গডফাদার এরশাদ শিকদারের সেই বিলাসবহুল বাড়ি ‘স্বর্ণকমল’ ভেঙে ফেলা হচ্ছে।



বহুল আলোচিত গডফাদার এরশাদ শিকদারের সেই বিলাসবহুল বাড়ি ‘স্বর্ণকমল’ ভেঙে ফেলা হচ্ছে। খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গার মজিদ সরণিতে তৈরি করা হয়েছিল এই বাড়ি। এরশাদ শিকদারের বহু অপকর্মের সাক্ষী ছিলো বাড়িটি। এক সময় এ বাড়িটি দেখতে বহু কৌতুহলী মানুষ ভিড় জমাতো।

২০০৪ সালের ১০ মে খুলনা জেলা কারাগারে এরশাদ শিকদারের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। এরপর জৌলুশ হারাই বিলাসবহুল বাড়িটি। এতদিন বাড়িটি ছিলো রহস্যে ঘেরা। এক সময় এরশাদ শিকদারের নৃশংসতার কথা শুনে অনেকেই আতকে উঠতো। শরীরে ভয় সৃষ্টি হতো। সেই ইতিহাস এখন পুরনো। কিন্তু এখনো এরশাদ শিকদারকে ঘিরে রহস্য যেন শেষ হয় না। এখনো তার নামে বিচিত্র কথা ভেসে বেড়ায় খুলনার বাতাসে।

এরশাদ শিকদার সেই সময় খুলনা মহানগরীর ৪ ও ৫ নম্বর ঘাট এলাকা নিয়ন্ত্রণ করতেন। হয়েছিলেন খুলনা সিটি করপোরেশনের কমিশনার। এরপর স্থানীয়দের কাছে তিনি পরিচিতি পান ‘বড় মিয়া’। ১৯৮০-৮১ সালে তিনি ওই এলাকায় ‘রাঙা চোরা’ নামে পরিচিত ছিলেন। সেই রাঙা চোরাই হয়ে ওঠেন খুলনার ৪ ও ৫ নম্বর ঘাট এলাকায় অপরাধ জগতের গডফাদার।

২০০৪ সালের ১০ মে খুলনা জেলা কারাগারে ফাঁসি কার্যকরের মধ্যে দিয়ে ব্যক্তি জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে এরশাদ শিকদারের। কিন্তু তার নিজের হাতে নির্মিত খুলনা মহানগরীর মজিদ সরণীর সুরম্য দোতলা বাড়ি ‘স্বর্ণকমল’ ঘিরে এতদিন ছিলো নানা রহস্য। প্রায় দু’দশক পরও বাড়িটি দেখতে দূর-দুরান্ত থেকে ছুটে আসতো মানুষ।


স্থানীয়রা বলেন, ‘স্বর্ণকমল’ খুলনার আলোচিত একটি বাড়ি। পুরাতন হলেও মজবুত। বাইরে থেকে বাড়িটি খুব সুন্দর লাগতো। এরশাদ শিকদারের বাড়িকে ঘিরে মানুষের অনেক কৌতুহল। দূর-দূরান্ত থেকে অনেকেই বাড়িটি দেখতে আসতো। হঠাৎ করেই দেখছি বাড়িটি ভাঙা হচ্ছে। শুনেছি বাড়িটি ভেঙে ১০ তলা ভবন করা হবে। বাড়িটি ভেঙে ফেলায় খারাপ লাগছে।


এরশাদ শিকদারের মেঝো ছেলে কামাল শিকদার জানান, কেডিএ’র ১০ কাঠা জমির ওপর তাদের একটি পুরাতন তিন তলা এবং আরেকটি দোতলা বাড়ি ছিলো। তারা কয়েকদিন আগে পুরাতন তিন তলা ভবনটি শ্রমিক দিয়ে ভেঙে ফেলেছেন। এখন দোতলা ভবনটির অর্ধেকের মতো অংশ ভাঙা হচ্ছে। ভেঙে ফেলা ৫ কাঠা জমির ওপর ১০ তলা ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।


১৯৮২ সালে এইচএম এরশাদ ক্ষমতায় আসার পর জাতীয় পার্টিতে যোগদানের মাধ্যমে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন এরশাদ শিকদার।
 ১৯৮৮ সালে ওয়ার্ড কমিশনার নির্বাচিত হন।
 ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার গঠনের পর এরশাদ শিকদার বিএনপিতে যোগ দেন। 
১৯৯৬ সালের ২৬ ডিসেম্বরে দল পরিবর্তন করে যোগ দেন আওয়ামী লীগে। কিন্তু সমালোচনার মুখে কিছুদিন পরই আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত হন। ১৯৯৯ সালে গ্রেফতার হওয়ার সময় এরশাদ শিকদার নগরীর ২১ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার ছিলেন। রাজনীতিতে প্রবেশ করার পর আরও ক্ষমতাসীন হয়ে ওঠেন। ১৯৮৪ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত খুলনার রেলওয়ের সম্পত্তি এবং জোরপূর্বক ব্যক্তিগত সম্পত্তি দখল, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও একাধিক ধর্ষণসহ অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হন।
 জীবিত থাকতে ঘাট এলাকায় তিনি ছিলেন ত্রাস।
 অর্ধশতাধিক হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন তিনি। ২৪টি হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে আদালতে জবানবন্দি দেন তার বডিগার্ড নুরে আলম। ২০০৪ সালের ১০মে মধ্যরাতে খুলনার জেলা কারাগারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।





একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

সিঙ্গাপুরে ওয়ার্ক পারমিটধারীদের জন্য নতুন নিয়ম: চাকরির মেয়াদ সীমা বাতিল, সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৬৩ বছর
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস
সিঙ্গাপুরে ট্রেইনিং রেকর্ড এবং সার্টিফিকেট চেক করার বিস্তারিত গাইড
Bangla date add in your website HTML tips.
some common interview questions and answers for a Safety Coordinator position in Singapore
ধর্ষণবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল তিন বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটাম
Understanding the New Demerit Point System for Construction and Manufacturing Sectors
Safe work procedure for ferrying workers by lorry in singapore
বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য সিঙ্গাপুরে কম খরচে দাঁতের চিকিৎসা
সিঙ্গাপুর কর্মস্থলের নিরাপত্তা আইন শক্তিশালী করছে এবং নতুন আইন প্রবর্তন করছে
Loading posts...