Recent post
সোমবার, ২৭ মার্চ, ২০১৭
চোখের ব্যথা ও সাধারণ সমস্যা
চোখ ও এর আশপাশে বহু কারণে ব্যথা হতে পারে। এ কারণগুলো বুঝতে চোখ ও এর আশপাশে যা যা আছে তা চেনা দরকার। চোখের একেবারে সামনে থাকে কর্নিয়া। এটি স্বচ্ছ কাচের মতো। এটি বাইরে থেকে আসা আলোকরশ্মিকে ফোকাস করে। চোখের মণির আবরণ হিসাবেই কর্নিয়া থাকে। চোখের সাদা অংশটি স্ক্লেরা নামে পরিচিত। সাদা ও কালো উভয় অংশ খুব পাতলা একটি আবরণ দিয়ে ঢাকা থাকে- যার নাম কনজাংটিভা। চোখের কালো মণির নাম আইরিস। চোখ যে অক্ষিকোটরে থাকে তার নাম অরবিট। নড়াচড়ার জন্য চোখে অনেক মাংসপেশি থাকে। চোখে নার্ভ বা স্নায়ু থাকে। আর পুরো চোখ ঢেকে রাখে চোখের পাতা।
চোখ ব্যথার কারণ
অনেক রোগের কারণেই চোখ ব্যথা হতে পারে। যেমন- চোখ উঠা, চোখের মণির কোনো রোগ, আঘাতজনিত কোনো রোগ, চোখের ভেতরের রোগ ইত্যাদি। শরীরের রোগের মধ্যে মাইগ্রেন, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি কারণে চোখ ব্যথা হতে পারে। চোখ ব্যথার সাধারণ কারণগুলোর মধ্যে আছে-
* কনজাংটিভাইটিস বা চোখ উঠা : চোখ লালচে, গোলাপি বর্ণের হয়। জ্বালাপোড়া করে। সাধারণত অ্যালার্জি থেকে চোখের আবরণীর এই প্রদাহ দেখা দেয়। তবে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণে কনজাংটিভাইটিস হতে পারে। চোখ খুব চুলকায়, চোখে ময়লা জমে।
* চোখের পাতায় প্রদাহ বা ব্লিফারটিস : চোখের পাতায় অঞ্জন বা কোনো কারণে প্রদাহ হলেও চোখ ব্যথা করতে পারে।
* কর্নিয়ায় আঘাত : সাধারণত চোখে বালুর মতো দানাদার কিছু ঢুকলে এবং অতঃপর চোখ ডলাডলি করলে কর্নিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এ ছাড়া হঠাৎ গাছের পাতার আঘাত বা চোখে কোনো কিছুর আঘাত থেকেও এটি হতে পারে। এতে তীব্র ব্যথা হয়।
* কর্নিয়া ইনফেকশন : সাধারণত হার্পিস জোস্টার ভাইরাস দিয়ে এ ধরনের ইনফেকশন হয়। যাঁরা কনটাক্ট লেন্স ব্যবহার করেন, তাঁদেরও এ ইনফেকশন হতে পারে। এতে ব্যথা হয়, চোখে অস্বস্তি বোধ হয়।
* চোখে কিছু ঢুকলে : যত ছোটই হোক কিছু চোখে ঢুকলে অস্বস্বি হবেই। তবে দানাদার, রাসায়নিক, ধোঁয়া ইত্যাদিতে চোখ ব্যথা হতে পারে। সাধারণত ভালো করে পানি দিয়ে চোখ পরিষ্কার করে ফেললে সমস্যাটি চলে যায়। যদি ভেতরে ঢোকা পদার্থটি বের করা না যায়, তবে তীব্র ব্যথাও হতে পারে।
* গ্লুকোমা : চোখের একটি রোগ, যাতে প্রাথমিক পর্যায়ে তেমন কোনো লক্ষণ থাকে না। চোখের অভ্যন্তরীণ চাপ বেড়ে গিয়ে রোগটি হয়। লক্ষণ হিসেবে থাকতে পারে তীব্র চোখ ব্যথা, বমি ও বমিবমি ভাব, মাথাব্যথা, দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া ইত্যাদি। অ্যাকিউট অ্যাঙ্গল ক্লোজার নামে এক ধরনের গ্লুকোমা আছে, যা হঠাৎ করেই হতে পারে। দ্রুত ও সঠিক চিকিৎসা না করলে এ থেকে অন্ধত্বও হতে পারে।
* চোখের মণির প্রদাহ : চোখের মণির প্রদাহ হতে পারে, তবে তা খুব বেশি ক্ষেত্রে দেখা যায় না। সাধারণত আঘাত, ইনফেকশন, অটোইমিউন বা রোগপ্রতিরোধ শক্তি কমে যাওয়াজনিত অসুখ থেকে এটি হতে পারে। এতে চোখ ব্যথা হয়, লাল হয়ে যায় এবং দৃষ্টিশক্তি কমে যায়।
* চোখের নার্ভের প্রদাহ : চোখের ঠিক পেছনেই থাকে অপটিক নার্ভ বা চোখের স্নায়ু, যা সরাসরি মস্তিষ্কের সঙ্গে যুক্ত। এই নার্ভে প্রদাহ হলেও চোখে তীব্র ব্যথা হয়। সাধারণত স্ক্লেরোসিস, ইনফেকশন থেকে এ রোগ হয়। এতে দৃষ্টিশক্তিও কমে যায়।
* সাইনোসাইটিস : মুখমণ্ডলের হাড়ের মধ্যে বেশ কিছু বায়ুপূর্ণ ফাঁকা স্থান থাকে, যা সাইনাস নামে পরিচিত। এগুলোয় ইনফেকশন হতে পারে। চোখের চারদিকে এসব সাইনাসের অবস্থান বলে ইনফেকশন হলে চোখেও ব্যথা হতে পারে।
* চোখের অঞ্জন : চোখের পাতার ঠিক প্রান্তে হয়। খুব ব্যথা হয়। কয়েক দিন ব্যথা থেকে চলে যায়।
চোখ ব্যথার উপসর্গ
সাধারণত চোখ ব্যথার সঙ্গে নিচের উপসর্গগুলো দেখা যায়।
* দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া
* চোখ দিয়ে পানি বা পিঁচুটি পড়া
* চোখের ভেতর কিছু আটকে আছে এমন অনুভূতি হওয়া
* মাথাব্যথা
* আলোর দিকে তাকাতে অস্বস্তিবোধ, চোখে ব্যথা বা চাপ অনুভব করা
* বমি ও বমিবমি ভাব
* চোখের মণি লালচে বা গোলাপি হয়ে যাওয়া
* অনবরত পানি ঝরা
* ঘুম থেকে উঠার পর পিঁচুটি জমে চোখ বন্ধ হয়ে থাকা।
চিকিৎসা
চোখ ব্যথার পাশাপাশি যদি হঠাৎ দৃষ্টিশক্তি কমে যায়, চোখে অসহনীয় ব্যথা হয়, কান, মাথা ঘোরানো- এ ধরনের কোনো অসুবিধা হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
তবে কোনো রোগ ছাড়াও ব্যথা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে যদি চশমার প্রয়োজন হয়, তা হলে চোখ পরীক্ষা করে প্রয়োজনমতো চশমা ব্যবহার করা উচিত। কোনো মানসিক চাপ থাকলে তা নিয়ন্ত্রণ বা চিকিৎসা করাতে হবে।
সাধারণ যে কারণগুলোর জন্য চোখ ব্যথা হয়, সেগুলোর যথাযথ চিকিৎসা নিতে হবে। যেমন- কনজাংটিভাইটিস বা চোখ উঠা রোগে অ্যান্টিহিস্টামিন আই ড্রপ ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়। কর্নিয়াতে আঘাত পেলে অ্যান্টিবায়োটিক অয়েন্টমেন্ট প্রয়োগ করতে হয় ও নিয়মিত চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকতে হয়। গ্লুকোমাজনিত ব্যথায় চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়মিত নিতে হয়, তার পরামর্শে আই ড্রপ ও ওষুধ সেবন করতে হয় চোখের অভ্যন্তরীণ চাপ কম রাখার জন্য, কখনো কখনো গ্লুকোমায় সার্জারিও লাগতে পারে। কর্নিয়ার ইনফেকশনে অ্যান্টিভাইরাল বা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল আই ড্রপ ব্যবহার করতে হয়। মণির প্রদাহে স্টেরয়েড, অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টিভাইরাল ড্রপ লাগতে পারে। নার্ভের প্রদাহ বা নিউরাইটিসে কর্টিকোস্টেরয়েড প্রয়োগের প্রয়োজন হতে পারে। অঞ্জনির জন্য তেমন ওষুধ প্রয়োজন নেই, হালকা গরম সেক ও পরিষ্কার রাখলেই কয়েক দিনে তা ভালো হয়ে যায়।
কখন চোখ পরীক্ষা করতে হবে
বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ছয় বছর বয়সের আগে কোনো সমস্যা থাক বা না থাক অবশ্যই একবার চক্ষু পরীক্ষা করাতে হবে। এ ছাড়া যাদের কখনো চোখের কোনো সমস্যা হয়নি কিন্তু বয়স ৩৫-এর ওপরে, যাদের ডায়াবেটিস বা হাইপারটেনশন আছে অথবা কোনো ওষুধ দীর্ঘদিন ধরে সেবন করতে হয়, তাদের অবশ্যই নিয়মিত চক্ষু পরীক্ষা করাতে হবে, বয়স যদিও কম বা বেশি হোক না কেন। আবার যাঁদের বয়স ৪০-এর ঊর্ধ্বে, তাঁদের চোখের অভ্যন্তরীণ চাপ (ইন্ট্রা অকুলার প্রেশার) আছে, তাঁদের পাওয়ার পরীক্ষা করাতে হবে এবং এসব ক্ষেত্রে সমস্যা না থাকলেও কমপক্ষে দুই বছর পর পর চক্ষু পরীক্ষা করাতে হবে। কিন্তু যাঁদের অন্য কোনো অসুখ যেমন- ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন ইত্যাদি আছে তাঁদের বছরে কমপক্ষে একবার চক্ষু পরীক্ষা করানো উচিত।
স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবাসাইটে জানানো হয়, চোখে ব্যথা হলে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে এসব পন্থা অবলম্বন করে সহজেই নিরাময় করা যায়। তবে সমস্যা বেশি হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
ঠাণ্ডা পানি
কনজাংটাইভ বা চোখের সাদা অংশের প্রসারিত রক্তনালীগুলোর কারণে চোখ লাল হয়ে থাকে। ঠাণ্ডা পানির ঝাপটা দিয়ে চোখের এই যন্ত্রনাদায়ক রক্তনালীগুলো শিথিল করার মাধ্যমে লালভাব দূর করা যেতে পারে। এছাড়াও পরিষ্কার কাপড়ে বরফের টুকরা নিয়ে আক্রান্ত চোখে ব্যবহার করলেও উপকার পাওয়া যায়।
কান্না
চোখ ব্যথা সারাতে কান্নাকাটিও করতে পারেন। চোখের পানি মূলত হালকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট, যা চোখের ব্যকটেরিয়ার ধুয়ে ফেলতে সাহায্য করে। পাশাপাশি এটি চোখ আদ্র রাখে, ফলে চোখে ঘর্ষণের ফলে তৈরি ব্যথা কম হয়।
অ্যাপল সাইডার ভিনিগার
একই পরিমাণ পানি ও অ্যাপল সাইডার ভিণিগার মিশিয়ে তুলার বলের সাহায্যে চোখের পাতায় মাখিয়ে নিতে হবে। অ্যাপল সাইডার ভিনিগারের মাইক্রোবায়াল উপাদান ব্যকটেরিয়া ধ্বংস করতে সহায়ক।
ঠাণ্ডা চামচ
বরফশীতল পানিতে দুতিন জোড়া চামচ ডুবিয়ে রাখে সেটা চোখের উপর ধরে রাখুন। চামচের ঠাণ্ডাভাব ফুরিয়ে গেলে চামচ পরিবর্তন করে নিতে হবে।
শসা
চোখের নিচের কালোদাগ ও ফোলাভাব দূর করতে সহায়ক এটা সবারই জানা। পাশাপাশি রূপচর্চায় যেভাবে ব্যবহার করা হয় সেভাবে ব্যবহার করলে চোখের ব্যথাও দূর করে এই সবজি।
গ্রিন টি ব্যাগ
চোখ ব্যথার সবচাইতে যন্ত্রনাদায়ক উপসর্গগুলো থেকে মুক্তি দেয় গ্রিন টি’য়ের অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস এবং অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল উপাদান।
এক কাপ গরম পানিতে গ্রিন টি ব্যাগ ডুবিয়ে রাথতে হবে যতক্ষণ না গরম পানি ঘরের তাপমাত্রায় আসে। পরে কাপটি কয়েক মিনিট ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করে নিতে হবে। তারপর টি ব্যাগ থেকে বাড়তি পানি বের করে নিয়ে টি ব্যাগটি বন্ধ চোখের উপর রাখতে হবে।
অ্যালোভেরা জেল
জ্বলা, প্রদাহ ও আরও অনেকরকম ত্বকের সমস্যা দূর করতে সহায়ক অ্যালোভেরা জেল। চোখ ব্যথার উপসর্গ দূর করতেও এটা কার্যকর। পাতা থেকে জেল বের করে তা কয়েক মিনিট ফ্রিজে ঠাণ্ডা করে চোখের পাতায় মাখতে পারেন।
গোলাপ জল
একটি তুলার বল দিয়ে বন্ধ চোখে গোলাপ জল মাখানোর মাধ্যমে চোখ ব্যথার উপসর্গ থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
দুধ ও মধু
দুধে আছে শীতলকারী উপাদান আর মধু একটি সুপরিচিত অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল এজেন্ট। দুধ ও মধু একত্রে মিশিয়ে ব্যবহার করলে ব্যথা ও প্রদাহ কমে তাৎক্ষনিকভাবে।
এক টেবিল-চামচ কুসুম গরম দুধে এক ফোঁটা মধু মিশিয়ে ড্রপারের সাহায্যে চোখে ব্যবহার করতে পারেন।
আজকাল খুব মাথা ব্যথা করছে? ভাবছেন মাইগ্রেন বা অন্য কিছু হয়েছে? আপনার এই ধারণা কিন্তু সত্য নাও হতে পারে। এমনও হতে পারে যে মাথা ব্যথাটি করছে চোখের কারণে।
অনেকে ভাবেন কেবল চোখের পাওয়ারের গরমিল হলেই বুঝি ম্যথা ব্যথা হয়। সেটাও কিন্তু মোটেও ঠিক নয়। চোখের আরও অনেক গুলো সমস্যার কারণে মাথা ব্যথা হতে পারে, যেগুলো আসলে খুবই কমন। আসুন, জেনে নেই সেইসব সমস্যার ব্যাপারে।
চোখের যেসব সমস্যায় মাথাব্যথা হয় সেগুলো হচ্ছে- চক্ষু গোলকের নিজস্ব রোগ, চোখের প্রেসার বৃদ্ধি, চোখে আঘাতজনিত সমস্যা, চোখের পাওয়ারজনিত সমস্যা, চোখের মাংসপেশির সমস্যা।
চক্ষু গোলকের রোগ-
চক্ষু গোলকের নিজস্ব রোগ বলতে বুঝি সাধারণত বিভিন্ন রকম প্রদাহ। এসব প্রদাহ সাধারণত ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা ছত্রাক সংক্রমণে সৃষ্ট। এসব ক্ষেত্রে মাথাব্যথার সঙ্গে চোখের ব্যথা থাকবে। কখনো কখনো চোখের ব্যথা তীব্রতায় মাথাব্যথাকে ছড়িয়ে যায়। আর মাথা এবং চোখ ব্যথার পাশাপাশি চোখ লাল হওয়া, চোখ ফুলে যাওয়া বা চোখ থেকে পানি পড়া ইত্যাদি অবশ্যই থাকবে।
কয়েকটি উদাহরণ দেয়া হলো যেমন, চোখের পাতার রোমকূপের প্রদাহ কর্নিয়ার প্রদাহ বা কর্নিয়ায় ঘা, নেত্রনালির ইনফেকশন, চোখের কোনো বস্তু (ফনের বডি) ইত্যাদি। এসব ক্ষেত্রে চোখের ব্যথা। ওইদিকের মাথাব্যথা থাকতে পারে, তবে চোখের উপসর্গগুলোই প্রধান।
চোখের উচ্চচাপ বা গ্লুকোমা
গ্লুকোমা অনেক রকমের হয়। কিছু কিছু গ্লুকোমার ধরন রয়েছে সেখানে চোখ প্রচণ্ড ব্যথা হয়, চোখ লাল হয়ে যায়, ঝাপসা হয়ে যায় ইত্যাদি। এসব গ্লুকোমার আক্রমণে চোখের দিকের মাথার অংশেও ব্যথা হয়।
ব্যথাটা প্রচণ্ড, সঙ্গে বমিও হয় সাধারণত অনেক সময় এ ধরনের গ্লুকোমার রোগী মেডিসিন বিশেষজ্ঞের দ্বারস্থ হয়ে মাথাব্যথা আর বমি নিয়ে বিচক্ষণ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ নিজেই চোখের সমস্যা ধরে ফেলতে পারেন, তখন তিনি রোগীকে পাটিয়ে দেন চক্ষু চিকিৎসকের কাছে।
আরেক ধরনের গ্লুকোমা আছে যেখানে চোখে ঝাপসা, লাল বা ব্যথা কিছুই হয় না, শুধু চশমার প্রতি অসহনশীলতা। দেখা যায়, নতুন চশমা নিলে কিছুদিন ভালো চলে পরে ওই চশমায় আর চলছে না একটু ঝাপসা হয়ে আসছে আরে একটু একটু মাথাও ব্যথা হচ্ছে ব্যথাটা হচ্ছে মাথার সামনের দিকে, কপালের ওপরে বিশেষ করে কোনোকিছু মনোযোগ দিয়ে পড়ার সময়।
রোগী চক্ষু চিকিৎসকের কাছে যান চিকিৎসক চশমা পাল্টে দেন আর কিছুদিন ভালো আবার তথৈবচ। এমন অবস্থায় চোখের উচ্চচাপের কথাটি বিশেষজ্ঞের মাথায় থাকা উচিত।
চোখের আঘাত
চোখের যে কোনো ধরনের আঘাত তা সে ধারালো বস্তু দিয়েই হোক বা ভোঁতা শক্ত বস্তু শক্তি দিয়েই হোক চোখ এবং চোখের দিকে মাথার অংশে ব্যথা হবে। চোখে কোনো বস্তু (ফরেন বডি) পড়লে তা থেকেও চোখ এবং মাথাব্যথা হয়।
চোখের পাওয়ারজনিত সমস্যা
অনেক ক্ষেত্রে চোখের পাওয়ারের সমস্যা প্রকাশ পায় মাথাব্যথা দিয়ে। সাধারণত মাথার সামনের দিকে কপালের উপরিভাগে এবং দু’দিকে ব্যথা হয়। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর ভালো, আস্তে আস্তে সকাল পেরিয়ে দিন যত গড়ায়, কাজের ব্যস্ততা যত বাড়ে মাথাব্যথা আস্তে আস্তে তত মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে থাকে।
সঙ্গে একটু বমি বমি ভাব অথবা মাথা ঘুরানো থাকতে পারে। এসব উপসর্গ দিনের শেষভাগে বাড়ে রাতে ঘুমিয়ে সকালে ওঠে আবার ভালো। আবার দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মাথাব্যথাও জেগে ওঠে। তবে সপ্তাহান্তে ছুটির দিন স্কুলে পড়া নেই, অফিসের ফাইলে নেই মাথাব্যথা।
এসব ক্ষেত্রে একটু একটু আন্তরিকতার সঙ্গে ধৈর্য ধরে রোগীর সমস্যা শুনলে যে কোনো ডাক্তার বিষয়টি ধরে ফেলতে পারবেন। রোগীকে প্রয়োজনীয় চশমার পরামর্শ দিলে অনেক ক্ষেত্রেই এ ধরনের মাথাব্যথা সরে যায়। অনেক চোখে ঝাপসা বা কম দেখেন এবং বিশেষ করে চলি্লশোর্ধ্বরা কাছের কোনো লেখাপড়ার সময় ঝাপসা দেখেন কিছুক্ষণ পড়ার পর আস্তে আস্তে মাথা ধরে যায়।
চশমাই এসব মাথাব্যথার মোক্ষম অস্ত্র। শিশুরা অনেক সময় মাথাব্যথা বলে, স্কুলে যেতে চায় না, পড়তে বসে মাথাব্যথায় কাঁদে। অভিভাবকরা প্রথমেই বাচ্চার পড়ার ফাঁকি দেয়ার কথা না ভেবে চোখের সমস্যার কথা ভাবুন ঘুরে আসেন একবার কাছের চক্ষু ডাক্তারের কাছ থেকে কোনো কিছু না পাওয়া গেলে আপনি ভাবতে পারেন যা ভেবেছিলেন।
চোখের মাংসপেশির সমস্যা
দুটি চোখে সবসময় সমভাবে একই দিকে ঘুরে এভাবেই সব অবস্থানেই সমান্তরাল অবস্থা ধরে রাখে। এজন্য সাহায্য করে আমাদের চোখের দুটি মাংসপেশি এবং এদের সুবিন্যস্ত নার্ভ সাপ্লাই। কোনো কারণে চোখের এ মাংসপেশির সমান্তরালতা নষ্ট হলে ওই ব্যক্তি দুই চোখে একটি বস্তুকে দুটি দেখবে।
এটিকে ডিপ্লোপিয়া বলে। এ বড় যন্ত্রণাদায়ক অবস্থা। তখন মাথাব্যথা, ঘোরানো ইত্যাদি উদ্ভব ঘটে। আবার মস্তিষ্কে অনেক সময় টিউমার বা সেরকম কিছু হলে ওই টিউমারের কারণে রোগীর চক্ষু মাংসপেশি দুর্বল হয়ে ডাবল ভিশন বা দ্বৈতদৃষ্টি এবং মাথাব্যথা একসঙ্গে হতে পারে।
মস্তিষ্কে টিউমারের কারণে মাথাব্যথা হয় সাধারণত সকালে বেশি বসা থেকে উঠতে গেলে বা কাশি দিলে মাথাব্যথা বাড়ে। অনেক সময় হঠাৎ বমি হয়ে যায়। এরকম উপসর্গ পেলে বা হঠাৎ দ্বৈতদৃষ্টি শুরু হলে দেরি না করে অবশ্যই চক্ষু ডাক্তার দেখান নয়তো অনেক অনেক ক্ষতি হতে পারে।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
Popular Posts
-
অধ্যাপক ডা. তাহমীনা বেগম শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ প্রচণ্ড গরম আর তার সঙ্গে মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হচ্ছে। স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া। এই সময়ে নবজাতকসহ শুরু কর...
-
মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পড়তে পারেন বই গুলো (বই গুলো লিংক সংগ্রহীত) Thedaily71 এর স্বাধীকার রাখে না। 1. যা দেখেছি যা শুনেছি যা ক...
-
প্রসবপূর্ব সেবা একজন নারী যখন গর্ভধারন করেন তখন তার দেহে বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটে৷ এ সময় অনাগত শিশু ও মায়ের বিশেষ যত্ন প্রয়োজন হয়৷ একজন গর্...
-
To add bangla date in your website choose below listed any HTML code and past it in your website or blog. Example1: ৪ রবিউল আউয়াল, ১...
-
গ্যাসের সমস্যা হলে কি করবেন, কিভাবে মুক্তিপাবেন এ সমস্যা থেকে। না আমি রান্নারগ্যাসের কথা বলছিনা। পেটের গ্যাসের যন্ত্রণায়ভোগেননি বা প্রচ...
-
শিশুর স্বাস্থ্য সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করে মা-বাবার উপর। কিন্তু শিশুকে ভালভাবে খাওয়ানো বেশিরভাগ মায়ের কাছে একটা সমস্যা। কারন খিদে পেলে শ...
-
সুষম খাদ্য (Balance diet) যে খাদ্যের মধ্যে মানবদেহের জন্য প্রয়োজনীয় সকল খাদ্য উপাদান পরিমাণমত বর্তমান থাকে, তাকেই এক কথায় সুষম খাদ্য বলা হ...
-
আমাদের বেঁচে থাকার অন্যতম উপাদান হচ্ছে রক্ত। শরীরের মোট ওজনের শতকরা ৭ ভাগ রক্ত থাকে। আর সেই রক্তের শতকরা ৯২ ভাগই থাকে জলীয় পদার্থ দ্বারা...
-
সম্পর্কে সমস্যা হতেই পারে। হতে পারে তা প্রেমিক কিংবা প্রেমিকার সাথে, হতে পারে বন্ধু কিংবা কলিগের সাথে, হতে পারে স্বামী-স্ত্রী-মা-বাবা কিংবা ...
-
How to Use Safety Harnesses Effectively Your safety harnesses will only prove effective if your workers actually wear them and wear them c...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন