Recent post

মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০১৯

সুদের টাকার বিধান, সুদের টাকা দিয়ে হজ্ব ও সাইয়্যেদ বংশের মান্যবর ব্যক্তিকে যাকাত দেওয়া প্রসঙ্গে ইসলামী শরয়ী ফতোয়া


সুদের টাকার বিধান, সুদের টাকা দিয়ে হজ্ব ও সাইয়্যেদ বংশের মান্যবর ব্যক্তিকে যাকাত দেওয়া প্রসঙ্গে ইসলামী শরয়ী ফতোয়াঃ
প্রশ্নঃ
মুহতারাম মুফতি সাহেব!
আসসালামু আলাইকুম৷ আমি আপনার কাছে জানতে চাই যে,একজন সরকারি চাকুরিজীবী মহিলা চাকুরি শেষে পেনশনের কিছু টাকা পান।
যা দিয়ে তার হজ্জের নিয়ত ছিলো।কিন্তু তার অসুস্থ বৃদ্ধা মায়ের চিকিৎসা,আগে তার ভাইয়েরা করালেও,দুই ভাইয়ের মৃত্যুর পর,অন্য এক ভাই ও বাকি বোনেরা ততটা সক্ষম নন।
তাই তিনি পেনশনের টাকা দিয়ে সঞ্চয়পত্র কিনে কেবল সুদের টাকাটা চিকিৎসা খরচ হিসেবে দেন।মহিলার মাতা সৈয়দ বংশীয়া।
এক নং প্রশ্নঃ
এভাবে সঞ্চয়পত্রের সুদের টাকায় চিকিৎসা খরচ দেবার ব্যাপারে শরীয়ত কী বলে?
দুই নং প্রশ্নঃ
এই সঞ্চয়পত্র ভেঙে(মায়ের মৃত্যুর পর বা আগেই সমাধান হলে)হজ্জ করলে হবে কিনা?
তিন নং প্রশ্নঃ
সৈয়দ বংশীয় লোকদের যাকাত/সদকা দেওয়া যাবে কি?
উত্তরঃ
ﻭﻋﻠﻴﻜﻢ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻭﺭﺣﻤﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺑﺮﻛﺎﺗﻪ
ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺍﻟﺮﺣﻴﻢ
১ম প্রশ্নের জবাবঃ
এভাবে সঞ্চয় পত্র ক্রয় করে সুদ খাওয়া গ্রহণ বৈধ নয়। তবে সূদের টাকার বিধান হল, যদি তা মূল মালিকের কাছে ফেরত দেবার পদ্ধতি না থাকে, যেমন ব্যাংকের সুদ, তাহলে উক্ত টাকা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরীবকে দান করে দিতে হয়।
সেই হিসেবে কোন গরীব ব্যক্তির চিকিৎসার জন্যও দান করা যাবে।
ﻓﻰ ﻣﻌﺎﺭﻑ ﺍﻟﺴﻨﻦ - ﻣﻦ ﻣﻠﻚ ﺑﻤﻠﻚ ﺧﺒﻴﺚ ﻭﻟﻢ ﻳﻤﻜﻨﻪ ﺍﻟﺮﺩ ﺍﻟﻰ ﺍﻟﻤﺎﻟﻚ ﻓﺴﺒﻴﻠﻪ ﺍﻟﺘﺼﺪﻕ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻔﻘﺮﺍﺀ ‏( ﻣﻌﺎﺭﻑ ﺍﻟﺴﻨﻦ، ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻄﻬﺎﺭﺓ، ﺑﺎﺏ ﻣﺎ ﺟﺎﺀ ﻻ ﺗﻘﺒﻞ ﺻﻼﺓ ﺑﻐﻴﺮ ﻃﻬﻮﺭ - 1/34 ، ﺍﻟﻔﺘﺎﻭﻯ ﺍﻟﺸﺎﻣﻴﺔ، ﺑﺎﺏ ﺍﻟﺒﻴﻊ ﺍﻟﻔﺎﺳﺪ، ﻣﻄﻠﺐ ﻓﻰ ﻣﻦ ﻭﺭﺙ ﻣﺎﻻ ﺣﺮﺍﻣﺎ - 7/301 ، ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﺤﻈﺮ ﻭﺍﻹﺑﺎﺣﺔ، ﻓﺼﻞ ﻓﻰ ﺍﻟﺒﻴﻊ - 9/554 ، ﺑﺬﻝ ﺍﻟﻤﺠﻬﻮﺩ، ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻄﻬﺎﺭﺓ، ﺑﺎﺏ ﻓﺮﺽ ﺍﻟﻮﺿﻮﺀ - 1/37 .
২য় প্রশ্নের জবাব
মূল টাকা দিয়ে হজ্ব করলে হজ্ব হবে। কিন্তু সূদী টাকায় হজ্ব করলে ফরজের দায়িত্বমুক্ত হলেও সওয়াবও পাবে না এবং হজ্বও কবুল হবে না।
ﻭَﻟَﺎ ﺗَﻨَﺎﻓِﻲ ﺑَﻴْﻦَ ﺳُﻘُﻮﻃِﻪِ، ﻭَﻋَﺪَﻡِ ﻗَﺒُﻮﻟِﻪِ ﻓَﻠَﺎ ﻳُﺜَﺎﺏُ ﻟِﻌَﺪَﻡِ ﺍﻟْﻘَﺒُﻮﻝِ، ﻭَﻟَﺎ ﻳُﻌَﺎﻗَﺐُ ﻋِﻘَﺎﺏَ ﺗَﺎﺭِﻙِ ﺍﻟْﺤَﺞِّ . ﺍﻫـ .
ﺃَﻱْ ﻟِﺄَﻥَّ ﻋَﺪَﻡَ ﺍﻟﺘَّﺮْﻙِ ﻳُﺒْﺘَﻨَﻰ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﺼِّﺤَّﺔِ : ﻭَﻫِﻲَ ﺍﻟْﺈِﺗْﻴَﺎﻥُ ﺑِﺎﻟﺸَّﺮَﺍﺋِﻂِ، ﻭَﺍﻟْﺄَﺭْﻛَﺎﻥُ ﻭَﺍﻟْﻘَﺒُﻮﻝُ ﺍﻟْﻤُﺘَﺮَﺗِّﺐُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺍﻟﺜَّﻮَﺍﺏُ ﻳُﺒْﺘَﻨَﻰ ﻋَﻠَﻰ ﺃَﺷْﻴَﺎﺀَ ﻛَﺤِﻞِّ ﺍﻟْﻤَﺎﻝِ ﻭَﺍﻟْﺈِﺧْﻠَﺎﺹِ ﻛَﻤَﺎ ﻟَﻮْ ﺻَﻠَّﻰ ﻣُﺮَﺍﺋِﻴًﺎ ﺃَﻭْ ﺻَﺎﻡَ ﻭَﺍﻏْﺘَﺎﺏَ ﻓَﺈِﻥَّ ﺍﻟْﻔِﻌْﻞَ ﺻَﺤِﻴﺢٌ ﻟَﻜِﻨَّﻪُ ﺑِﻠَﺎ ﺛَﻮَﺍﺏٍ ‏( ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ، ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﺤﺞ، ﻣﻄﻠﺐ ﻓﻴﻤﻦ ﺣﺞ ﺑﻤﺎﻝ ﺍﻟﺤﺮﺍﻡ -454 453/3 - ، ﺍﻟﻔﺘﺎﻭﻯ ﺍﻟﻬﻨﺪﻳﺔ، ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻤﻨﺎﺳﻚ، ﺍﻟﺒﺎﺏ ﺍﻻﻭﻝ - 1/220 )
৩য় প্রশ্নের জবাবঃ
সাইয়্যেদ বংশীয় তথা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বংশীয় কাউকে যাকাত ও সদকায়ে ফিতির দেওয়া বৈধ নয়।
তবে উপহার স্বরুপ সম্মানের সহিত অন্যান্য সাধারণ কল্যাণকর জিনিস আহলে বায়িতকে দেওয়া যাবে।
তবে যদি নামকাওয়াস্তে সৈয়দ বংশীয় হয়। অর্থাৎ মূলত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লা এর বংশীয় না হয়,তাহলে যাকাত গ্রহণ করতে পারে।
ﺃَﺑَﺎ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ، ﻗَﺎﻝَ : ﺃَﺧَﺬَ ﺍﻟﺤَﺴَﻦُ ﺑْﻦُ ﻋَﻠِﻲٍّ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ، ﺗَﻤْﺮَﺓً ﻣِﻦْ ﺗَﻤْﺮِ ﺍﻟﺼَّﺪَﻗَﺔِ، ﻓَﺠَﻌَﻠَﻬَﺎ ﻓِﻲ ﻓِﻴﻪِ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ‏« ﻛِﺦْ ﻛِﺦْ ‏» ﻟِﻴَﻄْﺮَﺣَﻬَﺎ، ﺛُﻢَّ ﻗَﺎﻝَ : ‏« ﺃَﻣَﺎ ﺷَﻌَﺮْﺕَ ﺃَﻧَّﺎ ﻻَ ﻧَﺄْﻛُﻞُ ﺍﻟﺼَّﺪَﻗَﺔَ ‏( ﺻﺤﻴﺢ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻯ، ﺭﻗﻢ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ -1491 ، ﺻﺤﻴﺢ ﻣﺴﻠﻢ، ﺭﻗﻢ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ -1069 ‏)
ﻋَﻦْ ﻋَﻄَﺎﺀِ ﺑْﻦِ ﺍﻟﺴَّﺎﺋِﺐِ ﻗَﺎﻝَ : ﺃَﺗَﻴْﺖُ ﺃُﻡَّ ﻛُﻠْﺜُﻮﻡٍ ﺍﺑْﻨَﺔَ ﻋَﻠِﻲٍّ ﺑِﺸَﻲْﺀٍ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺼَّﺪَﻗَﺔِ ﻓَﺮَﺩَّﺗْﻬَﺎ ﻭَﻗَﺎﻟَﺖْ : ﺣَﺪَّﺛَﻨِﻲ ﻣَﻮْﻟًﻰ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻳُﻘَﺎﻝُ ﻟَﻪُ : ﻣِﻬْﺮَﺍﻥُ، ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻗَﺎﻝَ : ” ﺇِﻧَّﺎ ﺁﻝُ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﻟَﺎ ﺗَﺤِﻞُّ ﻟَﻨَﺎ ﺍﻟﺼَّﺪَﻗَﺔُ ” ﻭَﻣَﻮْﻟَﻰ ﺍﻟْﻘَﻮْﻡِ ﻣِﻨْﻬُﻢْ ‏( ﻣﺴﻨﺪ ﺍﺣﻤﺪ، ﺭﻗﻢ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ -15708
ﻭﺍﻟﻠﻪ ﺍﻋﻠﻢ ﺑﺎﻟﺼﻮﺍﺏ
খাদিমুল ইফতাঃ
{মুফতি শাইখ মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নকশবন্দী-মুজাদ্দেদী,সদরসিলেট}

কোন মন্তব্য নেই:

Popular Posts