গাজায় ইসরায়েলি হামলার ক্রুরতা অব্যাহত: আল-আকসা হাসপাতালের নিকটে আরেকটি হামলার আঘাত

  



গাজায় ইসরায়েলি হামলার ক্রুরতা অব্যাহত: আল-আকসা হাসপাতালের নিকটে আরেকটি হামলার আঘাত

গাজা – এখন পর্যন্ত অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি অঞ্চলে ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংস হামলা থামেনি।

আজ সকালেই গাজার কেন্দ্রীয় এলাকায় অবস্থিত আল-আকসা হাসপাতালের নিকটে ইসরায়েলি বাহিনী হঠাৎ হামলা চালায়। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার সরাসরি লাইভ প্রতিবেদনে জানা যায় যে, বাস্তুচ্যুত নিরুপায় মানুষেরা নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছিলো—তবে সেখানে আবার হামলার খবর এসেছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আহত ও অনিশ্চিত সংখ্যক মানুষের মাঝে মৃত্যুর আশঙ্কা বিশেষ করে উল্লেখযোগ্য, যদিও সম্প্রতি নিহতদের সঠিক সংখ্যা প্রকাশ করা যায়নি।

এলাকা ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ ও বোমাবর্ষণের হুমকি

গত রবিবার রাতে ইসরায়েলি বাহিনী গাজার দেইর এল-বালাহের পাঁচটি অঞ্চলের বাসিন্দাদের এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করে। এর পরপরই, সেন্ট্রাল গাজায় ব্যাপক বোমাবর্ষণ শুরু হয়ে যায়। আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় গাজার এই বোমার আঘাতে একজন সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর পূর্বের দিন, গাজার বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত হামলায় অন্তত ৫০ জন ফিলিস্তিনির প্রাণ হারানোর খবর আসে।

আক্রমণের বিচ্ছিন্ন প্রভাব

গাজার ওপর হামলার মাত্রা এখানেই থেমে থাকে নি। অধিকৃত পশ্চিম তীরে একই ধরনের হামলার ধরণ observed করা যায়—অখণ্ড ফিলিস্তিনি-আমেরিকান তরুণ একজনকে গুলির কামোতে মারা ফেলা হয়। তাছাড়া, দক্ষিণ লেবাননে দুইজন নিহত হওয়ার পাশাপাশি, মার্কিন সেনাবাহিনীর হামলায় ইয়েমেনির রাজধানী সানায় অন্তত চারজনের প্রাণ হারানোর খবর এসেছে, যা অঞ্চলের সামগ্রিক অশান্তি ও দ্বন্দ্বের ধরণকে আরো জটিল করে তুলেছে।

মানবিক মহামারী ও দীর্ঘস্থায়ী ক্ষয়ক্ষতি

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত প্রায় দেড় বছরে গাজার বিভিন্ন হামলায় কমপক্ষে ৫০,৬৯৫ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ১৫ হাজার ৩৩৮ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, সরকারি গণমাধ্যম অনুযায়ী, নিহতদের সংখ্যা প্রায় ৬১,৭০০ পর্যন্ত পৌঁছেছে। তাছাড়া, ধ্বংসস্তুপের নিচে আটকে থাকা হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হওয়ার আশঙ্কাও উচ্চ মাত্রায় রয়েছে, যা মানবিক সংকটকে আরও তীব্র করে তুলেছে।

সাম্প্রতিক ইতিহাস ও চলমান উত্তেজনা

প্রায় ১৫ মাস ব্যাপী সামরিক অভিযানের পর গত ১৯ জানুয়ারি ইসরায়েল সামরিক ক্রিয়াকলাপ সমাপ্তি ঘোষণা করে এবং সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। এরপর প্রায় দুই মাস যাবৎ কোনো ব্যাপক হামলার তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে সামরিক উত্তেজনা ও যুদ্ধবিরতি চুক্তি বৃদ্ধি সংক্রান্ত মতানৈক্যের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৮ মার্চ পুনরায় গাজার ওপর আক্রমণ শুরু হয়। এই সাম্প্রতিক হামলার মর্মে, গাজার স্থিতিবিধান ও মানবিক অবস্থা অত্যন্ত উদ্বেগের সৃষ্টিকারী হয়ে উঠেছে।

পরবর্তী করণীয় ও প্রত্যাশা

প্রসঙ্গত, গাজার অবরুদ্ধ অঞ্চলে চলমান এই সামরিক কার্যক্রমের প্রভাবে, মানবিক সহায়তা ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তৎপরতা একান্ত প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক সংগঠনের প্রতিবেদন ও স্থানীয় প্রশাসনের তথ্য অনুসারে, পরিস্থিতি আরও তীব্র হলে অঞ্চলে সাধারণ জনগণের বেঁচে থাকার অবস্থা তীব্র সংকটের মুখে পড়তে পারে। নিরাপত্তা ও মানবাধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক আহ্বান এবং সমাধানমূলক আলোচনার মাধ্যমেই এই সংকটের সমাধানে এগিয়ে যাওয়াই এখনকার প্রধান লক্ষ্য বলে গণ্য হচ্ছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Loading posts...