বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবারও আলোচনায় উঠে এসেছেন ‘হিরো আলম’। এবার শুধু দেশেই নয়, পাশের দেশ ভারতেও তাঁকে নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব ভারতীয়রা হিরো আলমকে বাংলাদেশের ‘সুপারস্টার’-এর তকমা দিয়ে দিয়েছেন। এমনকি এই তকমার ভিত্তিতে ভারতীয় কিছু সংবাদমাধ্যমও তাঁকে নিয়ে প্রতিবেদন করতে শুরু করেছে।
দেশের বাইরে হিরো আলমের নাম ছড়িয়ে পড়ে যখন তিনি ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ছবি তোলেন এবং এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে একটি পত্রিকা।
সেই ছবি ও প্রতিবেদনের জের ধরে ১৬ ডিসেম্বর বিবিসি হিন্দি প্রতিবেদন প্রকাশ করে হিরো আলমকে নিয়ে। এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পাশাপাশি একে একে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ সংবাদমাধ্যমগুলোতেও তিনি খবরের শিরোনাম হন।
জি নিউজ, এনডিটিভি, ডেইলি ভাস্কর, মিড-ডের মতো প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমগুলো তাঁকে নিয়ে প্রতিবেদন করে।
সেখানে অনেকেই হিরো আলমকে বাংলাদেশের বিনোদনজগতের অন্যতম তারকা বলে অভিহিত করেন। তাঁরা বলেন, এ পর্যন্ত ৫০০ মিউজিক ভিডিও এবং র্যাপ গান তৈরি করেছেন হিরো আলম।
তাঁর ফেসবুকের অনুসারীর সংখ্যার ওপর ভিত্তি করেও ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো তাঁকে তারকা বলে ধরে নিয়েছে। এ জন্যই মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে গুগলে হিরো আলমকে সালমান খানের চেয়ে বেশিবার খোঁজা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে হিরো আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমিও শুনেছি। এ জন্যই বিদেশ থেকে ভক্তদের ফোন আসছে অনেক।’
তবে এ ধরনের প্রচারের কারণে বাংলাদেশের শিল্পীদের ব্যাপারে যে নেতিবাচক বার্তা ভারতে যাচ্ছে, তা নিয়েও হচ্ছে সমালোচনা।
তবে এ ধরনের প্রচারের কারণে বাংলাদেশের শিল্পীদের ব্যাপারে যে নেতিবাচক বার্তা ভারতে যাচ্ছে, তা নিয়েও হচ্ছে সমালোচনা।
টুইটার ও ফেসবুকে ‘হিরো আলম’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে অনেকেই শেয়ার করছেন নানা ধরনের আপত্তিকর কৌতুক।
এর সঙ্গে অনেকে আবার হ্যাশট্যাগ দিয়ে ‘বাংলাদেশ’ ও ‘বাংলাদেশি অ্যাক্টর’ প্রসঙ্গটিও জুড়ে দিচ্ছেন। হিরো আলমের সঙ্গে ভারতীয়দের কৌতুকের সঙ্গে জুড়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও দেশের শিল্পীদের ভাবমূর্তিও। ইউটিউবে প্রকাশিত হিরো আলমের মিউজিক ভিডিওতে তাঁর ব্যক্তিত্ব, অভিব্যক্তি ও বাচনভঙ্গি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভারতীয় বিভিন্ন পেজ ও গণমাধ্যম রসিকতা করছে।
গুটি কয়েক গণমাধ্যম হিরো আলমকে ‘সামাজিক মাধ্যমের তারকা’ বলে আখ্যায়িত করছে বটে, কিন্তু অধিকাংশ মানুষই তাঁকে বাংলাদেশের বিনোদনজগতের তারকার কাতারেই ফেলছে এবং গুগলে তাঁকে খুঁজেই যাচ্ছে।এই খোঁজাখুঁজিতে হিরো আলম হয়তো বহুদূর যেতে পারবেন, কিন্তু এতে বাংলাদেশের শিল্পীদের ভাবমূর্তি বাইরের দেশে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আলোচিত হয়ে উঠতে পারে অনাকাঙ্ক্ষিত অনেক ব্যক্তিত্ব।
সেই শঙ্কার কথাই জানালেন গণমাধ্যম বিশ্লেষক মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর।
তিনি বললেন, ‘এগুলো হচ্ছে ভারতে আমাদের চ্যানেল দেখা না যাওয়ার প্রভাব এবং আমাদের সিনেমা সেখানে নিয়মিত প্রদর্শিত না হওয়ার প্রভাব। যেকোনো লোক যেকোনো কিছু ক্লেইম করতে পারে। সমস্যাটির সমাধান হতে পারে ওই দেশে আমাদের টিভি অনুষ্ঠান-সিনেমা নিয়মিত প্রদর্শিত হলে।
নইলে এ রকম বহু হিরো আলম বের হবে ভবিষ্যতে।’
উল্লেখ্য, বগুড়া জেলায় স্থানীয় কেব্ল সংযোগ স্থাপনের ব্যবসা রয়েছে আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের।
উল্লেখ্য, বগুড়া জেলায় স্থানীয় কেব্ল সংযোগ স্থাপনের ব্যবসা রয়েছে আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের।
সেই সুবাদেই তিনি নিজের স্থানীয় সংযোগগুলো প্রচারের জন্য কিছু মিউজিক ভিডিও তৈরি করেছিলেন বিভিন্ন সময়। যা এ বছরের মাঝামাঝি সময়ে ইউটিউবে ছড়িয়ে পড়ে।
দেশজুড়ে হিরো আলমের ভিডিও নিয়ে কৌতুক শুরু হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় তাঁর ভিডিও নিয়ে হয় ট্রল ও মিম।
কিন্তু এখন দেশের বাইরেও বাংলাদেশের শিল্পীদের প্রতিনিধি হিসেবে হিরো আলমের নাম ছড়িয়ে পড়ায় সেই কৌতুক শঙ্কায় পরিণত হচ্ছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন