর ওঠা
ঢেঁকুর ওঠা স্বাভাবিক, তবে স্বাভাবিকের চেয়েবেশি ওঠা অস্বস্তিকর ও কষ্টকর। সাধারণতনিচের কারণগুলোর জন্য স্বাভাবিকের চেয়েবেশি ঢেঁকুর ওঠে।
* খাবার গ্রহণের সময় অপ্রয়োজনে বেশি বেশিঢোক গিললে, কথা বেশি বললে, বারবার পানিপান করলে পাকস্থলীতে বাড়তি বাতাসপরিবেশ থেকে প্রবেশ করে। এগুলো পরে বেরহয়।
* ধূমপান, হুঁকো বা পাইপ খেলে।
* কোল্ডড্রিংকস বা সোডা-জাতীয় পানীয় বেশিবেশি পান করলে।
* জুস বা কোনো ড্রিংকস পানের সময় স্ট্রব্যবহার করলে।
* চুইংগাম বা চিবিয়ে খেতে হয় এমন খাবারবেশি খেলে।
* ঠিকমতো ফিট হয়নি এমন নকল দাঁত ব্যবহারকরলে। এ ক্ষেত্রে ঢোক গেলার হার বেশি হয় ওআটকে পড়া বাতাস পাকস্থলীতে ঢুকে যায়।
* অভ্যাসের কারণেও অনেকের বেশি ঢেঁকুরওঠে।
* কিছু অসুখের কারণে বেশি বেশি ঢেঁকুর উঠতেপারে। যেমন_
জিইআরডি বা গ্যাস্ট্রো ইসোফেজাল রিফ্লাক্সডিজিজ (বুকজ্বলা), হায়াটাস হার্নিয়া, ফ্রুক্টোজম্যাল অ্যাবজর্বশন বা চিনি-জাতীয় খাদ্যশোষণজনিত সমস্যা, ইউরেমিয়া, ক্রনিকরেনাল ফেইলিওর ও ডায়াফ্রামের ইরিটেশন।
ব্লটিং বা পেট ফুলে যাওয়া
এই রোগে পেট ফুলে যায়, বুকে অস্বস্তি বোধ হয়,সব সময় পেট ভরা ভরা অনুভূত হয়, অনেকসময় বুকে চাপ ধরা ব্যথার মতো মনে হয়।কোনো কোনো সময় বুকের ব্যথা বা অস্বস্তিকেরোগী ও চিকিৎসক উভয়ই হার্টের অসুখ বাএনজাইনা বলে বিভ্রান্ত হন, আতঙ্কিত হয়েপড়েন।
নিচের কারণগুলোর জন্য ব্লটিং হয়_
* কিছু খাবারের কারণে, যেমন_
শিমের বীজ, মটরশুঁটি, ডালজাতীয় খাবার,চর্বিজাতীয় বা তৈলাক্ত খাবার, দুধ ও দুগ্ধজাতখাবার_ঘি, পনির, দই ইত্যাদি।
কিছু সবজি যেমন_ওল, আলু, পেঁয়াজ ইত্যাদি।
কিছু ফল যেমন_আপেল, কলা ইত্যাদি।
সিরিয়াল (যেমন কর্নফ্লেক্স), কেক, পেস্ট্রি,চকোলেট, কোল্ডড্রিংকস ইত্যাদি।
* কিছু কিছু অসুখের কারণে, যেমন_
জিইআরডি বা গ্যাস্ট্রো ইসোফেজিয়ার রিফ্লাক্সডিজিজ (বুকজ্বলা)
পিইউডি বা পেপটিক আলসার ডিজিজ।
পিত্তথলির পাথর বা গলস্টোন।
আইবিএস বা ইরিটেবল বাওল সিনড্রোম।
কী করণীয়
এ ধরনের সমস্যায় পড়লে ডাক্তার দেখাতে হবে।তিনি পরীক্ষা করে যদি বলেন, আপনার পেটেরঅস্বস্তি কোনো অসুখের কারণে নয়, সে ক্ষেত্রেআপনি কয়েকটি নিয়ম মেনে চললে ভালোথাকবেন।
১. পরীক্ষা করে নিজেই নিশ্চিত হোন কোনখাবারের কারণে আপনার সমস্যা হচ্ছে। এটিদুটি পদ্ধতিতে নিশ্চিত করা যায়_
ক. আপনার যদি মনে হয় বিশেষ ধরনেরখাবারের জন্য সমস্যা হচ্ছে, তার একটিতালিকা তৈরি করুন। ধরা যাক, আপনার দুধ ওদুগ্ধজাত খাবারে সমস্যা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রেযেকোনো এক ধরনের (ধরুন দুধ ও দুগ্ধজাতখাবার) খাবার অন্তত সাত দিন বন্ধ রাখুন। যদিদেখেন এতে আপনার সমস্যা কমে গেছে,তাহলে বুঝবেন এটিই আপনার অস্বস্তির কারণ।কিন্তু যদি আপনার সমস্যা একই রকম থাকে,তবে এটি খাওয়া আবার শুরু করে তালিকারঅন্য ধরনের খাবার অন্তত সাত দিন বন্ধ রাখতেহবে। এ প্রক্রিয়ায় নিশ্চিত হোন নির্দিষ্ট কোনোখাবারে আপনার সমস্যা হচ্ছে কি না।
খ. দ্বিতীয় পদ্ধতি হলো সন্দেহজনক সব খাবারসাত দিন বন্ধ রাখা। এরপর প্রতিদিন ওইসন্দেহভাজন খাদ্য এক এক করে যোগ করুনএবং লক্ষ করুন তাতে সমস্যা হচ্ছে কি না।যেমন_সবজি যোগ করুন এবং খেয়াল করুনকোনো সমস্যা হচ্ছে কি না। সমস্যা হলে তোবুঝেই গেলেন, না হলে এর সঙ্গে আবার অন্যখাবার যোগ করুন। এভাবে বন্ধ করে দেওয়াখাবারগুলো আবার এক এক করে যোগ করেদেখুন নির্দিষ্ট কোন খাবারে সমস্যা হচ্ছে।
২ . অনিয়ম ও টেনশন করলে পেটে গ্যাস হওয়াবেড়ে যায়।
তাই কিছু নিয়ম মেনে চলুন_
* চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করুন।
* ধূমপান করবেন না।
* দুগ্ধজাত খাবার কম খাবেন।
* খুব দ্রুত খাবার খাবেন না। খাবার ধীরে ধীরেসময় নিয়ে ও অল্প অল্প করে খান।
* খাবারের মাঝখানে কখনো পানি খাবেন না।এমনকি খাবারের পর এক থেকে দুুুই ঘণ্টারমধ্যেও পানি না খাওয়াই ভালো। কারণ এতেডাইজেসটিভ জুস পাতলা হয়ে যায়, খাবারহজম হতে দেরি হয় বা বদহজম হয়।
* হাঁটা অবস্থায় অথবা কোনো কাজ করা অবস্থায়খাবেন না। এমনকি টিভি দেখতে দেখতেওখাবেন না। শান্তভাবে বসে খাবার খান।
* খাবার দুই ঘণ্টার মধ্যে ঘুমাতে যাবেন না।
* কখনো একবারে খুব বেশি খাবেন না। পেটযেন অল্প একটু খালি থাকে, সেটা খেয়াল রাখুন।
* অল্প অল্প করে বারবার খান।
* আদা চা, লবণ ইত্যাদি খান। এতে গ্যাস তৈরিহওয়া কমে যায়।
* রাত জাগবেন না।
* কখনো হঠাৎ বুকে ব্যথা হলে, চাপ চাপ ব্যথাহলে অবহেলা করবেন না। হার্টের ব্যথা কি নাতা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হোন।
ফাস্টিং বা পায়ুপথে গ্যাস বের হওয়া
এটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া কিন্তু কখনো বেশি হলেঅস্বস্তি ও বিরক্তির কারণ হয়ে থাকে। এটিসাধারণত কোনো অসুখের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়।
* গ্যাসের সমস্যার সঙ্গে আলসার না থাকলেকখনোই রেনিটিডিন বা ওমিপ্রাজল খাওয়ারপ্রয়োজন নেই। বরং সিমেথিওন বা মোটিলিটিস্টিমুল্যান্ট-জাতীয় ওষুধ দিন।
এসিডিটি বা বুকজ্বলা
পাকস্থলীতে খাদ্য হজমের জন্য সহায়কহাউড্রোক্লোরিক এসিড তৈরি হয়। এই এসিডযাতে পাকস্থলীর ভেতরের গাত্রকে হজম বা ক্ষয়(আলসার) করে না ফেলে সে জন্য পাকস্থলীরভেতরের দিকে একটি পিচ্ছিল আবরণ থাকে। এআবরণটিতে থাকে মিউকাস লেয়ার বামিউকাসের আস্তর। কোনো কারণে এসিডনিঃসরণ বেড়ে গেলে বা পাকস্থলী রক্ষাকারীগাত্রটি ক্ষয়প্রাপ্ত (আলসার) হলে পেটেরউপরিভাগ জ্বলে। পাকস্থলী ওপরের দিকেইসোফেগাসের (খাদ্যনালীর অংশ) সঙ্গে যুক্তথাকে। কোনো কারণে এই এসিড যদিইসোভেগাসে আসে, তবে বুকজ্বলা সমস্যাটিদেখা দেয়। বুকজ্বলা সমস্যাটি হার্টবার্ন নামেওপরিচিত। বাংলাদেশে এসিডিটিতে আক্রান্ত ৯০শতাংশ লোকেরই পাকস্থলীর মিউকাস স্তরক্ষয়ের বড় কারণ হেলিকোব্যাকটার পাইলোরিনামের ব্যাকটেরিয়া। সাধারণত খালি পেটেইএই জ্বলাভাব বেশি হয়। এর সঙ্গে মুখ টক টকহয়, কখনো কখনো বমি-বমি ভাবও হয়।
যাদের আলসার আছে তাদের রক্তবমি, কালোরঙের পায়খানা হতে পারে। এ ছাড়া অতিরিক্তরক্তক্ষরণে রোগী শক বা অজ্ঞান হয়ে যেতেপারে।
এসিডিটি বা বুকজ্বলার চিকিৎসা
এসিডিটি বা বুকজ্বলা সমস্যায় অ্যান্টাসিড,রেনিটিডিন, ওমিপ্রাজল, ইসোমিপ্রাজল,প্যানটোপ্রাজল, ল্যান্সোপ্রাজল, র্যাবেপ্রাজল-জাতীয় ওষুধ সেবন করতে হয়। যাদের আলসারহেলিকোব্যকটার পাইলোরির জন্য হয়, তাদেরজন্য অ্যান্টিবায়োটিক থেরাপির সঙ্গে অ্যান্টিআলসারেন্ট দেওয়া হয়। অ্যান্টিবায়োটিকহিসেবে ইরাথ্রোমাইসিন, নিটাজক্সামাইডইত্যাদি দেওয়া হয়।
এসিডিটি-সংক্রান্ত ভুল ধারণা
অনেকেই ভাবেন রাতে ঠাণ্ডা দুধ খেলে বুকজ্বলাকমে। তাই রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস দুধখান। কিন্তু দুধ কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ওচর্বিসংবলিত একটি ভারী খাবার। এতেপাকস্থলীতে এসিড নিঃসরণের পরিমাণ বেড়েযায়। আর সে কারণে পাকস্থলীতে ক্ষয় বেশিহয়।
অনেকে মনে করেন, এসিডিটি থাকলে ফলখাওয়া ঠিক নয়। কিন্তু পেঁপে, আনারস, আমইত্যাদি ফলে ডাইজেস্টিভ এনজাইম থাকে, যাহজমে সাহায্য করে ও এসিডিটি কমায়।
যে কারণে এসিডিটি বেশি হয়
* ঝাল খাবার
* টক খাবার, যেমন_তেঁতুল, আমড়া
* ভাজাপোড়া খাবার
* অ্যালকোহল
* কফি, চা, চকোলেট-জাতীয় উত্তেজক পানীয়
* সিগারেট, বিড়ি ইত্যাদি তামাকজাত দ্রব্য
এ ছাড়া টেনশনে থাকলে, ব্যথানাশক ওষুধখেলে বুক জ্বলতে পারে
গ্যাসের ব্যথার থেকে রেহাই পেতে
লক্ষণ ও উপসর্গ
১. দুর্গন্ধযুক্ত বা গন্ধহীন ঢেকুর ওঠা |
২. পেট ফেঁপে ওঠা |
৩. পেট ফেঁপে ওঠার দরূন
তলপেটে বা উদরে ব্যথা হওয়া |
কী করা উচিত
১. গ্যাসের ব্যথার থেকে রেহাই
পেতে পিপারমিন্ট, কেমোমাইল
কিংবা ফিনেল
দিয়ে চা বানিয়ে খেতে পারেন|
২. যদি আপনি গ্যাস নির্গমনের চাপ
অনুভব করেন
সেক্ষেত্রে সেটা চেপে রাখবেন না,
প্রয়োজনে রুমের বাইরে গিয়ে হলেও
কাজটা সেরে ফেলুন!
৩. যদি পেটে গ্যাস হবার
কারণে আপনার ব্যথাটা তীব্র
হয়ে ওঠে সেক্ষেত্রে চিত
হয়ে শুয়ে পড়ে পা দুটোকে বুকের
সাথে মেলাতে পারেন
এবং ওভাবে কিছুক্ষণ অবþহান
নিতে পারেন, এই ব্যায়াম চর্চার
মাধ্যমে পেটে জমে থাকা গ্যাস বের
হওয়া সহজ হয়।
কখন ডাক্তার দেখাবেন
১. যদি পেটে গ্যাস হবার
কারণে ব্যাথা আপনার নাভির কাছ
থেকে শুরু হয়ে তলপেটের নিচের দিকের
ডান পাশে পর্যন্ত
সরতে থাকে সেক্ষেত্রে এটা হয়তো
এপেনডিসাইটিসের লক্ষণ|
২. যদি আপনার তিনদিনেরও বেশি সময়
ধরে ক্রমাগত আপনার পেটের
স্ফিতী থেকে যায়|
৩. যদি গ্যাস নির্গমনের সময়
কিংবা মল ত্যাগের সময় আপনার
তলপেটে তীব্র ও আকস্মিক
ব্যথা জেগে ওঠে সেক্ষেত্রে এটা হয়তো
আইবিএস বা ইরিটেবল বাউয়েল
সিনড্রম-এর লক্ষণ।
৪. যদি আপনার পেটে প্রায়ই গ্যাস
জন্মায়, এবং আপনার ওজন
যদি কমতে থাকে, এবং আপনার মলের
রঙ যদি ম্লান হয় এবং দুর্গন্ধ যুক্ত হয়
সেক্ষেত্রে আপনি হয়তো বদহজমের
সমস্যায় ভুগছেন (ম্যালএ্যাবজরশন
ডিজওর্ডার বা স্নেহ জাতীয় পদার্থ
হজমে অসমর্থতা)।
কীভাবে প্রতিরোধ করবেন
১. তীব্র গ্যাস এবং গ্যাস সংক্রান্ত
ব্যথা থেকে আপনি কেবল আপনার খাদ্য
তালিকা পরিবর্তন করেই
মুক্তি পেতে পারেন। মনে রাখবেন
যে যদিও বেশি আঁশযুক্ত
খাবারগুলো গ্যাস তৈরি করে কিন্তু এই
খাবারগুলোই আবার একটি স্বাþহকর
খাদ্য তালিকার জন্যে অপরিহার্য
খাবার। ফল
এবং শাকসব্জি এবং বিচি জাতীয় খাবার
এবং আস্ত
খাদ্যকণা যেগুলো সেগুলো বাদ
না দিয়ে বরং পেটে যাতে গ্যাস না হয়
সেজন্যে খাদ্য তালিকায় নিম্নোক্ত
পরিবর্তনগুলো চেষ্টা করে দেখতে পারেন
:
২. শুকনো সিমের বিচি কিনুন।
সারারাত
সেগুলো পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এবার
পানি ফেলে দিয়ে পরিস্কার
পানিতে বিচিগুলো রান্নার
জন্যে চড়িয়ে দিন। লক্ষ্য রাখবেন
বিচিগুলো যেন পুরোপুরি সেদ্ধ হয়।
৩. প্রচুর পরিমাণ পানি বা পানীয় পান
করুন।
৪. যেসব খাবার বা স্ন্যাকস-
কে মিষ্টি করার জন্যে ফন্সুকটোজ
(ফলের চিনি) ব্যবহার করা হয়
বা সরবিটল (কৃত্তিম চিনি) ব্যবহার
করা হয় সেগুলো পেট ফাঁপার
জন্যে দায়ী।
৫. আস্তে আস্তে খান, খাবার
পুরোপুরি চর্বন করুন,
এবং বেশি খাওয়া পরিত্যাগ করুন।
(মনে রাখবেন যে খাবার পর পেট
ভরেছে এই অনুভূতি আসতে প্রায় ২০
থেকে ৩০ মিনিট সময় লাগে।)
৬. খাবার পর হালকা হাটা চলার
অভ্যাস গড়ে তুলুন। মধ্যম ধরনের শরীর
চর্চা হজমি শক্তিকে বাড়িয়ে তোলে
এবং গ্যাস দ্রুত নির্গমনে সহায়ক
ভূমিকা রাখে।
৭. কার্বোনেটেড পানীয় (যেমন
কোকা কোলা, পেপসি ইত্যাদি),
চুইং গাম, এবং স্ট্র দিয়ে সিপ
করে করে পান করার অভ্যাস ত্যাগ
করুন। এগুলোর প্রত্যেকটিই আপনার
পাকস্থলীতে গ্যাসের পরিমাণ
বৃদ্ধি করে।
=====================================
১। যেসব খাবার খেলে পেটে গ্যাস হয় সেগুলোকম খাবেন। কিছু কিছু ফল আছে যেমন আপেল, নাশপাতি প্রভৃতি ; ব্রকলি, পেয়াজইত্যাদি সবজি ; শস্য দানা, দুগ্ধজাত খাবার,পনির, আইসক্রিম ইত্যাদি খাবার কম খাবেন।এসব খাবারে ফাইবার, চিনি, শ্বেতসার উপাদানথাকে যা কিনা সহজে শোষিত ও হজম হয় না।যার ফলে অন্ত্রে পরিশেষে গ্যাস উতপন্ন হয়। যদিদেখেন কার্বনেটেড সফট ড্রিংক্স, ফলের জুসখেলে গ্যাস হয়ে যায় তবে এগুলোকে খাবারেরতালিকা থেকে বাদ দিতে হবে।
২। খাবারের পূর্বে পানি পান করুন। আপনি যদি খাবারের সময় বেশী পানি পান করেন তাহলে পাকস্থলীতে এসিড নিঃসরণ কম হবে, ফলেখাদ্য পরিপাকে সমস্যা হবে। চিকিৎসকেরা বলেথাকেন, খাবার গ্রহন করার ৩০ মিনিট পর পানিপান করা উচিত।
৩। ধীরে সুস্থে খাবার গ্রহন ও পানি পান করুন।তাড়াতাড়ি খাবার খেলে খাবারের সাথে পেটেবাতাস ঢুকে পড়ে।
৪। যাদের খাবার খেলেই গ্যাস হয় তাদেরখাবারের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এসিড ব্লকার কিংবা এন্টাসিড জাতীয় ঔষধখাওয়া উচিত। beano এক ধরনের ডাইজেস্টিভএনজাইম। ফাইবার কিংবা ল্যাকটোজেরকারনে গ্যাস হলে beano গ্যাস কমাতেসহায়তা করে।
৫। এক্টিভেটেড চারকোল বা কাঠকয়লা গ্যাসকমায়। ব্যাপারটা শুনতে অদ্ভুত মনে হলেওএক্টিভেটেড চারকোল অতিরিক্ত গ্যাস এবংপেটফুলা কমায়। এজাতীয় ঔষধ পাবেনফার্মেসী তে।
৬। ধুমপান, চুইংগাম চিবানোর ফলে পেটেঅতিরিক্ত বাতাস ঢুকে পড়ে। স্ট্র দিয়ে তরল পানকরলেও বাতাস প্রবেশ করে যা কিনা পরবর্তীতেগ্যাস বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়। তাই এদিকে লক্ষ্যরাখবেন।
৭। সুগার ফ্রী জাতীয় খাবার, সফট ড্রিংস, গামইত্যাদি কৃত্রিম সরবিটল যুক্ত মিষ্টি জিনিসওগ্যাস হওয়ার জন্য দায়ী। এ ব্যাপারে খেয়ালরাখবেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন