Recent post

রবিবার, ৪ জুন, ২০১৭

ঘামাচি কেন হয় ,ঘামাচির ধরন, মুক্তির উপায়

খুবই পরিচিত একটি সমস্যার নাম ঘামাচি। 

এটি যেমন অস্বস্তিকর, তেমনি যন্ত্রণাদায়ক। 
এ সমস্যা নিয়ে কয়েকটি তথ্য:

ঘামাচি কেন হয়

১. গরম আবহাওয়ায় শরীরের ঘামগ্রন্থির নালি বন্ধ হয়ে ঘামের বিভিন্ন উপাদান চামড়ার বিভিন্ন স্তরে জমা হয়ে ঘামাচি তৈরি করে। শিশুদের ঘর্মগ্রন্থি অপরিপক্ব, তাই ঘামাচি তাদের বেশি হয়।

২. আঁটসাঁট পোশাক এবং কয়েকটি ওষুধের প্রভাবে ঘামাচি বাড়ে। ত্বকে বসবাসকারী স্ট্যাফাইলোকক্কাস এপিডার্মিডিসব্যাকটেরিয়া ঘর্মগ্রন্থি বন্ধ করার নেপথ্যে ভূমিকা রাখে।

৪. অতিরিক্ত জ্বরের কারণেও ঘামাচি হতে পারে।

ঘামাচির ধরন
শিশুদের মাথা, ঘাড়, বগল, শরীরের ওপরের অংশে, রানের ভাঁজে, কনুই ও হাঁটুর ভাঁজে ঘামাচি দেখা যায়। 
বড়দের সাধারণত বুকে-পিঠে-পেটে ঘামাচি হয়। 
কয়েক ধরনের ঘামাচি আছে। 
যেমন মিলিয়ারিয়া ক্রিস্টালিনা নামের ঘামাচি শিশুদের, এমনকি জন্মের পর দ্বিতীয় সপ্তাহেই দেখা দিতে পারে। 
বড়দের ক্ষেত্রে এটা কম দেখা যায়। এ ক্ষেত্রে স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ ছোট ছোট দানা হয়। 
এগুলো সাধারণত কিছু দিনের মধ্যে আপনা-আপনিই সেরে যায়।
মিলিয়ারিয়া রুব্রা নামের আরেকটি ঘামাচিতে ঘর্মগ্রন্থির নালির গভীরে ব্লক বা বাধা তৈরি হয়।
 ফলে ত্বকে লাল লাল দানা হয়। 
এগুলো এক সপ্তাহ বয়স থেকে শুরু হতে পারে। 
ছোট-বড় সবারই এটা হয়ে থাকে। 
এই ঘামাচিতে খুব চুলকায় এবং জ্বালাপোড়া করে। 
কোনো কোনো ক্ষেত্রে ঘামাচিতে পুঁজ জমতে দেখা যায়। 
আর মিলিয়ারিয়া প্রোফান্ডা নামের ঘামাচি ত্বকের গভীর স্তরে ঘাম নিঃসরণের ফলে জমা হয়।

ঘামাচির ক্ষতিকর দিক
অতিরিক্ত ঘামাচির কারণে অস্বস্তি, জ্বালাপোড়া, শারীরিক দুর্বলতা, ঘামে অসহনশীলতা, ক্ষুধামান্দ্য, মাথা ঘোরা, মাথাব্যথা হতে পারে। 
পরবর্তী সময়ে ঘাম নিঃসরণ প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ঘামের পরিমাণ কমে যেতে পারে। 
এ ছাড়া দীর্ঘদিনের ঘামাচি থেকে সংক্রমণ হতে পারে।

মুক্তির উপায়
শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ঠান্ডা ঘরে কয়েক ঘণ্টা অবস্থান করলে ঘামাচি থেকে দ্রুত পরিত্রাণ মেলে।
নিয়মিত গোসল করতে হবে। 
আক্রান্ত স্থানে ঠান্ডা পানি ও বরফ লাগাবেন। 
ঢিলেঢালা সুতি পোশাক পরুন। 
ঘুমন্ত শিশুকে বারবার পাশ পরিবর্তন করে দিন।
 ট্যালকম পাউডার ব্যবহার করতে পারেন। 
অতিরিক্ত গরম পরিবেশ এড়িয়ে চলুন। 
গরমে অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম থেকে বিরত থাকুন। 
ক্যালামাইন লোশন কাজে দেয়। 
বেশি মারাত্মক সমস্যা হলে চর্ম বিশেষজ্ঞের পরামর্শক্রমে স্টেরয়েড ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ক্রিম ব্যবহার করতে হবে।

ডা. তাহমিনা আক্তার, চর্ম বিভাগ, বারডেম হাসপাতাল

কোন মন্তব্য নেই:

Popular Posts