Recent post

রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২২

whatsapp without save number

 Use https://wa.me/<number> where the <number> is a full phone number in international format. Omit any zeroes, brackets, or dashes when adding the phone number in international format. The pre-filled message will automatically appear in the text field of a chat.

শুক্রবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২২

বিশ্বকাপের ফাইনাল আবারও খেলার দাবিতে ২ লাখ সই নিয়ে পিটিশন



 আর্জেন্টাইনরা দাবিটা শুনে বলতে পারেন, মামাবাড়ির আবদার! বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ আবারও খেলতে হবে কেন? তবে ফ্রান্সের অনেকে কিন্তু সত্যি সত্যিই চান, কাতার বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ আবারও খেলা হোক। এ বিষয়ে প্রায় ২ লাখ মানুষের সই নিয়ে পিটিশনও করা হয়েছে।

গত রোববার বিশ্বকাপের ফাইনালে টাইব্রেকারে ফ্রান্সকে ৪–২ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা। নির্ধারিত সময়ে ম্যাচটি ৩–৩ গোলে সমতায় ছিল। এই ম্যাচে রেফারির কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে ফ্রান্স সমর্থকদের মধ্যে অসন্তোষের সৃষ্টি হয়। ম্যাচের ২৩ মিনিটে পোলিশ রেফারি সিমন মার্চিনিয়াকের দেওয়া পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক হয়েছে ম্যাচের পর। 


অনেকেই মনে করেন, ওসমান দেম্বেলে দি মারিয়াকে ফাউল করেননি। এরপর ৩৬ মিনিটে দি মারিয়ার দ্বিতীয় গোলের আগে ফ্রান্সের স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপ্পে ফাউলের শিকার হয়েছিলেন, রেফারি তা দেখেননি—এ নিয়েও যুক্তিতর্ক হয়েছে। তবে ব্যাপারটি এখন আর শুধু যুক্তিতর্কেই সীমাবদ্ধ নেই। 

অনলাইনে পিটিশনের প্ল্যাটফর্ম ‘মেসওপিনিয়নস’–এ বিশ্বকাপ ফাইনাল ম্যাচ পুনরায় খেলার দাবিতে একটি পিটিশন করা হয়েছে। পিটিশনের নাম—‘রেফারিকে কিনে নেওয়া হয়েছিল, পেনাল্টিটি হয় না ‍+ দ্বিতীয় গোলের আগে এমবাপ্পে ফাউলের শিকার হয়। ম্যাচটি পুনরায় খেলার দাবিতে সই করুন।’

‘ইকোনমিক টাইমস’ জানিয়েছে, গতকাল পর্যন্ত এই পিটিশনে সইয়ের সংখ্যা প্রায় ২ লাখ। আজ সংখ্যাটা আরও বাড়াই স্বাভাবিক। সর্বোচ্চ সই পাওয়া শীর্ষ ২০টি পিটিশনের মধ্যে আছে এটি। ৫ লাখ সই টপকে গেলে এই পিটিশন ফরাসি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে সর্বোচ্চ সই পাওয়া তিনটি পিটিশনের একটি হবে। পিটিশনে সই করা বেশির ভাগ নাগরিকই ফ্রান্সের এবং মন্তব্যসংখ্যা ৮৫ হাজারের বেশি। 

একজনের মন্তব্য, ‘রেফারি দুর্নীতি করেছে।’ আরেকজনের মন্তব্য, ‘রেফারির আচরণ সন্দেহজনক ছিল।’


হারের জ্বালা সইতে না পেরে ফ্রান্সের ফুটবলপ্রেমীরা এর আগেও পিটিশন করেছেন। ১৮ মাস আগে ইউরোর শেষ ষোলোয় সুইজারল্যান্ডের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছিল ফ্রান্স। এই হারের পরও পিটিশন করা হয়েছিল। পিটিশনের দাবি ছিল, কিলিয়ান এমবাপ্পে স্পটকিক নেওয়ার সময় সুইস গোলকিপার ইয়ান সোমের গোললাইন ছেড়ে বের হয়ে এসেছিলেন।




মঙ্গলবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২২

মেসি নন, সাবেক আর্জেন্টাইন গোলরক্ষকের চোখে এমবাপ্পেই সেরা

 



হুগো গাত্তিকে মনে আছে? ১৯৬৬ বিশ্বকাপ দলে থাকলেও আর্জেন্টিনার ‘অটোমেটিক চয়েস’ গোলকিপার তিনি ছিলেন না। তবে আর্জেন্টিনার ঘরোয়া ফুটবলে ষাট ও সত্তর দশকে গাত্তি পরিচিত নাম। আর্জেন্টিনার শীর্ষ লিগে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ডটি এখনো তাঁর দখলে। 


‘এল লোকো’ (পাগল) নামে খ্যাতি পাওয়া সাবেক এই গোলকিপার আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের পর লিওনেল মেসিকে নিয়ে এমন এক মন্তব্য করেছেন, যা শুনে স্বয়ং আর্জেন্টাইনদেরই মেজাজ বিগড়ে যেতে পারে।


স্প্যানিশ টিভি চ্যানেলের একটি অনুষ্ঠানে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন রিভার প্লেট, জিমনাশিয়া ও বোকা জুনিয়র্সে খেলা ৭৮ বছর বয়সী সাবেক এই গোলকিপার। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ে তিনি আনন্দিত। তবে লিওনেল মেসিকে নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেননি গাত্তি।


ফ্রান্সের তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পেকে মেসির ওপরেই রাখছেন ১৯৮২ সালে আর্জেন্টিনার বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কারজয়ী গাত্তি। মেসি ডিয়েগো ম্যারাডোনাকে কখনো টপকে যেতে পারবেন না বলেও মনে করেন ১৯৭৭ সালে আর্জেন্টিনার হয়ে শেষ ম্যাচ খেলা এই গোলকিপার।


স্পেনের টিভি অনুষ্ঠান ‘এল চিরিনগুইতো’য় হুগো গাত্তি বলেছেন, ‘এটা সত্য যে মেসি ভালো খেলেছে। তবে আমার কাছে এমবাপ্পেই বিশ্বসেরা। তার ভবিষ্যৎও সবচেয়ে ভালো। তবে লোকে বলতে পারে, আমি আর্জেন্টিনাবিরোধী। কারণ, নিজে যা দেখি এবং বুঝি, সেই সত্যই বলি।’


কাতার বিশ্বকাপে ৭ গোল করার পাশাপাশি ৩ গোল করিয়ে ‘গোল্ডেন বল’ জিতেছেন মেসি। ‘গোল্ডেন বুট’ জিতেছেন ফ্রান্সের তারকা ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপ্পে। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ফাইনালে হ্যাটট্রিক করলেও দলকে জেতাতে পারেননি। অতিরিক্ত সময় পর্যন্ত ম্যাচ ৩-৩ গোলে ড্র থাকার পর টাইব্রেকারে আর্জেন্টিনার কাছে ৪-২ গোলে হারে ফ্রান্স।


গাত্তির কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, মেসি নিজের পারফরম্যান্স দিয়ে ডিয়েগো ম্যারাডোনাকে ছাপিয়ে যেতে পেরেছেন কি না? আর্জেন্টিনাকে ১৯৮৬ বিশ্বকাপ জিতিয়ে অমরত্ব নিশ্চিত করেন ডিয়েগো ম্যারাডোনা। সেই সাফল্যের ৩৬ বছর পর মেসির হাত ধরে আবার বিশ্বকাপ জিতল আর্জেন্টিনা।


গাত্তি উত্তরে বলেছেন, ‘প্রথমত, কেউ পেলেকে ছাপিয়ে যেতে পারবে না। আর আর্জেন্টিনায় কেউ ডিয়েগোকেও পেছনে ফেলতে পারবে না। আমি জানি না, লোকে এসব মানবে কি না। তবে আমি ফুটবলকে এভাবেই দেখি। এটাই আমার দৃষ্টিভঙ্গি। যেমন ধরুন, দি মারিয়া দুর্দান্ত খেলেছে। কিন্তু কেউ তাকে নিয়ে কিছু বলছে না।’

মঙ্গলবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২২

মেসিরা ড্রেসিংরুমে গান ধরেছিলেন, কী হলো ব্রাজিল!







উদ্‌যাপনটি আর্জেন্টিনার ড্রেসিংরুমে একরকম প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোনো শিরোপা জিতলে কিংবা বড় কোনো ম্যাচ জিতলে ড্রেসিংরুমের উদ্‌যাপনে ব্রাজিলকে টেনে আনে আর্জেন্টিনা দল। কাল রাতে বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠার পরও মেসিদের উদ্‌যাপনে ছিল ব্রাজিল দল। গানে গানে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের খুঁচিয়েছে আর্জেন্টিনা দল।


লাতিন আমেরিকার এই দুটি দলের প্রতিদ্বন্দ্বিতার ইতিহাস প্রায় সবারই জানা। এবার বিশ্বকাপে ব্রাজিল কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার কাছে হেরে বিদায় নেয়। তার আগে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার সম্ভাব্য মুখোমুখি হওয়ার রোমাঞ্চ পেয়ে বসেছিল ফুটবল বিশ্বকে। আর্জেন্টিনা কোয়ার্টার ফাইনাল জিতে জায়গামতো পৌঁছে গেলেও ব্রাজিল পারেনি। আর তাই সেমিফাইনালে মুখোমুখি হতে হয় ক্রোয়েশিয়ার।




সেই সেমিফাইনালে কাল রাতে ক্রোয়েশিয়াকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে আর্জেন্টিনা। এরপর ড্রেসিংরুমে মেসি-আলভারেজদের উদ্‌যাপনে ব্রাজিলের প্রসঙ্গ উঠে আশা অস্বাভাবিক নয়। এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা চিরকালীন বলেই পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের খোঁচানোর সুযোগ ছাড়েনি লিওনেল স্কালোনির দল।

স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘মার্কা’ জানিয়েছে, সেমিফাইনাল জেতার কিছুক্ষণ পর আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়েরা ড্রেসিংরুমে এসে উদ্‌যাপন শুরু করেন। আর্জেন্টিনার ডিফেন্ডার নিকোলাস ওতামেন্দি ইনস্টাগ্রামে এই উদ্‌যাপনের ভিডিও শেয়ার করেন। সেখানে ব্রাজিলকে খুঁচিয়ে আর্জেন্টিনার সমর্থকদের বানানো একটি গান গাইতে দেখা যায় মেসিদের। আর্জেন্টাইন ফুটবলে গানটি পরিচিত এবং সাফল্য পাওয়ার পর আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের উদ্‌যাপনে এই গান বেশ কয়েকবার গাওয়া হয়েছে।


গানের কিছু লাইনের বাংলা অর্থ তুলে দেওয়া হলো, ‘ব্রাজিলিয়ানরা, কুঁকড়ে যাওয়া পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন, কী হলো? / মেসি রিওর উদ্দেশে যাত্রা করে কাপটা রেখে দিল/ আমরা আর্জেন্টাইনরা, সব সময়ই প্রেরণাদীপ্ত থাকব/চোখে যে আমাদের বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন/আমরা আর্জেন্টাইন, ম্যারাডোনাকে ও মালভিনাসকে (ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ) ভুলে যাইনি/ আমরা এমনই, তোমাদেরও প্রেরণা দিই, আর্জেন্টিনাকে সব জায়গায় অনুসরণ করি।’

‘মার্কা’ জানিয়েছে, এই গানের দ্বিতীয় অংশ মাঠেই সমর্থকদের সঙ্গে গেয়েছেন আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়েরা। ম্যাচের একদম শেষ মুহূর্তে লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনার সমর্থকেরা গান ধরেছিলেন। টিভিতে দেখা গেছে, তখন সমর্থকদের সঙ্গে গলা মিলিয়েছেন আনহেল দি মারিয়ারাও।


রেফারি দানিয়েল ওরসাতো শেষ বাঁশি বাজানোর পর গানের আওয়াজে গমগম করছিল স্টেডিয়াম। সর্বশেষ কোপা আমেরিকা জয়ের পর নিজেদের উদ্‌যাপনেও ব্রাজিলকে খুঁচিয়ে গান গেয়েছেন মেসিরা।

সর্বকালের সেরা ফুটবলার কে?





সর্বকালের সেরা ফুটবলার কে? এই প্রজন্মের মুখে অবশ্য সেরার প্রশ্নে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও লিওনেল মেসির নামটাই বেশি শোনা যায়। তবে তিনটি বিশ্বকাপ জেতা পেলে, একক কৃতিত্বে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ এনে দেওয়া ডিয়েগো ম্যারাডোনা, কিংবা ফ্রান্সের অতৃপ্তি ঘোচানো জিনেদিন জিদানের নামও এই তালিকায় সামনের দিকেই রাখতে হয়।

তাই এই বিতর্কের আসলে কোনো শেষ নেই। তবে আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনির কাছে সর্বকালের সেরা নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। তাঁর কাছে আর্জেন্টিনার অধিনায়ক লিওনেল মেসিই সর্বকালের সেরা ফুটবলার।


লুসাইল স্টেডিয়ামে কাল রাতে সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়াকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে আর্জেন্টিনা। মেসি নিজে গোল করেছেন, করিয়েছেনও। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে গোল করে বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার সর্বোচ্চ গোলদাতা বনে গেছেন মেসি। বিশ্বকাপে মেসির গোলের সংখ্যা এখন ১১ টি। এ ছাড়া গতকাল আলভারেজকে করানো গোলের মধ্য দিয়ে বিশ্বকাপ ইতিহাসে যৌথভাবে সর্বোচ্চ ‘অ্যাসিস্ট’দাতাও হয়েছেন মেসি। মেসি ও ম্যারাডোনা দুজনেরই অ্যাসিস্ট (গোল বানানো) ৮টি।


এমন মেসিময় এক রাত শেষে স্কালোনি যেন নিজের শিষ্যের প্রশংসা করতে একটুও কার্পণ্য করেননি, ‘ মেসি যে ইতিহাসের সেরা ফুটবলার এটা নিয়ে আমার মনে কোনো সন্দেহ নেই। অনেকেই ভাবতে পারেন আমরা আর্জেন্টাইন বলে হয়তো কথাটা বলি। কিন্তু আসলে তা না। যখনই সে মাঠে নামে কোনো না কোনো সুযোগ তৈরি করবে। তাকে খেলতে দেখা তার সতীর্থ, আর্জেন্টাইন সমর্থক, পুরো বিশ্বের জন্য বড় এক অনুপ্রেরণা। তাকে কোচিং করাতে পেরে আমি সম্মানিত বোধ করছি।’

লিওনেল স্কালোনির হাত ধরেই শিরোপাখরা ঘুচিয়েছিল আর্জেন্টিনা। এবার বিশ্বকাপ জেতার ৩৬ বছরের অপেক্ষা ঘোচানোর দ্বারপ্রান্তে তারা। এমন এক অর্জনের সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি স্কালোনি, ‘ আবেগপ্রবণ না হওয়ার চেষ্টা করছি আমি তবে তা কঠিন। ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। একজন আর্জেন্টাইন হিসেবে এই স্বপ্নটাই দেখেছি। পরাজয়েও আর্জেন্টাইনরা আমাদের পাশে ছিল। এটা আসলে ভুলে যাওয়ার মতো না।’



মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২২

স্বাস্থ্যের জরুরি কেনাকাটায় ১৯৩ কোটি টাকার অনিয়ম



করোনা মহামারির শুরুতে জরুরি সুরক্ষাসামগ্রীসহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন কেনাকাটায় ১৯৩ কোটি টাকার অনিয়ম হয়েছে। মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের (সিএজি) কার্যালয়ের নিরীক্ষা প্রতিবেদনে এই অনিয়ম উঠে এসেছে। এ–সংক্রান্ত নিরীক্ষা আপত্তি নিয়ে গতকাল রোববার সরকারি হিসাবসংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা হয়। কমিটি কেএন-৯৫ মাস্ক সরবরাহের বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মাধ্যমে তদন্ত এবং অযোগ্য ও অনভিজ্ঞ সরবরাহকারীর সঙ্গে চুক্তি করে সুরক্ষাসামগ্রী কেনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করেছে।




সংসদীয় কমিটি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে জরুরি ভিত্তিতে ১ হাজার ১১২ কোটি টাকার (কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস প্রজেক্ট) প্রকল্প গ্রহণ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে তিন বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের প্রথম অর্থবছরের যেসব নিরীক্ষা আপত্তি এসেছে, তার মধ্যে ১২টি নিষ্পত্তি হয়নি।


নিরীক্ষায় একটি আপত্তিতে বলা হয়, ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী (পিপিই), মাস্ক ও হ্যান্ডগ্লাভস সরবরাহের জন্য মেসার্স জাদিদ অটোমোবাইলস জেএআইয়ের সঙ্গে ২০২০ সালের ১৯ মে ৩১ কোটি ৯০ লাখ টাকার চুক্তি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রতিষ্ঠানটি দেড় লাখ কেএন-৯৫ মাস্ক সরবরাহ করার কথা। এর মধ্যে সরকারের কেন্দ্রীয় ঔষধাগার (সিএমএসডি) ২৪ হাজার মাস্ক ভেজা অবস্থায় গ্রহণ করেছে। প্রতিটি মাস্ক ৫২০ টাকা হিসাবে এখানে সরকারের ক্ষতি হয়েছে ১ কোটি ২৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
এই আপত্তির জবাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, সিএমএসডিতে মাস্কগুলো নেওয়ার সময় কোনো মাস্ক ব্যবহার অযোগ্য হিসেবে দেখানো হয়নি। পরবর্তী সময়ে পরীক্ষা করে মাস্কের গুণাগুণ সম্পর্কে সন্তোষজনক ফল পাওয়া গেছে। তবে তাদের এই বক্তব্য গ্রহণ করেনি নিরীক্ষা অধিদপ্তর। প্রতিবেদনে বলা হয়, জবাবের সঙ্গে সংযুক্ত প্রামাণিক চালানের কপিতে ‘সিএমএসডি কর্তৃক রিসিভসংক্রান্ত মন্তব্য অংশ’ ঘষামাজা করে মুছে ফেলা হয়েছে। পরীক্ষা প্রতিবেদনের সংযুক্তিও পাওয়া যায়নি।

আরেকটি আপত্তিতে বলা হয়, চুক্তির চেয়ে দুই হাজার কম মাস্ক সরবরাহ করেছে। প্রতিটি মাস্কের দাম ৫২০ টাকা হিসাবে ক্ষতি হয়েছে ১০ লাখ ৪০ হাজার টাকা। এর জবাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছে, জাদিদ অটোমোবাইলস চুক্তি অনুযায়ী দেড় লাখ মাস্ক সরবরাহ করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে নিরীক্ষা অধিদপ্তর বলেছে, চালানের কপিতে সিএমএসডি কর্তৃক প্রাপ্তিস্বীকারসংক্রান্ত মন্তব্য অংশ ঘষামাজা করে মুছে ফেলা হয়েছে। পুরোনো চালান ঘষামাজা করে মালামাল গ্রহণের প্রমাণক দেওয়া হয়েছে।

এই প্রকল্পের তিনটি প্যাকেজে দুটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ২ লাখ পিপিই ও ৩ লাখ ১০ হাজার মাস্ক এবং ১ হাজার ৫৫০ থার্মোমিটার কেনা হয়। কিন্তু বিতরণের নথিতে দেখা যায়, ১ লাখ ৮৪ হাজার পিপিই, প্রায় ৩ লাখ মাস্ক এবং ৬৫০টি থার্মোমিটার বিতরণের কোনো প্রাপ্তিস্বীকারপত্র নেই। এতে মোট ৩২ কোটি ৮৫ লাখ টাকার গরমিল রয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দাবি, দেশব্যাপী কুরিয়ারের মাধ্যমে এসব পাঠানো হয়। তবে নিরীক্ষা অধিদপ্তর বলেছে, প্রমাণ হিসেবে কুরিয়ার সার্ভিসের যে চালান দেওয়া হয়েছে, তাতে মালামাল গ্রহণ ও বিতরণের বিষয় যথাযথভাবে সন্নিবেশিত ও কর্তৃপক্ষের সই নেই।




পৃথক আপত্তিতে বলা হয়, অযোগ্য ও অনভিজ্ঞ সরবরাহকারীর কাছ থেকে ৫৯ কোটি ৪০ লাখ টাকার সুরক্ষাসামগ্রী কেনা হয়েছে। যারা গাড়ির খুচরা যন্ত্রাংশ এবং কম্বল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া ৪৭ কোটি টাকার সামগ্রী অব্যবহৃত ফেলে রাখা হয়। একই প্রকৃতির চিকিৎসাসামগ্রী একই সময়ে ভিন্ন ভিন্ন দরে কেনায় ক্ষতি হয় ১৭ কোটি টাকা। সরকারি ক্রয়নীতি লঙ্ঘন করে প্রায় ১১ কোটি টাকার কাজ জামানত ছাড়াই চুক্তি করা হয়। ৬ কোটি টাকার বেশি অনিয়মিত ব্যয় হয় মোবাইল অ্যাপ, টিভিক্লিফ, সফটওয়্যার তৈরির কাজে। সরবরাহকারী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মালামাল দিতে ব্যর্থ হওয়ায় চুক্তি মোতাবেক বিলম্ব জরিমানা ছাড়াই বিল পরিশোধ করায় ৪ কোটি টাকার বেশি সরকারের ক্ষতি হয়েছে। প্রকল্প প্রস্তাবে উল্লেখ করা দরের চেয়ে বেশি দামে চিকিৎসাসামগ্রী কেনায় সরকারের পৌনে ৮ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে।
এই বিষয়ে সরকারি হিসাবসংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি রুস্তম আলী ফরাজীর বক্তব্য জানার চেষ্টা করেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে গতকাল বৈঠক শেষে সংসদ সচিবালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ব্যবহার অনুপযোগী ও পরিমাণে কম মাস্ক সরবরাহের বিষয়টি দুদকের মাধ্যমে তদন্ত এবং অযোগ্য সরবরাহকারীর সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে তদন্তে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে কমিটি করার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি।


ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, করোনাকালে স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে গণমাধ্যম এবং বিভিন্ন গবেষণা প্রতিবেদনে যে চিত্র উঠে এসেছিল, সিএজির প্রতিবেদন সেটাই প্রমাণ করছে। নিরীক্ষা আপত্তির অর্থ এই নয় যে অনিয়ম হয়ে গেছে। তবে অধিদপ্তরের ব্যাখ্যা যদি সন্তোষজনক না হয়, তাহলে অবশ্যই এই বিষয়গুলো নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।


প্রথম দিনেই টাকা ধার নিল ৫ ইসলামি ব্যাংক




হঠাৎ তারল্য–সংকটে পড়েছে দেশের ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলো। 
সে জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক এসব ব্যাংককে টাকা ধার দিতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। গত সোমবার পরিপত্র জারির পর গতকাল মঙ্গলবার পাঁচ ব্যাংককে চার হাজার কোটি টাকা ধার দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

ব্যাংক পাঁচটি হলো ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, ইউনিয়ন ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক। 
সবচেয়ে বেশি টাকা পেয়েছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, ব্যাংক পাঁচটি একই গ্রুপভুক্ত।

বাংলাদেশে ১০টি ইসলামি ব্যাংকের মধ্যে সবচেয়ে বড় ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড। সাম্প্রতিক অস্থিরতায় ব্যাংকটির আমানত প্রতিদিন কমছে।
সোমবার ব্যাংকটির আমানত কমে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৯৬৪ কোটি টাকায়। গত ৩১ অক্টোবর ব্যাংকটির আমানত ছিল ১ লাখ ৫৩ হাজার ২৭২ কোটি টাকা।


ইসলামি ধারার সব ব্যাংককে এত দিন টাকা ধার দিয়ে আসছিল ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড। তবে ইসলামী ব্যাংক এখন টাকার জন্য অন্য ব্যাংকের কাছে যাচ্ছে। এর ফলে ইসলামি ধারার অন্য ব্যাংকগুলোও হঠাৎ তারল্য-সংকটে পড়েছে।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক সোমবার ইসলামি ব্যাংকগুলোকে তারল্য–সুবিধা দিতে পরিপত্র জারি করে। সেদিন থেকেই তা কার্যকর হয়। এ সুবিধার আওতায় ইসলামি ব্যাংকগুলো সুকুক (শরিয়াহ্‌ভিত্তিক বিনিয়োগ বন্ড) জমা দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা ধার নিতে শুরু করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, গতকাল ইসলামিক ব্যাংকস লিকুইডিটি ফ্যাসিলিটির মাধ্যমে পাঁচটি ইসলামি ব্যাংককে চার হাজার কোটি টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এ টাকা আজ বুধবার ব্যাংকগুলোর হিসাবে যুক্ত হবে।




জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক প্রথম আলোকে বলেন, সুকুকের বিপরীতে প্রথম দিনে চার হাজার কোটি টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সুকুকের বিপরীতে প্রয়োজনমতো টাকা নিতে পারবে ইসলামি ব্যাংকগুলো।

রবিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২২

ব্যাংকগুলোতে টাকা নেই বলে ইচ্ছাকৃত-ভাবে ‘গুজব’ ছড়ানো হচ্ছে।





বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের এক জনসভায় বলেছেন ব্যাংকগুলোতে টাকা নেই বলে ইচ্ছাকৃত-ভাবে ‘গুজব’ ছড়ানো হচ্ছে। 
এ জন্য তিনি তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপিকে দায়ী করেন। “গুজব ছড়িয়ে ছড়িয়ে তারা মানুষকে বিভ্রান্ত করে। আপনার দয়া করে গুজবে কান দেবেন না। 
ওরা মিথ্যা কথা বলে, এটা ওদের অভ্যাস। গুজবটা সত্য কি না সেটা দেখবেন,” বলেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন ব্যাংকে টাকার কোন সংকট নেই। যারা ব্যাংকে টাকা তুলতে যাচ্ছে তাদের সবাই টাকা তুলতে পারছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ঘরে না রাখার জন্য সতর্ক করে দেন শেখ হাসিনা।
 “টাকা তুলে এনে ঘরে রাখবেন, বালিশের নিচে তোষকের নিচে রাখবেন, না হয় আলমারিতে রাখবেন। তখন সে টাকা তো চোরেও নিয়ে যেতে পারে।”

 চট্টগ্রামের পোলোগ্রাউন্ড মাঠে শেখ হাসিনা প্রায় ৪৫ মিনিট বক্তব্য দেন।
 বক্তব্যে তার সরকারের সাফল্যের পাশাপাশি ছিল বিরোধী বিএনপির সমালোচনা।




শেখ হাসিনা চট্টগ্রামে এই সমাবেশ এমন এক সময়ে করলেন যখন আগামী ১০ই ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ নিয়ে রাজনৈতিক উত্তাপ বেড়েছে। সমাবেশ করার জন্য বিএনপি ১০ই ডিসেম্বর তারিখটি কেন বেছে নিয়েছে সে প্রশ্ন তুলেছেন শেখ হাসিনা। 
শেখ হাসিনা বলেন, “১০ ডিসেম্বর থেকে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী বুদ্ধিজীবী হত্যা শুরু করেছিল। .... অত্যন্ত দু:খের সাথে বলতে হয় সে ১০ই ডিসেম্বর বিএনপির প্রিয় একটা তারিখ।” “বোধ হয় হানাদার বাহিনীর পদ-লেহনকারী দোসর ছিল বলেই ১০ ডিসেম্বর তারা নাকি ঢাকা শহর দখল করবে আর আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করবে” আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সমাবেশ করেছে। বিএনপি বলছে তারা শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন চায় না। 
চট্টগ্রাম সমাবেশে শেখ হাসিনা পাল্টা বলেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিতে চায় না।




দীর্ঘ প্রায় ১১ বছর পরে শেখ হাসিনা চট্টগ্রামে রাজনৈতিক সমাবেশে বক্তব্য দিলেন। 
প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশ সফল করার জন্য গত এক সপ্তাহ যাবত চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপক মাইকিং হয়েছে। এছাড়া পুরো শহর পোস্টার ব্যানারে ছেয়ে গেছে।
 চট্টগ্রাম বিভাগের আওতাধীন জেলাগুলো থেকে আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা এই সমাবেশে যোগ দিয়েছেন। বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা শত শত বাস এবং অন্যান্য বাহনে করে চট্টগ্রাম শহরে আসে। 
এই সমাবেশ যাতে নির্বিঘ্ন হয় সেজন্য রবিবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন রাস্তায় যানবাহন চলাচল সীমিত করে দেয় পুলিশ। এজন্য আগে ঘোষণাও দেয়া হয়েছিল। সমাবেশ যাতে ঠিকমতো সম্পন্ন হয় সেজন্য প্রশাসন এবং পুলিশের সর্বাত্মক সহযোগিতা লক্ষ্য করা গেছে।
 এই পোলোগ্রাউন্ড মাঠে দুইমাস আগে সমাবেশ করেছিল বিএনপি। আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা মনে করছেন বিএনপির তুলনায় তাদের সমাবেশে লোকসমাগম বেশি হয়েছে। 
এসব সমাবেশের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপিকে বুঝিয়ে দিতে চায় যে তারাও রাজপথে সক্রিয় আছে।

দেশের সরকার  যেখানে দেশে অপরাধ মুক্ত করার কথা সেখানে চুরি হবার ভয় দেখানোকে আপনি কিভাবে দেখছেন - কমেন্ট করে আপনার মতামত জানান। 


Popular Posts