বাংলাদেশের ডাউকি ফল্টে আট দশমিক দুই মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।


 বাংলাদেশ ভৌগলিকভাবে এমন এক জায়গায় অবস্থিত যেখানে যে কোন সময় আট বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে বলে বলেন ভূতত্ত্ববিদ ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সৈয়দ হুমায়ুন আখতার।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ অবজারভেটরির সাবেক এই পরিচালক ও তার সহ গবেষকরা প্রায় দুই যুগ ধরে যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে এই অঞ্চলে ভূমিকম্পের সম্ভাবনা নিয়ে গবেষণা করছেন। তাদের গবেষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশের ডাউকি ফল্টে আট দশমিক দুই মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে এই ভূমিকম্প ঠিক কোন সময়ে হবে, তার কোন নিশ্চয়তা নেই।


“সিলেট থেকে কক্সবাজারের পাহাড়ি অঞ্চলের নীচে যে পরিমাণ শক্তি সঞ্চিত হয়েছে, সেখানে যে কোন সময় আট মাত্রার বেশি ভূমিকম্প হতে পারে। এই ভূমিকম্প আজও হতে পারে, আবার একশো বছর পরেও হতে পারে। যত সময় যাবে, সঞ্চিত শক্তি বাড়তে থাকবে।”


তাদের গবেষণা প্রতিবেদন ২০১৬ সালে বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল ‘নেচার’-এ প্রকাশিত হয়। ঐ গবেষণায় উঠে আসে যে বাংলাদেশে বড় ধরণের ভূমিকম্প হলে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।


এই গবেষকের অনুমান, বাংলাদেশে ভূমিকম্প হলে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা বেশি হবে অপরিকল্পিতভাবে তৈরি ভবন, ভূমিকম্প প্রতিরোধী ভবন তৈরিতে উদাসীনতা, ভূমিকম্প নিয়ে সচেতনতা ও প্রস্তুতির অভাবের কারণে।


মি. আখতার বলেন, “সিলেট থেকে কক্সবাজারের পাহাড়ি অঞ্চল পর্যন্ত বাংলাদেশের নিচে যে ফল্টলাইন আছে, সেই এলাকায় আট মাত্রার বেশি ভূমিকম্প হলে ক্ষয়ক্ষতি তুরস্কের চেয়ে ভয়াবহ মাত্রায় হবে।”


তার গবেষণার হিসেব অনুযায়ী, ভূমিকম্পে ঢাকা মেট্রোপলিটানের এক শতাংশ ভবনও যদি ধ্বংস হয় তাহলে ৬,০০০ ভবন বিধ্বস্ত হবে। যার ফলে অন্তত তিন লাখ মানুষ সরাসরি হতাহত হবেন। আর অপরিকল্পিতভাবে তৈরি শহরে ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধার ও সেবার কাজ পরিচালনা বাধাগ্রস্থ হওয়ায় আরো বহু মানুষের জীবনের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।


দু'হাজার নয় সালে সমন্বিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচি (সিডিএমপি) ও জাইকার যৌথ জরিপে বলা হয়, ঢাকায় সাত বা তার বেশি মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হলে, শহরের ৭২,০০০ ভবন ভেঙে পড়বে এবং এক লাখ ৩৫ হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তৈরি হবে সাত কোটি টন কনক্রিটের স্তূপ।


“শুধু ঢাকা মেট্রোপলিটানে হবে অন্তত তিন লাখ মানুষ এছাড়া নারায়ণগঞ্জ, সাভার, গাজীপুরের ঘনবসতিপূর্ন এলাকাগুলোতে আরো লাখ খানেক মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারেন।


“আর পূর্বপ্রস্তুতি না থাকলে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাতে ভূমিকম্পের পরে জরুরি উদ্ধারকাজ চালানো কঠিন হয়ে পড়বে। আগে থেকে যদি পরিকল্পনা না থাকে তাহলে ঐ সময় জরুরি চিকিৎসা, বিদ্যুৎ, পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার মত কাজগুলো সামাল দেয়া সম্ভব হবে না এবং মানবিক বিপর্যয় তৈ হতে পারে,” আশঙ্কা প্রকাশ করেন মি. আখতার।



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

সিঙ্গাপুরে ওয়ার্ক পারমিটধারীদের জন্য নতুন নিয়ম: চাকরির মেয়াদ সীমা বাতিল, সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৬৩ বছর
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস
সিঙ্গাপুরে ট্রেইনিং রেকর্ড এবং সার্টিফিকেট চেক করার বিস্তারিত গাইড
Bangla date add in your website HTML tips.
some common interview questions and answers for a Safety Coordinator position in Singapore
ধর্ষণবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল তিন বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটাম
Understanding the New Demerit Point System for Construction and Manufacturing Sectors
Safe work procedure for ferrying workers by lorry in singapore
বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য সিঙ্গাপুরে কম খরচে দাঁতের চিকিৎসা
সিঙ্গাপুর কর্মস্থলের নিরাপত্তা আইন শক্তিশালী করছে এবং নতুন আইন প্রবর্তন করছে
Loading posts...