Recent post

সোমবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৯

রক্তশূন্যতা কীভাবে বুঝবেন, চিকিৎসা কী?


রক্তশূন্যতা কীভাবে বুঝবেন

রক্তের প্রধান দুটি উপাদান হলো রক্তকোষ ও রক্তরস।
 লোহিত রক্তকণিকায় থাকে হিমোগ্লোবিন নামের রঞ্জক পদার্থ, যা দেহের বিভিন্ন কোষে অক্সিজেন সরবরাহ করে। তাই হিমোগ্লোবিন কমে গেলে সারা শরীরে দেখা দেয় বিরূপ প্রতিক্রিয়া। 
আর রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার নাম হলো অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা।

কেন হয় অ্যানিমিয়া?

নানা কারণে রক্তশূন্যতা হতে পারে। 
রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরির কাঁচামাল আয়রন কমে গেলে আয়রন ঘাটতিজনিত রক্তশূন্যতা হতে পারে। এ ছাড়া ভিটামিন বি ও ফলিক অ্যাসিডের ঘাটতি, দীর্ঘমেয়াদি রোগ (যেমন কিডনি বিকল), দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণ (যেমন যক্ষ্মা), ক্যানসার, থাইরয়েডের সমস্যা, অস্থিমজ্জায় সমস্যা, সময়ের আগে রক্তকণিকা ভেঙে যাওয়া, রক্তক্ষরণ ইত্যাদি হতে পারে রক্তশূন্যতার কারণ। 
তবে সব ধরনের কারণের মধ্যে আয়রন ঘাটতিজনিত রক্তশূন্যতা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। পুরুষদের তুলনায় নারীদের মধ্যে এর হার বেশি। 
এতে বিরূপ প্রভাব পড়ে শিশুর ওপর, মাতৃমৃত্যুর হারও যায় বেড়ে।

কেন আয়রনের ঘাটতি?

প্রধান কারণ অপুষ্টি। 
খাদ্যে পর্যাপ্ত আয়রন না থাকলে বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের আয়রনের ঘাটতি হয়। 
আরেকটি কারণ নারীদের অতিরিক্ত মাসিকে রক্তক্ষরণ। 
অন্য কোনো কারণে দীর্ঘমেয়াদি রক্তক্ষরণ থাকতে পারে, যেমন পেপটিক আলসার, কৃমি, পাইলস, অন্ত্রে বা পাকস্থলীতে ক্যানসার, দীর্ঘদিন ব্যথানাশক সেবন ইত্যাদি।

কীভাবে বুঝবেন?

চোখ-মুখ ফ্যাকাশে মনে হওয়া, দুর্বলতা, ক্লান্তি, অবসাদ, মাথা ঘোরা, মাথাব্যথা, চোখে ঝাপসা দেখা, মুখে-ঠোঁটে ঘা ইত্যাদি রক্তশূন্যতার সাধারণ লক্ষণ।
 রক্তশূন্যতার মাত্রা তীব্র হলে শ্বাসকষ্ট, বুকে চাপ লাগা এমনকি হার্ট ফেইলিউরও হতে পারে। রক্তশূন্যতা সন্দেহ করা হলে রক্তের একটি কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট করা জরুরি। 
এটি দেখে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ও লোহিত কণিকার পরিমাণ, আকার, রঞ্জক পদার্থের ঘনত্ব ও মান সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক আরবিসি ইনডেক্স দেখে রক্তশূন্যতার কারণ অনুমান করতে পারেন। তবে প্রকৃত কারণ শনাক্ত করার জন্য পরে অন্যান্য পরীক্ষারও প্রয়োজন হয়।

চিকিৎসা কী?

রক্তশূন্যতা হলে আয়রন বড়ি কিনে খেলেই হলো—এ ধারণা ঠিক নয়। 
রক্তশূন্যতার চিকিৎসার মূল বিষয় কারণটি খুঁজে বের করা। 
যেমন পেপটিক আলসার, পাইলস বা ক্যানসার শনাক্ত করা বা কেন মাসিকে বেশি রক্তক্ষরণ হচ্ছে, তা খোঁজা। 
রোগীকে আয়রনের ঘাটতি পূরণে মুখে বড়ি দেওয়া হবে, না শিরাপথে আয়রন দেওয়া হবে, তা রোগীর অবস্থা বিবেচনা করে চিকিৎসক সিদ্ধান্ত নেন।

প্রশ্ন-উত্তর

প্রশ্ন: মাসিক অনিয়মিত, শুরু হতেও বিলম্ব হয়। 
আবার একবার শুরু হলে একটানা এক-দুই মাস পর্যন্ত চলতে থাকে। সমাধান দিলে উপকৃত হব।


উত্তর: নানা কারণে মাসিকের সমস্যা হতে পারে। থাইরয়েড ও অন্যান্য হরমোনের সমস্যা, জরায়ু বা ডিম্বাশয়ে কোনো টিউমার, ফাইব্রয়েড বা সিস্ট থাকতে পারে। আপনি একজন গাইনি বিশেষজ্ঞর পরামর্শে হরমোন পরীক্ষা ও আলট্রাসনোগ্রাম করে নিশ্চিত হয়ে নিন।

ডা. শামিমা ইয়াসমিন, স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ

© স্বত্ব প্রথম আলো

কোন মন্তব্য নেই:

Popular Posts