Recent post

শনিবার, ৩ জুন, ২০২৩

শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব আছে কিনা



ভিটামিন ডি শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় একটি উপাদান।

মানসিক সুস্থতার জন্যও এটি খুবই জরুরি। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এটি ফ্যাট সলিউবল সিকুস্টারয়েড। 
কাজ হচ্ছে ইনটিসটাইন বা অন্ত্র থেকে ক্যালসিয়াম শোষণ করা। 
পাশাপাশি এটি আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম ও ফসফরাসকেও দ্রবীভূত করে। 
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং শারীরিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে ভিটামিন ডি প্রয়োজন বলে শেষ করা যাবে না। 
শরীর ও মনে ভিটামিন ডির ঘাটতি যে বিরূপ প্রভাব ফেলে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন বিআরবি হাসপাতালের পুষ্টিবিদ ইসরাত জাহান।


ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি হওয়া মানে হাড় ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়া।
এমনটি হওয়া মানেই আর্থাইটিসের মতো রোগ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠা। 
ভিটামিন ডি হাড়কে শক্তোপোক্ত করার পাশাপাশি হার্ট, ব্রেন এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
হাড় ও দাঁতের সুস্থতার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি উপাদান এই ভিটামিন। 
এর অভাবে ওজনও বেড়ে যায়।


প্রশ্ন হল শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি কীভাবে পূরণ করবেন? 
কতগুলো সহজ পদ্ধতি অবলম্বন করার মাধ্যমে এ সমস্যা সহজেই দূর করতে পারেন। 
জেনে নিন কিছু লক্ষণ সম্পর্কে যেগুলোর মাধ্যমে বুঝতে পারবেন আপনার শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব আছে কিনা।

মাংসপেশির দুর্বলতা

ভিটামিন ডি-এর অভাবে মাংসপেশীর দুর্বলতা বেড়ে যায়। 
বিশেষ করে মাংসপেশি বেড়ে যাওয়া এবং মাংসপেশি কাঁপার মতো সমস্যাগুলো হয়ে থাকে। কাজেই মাংসপেশির দুর্বলতা কাটাতে নিয়মিত ভিটামিন ডি খান।

বিষণ্নতা
বিষণ্নতা বাড়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ভিটামিন ডি। এর ফলে সারাক্ষণ মানসিক চাপ অনুভূত হয়। তখন কোনো কারণ ছাড়াই অতিরিক্ত বিষণœতায় ভুগতে পারেন। এর অভাবে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। ফলে মানুষ এমনি এমনি রেগে যায়।

হাড়ে ফাটল : 
ভিটামিন ডি-এর অভাবে হাড়ে সহজেই ফাটল ধরে। এর ফলে একটু পড়ে গেলে কিংবা সামান্য আঘাত পেলেই হাড়ে চির ধরে যায়। অনেক সময় হাড়ে প্রচন্ড ব্যথা করলেও বুঝবেন আপনার শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব রয়েছে।

দাঁত ভেঙে যায় :
 আপনার দাঁতে সমস্যা যেন লেগেই আছে। শক্ত কোনো কিছুই খেতে পারেন না। তাহলে বুঝবেন আপনার শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব রয়েছে। ভিটামিন ডি-এর অভাবে দাঁত ক্ষয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ভেঙেও যায়।

উচ্চ রক্তচাপ : 
ভিটামিন ডি-এর অভাবে উচ্চ রক্তচাপের মাত্রা আরও বেড়ে যেতে পারে। কাজেই সময় থাকতে আগে থেকেই সচেতন হোন এবং ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খান।




ক্লান্তি ও ঘুম আসে
:
 ভিটামিন ডি-এর অভাবে সহজেই অনেক ক্লান্তি নেমে আসে। ফলে ঘুম পায়। কর্মক্ষেত্রে আরও কর্মঠ কর্মী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলে নিজের শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব পূরণ করুন।

মেজাজে প্রভাব ফেলে :
ভিটামিন ডি-এর অভাব যে কোনো মানুষের মেজাজ-মর্জিতে প্রভাব ফেলে। এ সময় মনের মধ্যে চাপা একটা অশান্তি কাজ করে। ফলে সবসময় মেজাজ রুক্ষ থাকে। কেউ ভালো কথা বললেও প্রচন্ড রাগ হয়। তাই কারও সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার আগেই শরীরে ভিটামিন ডি-এর চাহিদা পূরণ করুন।

ওজন বেড়ে যায় : 
ওজন বাড়ার জন্যও দায়ী ভিটামিন ডি। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ভিটামিন ডি- সমৃদ্ধ খাবার অবশ্যই রাখুন।

অষ্টিওপরোসিস, বিষণ্নতা, জরায়ু ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সার এমনকি ডায়বেটিস এবং মেদ বৃদ্ধি প্রতিরোধে ভিটামিন ডি’র ভূমিকা আছে। অনেকেই আছেন যারা নিজেরাও জানেন না তারা ভিটামিন ডি-এর অভাবে ভুগছেন। কাজেই আপনি যদি নিজের মধ্যে উপরোক্ত লক্ষণগুলো বুঝতে পারেন তাহলে এর মাত্রা জানতে সঙ্গে সঙ্গে শরীর চেকআপ করে নিন।

ভিটামিন ডি-এর উৎস : 
সূর্যের আলো ভিটামিন ডি-এর অন্যতম উৎস। সূর্যের কড়া আলোতে না গিয়ে হালকা রোদ গায়ে লাগান। ভিটামিন ডি-এর অভাব পূরণের জন্য হালকা রোদে সামান্য ব্যায়ামও করতে পারেন। সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত রোদ সবচেয়ে ভালো। এই সময় সূর্যের যে আলো আসে, সেটি ভালো।কেবল শীতকাল নয়, সব ঋতুতেই যদি আমরা কিছুক্ষণ রোদে বসি, পাঁচ মিনিট থেকে আধা ঘণ্টা পর্যন্ত সপ্তাহে দুবার, তাহলে উপকৃত হওয়া যায়। এছাড়া নিয়মিত ৫টি খাবার খেলেও ভিটামিন ডি দেহে তৈরি হয়। 

জেনে নিন, সেই ৫টি খাবারের নাম-

* চিজ : ভিটামিন ডি শরীরে তৈরি করতে গেলে চিজ খান। চিজ খেলে শরীরে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বাড়ে।

* মাশরুম : খাওয়ার আগে অবশ্যই মাশরুম ভালো করে ধুয়ে রান্না করবেন। অ্যালার্জির প্রবণতা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

* তেলযুক্ত মাছ বা সামুদ্রিক মাছ : মাছের তেলে ভিটামিন ডি থাকে। তাই যথেষ্ট পরিমাণে সামুদ্রিক মাছ খান।

* দুধ খাওয়া জরুরি : মাশরুমের মতো দুধেও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি রয়েছে। তাই শরীরের ভিটামিন ডি-এর যোগান বৃদ্ধি করার জন্য দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার খাওয়া জরুরি।

* ডিম : শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি মেটাতে চাইলে রোজের ডায়েটে একটা করে ডিম থাকা জরুরি। নিউট্রিশনিস্টদের মতে ডিমের ভেতরে প্রোটিন এবং উপকারী কোলেস্টেরলের পাশাপাশি ভিটামিন ডি-ও রয়েছে। 
তাই শরীরকে কর্মক্ষম রাখতে এবং হাড়ের নানাবিধ রোগ দূর করতে রোজ একটা বা দুটো ডিম খাওয়া উচিত।

হার্ট এট্যাকের লক্ষন দেখাদেয় ১০ বছর আগেই


হার্ট অ্যাটাক হলো আকস্মিক মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ।
 ‘নীরব ঘাতক’ হিসেবে পরিচিত হার্ট অ্যাটাক সতর্কতা ছাড়াই ঘটে। 
তবে সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে, এনজিনা পেক্টোরিস নামক একটি অবস্থা হার্ট অ্যাটাকের এক দশক আগ থেকেই দেখা দিতে পারে।

এনজাইনা পেক্টোরিস কি? 

মায়ো ক্লিনিকের মতে, এনজিনা পেক্টোরিস হলো করোনারি ধমনী রোগের একটি উপসর্গ। প্রায়ই বুকে চাপ ধরা, ভারী হওয়া, বুকে আঁটসাঁট বা ব্যথা হওয়ার লক্ষণ প্রকাশ পায় এক্ষেত্রে।

আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য (এএইচএ) অনুসারে, ৪ ধরনের এনজাইনা পেক্টোরিস আছে। যথা- স্থিতিশীল এনজাইনা, অস্থির এনজিনা, মাইক্রোভাসকুলার এনজাইনা ও ভাসোস্পাস্টিক বা বৈকল্পিক এনজিনা।

গবেষণা কী বলছে?


এএইচএ জার্নালে প্রকাশিত একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, হার্ট অ্যাটাক হওয়ার ১০ বছর আগে এনজিনা পেক্টোরিস হতে পারে। ‘এনআইএইচআর অ্যাপ্লাইড রিসার্চ কোলাবরেশন ওয়েস্ট মিডল্যান্ডস’ ২০০২-২০১৮ সালের মধ্যে জিপি, হাসপাতাল ও মৃত্যুর ডেটা বিশ্লেষণের মাধ্যমে গবেষণাটি করা হয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, অস্বাভাবিক বুকে ব্যথাসহ রোগীদের প্রথম বছরে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি ১৫ শতাংশ বেশি ছিল।
গবেষণায় আরও পাওয়া গেছে, কার্ডিওভাসকুলার রোগের জন্য শীর্ষ ঝুঁকিতে যারা ছিলেন তাদের মধ্যে লিপিড-হ্রাসকারী ওষুধ শুধু ৩০ শতাংশ রোগীকে দেওয়া হয়েছিল।

গবেষকদের মতে, যাদের অব্যক্ত বুকে ব্যথা ও উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ প্রোফাইল তাদের আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত, যাতে ভবিষ্যতে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমানো যায়।
গবেষণা প্রকাশের সময়, প্রফেসর কেলভিন জর্ডান, প্রজেক্ট লিড ও কিল ইউনিভার্সিটির স্কুল অব মেডিসিনের বায়োস্ট্যাটিস্টিকসের অধ্যাপক বলেন, বুকে ব্যথার অনেক সম্ভাব্য কারণ আছে। তবে বেশিরভাগ রোগীই বুকে ব্যথার কারণ নির্ণয় করতে দেরি করে ফেলেন

এনআইএইচআর লিসেস্টার বায়োমেডিকাল রিসার্চ সেন্টারের ডিরেক্টর প্রফেসর মেলানি ডেভিসের মতে, এই গবেষণা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের শনাক্ত করার জন্য একটি সম্ভাব্য নতুন পথ নির্দেশ করে।

এএইচএ’র তথ্য অনুযায়ী হার্ট অ্যাটাকের কিছু সতর্কতা লক্ষণের মধ্যে আছে-

১. বুকে অস্বস্তি
২. শরীরের উপরের অংশে অস্বস্তি
৩. নিঃশ্বাসের দুর্বলতা
৪. বমি বমি ভাব
৫. ঠান্ডা ঘাম
৬. মাথা ঘোরা বা হালকা মাথাব্যথা
৭. দুশ্চিন্তা বা ক্লান্তি
৮. কাশি
৯. শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি।

হার্ট অ্যাটাক নাকি গ্যাস্টিকের সমস্যা পার্থক্য করবেন যেভাবে?

হার্ভার্ড হেলথ পাবলিশিং বলেছে, বুকের হাড় থেকে শুরু হওয়া বুকের ব্যথা গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণ হতে পারে। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন বলছে, বেশিরভাগ হার্ট অ্যাটাকের মধ্যে বুকের মাঝখানে অস্বস্তি থাকে, যা কয়েক মিনিটের বেশি স্থায়ী হয়।

কখনো কখনো এই ব্যথা চলে যায় আবার ফেরতও আসতে পারে। এক্ষেত্রে বুকে ব্যথার সঙ্গে সঙ্গে চাপ ও অস্বস্তি হতে পারে।

হার্ট অ্যাটাক নাকি গ্যাস্টিকের সমস্যার কারণে বুকে অস্বস্তি হওয়ার বিষয়টি আলাদা করা অনেকের জন্যই কঠিন হতে পারে। তাই হার্ট অ্যাটাক সম্পর্কিত অন্যান্য উপসর্গগুলোতে মনোযোগ দিতে হবে। বুক জ্বালাপোড়ার সঙ্গে প্রায়ই বুক জ্বালাপোড়া, মুখে তিক্ত বা অম্লীয় স্বাদ অথবা শুয়ে থাকা বা বাঁকানোর সময় ব্যথা আরও খারাপ হয়।

হার্ট অ্যাটাকের ব্যথার সঙ্গে শ্বাসকষ্টের সমস্যা, চোয়াল, ঘাড়ে, পিঠে, বাহুতে বা কাঁধে ব্যথা বা অস্বস্তিসহ বুকের ব্যথার লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে। যারা হার্ট অ্যাটাকের উচ্চ ঝুঁকিতে আছেন বিশেষজ্ঞরা তাদেরকে পরামর্শ দেন নিয়মিত হার্টের পরীক্ষা ও স্ক্রিনিংয়ের জন্য।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

Popular Posts