Recent post

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০১৯

মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জুমার নামাজ পড়ার বিধান কি???

মহিলাদের জুমার নামাজ পড়ার বিধান কি???

বর্তমানে ফেতনার যুগে মহিলারা মসজিদে গিয়ে সব ধরণের নামাজ পড়া মাকরুহে তাহরিমী।
তবে যদি মার্কেটে বা বাইরে কোথাও যাওয়ার পথে ওয়াক্ত চলে যাবার আশংকায় মসজিদে নামাজ পড়া হয় তাহলে সমস্যা নেই।
তবে এক্ষেত্রে মহিলাদের আলাদা ব্যবস্থা আছে কিনা দেখতে হবে?
মোট কথা নোংরামী পরিবেশ সৃষ্টি করে মহিলাদের মসজিদে যাওয়া যাবেনা।
এমনিভাবে কারণবশতঃ বাইরে গেলেই জুমার নামাজে মহিলারাও উপস্থিত হতে পারবে।
এক্ষেত্রে যদি খুতবা শুনতে পারে তাহলে পুরুষদের সাথেই দুই রাকআত পড়লে হবে।
আর খুতবা মিস হয়ে গেলে ফরজ চার রাকাতই আদায় করতে হবে। ফতোয়ায়ে উসমানী ও আলমগীরি।
মহিলাদের জন্য ঈদগাহে বা মসজিদে গিয়ে জামাতে নামায পড়া মাকরূহ।
তবে সেখানে গিয়ে সুন্দর পরিবেশে কেউ নামায পড়লে তা আদায় হয়ে যাবে।
এতে ঈদগাহ বা মসজিদে নারীদেরকে নামাজ আদায়ের জন্য বাধ্য করা যাবেনা৷
নারীদের আসল স্থান হল তাদের বসবাসের ঘর।
নারীদের মসজিদে এসে নামায পড়া রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পছন্দ করতেন না।
তবে যেহেতু রাসূল সাঃ সবার নবী।
আর রাসূল সাঃ এর কাছে ওহী নাজিল হতো।
তাই নারীরা রাসূল সাঃ এর জমানায় ওহীর বানী শুনার জন্য মসজিদে আসতো।
এটি ছিল শুধুই প্রয়োজনের তাগিতে।
যে প্রয়োজন রাসূল সাঃ ইন্তেকালের দ্বারা বন্ধ হয়ে গেছে।
প্রয়োজনীয় দ্বীন শিখা প্রতিটি নর-নারীর জন্য আবশ্যক।
রাসূল সাঃ ছিলেন সেই দ্বীনের বাহক। তাই রাসূল সাঃ এর সময়ে যেহেতু সময়ে সময়ে দ্বীনের বিধান অবতীর্ণ হতো, তাই পুরুষ সাহাবীদের সাথে মহিলা সাহাবীরাও রাসূল সাঃ এর দরবারে এসে সেই দ্বীন শিখতে চেষ্টা করতেন।
সেখানে পুরুষ নারী এক সাথে হওয়ার কারনে কোন ফিতনার আশংকা ছিল না।
কিন্তু বর্তমানে সেই আশংকা ভয়াবহ রূপ পরিগ্রহ করেছে। তাই ফুক্বাহায়ে কেরাম নারীদের ঈদগাহে ও মসজিদে গিয়ে নামায পড়তে নিষেধ করেন।
এটা না জায়েজ নয়, তবে মাকরূহ।
সেই সাথে ইসলামের মূল স্পিরিটের বিপরীত পদ্ধতি। কারণ ইসলামের মূল থিউরী হল নারীরা থাকবে বাড়িকে সৌন্দর্য মন্ডিত করে। রাস্তাঘাটে অবাধে বিচরণ এটা তাদের কাজ নয়।
নিম্নের হাদীসগুলো দেখুন-
ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﺳﻮﻳﺪ ﺍﻷﻧﺼﺎﺭﻱ ﻋﻦ ﻋﻤﺘﻪ ﺍﻣﺮﺃﺓ ﺃﺑﻲ ﺣﻤﻴﺪ ﺍﻟﺴﺎﻋﺪﻱ : ﺃﻧﻬﺎ ﺟﺎﺀﺕ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻓﻘﺎﻟﺖ : ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﺇﻧﻲ ﺃﺣﺐ ﺍﻟﺼﻼﺓ ﻣﻌﻚ ﻓﻘﺎﻝ : ﻗﺪ ﻋﻠﻤﺖ ﺃﻧﻚ ﺗﺤﺒﻴﻦ ﺍﻟﺼﻼﺓ ﻣﻌﻲ ﻭ ﺻﻼﺗﻚ ﻓﻲ ﺑﻴﺘﻚ ﺧﻴﺮ ﻣﻦ ﺻﻼﺗﻚ ﻓﻲ ﺣﺠﺮﺗﻚ ﻭ ﺻﻼﺗﻚ ﻓﻲ ﺣﺠﺮﺗﻚ ﺧﻴﺮ ﻣﻦ ﺻﻼﺗﻚ ﻓﻲ ﺩﺍﺭﻙ ﻭ ﺻﻼﺗﻚ ﻓﻲ ﺩﺍﺭﻙ ﺧﻴﺮ ﻣﻦ ﺻﻼﺗﻚ ﻓﻲ ﻣﺴﺠﺪ ﻗﻮﻣﻚ ﻭ ﺻﻼﺗﻚ ﻓﻲ ﻣﺴﺠﺪ ﻗﻮﻣﻚ ﺧﻴﺮ ﻣﻦ ﺻﻼﺗﻚ ﻓﻲ ﻣﺴﺠﺪﻱ ﻓﺄﻣﺮﺕ ﻓﺒﻨﻲ ﻟﻬﺎ ﻣﺴﺠﺪ ﻓﻲ ﺃﻗﺼﻰ ﺷﻲﺀ ﻣﻦ ﺑﻴﺘﻬﺎ ﻭ ﺃﻇﻠﻤﻪ ﻓﻜﺎﻧﺖ ﺗﺼﻠﻲ ﻓﻴﻪ ﺣﺘﻰ ﻟﻘﻴﺖ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﺰ ﻭ ﺟﻞ
আব্দুল্লাহ বিন সুয়াইদ আল আনসারী রাঃ তার চাচা থেকে বর্ণনা করেন যে, আবু হুমাইদ আস সায়িদী এর স্ত্রী রাসূল সাঃ এর কাছে এসে বললেন হে আল্লাহর রাসূল! নিশ্চয় আমি আপনার সাথে নামায পড়তে পছন্দ করি।
তখন নবীজী সাঃ বললেন-আমি জেনেছি যে, তুমি আমার সাথে নামায পড়তে পছন্দ কর।
অথচ তোমার একান্ত রুমে নামায পড়া উত্তম তোমার জন্য তোমার বসবাসের গৃহে নামায পড়ার চেয়ে।
আর তোমার বসবাসের গৃহে নামায পড়া উত্তম তোমার বাড়িতে নামায পড়ার চেয়ে।
আর তোমার বাড়িতে নামায পড়া উত্তম তোমার এলাকার মসজিদে নামায পড়ার চেয়ে।
আর তোমার এলাকার মসজিদে নামায পড়া উত্তম আমার মসজিদে [মসজিদে নববীতে] নামায পড়ার চেয়ে।
তারপর তিনি আদেশ দিলেন তার গৃহের কোণে একটি রুম বানাতে।
আর সেটিকে অন্ধকারচ্ছন্ন করে ফেললেন।
তারপর সেখানেই তিনি নামায পড়তেন মৃত্যু পর্যন্ত।
সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-১৬৮৯,
ইলাউস সুনান-৩/২৬

এ হাদীস কি প্রমাণ করছে? মহিলারা মসজিদে না গিয়ে বাড়িতে নামায পড়বে এ নির্দেশ কার?
যদি রাসূল সাঃ নারীদের মসজিদে আসাকে অপছন্দ করে থাকেন, তাহলে সেখানে আমি কে যে, তাদের মসজিদে আসা/ঈদগাহে আসা পছন্দ করবো?
প্রসঙ্গক্রমে আরেকটি হাদীস দেখিঃ
ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻋﻤﺮﻭ ﺍﻟﺸﻴﺒﺎﻧﻲ ﺃﻧﻪ ﺭﺃﻯ ﺑﻦ ﻣﺴﻌﻮﺩ ﻳﺨﺮﺝ ﺍﻟﻨﺴﺎﺀ ﻣﻦ ﺍﻟﻤﺴﺠﺪ ﻭﻳﻘﻮﻝ ﺃﺧﺮﺟﻦ ﺇﻟﻰ ﺑﻴﻮﺗﻜﻦ ﺧﻴﺮ ﻟﻜﻦ
হযরত আবু আমর বিন শায়বানী থেকে বর্ণিত। তিনি দেখেছেন-হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ মহিলাদের মসজিদে থেকে বের করে দিতেন। আর বলতেন যে, মসজিদের চেয়ে তোমাদের জন্য ঘরই উত্তম।
মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-৫২০১,
মুসান্নাফে ইবনুল জি’দ, হাদীস নং-৪২৯
সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-৫৪৪১
আল মুজামুল কাবীর, হাদীস নং-৯৪৭৫।

ভাল করে খেয়াল করুন। আব্দুল্লাহ বিন মাসঈদ রাঃ অপছন্দ করেন, আমরাও তা অপছন্দ করি।
যে বঞ্চনা রাসূল সাঃ এর প্রিয় সাহাবীর আমল। সেটি আমাদের গলার মালা।
যদিও সেটি সাহাবা বিদ্বেষীদের অপছন্দ হয়ে থাকে।
ﻋَﻦْ ﻋَﻤْﺮَﺓَ ﺑِﻨْﺖِ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦِ ﺃَﻧَّﻬَﺎ ﺃَﺧْﺒَﺮَﺗْﻪُ ﺃَﻥَّ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔَ ﺯَﻭْﺝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻰِّ -ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ - ﻗَﺎﻟَﺖْ ﻟَﻮْ ﺃَﺩْﺭَﻙَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ - ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ – ﻣَﺎ ﺃَﺣْﺪَﺙَ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀُ ﻟَﻤَﻨَﻌَﻬُﻦَّ ﺍﻟْﻤَﺴْﺠِﺪَ ﻛَﻤَﺎ ﻣُﻨِﻌَﻪُ ﻧِﺴَﺎﺀُ ﺑَﻨِﻰ ﺇِﺳْﺮَﺍﺋِﻴﻞَ . ﻗَﺎﻝَ ﻳَﺤْﻴَﻰ ﻓَﻘُﻠْﺖُ ﻟِﻌَﻤْﺮَﺓَ ﺃَﻣُﻨِﻌَﻪُ ﻧِﺴَﺎﺀُ ﺑَﻨِﻰ ﺇِﺳْﺮَﺍﺋِﻴﻞَ ﻗَﺎﻟَﺖْ ﻧَﻌَﻢْ .
হযরত আমরাতা বিনতে আবদির রহমান বলেন-রাসূল সাঃ এর সহধর্মীনী হযরত আয়শা রাঃ বলেছেন-যদি রাসূলুল্লাহ সাঃ মহিলাদের এখনকার অবস্থা জানতেন, তারা কি করে?
তাহলে তাদের মসজিদে আসতে নিষেধ করতেন যেভাবে বনী ইসরাঈলের মহিলাদের নিষেধ করা হয়েছে।
ইয়াহইয়া বলেন-আমি আমরাতাকে বললাম-বনী ইসরাঈলের মহিলাদের কি মসজিদে আসতে নিষেধ করা হয়েছে?
 তিনি বললেন-হ্যাঁ।
সহিহ মুসলিম -১/১৮৩, হাদীস নং-১০২৭
সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৫৬৯
মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২৫৯৮২
মুসনাদুর রাবী, হাদীস নং-২৫৯
সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং-৫৪০

এবার ভেবে দেখুন-রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর তিরোধানের পর মুসলিম নারীরা এমন কি ধরণের পোশাক পড়তেন?
 যার কারনে আম্মাজান হযরত আয়শা রাঃ একথা বলেছেন?
আর বর্তমান নারীদের পোশাকের দৃশ্য দেখলে আম্মাজান আয়শা রাঃ কী বলতেন?
উপরোক্ত হাদীসসমূহের আলোকে একথা পরিস্কার যে, মহিলাদের ঈদগাহে ও মসজিদে আসা মাকরূহ।
বর্তমানে আহলে হাদীছ ওরফে আহলে খবিছরা ইহুদী- খ্রীষ্ঠানের দেওয়া অর্থের বিনিময়ে সুন্দর- সুন্দর মসজিদ নির্মাণ করে তা রুপুসি নারী উপভোগের কেন্দ্রস্থল বানিয়ে ফেলছে৷
আমরা সকল সুন্নী মুসলিম জনতা এদের ঐ অপকর্মের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে৷
ওদের নির্মিত তাকওয়া মসজিদ নামের অন্তরালে রয়েছে তাকানা নারী উপভোগ আশ্রম৷
আমরা এ ধরণের মানবীয় শয়তানদের হাত হতে বাঁচার জন্য মহান আল্লাহ পাকের নিকট পানাহ চাই৷আমিন ছুম্মা আমিন!
ﻭﺍﻟﻠﻪ ﺍﻋﻠﻢ ﺑﺎﻟﺼﻮﺍﺏ
খাদিমুল ইফতাঃ
{মুফতি শাইখ মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম
 নকশবন্দী-মুজাদ্দেদী,সদরসিলেট}
তারিখঃ19/04/2019ইং

কোন মন্তব্য নেই:

Popular Posts