কানাডার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন মার্ক কার্নি। ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টির নেতৃত্ব নির্বাচনে বিপুল ব্যবধানে জয়ী হওয়ার পর তিনি তার প্রথম ভাষণেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতির কঠোর সমালোচনা করেছেন।
রোববার অনুষ্ঠিত লিবারেল পার্টির অভ্যন্তরীণ নির্বাচনে সাবেক কেন্দ্রীয় ব্যাংকার মার্ক কার্নি ৮৫.৯% ভোট পেয়ে জয়ী হন। তিনি তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী, সাবেক অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডকে বড় ব্যবধানে পরাজিত করেন।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগেই কার্নি যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কারোপের কড়া প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেন, "আমেরিকানদের কোনো ভুল করা উচিত নয়। হকির মতো বাণিজ্যের খেলাতেও কানাডা জিতবে।"
ট্রাম্প সম্প্রতি কানাডার কিছু পণ্যের ওপর ২৫% শুল্ক আরোপ করেছেন, যা পরবর্তীতে কিছু ক্ষেত্রে শিথিল করা হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় কার্নি মার্কিন আমদানির ওপর পাল্টা শুল্কারোপ বজায় রাখার ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, "ট্রাম্প কানাডার শ্রমিক, পরিবার ও ব্যবসাকে আক্রমণ করছেন। আমরা তাকে সফল হতে দেব না।"
জাস্টিন ট্রুডোর বিদায় ও রাজনৈতিক পরিবর্তন
জাস্টিন ট্রুডোর জনপ্রিয়তা কমে যাওয়ায় এবং দলীয় চাপের মুখে তিনি পদত্যাগ করেন। দীর্ঘ ১২ বছর দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার পর তিনি আবেগঘন বিদায়ী ভাষণ দেন এবং ট্রাম্পের নীতিকে "কানাডার জন্য অস্তিত্বের সংকট" বলে উল্লেখ করেন।
কার্নি এখন সংসদে সংখ্যালঘু সরকার গঠন করবেন। এরপর তার সামনে দুটি বিকল্প থাকবে—একটি দ্রুত সাধারণ নির্বাচন ঘোষণা করা অথবা বিরোধী দলগুলোর আস্থা ভোটের মুখোমুখি হওয়া।
কার্নির মূল নীতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
মধ্যপন্থি অর্থনৈতিক নীতিতে বিশ্বাসী কার্নি বেশ কিছু বড় প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে—
- বড় আকারের জ্বালানি প্রকল্প ও পাইপলাইন নির্মাণ
- আবাসন সংকট মোকাবিলায় বিনিয়োগ
- পরিচ্ছন্ন জ্বালানি প্রকল্প বাস্তবায়ন
- দেশের অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য সহজতর করা
- যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণ
তিনি সরকারি ব্যয় হ্রাস করারও পরিকল্পনা করছেন, যা ট্রুডোর শাসনামলে ৪০% পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছিল।
রাজনৈতিক লড়াই ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ
আগামী সাধারণ নির্বাচনে কার্নির লিবারেল পার্টির প্রধান প্রতিপক্ষ হবে পিয়েরে পয়লিয়েভ্রের নেতৃত্বাধীন কনজারভেটিভ পার্টি। সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, লিবারেল ও কনজারভেটিভ পার্টির জনপ্রিয়তা প্রায় সমান।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প-বিরোধী অবস্থান এবং কানাডার জাতীয়তাবাদী মনোভাব লিবারেল পার্টির সমর্থন বাড়াতে সাহায্য করেছে। তবে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা সামলানো কার্নির জন্য সহজ হবে না।
👉 Thedaily71 Whatsapp Group - যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন
👉 Thedaily71 Facebook Page এখানে ক্লিক করুন
0 মন্তব্যসমূহ