শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব আছে কিনা



ভিটামিন ডি শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় একটি উপাদান।

মানসিক সুস্থতার জন্যও এটি খুবই জরুরি। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এটি ফ্যাট সলিউবল সিকুস্টারয়েড। 
কাজ হচ্ছে ইনটিসটাইন বা অন্ত্র থেকে ক্যালসিয়াম শোষণ করা। 
পাশাপাশি এটি আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম ও ফসফরাসকেও দ্রবীভূত করে। 
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং শারীরিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে ভিটামিন ডি প্রয়োজন বলে শেষ করা যাবে না। 
শরীর ও মনে ভিটামিন ডির ঘাটতি যে বিরূপ প্রভাব ফেলে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন বিআরবি হাসপাতালের পুষ্টিবিদ ইসরাত জাহান।


ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি হওয়া মানে হাড় ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়া।
এমনটি হওয়া মানেই আর্থাইটিসের মতো রোগ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠা। 
ভিটামিন ডি হাড়কে শক্তোপোক্ত করার পাশাপাশি হার্ট, ব্রেন এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
হাড় ও দাঁতের সুস্থতার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি উপাদান এই ভিটামিন। 
এর অভাবে ওজনও বেড়ে যায়।


প্রশ্ন হল শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি কীভাবে পূরণ করবেন? 
কতগুলো সহজ পদ্ধতি অবলম্বন করার মাধ্যমে এ সমস্যা সহজেই দূর করতে পারেন। 
জেনে নিন কিছু লক্ষণ সম্পর্কে যেগুলোর মাধ্যমে বুঝতে পারবেন আপনার শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব আছে কিনা।

মাংসপেশির দুর্বলতা

ভিটামিন ডি-এর অভাবে মাংসপেশীর দুর্বলতা বেড়ে যায়। 
বিশেষ করে মাংসপেশি বেড়ে যাওয়া এবং মাংসপেশি কাঁপার মতো সমস্যাগুলো হয়ে থাকে। কাজেই মাংসপেশির দুর্বলতা কাটাতে নিয়মিত ভিটামিন ডি খান।

বিষণ্নতা
বিষণ্নতা বাড়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ভিটামিন ডি। এর ফলে সারাক্ষণ মানসিক চাপ অনুভূত হয়। তখন কোনো কারণ ছাড়াই অতিরিক্ত বিষণœতায় ভুগতে পারেন। এর অভাবে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। ফলে মানুষ এমনি এমনি রেগে যায়।

হাড়ে ফাটল : 
ভিটামিন ডি-এর অভাবে হাড়ে সহজেই ফাটল ধরে। এর ফলে একটু পড়ে গেলে কিংবা সামান্য আঘাত পেলেই হাড়ে চির ধরে যায়। অনেক সময় হাড়ে প্রচন্ড ব্যথা করলেও বুঝবেন আপনার শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব রয়েছে।

দাঁত ভেঙে যায় :
 আপনার দাঁতে সমস্যা যেন লেগেই আছে। শক্ত কোনো কিছুই খেতে পারেন না। তাহলে বুঝবেন আপনার শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব রয়েছে। ভিটামিন ডি-এর অভাবে দাঁত ক্ষয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ভেঙেও যায়।

উচ্চ রক্তচাপ : 
ভিটামিন ডি-এর অভাবে উচ্চ রক্তচাপের মাত্রা আরও বেড়ে যেতে পারে। কাজেই সময় থাকতে আগে থেকেই সচেতন হোন এবং ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খান।




ক্লান্তি ও ঘুম আসে
:
 ভিটামিন ডি-এর অভাবে সহজেই অনেক ক্লান্তি নেমে আসে। ফলে ঘুম পায়। কর্মক্ষেত্রে আরও কর্মঠ কর্মী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলে নিজের শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব পূরণ করুন।

মেজাজে প্রভাব ফেলে :
ভিটামিন ডি-এর অভাব যে কোনো মানুষের মেজাজ-মর্জিতে প্রভাব ফেলে। এ সময় মনের মধ্যে চাপা একটা অশান্তি কাজ করে। ফলে সবসময় মেজাজ রুক্ষ থাকে। কেউ ভালো কথা বললেও প্রচন্ড রাগ হয়। তাই কারও সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার আগেই শরীরে ভিটামিন ডি-এর চাহিদা পূরণ করুন।

ওজন বেড়ে যায় : 
ওজন বাড়ার জন্যও দায়ী ভিটামিন ডি। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ভিটামিন ডি- সমৃদ্ধ খাবার অবশ্যই রাখুন।

অষ্টিওপরোসিস, বিষণ্নতা, জরায়ু ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সার এমনকি ডায়বেটিস এবং মেদ বৃদ্ধি প্রতিরোধে ভিটামিন ডি’র ভূমিকা আছে। অনেকেই আছেন যারা নিজেরাও জানেন না তারা ভিটামিন ডি-এর অভাবে ভুগছেন। কাজেই আপনি যদি নিজের মধ্যে উপরোক্ত লক্ষণগুলো বুঝতে পারেন তাহলে এর মাত্রা জানতে সঙ্গে সঙ্গে শরীর চেকআপ করে নিন।

ভিটামিন ডি-এর উৎস : 
সূর্যের আলো ভিটামিন ডি-এর অন্যতম উৎস। সূর্যের কড়া আলোতে না গিয়ে হালকা রোদ গায়ে লাগান। ভিটামিন ডি-এর অভাব পূরণের জন্য হালকা রোদে সামান্য ব্যায়ামও করতে পারেন। সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত রোদ সবচেয়ে ভালো। এই সময় সূর্যের যে আলো আসে, সেটি ভালো।কেবল শীতকাল নয়, সব ঋতুতেই যদি আমরা কিছুক্ষণ রোদে বসি, পাঁচ মিনিট থেকে আধা ঘণ্টা পর্যন্ত সপ্তাহে দুবার, তাহলে উপকৃত হওয়া যায়। এছাড়া নিয়মিত ৫টি খাবার খেলেও ভিটামিন ডি দেহে তৈরি হয়। 

জেনে নিন, সেই ৫টি খাবারের নাম-

* চিজ : ভিটামিন ডি শরীরে তৈরি করতে গেলে চিজ খান। চিজ খেলে শরীরে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বাড়ে।

* মাশরুম : খাওয়ার আগে অবশ্যই মাশরুম ভালো করে ধুয়ে রান্না করবেন। অ্যালার্জির প্রবণতা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

* তেলযুক্ত মাছ বা সামুদ্রিক মাছ : মাছের তেলে ভিটামিন ডি থাকে। তাই যথেষ্ট পরিমাণে সামুদ্রিক মাছ খান।

* দুধ খাওয়া জরুরি : মাশরুমের মতো দুধেও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি রয়েছে। তাই শরীরের ভিটামিন ডি-এর যোগান বৃদ্ধি করার জন্য দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার খাওয়া জরুরি।

* ডিম : শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি মেটাতে চাইলে রোজের ডায়েটে একটা করে ডিম থাকা জরুরি। নিউট্রিশনিস্টদের মতে ডিমের ভেতরে প্রোটিন এবং উপকারী কোলেস্টেরলের পাশাপাশি ভিটামিন ডি-ও রয়েছে। 
তাই শরীরকে কর্মক্ষম রাখতে এবং হাড়ের নানাবিধ রোগ দূর করতে রোজ একটা বা দুটো ডিম খাওয়া উচিত।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

সিঙ্গাপুরে ওয়ার্ক পারমিটধারীদের জন্য নতুন নিয়ম: চাকরির মেয়াদ সীমা বাতিল, সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৬৩ বছর
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস
সিঙ্গাপুরে ট্রেইনিং রেকর্ড এবং সার্টিফিকেট চেক করার বিস্তারিত গাইড
Bangla date add in your website HTML tips.
some common interview questions and answers for a Safety Coordinator position in Singapore
ধর্ষণবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল তিন বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটাম
Understanding the New Demerit Point System for Construction and Manufacturing Sectors
Safe work procedure for ferrying workers by lorry in singapore
বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য সিঙ্গাপুরে কম খরচে দাঁতের চিকিৎসা
সিঙ্গাপুর কর্মস্থলের নিরাপত্তা আইন শক্তিশালী করছে এবং নতুন আইন প্রবর্তন করছে
Loading posts...