পণ্য বয়কট অভিযানে কার লাভ আর কার ক্ষতি – সাম্প্রতিক ইসরায়েলি পণ্য বয়কট ঘিরে বিশ্লেষণ
দ্য ডেইলি ৭১ রিপোর্ট:
গাজায় চলমান ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে ইসরায়েলি পণ্য বয়কটের আন্দোলন। মুসলিমপ্রধান দেশগুলোসহ ইউরোপ ও আমেরিকার অনেক অংশে সামাজিক মাধ্যমে বয়কটের ডাক ক্রমেই জোরদার হচ্ছে। কিন্তু এই আন্দোলনের আর্থিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব পড়ছে অনেকদিকেই – প্রশ্ন উঠছে, এতে আসলেই কার লাভ হচ্ছে আর কার ক্ষতি?
কারা দিচ্ছে ডাক, কেন বয়কট?
প্যালেস্টাইনের প্রতি সংহতি জানিয়ে অনেকেই মনে করছেন, ইসরায়েলি পণ্য ব্যবহার বন্ধ করলেই দেশটির অর্থনীতিতে চাপ পড়বে এবং যুদ্ধ থামাতে তা ভূমিকা রাখবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হ্যাশট্যাগ যেমন #BoycottIsraelProducts, #FreePalestine ইত্যাদি ট্রেন্ড করছে, এবং তালিকাভুক্ত পণ্যের মধ্যে রয়েছে – কিছু প্রসিদ্ধ কফি ব্র্যান্ড, প্রসাধনী, সফট ড্রিংকস, প্রযুক্তি কোম্পানি ইত্যাদি।
কার ক্ষতি?
১. আন্তর্জাতিক কোম্পানি:
বয়কটের তালিকায় থাকা অনেক কোম্পানি মূলত বহুজাতিক হলেও, তাদের ইসরায়েলে বিনিয়োগ বা অংশীদারিত্ব থাকায় টার্গেট হচ্ছেন। এতে কোম্পানিগুলোর বিক্রি কমছে অনেক দেশে, বিশেষ করে মুসলিমপ্রধান অঞ্চলে।
২. স্থানীয় ব্যবসায়ী ও কর্মী:
এই কোম্পানিগুলোর অনেক ডিলার, পরিবেশক ও দোকানদার স্থানীয় মানুষ। ফলে বয়কটের প্রভাবে তাদের আয় কমে যাচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন, আন্তর্জাতিক রাজনীতির খেসারত স্থানীয় কর্মজীবীদের দিতে হচ্ছে।
৩. ইসরায়েলের অর্থনীতি:
যদিও এখনও পুরোপুরি পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি, তবে দীর্ঘমেয়াদে যদি এই বয়কট অভিযান চলতে থাকে, তা ইসরায়েলের কিছু রপ্তানিকেন্দ্রিক শিল্পে চাপ ফেলতে পারে।
কারা লাভবান?
১. স্থানীয় ও বিকল্প ব্র্যান্ড:
বয়কটের সুযোগে স্থানীয় উৎপাদনকারীরা বাজারে প্রবেশ করছে। উদাহরণস্বরূপ, অনেক দেশেই দেশীয় কফি, চকলেট বা সফট ড্রিংকস ব্র্যান্ড বিক্রি বেড়েছে।
২. রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি:
এই বয়কট প্রচারণা মানুষকে সচেতন করছে আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও মানবাধিকারের বিষয়ে। অনেকেই এখন শুধু কেনাকাটাই নয়, ব্র্যান্ডের নীতিও যাচাই করছেন।
৩. প্যালেস্টাইনপন্থী আন্দোলন:
এই বয়কট আন্দোলন প্যালেস্টাইন ইস্যুকে বিশ্বমঞ্চে আরও বেশি গুরুত্ব এনে দিয়েছে। মিডিয়া কাভারেজ বেড়েছে, যা একটি বড় কূটনৈতিক প্রভাব ফেলতে পারে।
শেষ কথা
বয়কট একদিকে রাজনৈতিক প্রতিবাদের ভাষা, অন্যদিকে এটি অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগের কৌশল। তবে সচেতনভাবে এর প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া বোঝা জরুরি, যাতে সাময়িক আবেগ নয় বরং দীর্ঘমেয়াদি ন্যায়ের পথে অগ্রসর হওয়া যায়।
0 মন্তব্যসমূহ