Recent post

বুধবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৭

খাদ্য ও পুষ্টি সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।

খাদ্য ও পুষ্টি

খাদ্য ও পুষ্টি কনটেন্টটিতে খাদ্যের কাজ, খাদ্যের শ্রেণীবিভাগ, খাদ্য উপাদানের শ্রেণী বিভাগ, খাদ্য উপাদানের কাজ, উৎস ও মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ, সুষম খাদ্য, পুষ্টি সর্ম্পকে বর্ণনা করা হয়েছে।
খাদ্য ছাড়া আমাদের জীবন ধারণ সম্ভব নয়। দৈনন্দিন কাজকর্ম এবং চলাফেরা করার জন্য সবল, রোগমুক্ত ও সুস্থ শরীর প্রয়োজন।  সুস্থ শরীর বজায় রাখার জন্য আমরা যা কিছু খেয়ে থাকি তা-ই খাদ্য।

খাদ্যের কাজ 
  • শরীর গঠন ও বৃদ্ধিসাধন এবং ক্ষয়পূরণ
  • শরীরে তাপশক্তি ও কর্মক্ষমতা যোগানো
  • শরীর রোগমুক্ত রাখা
  • অসুস্থ শরীরকে আরোগ্য লাভে সহায়তা করা

খাদ্যের শ্রেণীবিভাগ 
কাজভেদে খাদ্যকে তিনভাগে ভাগ করা যায়।
যেমনঃ

ক. শক্তিদায়ক খাদ্য  
      এ সব খাদ্যের প্রধান ভূমিকা হলো, শক্তি ও তাপ উৎপাদন করে শরীরকে সতেজ ও কর্মক্ষম রাখা।  শরীরের অভ্যন্তরীণ ক্রিয়াকর্ম যেমনঃ শ্বাসপ্রশ্বাস ক্রিয়া, হৃৎপিন্ড ও অন্যান্য দেহ যন্ত্রের ক্রিয়া, পরিপাক ক্রিয়া, মলমূত্র নিষ্কাষণ ক্রিয়া এবং  দৈনন্দিন জীবনে সকল কাজকর্ম সম্পাদনে শক্তি প্রয়োজন। যে সকল  খাদ্য সামগ্রী হতে শক্তি পাওয়া  যায় তা হলোঃ
  • শস্য জাতীয় খাদ্য (যেমন  চাল, গম, ভূট্টা, জোয়ার ইত্যাদি)
  • মূল জাতীয় খাদ্য (যেমন  গোল আলু, মিষ্টি আলু, মেটে আলু, কাসাবা ইত্যাদি)
  • তেল বা চর্বি জাতীয় খাদ্য (যেমন সব রকমের তেল, ঘি,  মাংসের চর্বি  ইত্যাদি)
  •  চিনি, গুড়  ও মিষ্টি  জাতীয় খাদ্য
খ. শরীর গঠন, বৃদ্ধিসাধন এবং ক্ষয়পূরণকারী খাদ্য  
এ সকল খাদ্য মানবদেহে মূলত: শরীরের কাঠামো তৈরী বা শরীর গঠন, শরীরের বৃদ্ধি সাধন ও শরীরের ক্ষয় পূরণে কাজ করে থাকে।  এসব খাদ্যের মধ্যে প্রাণীজ উৎস থেকে প্রাপ্ত:
  • ডিম
  •  দুধ
  •  মাছ
  • মাংস
এবং উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে প্রাপ্ত:
  • সব রকমের ডাল   
  •  মটর শুঁটি
  •  সীমের বীচি
  • কাঁঠালের বীচি
  • বাদাম প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
গ. রোগ প্রতিরোধক খাদ্য  
এ সব খাদ্যের প্রধান ভূমিকা হলো, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, নানা প্রকার রোগ-ব্যাধি কিংবা অসুস্থতা হতে শরীরকে রক্ষা করা। রোগ প্রতিরোধক সস্তা খাদ্যের মধ্যে রয়েছে :
  • রঙ্গিন শাকসব্জি
  •  ফলমূল
খাদ্য উপাদানের শ্রেণী বিভাগ  
খাদ্য উপাদানকে নিম্নের ৬টি ভাগে ভাগ করা যেতে পারে :
  • শ্বেতসার বা শর্করা ( উৎস- চাল, গম, ভুট্টা, চিড়া, মুড়ি, চিনি, গুড়, আলু ও মূল জাতীয় অন্যান্য খাদ্য)
  • আমিষ  ( উৎস - মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ডাল, মটর শুঁটি, সীমের বীচি, কাঁঠালের বীচি, বাদাম ইত্যাদি)
  • স্নেহ জাতীয় খাদ্য (উৎস -তেল, ঘি, মাখন, চর্বি  ইত্যাদি)
  • খাদ্যপ্রাণ বা ভিটামিন (উৎস - রঙ্গিন শাক-সব্জি ও ফল, ডিম, দুধ, কলিজা ইত্যাদি)
  • খনিজ লবণ  (উৎস - রঙ্গিন শাক-সব্জি ও ফল, ডিম, দুধ, কলিজা, মাংস, ছোট মাছ ইত্যাদি)
  • নিরাপদ পানি
খাদ্য উপাদানের কাজ, উৎস ও মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ  
খাদ্যের মুখ্য উপাদান 
  •  শ্বেতসার বা শর্করা
  •  আমিষ
  •  স্নেহ
খাদ্যের গৌণ উপাদান 
  • খাদ্যপ্রাণ বা ভিটামিন
  •  খনিজ লবণ 
  •  নিরাপদ পানি
খাদ্যের মুখ্য উপাদান 
শ্বেতসার বা শর্করা
কাজ 
  • শরীরে তাপ শক্তি সরবরাহ করে
  • তেল / চর্বি জাতীয় পদার্থ দহনে সাহায্য করে                  
  • আমিষের প্রধান কাজ করতে সহায়তা করে এবং
কাজ 
  • শরীরে তাপ শক্তি সরবরাহ করে
  • তেল / চর্বি জাতীয় পদার্থ দহনে সাহায্য করে
  • আমিষের প্রধান কাজ করতে সহায়তা করে এবং
উৎস 
  • চাল, গম, ভুট্টা, চিনি, গুড়, মিষ্টি, আলু, মিষ্টি আলু, কচু ইত্যাদি
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ (আহারোপযোগী ) 
  • মোট প্রয়োজনীয় খাদ্য শক্তির শতকরা প্রায় ৫০-৬০ ভাগ
আমিষ
কাজ 
  • দেহের গঠন ও বৃদ্ধি সাধন করে
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
  • শরীরে তাপ শক্তি সরবরাহ করে
  • শরীরে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে
উৎস 
  • প্রাণিজ উৎস যেমন-মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, কলিজা
  • উদ্ভিজ্জ উৎস যেমন- সয়াবিন, কাঁঠালের বীচি, সীমের বীচি, ডাল, বাদাম, মটরশুঁটি ইত্যাদি   
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ (আহারোপযোগী) 

  • প্রতি কেজি শরীরের ওজনের জন্য ১ গ্রাম ( পূর্ণ বয়স্কদের জন্য )
  • প্রতি কেজি শরীরের ওজনের জন্য ২-৩ গ্রাম ( ৪ বছরের শিশুর জন্য )
  • প্রতি কেজি শরীরের ওজনের জন্য ১.৭ গ্রাম ( ৪-১৮ বছর বয়স পর্যন্ত )
  • প্রতি কেজি শরীরের ওজনের জন্য ১.৫ গ্রাম ( গর্ভবতী ও প্রসূতীর জন্য )
কাজ
  • দেহে শক্তি সরবরাহ করে
  • দেহের ত্বককে মসৃণ রাখে
  • খাবার সুস্বাদু করে ও তেল বা চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন শরীরে কাজে লাগাতে সাহায্য করে
উৎস  
  • প্রাণিজ উৎস যেমন-ঘি, মাখন, চর্বি
  • উদ্ভিজ্জ উৎস যেমন-সয়াবিন তেল, সরিষার তেল, তিলের তেল, সূর্যমুখীর তেল, বাদাম, ডালডা, নারকেল (শুকনা )
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ (আহারোপযোগী) 
  • প্রায় ৩৫-৪০ গ্রাম ( পূর্ণ বয়স্কের জন্য )
  • প্রতি কেজি শরীরের ওজনের জন্য দৈনিক ২-৩ গ্রাম ( ১ বছর পর্যন্ত শিশুর জন্য )

খাদ্যের গৌণ উপাদান - খাদ্য প্রাণ বা ভিটামিন 
ভিটামিন (তেল বা চর্বিতে দ্রবণীয়) 
ভিটামিন-এ
কাজ
  • চোখের স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তি বজায় রাখে
  • ত্বকের কোষকে ভালো রাখে ফলে ত্বক মসৃণ থাকে
  • শরীর গঠন এবং বৃদ্ধিতে সহায়তা করে
  • হাঁড় ও দাঁত তৈরীতে সহায়তা করে
  • সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
  • প্রজনন ক্ষমতা অক্ষুন্ন রাখতে সাহায্য করে
উৎস (আহারোপযোগী)  
  • প্রাণিজ উৎস যেমন-ফিস লিভার ওয়েল, মাছের তেল, কলিজা, মাখন, ডিমের কুসুম, কিডনি, চর্বি
  • উদ্ভিজ্য উৎস যেমন-রঙিন শাকসবজি, ফল এবং ভুট্টা ও মিষ্টি আলু
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ 
  • প্রায় ৫০০০ আই ইউ* ( প্রাপ্ত বয়স্কের জন্য )
  • প্রায় ৬০০০ আই ইউ ( গর্ভবতীর জন্য )
  • প্রায় ৮০০০ আই ইউ ( প্রসূতির জন্য )
  • প্রায় ২০০০-৪৫০০ আই ইউ ( ১-১২ বছর বয়স পর্যন্ত )
* আই ইউ  (ইন্টারন্যাশনাল ইউনিট)
ভিটামিন-ডি
 কাজ 
  • শরীরে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস বিপাকে সাহায্য করে
  • হাঁড় ও দাঁত গঠনে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস কাজে লাগাতে সাহায্য করে
উৎস (আহারোপযোগী) 
  • প্রাণিজ উৎস যেমন-মাছের তেল, ফিস লিভার ওয়েল, মাখন, ডিমের কুসুম, দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবার
  • প্রাকৃতিক উৎস যেমন-সূর্যের আলো
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ 
  • ২.৫ মাইক্রোগ্রাম ( প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষের জন্য )
  • ১০ মাইক্রোগ্রাম ( গর্ভবতী, প্রসূতি ও শিশুর জন্য )
(উদ্ভিজ্জ খাদ্যে ভিটামিন-ডি নেই)
ভিটামিন-ই
কাজ 
  • এন্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে ভিটামিন-এ, ক্যারোটিন এবং অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিডকে জারিত হয়ে নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা করে
  • প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি করাসহ বন্ধ্যাত্ব নিবারণে সহায়তা করে

উৎস (আহারোপযোগী) 
  • প্রাণিজ উৎস যেমন-কডলিভার ওয়েল
  • উদ্ভিজ্জ উৎস যেমন- বাদাম,গম, যব, সূর্যমুখী তেল, সয়াবিন তেল এবং পামতেল
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ 
  • প্রায় ৫-১০ মিলিগ্রাম


পানিতে দ্রবণীয়  ভিটামিন 
ভিটামিন-সি
কাজ 
  • কোলাজেন নামক আমিষ তৈরী এবং রক্ষণাবেক্ষণে সাহায্য করে
  • চর্বি ও আমিষ বিপাকে সাহায্য করে
  • রক্ত তৈরী করার জন্য লৌহ এবং তাম্রকে ব্যবহৃত করতে সাহায্য করে
  • চামড়া মসৃণ এবং উজ্জল রাখে
  • দাঁত ও মাড়ি সুস্থ রাখে
  • ক্ষতস্থান তাড়াতাড়ি শুকাতে সাহায্য করে ও সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ করে
উৎস (আহারোপযোগী) 
  • টক জাতীয় ফল যেমন - আমলকি, পেঁয়ারা, জাম্বুরা, আমড়া, লেবু, কামরাঙ্গা, কুল, আনারস। এছাড়া কাঁচামরিচ, পুদিনা পাতা, ধনে পাতা, সজনে পাতা, মূলাশাক ইত্যাদি কাঁচা খেলেও ভিটামিন সি পাওয়া যায়।
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ 
  • ২০ মিলিগ্রাম ( শিশুর জন্য )
  • ৩০ মিলিগ্রাম ( প্রাপ্ত বয়স্কের জন্য )
  • ৫০ মিলিগ্রাম ( গর্ভবতীর জন্য )
  • ৫০ মিলিগ্রাম ( প্রসূতির জন্য )
ভিটামিন-বি২
কাজ 
  • শরীরে শর্করা জাতীয় খাদ্যের বিপাক ক্রিয়ায় সাহায্য করে শক্তি উৎপাদন করে
  • চর্বি ও আমিষ থেকে শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে
  • দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি সাধনে সাহায্য করে

উৎস (আহারোপযোগী) 
  • প্রাণিজ উৎস যেমন-চর্বি বিহীন মাংস, কলিজা, ডিম, দুধ, মাছ
  • উদ্ভিজ্জ উৎস যেমন-ঢেঁকি ছাঁটা সিদ্ধ চাল, গম, যব, ইস্ট, মটরশুঁটি ইত্যাদি
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ 
  • ১.৪ মিলিগ্রাম ( পুরুষের জন্য )
  • ১.০ মিলিগ্রাম ( মহিলার জন্য )
  • ১.১ মিলিগ্রাম ( গর্ভবতীর জন্য )
  • ১.৪ মিলিগ্রাম ( প্রসূতির জন্য )
নায়াসিন
কাজ 
  • শর্করা বিপাকে সাহায্য করে
  • শর্করা ও আমিষ থেকে দেহের চর্বি উৎপাদনে সাহায্য করে
উৎস (আহারোপযোগী) 
  • প্রাণিজ উৎস যেমন-মাংস, কলিজা
  • উদ্ভিজ্জ উৎস যেমন-গম, ডাল, বাদাম, তেল বীজ, ছোলা ও শাক-সবজি
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ 
  • ১৮.২ মিলিগ্রাম ( পুরুষের জন্য )
  • ১৩.২ মিলিগ্রাম ( মহিলার জন্য )
  • ১৫.১ মিলিগ্রাম ( গর্ভবতীর জন্য )
  • ১৮.১ মিলিগ্রাম ( প্রসূতির জন্য )
ভিটামিন-বি১২
কাজ 
  • কো-এনজাইম হিসেবে দেহে কাজ করে
  • রক্তের লোহিত কণিকার আকার স্বাভাবিক রাখে
উৎস (আহারোপযোগী) 
  • প্রাণিজ উৎস যেমন-কলিজা, মগজ, হৃৎপিন্ড, কিডনি, মাংস, মাছ, ডিম, দুধ, দুগ্ধজাত খাদ্য, ডিমের কুসুম ও গরুর কলিজা
      (উদ্ভিজ্জ খাদ্যে ভিটামিন-বি১২ নেই)
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ 
  • ১.০ মাইক্রোগ্রাম (শিশুর জন্য)
  • ২.০ মাইক্রোগ্রাম (প্রাপ্ত বয়স্কের জন্য)
  • ৩.০ মাইক্রোগ্রাম (গর্ভবতীর জন্য)
  • ২.৫ মাইক্রোগ্রাম (প্রসূতির জন্য)

খনিজ লবণ  
ক্যালসিয়াম

কাজ 
  • ফসফরাসের সহযোগিতায় শরীরের কাঠামো, হাঁড় ও দাঁত গঠন এবং তা মজবুত করে
  • প্রতিটি জীব কোষ গঠনে এর প্রয়োজন
  • রক্ত জমাট বাঁধার প্রয়োজনীয় উপাদান
  • হৃৎপিন্ডের সংকোচন, প্রসারণ এবং হৃৎপিন্ডে স্পন্দনে সাহায্য করে
উৎস (আহারোপযোগী) 
  • প্রাণিজ উৎস যেমন-ছোট চিংড়ি, ছোট মাছের কাঁটা, নরম হাঁড়, দুধ ও দুধজাত খাবার
  • উদ্ভিজ্জ উৎস যেমন-ডাল, ঢেঁড়স, সজনে এবং সবুজ শাক যেমন-কচু শাক, পালং শাক ইত্যাদি
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ 
  • ৪৫০ মিলিগ্রাম ( প্রাপ্ত বয়স্কের জন্য )
  • ৫০০-৬০০ মিলিগ্রাম ( শিশুর জন্য )
  • ৬৫০ মিলিগ্রাম ( কিশোর-কিশোরীর জন্য )
  • ১১০০ মিলিগ্রাম ( গর্ভবতীর জন্য )
  • ১১০০ মিলিগ্রাম ( প্রসূতির জন্য )
ফসফরাস
কাজ 
  • ক্যালসিয়ামের সাথে মিলিত হয়ে হাঁড় ও দাঁতের তন্তু তৈরী এবং তা মজবুত করে
  • শর্করা এবং চর্বি বিপাকে সাহায্য করে শরীরে তাপ ও শক্তি উৎপাদন করে
  • কোষের নিউক্লিক এসিড ও সাইটোপ্লাজমের অপরিহার্য অংশ
উৎস ( আহারোপযোগী ) 
  • প্রাণিজ উৎস যেমন-মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, পনির
  • উদ্ভিজ্জ উৎস যেমন-বাদাম, ডাল এবং দানা জাতীয় খাদ্য দ্রব্য
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ 
  • ৮০০ মিলিগ্রাম
পটাশিয়াম
কাজ 
  • দেহ বিশেষ করে চর্বিহীন মাংসপেশী বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন
  • পেশীর স্বাভাবিক নড়াচড়া বজায় রাখে
উৎস (আহারোপযোগী) 
  • প্রাণিজ উৎস যেমন-চর্বিহীন মাংস এবং দুধ ( তবে কম বেশি প্রায় সব খাবারের মধ্যে পটাশিয়াম রয়েছে )

মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ 

  • ২.৫ মিলিগ্রাম (প্রাপ্ত বয়স্কের জন্য)
আয়রণ
কাজ 
  • রক্তের হিমেগ্লোবিনের হিম অংশ তৈরীর জন্য অপরিহার্য
  • অসংখ্য এনজাইমের অংশ হিসেবে অক্সিডেশন-রিডাকশন প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত হয়
  • জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় ইলেকট্রন-ট্রান্সফার সিস্টেমের জন্যে লৌহের প্রয়োজন
উৎস (আহারোপযোগী) 
  • প্রাণিজ উৎস যেমন-মাংস, কলিজা, ডিম, টেংরা মাছ, তাপসী মাছ, রুপাপাতিয়া মাছ বা এসব মাছের শুটকি
  • উদ্ভিজ্জ উৎস যেমন-কাঁচা আম, আমচুর, কাল কচু শাক, ফুল কপির পাতা, শালগম পাতা, ডাঁটা শাক এবং অন্যান্য শাক
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ 
  • ০৯ মিলিগ্রাম (প্রাপ্ত বয়স্কের জন্য )
  • ১০ মিলিগ্রাম (ছোট ছেলে মেয়ের জন্য)
  • ১৮  মিলিগ্রাম (কিশোরের জন্য)
  • ২৪  মিলিগ্রাম (কিশোরীর জন্য)
  • ২৮  মিলিগ্রাম (প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলার জন্য)
  • ৩৩  মিলিগ্রাম (গর্ভবতীর জন্য)

আয়োডিন
কাজ 
  • থাইরক্সিন নামক হরমোন তৈরীর জন্য অত্যাবশ্যকীয়
  • শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য
উৎস (আহারোপযোগী) 
  • প্রাণিজ উৎস যেমন-সামুদ্রিক মাছ (তাজা/শুটকি)
  • প্রাকৃতিক উৎস যেমন-সামুদ্রিক আগাছা
  • আয়োডিন মিশ্রিত খাবার লবণ
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ 
  • ১৫০ মাইক্রোগ্রাম
পানি 
কাজ 
  • মানব দেহে যে কোন রাসায়নিক পরিবর্তনে সাহায্য করে
  • গ্রহণকৃত খাবার হজম, আত্মীকরন, শোষণ, সংগ্রহণ ও মল নিঃসরণ করে    
  • শরীরে তাপমাত্রা রক্ষা করে
  • শরীরে এক স্থান হতে অন্য স্থানে পুষ্টি উপাদান পৌছায়
  • শরীরের জোড়া অংশ নড়াচড়ায় সাহায্য করে
  • শরীর থেকে অপ্রয়োজনীয় পদার্থ বের করে

উৎস 
  • প্রাকৃতিক উৎস (বিশুদ্ধ)
  • তরল খাবার বা পানিয়
  • শক্ত খাবার
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ 
  • প্রায় আড়াই থেকে তিন লিটার (পূর্ণ বয়স্কের জন্য)

সুষম খাদ্য  
  • সুষম খাবার বলতে আমরা এমন খাবারের কথা বুঝি যাতে শরীরের প্রয়োজনীয় সবকটি খাদ্য উপাদানই সঠিক পরিমাণে বিদ্যমান থাকে। সুষম খাদ্য তালিকায় শক্তিদায়ক,শরীর বৃদ্ধিকারক ও ক্ষয়পূরক এবং রোগ প্রতিরোধক খাবার উপযুক্ত পরিমাণে  অন্তর্ভূক্ত থাকতে হবে।
  • বয়স, কাজ, লিঙ্গ ও শারীরিক অবস্থাভেদে সুষম খাদ্য  ভিন্ন হতে পারে।
  •  সুস্থ্য দেহের জন্য খাদ্য উপাদান ছাড়াও প্রচুর পরিমাণে আঁশযুক্ত খাবার দৈনিক খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
  • এছাড়া প্রয়োজনীয় পরিমাণ নিরাপদ পানি পান করতে হবে। দৈনিক খাদ্য তালিকায় যেন ক্ষতিকারক রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রিত কোন খাবার না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
  • সুষম খাদ্য বলতে শুধু দামি খাদ্যকেই বুঝায় না। সস্তা খাদ্য সামগ্রী দিয়েও সুষম খাদ্য তৈরী করা যায়।
পুষ্টি  
পুষ্টি এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে গ্রহণ করা খাদ্য পরিপাক ও শোষিত হয়ে শরীরে তাপ ও শক্তি যোগায়, শরীরের বৃদ্ধিসাধন করে রোগ থেকে মুক্ত রাখে, ক্ষয়পূরণ করে এবং সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।
পুষ্টির উৎস 
  • চাল, ডাল
  • মাছ, মাংস
  • শাকসব্জী, ফলমূল
  • পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন (ভিটামিন ‘বি’কমপ্লেক্স, ভিটামিন ‘সি’)
  • তেলে দ্রবণীয় ভিটামিন (ভিটামিন ‘এ’, ভিটামিন‘ডি’, ভিটামিন ‘ই’, ভিটামিন ‘কে’)
  • ভিটামিন ‘সি’
পুষ্টিকর খাদ্য কেন প্রয়োজন
  • শরীর গঠন, বুদ্ধিমত্তা, শরীর বৃদ্ধি ও ক্ষয়পূরণ এবং রোগ প্রতিরোধের জন্য
  •  শারীরিক শক্তি বা কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য
  • জীবন চক্রের অতি গুরুত্বপূর্ন সময় যেমন- শিশুকাল, শৈশবকাল, কৈশোর, গর্ভাবস্থা, স্তন্যদানকাল ও বয়োসন্ধিকালে বিশেষ প্রয়োজনীয়, পরিমিত ও  নিরাপদ খাদ্য গ্রহণ করা প্রয়োজন। বয়স, লিঙ্গ, শারীরিক অবস্থা ও দৈহিক ক্রিয়াকর্ম অনুযায়ী খাদ্য চাহিদা ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত বা কম কিংবা অনিরাপদ খাদ্য গ্রহণ অপুষ্টি জনিত রোগের কারণ হতে পারে। তাই জীবনের সকল পর্যায়ে আমাদের পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য গ্রহণ করা উচিৎ।

কোন মন্তব্য নেই:

Popular Posts