প্রধান উপদেষ্টার এই ঘোষণায় জামায়াতে ইসলামী সন্তোষ প্রকাশ করলেও, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সহ অন্যান্য বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ডিসেম্বরেই নির্বাচনের দাবিতে অনড় রয়েছে। তাদের মতে, এপ্রিল মাস নির্বাচনের জন্য একটি অনুকূল সময় নয়।
গত রবিবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম গণমাধ্যমের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলেছেন এবং এপ্রিল মাসে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পেছনে তিনটি প্রধান কারণের কথা উল্লেখ করেছেন: সংস্কার, বিচার প্রক্রিয়া এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রস্তুতি।
শফিকুল আলম জানান, 'সংস্কারের জন্য ইতোমধ্যে ১২ থেকে ১৫টি কমিশন গঠন করা হয়েছে এবং তাদের প্রতিবেদন আসতে শুরু করেছে। এই প্রতিবেদনগুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলছে।' তিনি আরও বলেন, 'দ্বিতীয় কারণটি হলো বিচার। গত জুলাই-আগস্ট মাসে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচার করা অত্যন্ত জরুরি। এই সময়ে চার-ছয় বছরের শিশুরাও মারা গিয়েছিল। তবে, এই বিচার প্রক্রিয়া যেন সুষ্ঠুভাবে এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে পরিচালিত হয়, সেদিকে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে।' প্রেস সচিব আরও উল্লেখ করেন, 'এই সমস্ত প্রক্রিয়ার জন্য সময় প্রয়োজন। এর পাশাপাশি, একটি নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতিরও প্রয়োজন রয়েছে। এই প্রতিটি বিষয় বিবেচনা করেই প্রধান উপদেষ্টা এপ্রিল মাসের প্রথমার্ধকে নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত সময় হিসেবে নির্ধারণ করেছেন।'
এপ্রিল মাসের আবহাওয়া নির্বাচনের জন্য অনুকূল নয়—কিছু রাজনৈতিক দলের এমন উদ্বেগের বিষয়ে শফিকুল আলম বলেন, 'আমরা আবহাওয়াবিদদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছেন যে, এপ্রিল মাসের প্রথম ১০ দিন তাপমাত্রা তুলনামূলকভাবে সহনশীল থাকে এবং এই সময়ে তীব্র তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা কম। কালবৈশাখী সাধারণত বৈশাখ মাসেই বেশি হয় এবং এটি এপ্রিলের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে শুরু হয়। আবহাওয়াবিদরা নিশ্চিত করেছেন যে, এপ্রিলের প্রথমার্ধ নির্বাচনের জন্য "চমৎকার একটি সময়"।'
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এই ঘোষণা এবং এর পেছনে থাকা কারণগুলো রাজনৈতিক মহলে নতুন করে আলোচনার খোরাক জুগিয়েছে। এখন দেখার বিষয়, এই নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কতটা ঐকমত্য তৈরি হয়।
0 মন্তব্যসমূহ