সিনেমা খাই, সিনেমা পড়ি, সিনেমায় ঘুমাই!



চলছে শব্দ ধারনের প্রশিক্ষণ। ছবি: সংগৃহীত‘আমরা সিনেমা খাই, সিনেমা পড়ি, সিনেমায় ঘুমাই!’ 


ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) যে শিক্ষার্থীদের মূলমন্ত্র এটা—তারাই সিনেমাস্কোপের সদস্য। ক্লাসে কিংবা চায়ের আড্ডায়, লাইব্রেরিতে বসে পড়ার সময় কিংবা ফেসবুক মেসেঞ্জারের আলাপে; এই তরুণদের সবকিছুতেই ঘুরেফিরে প্রাধান্য পায় সিনেমা। তাঁদের আড্ডায় কান পাতলে আপনি শুনতে পাবেন তারেক মাসুদ থেকে তারকোভস্কি, সত্যজিৎ রায় থেকে স্টিভেন স্পিলবার্গের নাম।

শুরুটা হয়েছিল ২০১১ সালে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়া স্টাডিজ অ্যান্ড জার্নালিজম (এমএসজে) বিভাগের উদ্যোগে এক দল শিক্ষার্থী সিনেমা নিয়ে ‘একটা কিছু’ করার স্বপ্ন দেখেছিল। সিনেমাস্কোপের শুরুর দিকের একজন প্রধান নির্বাহী জাহিদ গগন বলছিলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা ফিল্ম ক্লাবে যে ধরনের কার্যক্রম হয়, আমরা তার চেয়ে একটু বেশি কিছু চেয়েছিলাম। সেই চিন্তা থেকেই আমাদের শিক্ষক মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন একটা ফিল্ম অ্যাপ্রেনটিস প্রোগ্রাম চালু করেন। পরে যখন আমাদের কার্যক্রমে এমএসজের বাইরের ছেলেমেয়েরাও যোগ দিতে শুরু করল, তখন আমাদের নাম হলো সিনেমাস্কোপ।’

এখন নানা বিভাগের ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রহণ মিলিয়ে এই সংগঠনের (কিংবা সংগঠনের চেয়ে একটু বেশি কিছু!) সদস্য সংখ্যা ৪১ জন। একেকজন একেক স্বপ্ন কিংবা লক্ষ্য নিয়ে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজন, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী তামান্না বাশারের বক্তব্যটা শোনা যাক।

‘আমি আসলে সিনেমার পেছনের কাজগুলো সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলাম। সিনেমা আরও ভালোভাবে বোঝার জন্য, এর নান্দনিক দিকগুলো উপলব্ধি করার জন্যই সিনেমাস্কোপে এসেছি।’

অন্যদিকে এমএসজে বিভাগের ফয়সাল মাহমুদ সিনেমাস্কোপের সদস্য হয়েছেন সিনেমার কারিগরি দিকগুলো শেখার জন্য। সে সুযোগ অবশ্য নিয়মিত হচ্ছে। চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, কর্মশালা, সাময়িকীর প্রকাশনা এবং চলচ্চিত্র নির্মান—এই চার বিভাগে পরিচালিত হয় তাদের কার্যক্রম।

প্রতি সেমিষ্টারেই সিনেমাস্কোপের সদস্যরা একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র তৈরি করেন। সিনেপিডিয়া নামে একটি সিনেমা বিষয়ক সাময়িকী প্রকাশ করেন তারা। এ ছাড়াও চলচ্চিত্র বিষয়ক আলোচনা, কর্মশালা এবং বিভিন্ন আয়োজন তো থাকেই। দেশের গুণি চলচ্চিত্র নির্মাতা, চিত্রনাট্যকার, চিত্রগ্রাহকেরা নিয়মিতই বিভিন্ন কর্মশালা পরিচালনা করেন। এই তো কিছুদিন আগেও অভিনয়ের ওপর একটি কর্মশালা পরিচালনা করেছেন অভিনয়শিল্পী আফসানা মিমি।

সিনেমাস্কোপের বর্তমান প্রধান নির্বাহী শ্রাবন্তি সুচন্দ্রিমার কাছ থেকে জানা গেল, এ বছরের শুরুর দিকে সিনেমাস্কোপ আয়োজন করেছিল ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। যেখানে বিশ্বের প্রায় ৩৫ টি দেশের এক শ’টিরও বেশি সিনেমার অংশগ্রহন ছিল। সিনেমাস্কোপ বর্তমানে ‘রায়হান’ নামের একটি ছবি নির্মানের কাজ করছে। জাহিদ গগন জানালেন, শিগগিরই তাঁদের ‘সিনেস্কুল’ নামে একটি ওয়েবসাইট খোলারও ইচ্ছে আছে।

সিনেমাস্কোপ নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ আড্ডার পরে যখন ইউল্যাবের ক্যাম্পাস থেকে বিদায় নিচ্ছি, শ্রাবন্তি সুচন্দ্রিমা হাতে ধরিয়ে দিলেন সিনেপিডিয়ার দুটি কপি। দু’একটা পৃষ্ঠা উল্টে পাল্টে মনে হলো, সত্যিই এরা সিনেমা খায়, সিনেমা পড়ে, সিনেমায় ঘুমায়!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

সিঙ্গাপুরে ওয়ার্ক পারমিটধারীদের জন্য নতুন নিয়ম: চাকরির মেয়াদ সীমা বাতিল, সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৬৩ বছর
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস
সিঙ্গাপুরে ট্রেইনিং রেকর্ড এবং সার্টিফিকেট চেক করার বিস্তারিত গাইড
Bangla date add in your website HTML tips.
some common interview questions and answers for a Safety Coordinator position in Singapore
ধর্ষণবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল তিন বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটাম
Understanding the New Demerit Point System for Construction and Manufacturing Sectors
Safe work procedure for ferrying workers by lorry in singapore
বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য সিঙ্গাপুরে কম খরচে দাঁতের চিকিৎসা
সিঙ্গাপুর কর্মস্থলের নিরাপত্তা আইন শক্তিশালী করছে এবং নতুন আইন প্রবর্তন করছে
Loading posts...