নরসিংদীতে বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা বিএনপির সভাপতি খায়রুল কবিরসহ তিন শতাধিক নেতা-কর্মী অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে ছাড়া পেয়েছেন। সাড়ে ছয় ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলার চিনিশপুরে জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয় থেকে বের হয়েছেন তাঁরা। এর পর খায়রুল কবির তাঁর গাড়িতে করে ঢাকার উদ্দেশ্যে নরসিংদী ছাড়েন।
জেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরা বলছেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসার দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল। বেলা তিনটার দিকে চিনিশপুরে জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ের ভেতরে প্যান্ডেল করে কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হয়। পাঁচ শতাধিক দলীয় নেতা-কর্মী এই বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দেন। বিকেল পাঁচটার দিকে জেলা পুলিশের একদল সদস্য সেখানে হাজির হয়ে বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে আটক করে নিয়ে যান। পরে গ্রেপ্তারের ভয়ে দলীয় নেতা-কর্মীরা কার্যালয়ের গেট ভেতর থেকে তালাবদ্ধ করে রাখেন। এর পর থেকেই বাইরে থেকে পুলিশ কার্যালয়টি ঘিরে রাখে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিকেল থেকেই দলীয় কার্যালয়টির প্রধান ফটকের ২০ গজ দূরত্বে অবস্থান নেন পুলিশ সদস্যরা। এ সময় কার্যালয়টির দুই পাশের সড়কে খণ্ড খণ্ড দলে ভাগ হয়ে অবস্থান নেন অন্তত শতাধিক পুলিশ।
এই ঘটনায় অবরুদ্ধ হয়ে থাকা নেতাদের মধ্যে ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা বিএনপির সভাপতি খায়রুল কবির, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন মাস্টার, সহসভাপতি দীন মোহাম্মদ, যুগ্ম সম্পাদক আকবর হোসেন, শহর বিএনপির সভাপতি এ কে এম গোলাম কবির, সাধারণ সম্পাদক ফারুক উদ্দীন ভূঁইয়া, জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক আমিনুল হক, জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মোকাররম ভূঁইয়া, হাজীপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম, ছাত্রদল নেতা সিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ।
অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে ছাড়া পাওয়ার পর বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা বিএনপির সভাপতি খায়রুল কবির বলেন, ‘একটি স্বাধীন দেশে রাজনৈতিক দলের কর্মী হিসেবে সভা-সমাবেশ করা আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। অথচ এই অধিকারটুকুও তারা আমাদের দিতে চান না। শত শত মানুষ আমাদের সভা-সমাবেশে যোগ দেন। এই কারণে তারা আমাদের নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন।’
এ সময় খায়রুল কবির আরও বলেন, ‘জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা খালেদা জিয়া বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করুক, এটাই তারা চায়। বিদেশে না পাঠিয়ে তাঁকে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার দায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে নিতে হবে।’
জানতে চাইলে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের ভেতরে দলটির নেতা-কর্মীদের অবরুদ্ধ করার কোনো ঘটনা ঘটেনি। তাঁরা নিজেরাই কার্যালয়টির প্রধান ফটকে তালা মেরে রেখেছিলেন। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে, শুধু সে জন্য দলীয় কার্যালয়ের বাইরের রাস্তায় পুলিশ সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। তাদের সন্দেহ কেটে গেলে তারা নিজেরাই এক এক করে বেরিয়ে যান।’
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন