বাংলাদেশ হাই কমিশনে ই-পাসপোর্ট আবেদন: সম্পূর্ণ ধাপে ধাপে নির্দেশিকা
বাংলাদেশের ই-পাসপোর্ট আবেদন প্রক্রিয়া সহজ এবং দ্রুততর করার জন্য অনলাইনে সম্পাদিত হচ্ছে। যদি আপনি সিঙ্গাপুরে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিক হন, তাহলে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করে আপনার ই-পাসপোর্টের আবেদন করতে পারেন।
১. প্রয়োজনীয় নথিপত্র
আবেদনের সাথে নিম্নলিখিত নথিপত্র অবশ্যই সংগ্রহ করে রাখুন:
- ক. অনলাইনে পূরণ করা আবেদনপত্রের সারাংশ (Summary Page)
- খ. ইংরেজি ফরম্যাটে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র (BRC) অথবা জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)
- গ. বর্তমান আসল পাসপোর্ট
- ঘ. সিঙ্গাপুর সরকারের প্রদত্ত ওয়ার্ক পারমিট / ভিসা / অথবা অন্য কোন প্রাসঙ্গিক ডকুমেন্ট
- ঙ. (দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে) ডাক্তারি সনদ
- চ. (নবজাতকের ক্ষেত্রে) ৩আর সাইজের ছবি, পিতামাতার BRC (উল্লেখিত নথিপত্র অনুযায়ী), পাসপোর্ট, বিবাহ সনদপত্র এবং নিকানামা
২. আবেদন প্রক্রিয়া
ক. অনলাইন আবেদন:
- www.epassport.gov.bd এ যান।
- "Apply Online" বাটনে ক্লিক করুন।
- প্রদত্ত নির্দেশনা অনুযায়ী আবেদনপত্র পূরণ করুন এবং শেষ করার পর সারাংশ (Summary Page) প্রিন্ট করে রাখুন।
খ. ফি প্রদান ও বায়োমেট্রিক এনরোলমেন্ট:
বাংলাদেশ হাই কমিশনের পাসপোর্ট কাউন্টারে গিয়ে NETS-এর মাধ্যমে ফি প্রদান করুন।
- ফি সম্পর্কিত বিস্তারিত জানতে www.singapore.mofa.gov.bd এ যান।
- সেখানে “Passport and Travel Permit” বিভাগে গিয়ে “MRP Passport / e-Passport Renewal & New Passport Application Fee” নির্বাচন করুন।
ফি প্রদান ও এনরোলমেন্টের সময়:
- সকালের ৯:০০টা থেকে ১২:৩০টা (সপ্তাহের দিনগুলোতে)।
৩. সাধারণ নির্দেশিকা ও গুরুত্বপূর্ণ টিপস
বায়োমেট্রিক এনরোলমেন্টের জন্য পোশাক:
বায়োমেট্রিক এনরোলমেন্টের সময়, সাদা রঙের উপরের পোশাক পরিহার করুন যাতে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সঠিকভাবে রেকর্ড হয়।আবেদনপত্রের তথ্য:
আবেদনপত্রে প্রদান করা তথ্য অবশ্যই আপনার পাসপোর্টে থাকা তথ্যের সাথে মিল থাকতে হবে। কোনো তথ্য পরিবর্তন আবেদন প্রক্রিয়ায় বিলম্ব বা IPA/ভিসা/অন্যান্য ডকুমেন্টের নবায়নে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।ইংরেজি ফরম্যাটের BRC:
যদি আপনার কাছে ইংরেজি ফরম্যাটের অনলাইন BRC না থাকে, তবে আপনার নিকটস্থ BRC নিবন্ধন অফিস (ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, ইত্যাদি) থেকে সংগ্রহ করুন। সিঙ্গাপুরে অবস্থানের সময় যেন কোনো অসুবিধা না হয়, তা নিশ্চিত করুন।আবেদনপত্র চেক করুন:
এনরোলমেন্ট শেষে প্রদানকৃত কালেকশন স্লিপে আপনার তথ্য সঠিক আছে কিনা তা যাচাই করুন।পাসপোর্ট সংগ্রহ:
পাসপোর্ট সংগ্রহের সময়:- দুপুর ২:০০টা থেকে ৪:৩০টা (সপ্তাহের দিনগুলোতে)
- শুধুমাত্র আবেদনকারী নিজে পাসপোর্ট সংগ্রহ করবেন।
আবেদনের স্ট্যাটাস:
আপনার আবেদনপত্রের অগ্রগতি জানতে www.epassport.gov.bd এ গিয়ে “Check Status” অপশনে ক্লিক করুন এবং নির্দেশনা অনুসরণ করুন।অটো নোটিফিকেশন:
পাসপোর্ট প্রস্তুত হলে, আপনার ই-মেইলে অটোমেটিক নোটিফিকেশন আসবে।তথ্য মিল:
আবেদনপত্র ও পাসপোর্টের তথ্যের মধ্যে কোনো মিল নেইলে প্রক্রিয়া বিলম্ব হতে পারে। তাই আবেদনপত্র সাবধানে পূরণ করুন এবং দ্বিগুণ যাচাই করুন।
এই নির্দেশাবলী অনুসরণ করে আপনি সহজেই বাংলাদেশ হাই কমিশনে সিঙ্গাপুর থেকে ই-পাসপোর্টের আবেদন করতে পারবেন। কোনো অসুবিধা বা প্রশ্ন থাকলে সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটে অথবা বাংলাদেশ হাই কমিশনের সাথে যোগাযোগ করুন।
ই-পাসপোর্ট ফরম পূরণের নির্দেশাবলী:
Last updated: 19 January 2025
২। ই-পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে কোন কাগজপত্র সত্যায়ন করার প্রয়োজন হবে না।
৩। ই-পাসপোর্ট ফরমে কোন ছবি সংযোজন এবং তা সত্যায়নের প্রয়োজন হবে না।
৪। জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) অথবা অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ (BRC English Version) অনুযায়ী আবেদন পত্র পূরণ করতে হবে।
৫। অপ্রাপ্ত বয়স্ক (১৮ বছরের কম) আবেদনকারী যার জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) নাই, তার পিতা অথবা মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) নম্বর অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে।
৬। জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) অথবা অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ (BRC English Version) নিম্নোক্ত বয়স অনুসারে দাখিল করতে হবে-
(ক) ১৮ বছরের নিম্নে হলে অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ (BRC English Version).
(খ) ১৮-২০ বছর হলে জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) অথবা অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ (BRC English Version)
(গ) ২০ বছরের উর্ধে হলে জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) আবশ্যক । তবে বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশন হতে আবেদনের ক্ষেত্রে অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ (BRC English Version) গ্রহণযোগ্য হবে।
৭। তারকা চিহ্নিত ক্রমিক নম্বরগুলো অবশ্যই পূরণীয়।
৮। দত্তক/অভিভাবকত্ব গ্রহণের ক্ষেত্রে পাসপোর্টের আবেদনের সাথে সুরক্ষা সেবা বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হতে জারিকৃত আদেশ দাখিল করতে হবে।
৯। আবেদন বর্তমান ঠিকানা সংশ্লিষ্ঠ বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস/আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস/বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনে দাখিল করতে হবে।
১০। ১৮ বছরের নিম্নের সকল আবেদনে ই-পাসপোর্টের মেয়াদ হবে ০৫ বছর এবং ৪৮ পৃষ্ঠার।
১১। প্রাসঙ্গিক টেকনিক্যাল সনদসমূহ (যেমন: ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ড্রাইভার ইত্যাদি) আপলোড/সংযোজন করতে হবে।
১২। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক জিও (GO)/এনওসি (NOC)/ প্রত্যয়নপত্র/ অবসরোত্তর ছুটির আদেশ (PRL Order)/ পেনশন বই আপলোড/সংযোজন করতে হবে যা ইস্যুকারী কর্তৃপক্ষের নিজ নিজ Website এ আপলোড থাকতে হবে।
১৩। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বিবাহ সনদ/নিকাহনামা এবং বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে তালাকনামা দাখিল করতে হবে।
১৪। দেশের অভ্যন্তরে আবেদনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ফি এর উপর নির্ধারিত হারে ভ্যাট (VAT) সহ অন্যান্য চার্জ (যদি থাকে) অতিরিক্ত হিসাবে প্রদেয় হবে। বিদেশে আবেদনের ক্ষেত্রেও সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফি প্রদেয় হবে।
১৫। কূটনৈতিক পাসপোর্টের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার ও ওয়েলফেয়ার উইং (Consular and Welfare Wing) অথবা ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় বরাবর আবেদনপত্র দাখিল করতে হবে।
১৬। বৈদেশিক মিশন হতে নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা হলে স্থায়ী ঠিকানার কলামে বাংলাদেশের যোগাযোগের ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে।
১৭। অতি জরুরী পাসপোর্টের আবেদনের ক্ষেত্রে (নতুন ইস্যু) নিজ উদ্যোগে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ সংগ্রহ পূর্বক আবশ্যিকভাবে আবেদনের সাথে দাখিল করতে হবে।
১৮। (ক) দেশের অভ্যন্তরে অতি জরুরী পাসপোর্ট প্রাপ্তির লক্ষ্যে আবেদনের সাথে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দাখিল করা হলে অন্যান্য সকল তথ্য সঠিক থাকা সাপেক্ষে ২ কর্মদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট প্রদান করা হবে।
(খ) দেশের অভ্যন্তরে জরুরী পাসপোর্ট প্রাপ্তির লক্ষ্যে আবেদনের সাথে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দাখিল করা হলে অন্যান্য সকল তথ্য সঠিক থাকা সাপেক্ষে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট প্রদান করা হবে।
(গ) দেশের অভ্যন্তরে রেগুলার পাসপোর্ট প্রাপ্তির লক্ষ্যে আবেদনের সাথে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দাখিল করা হলে অন্যান্য সকল তথ্য সঠিক থাকা সাপেক্ষে ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট প্রদান করা হবে।
১৯। আবেদনের সময় মূল জাতীয় পরিচয়পত্র (NID), অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ (BRC English Version) এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল সনদ, সরকারি আদেশ (GO)/অনাপত্তি (NOC) প্রদর্শন/দাখিল করতে হবে।
২০। পাসপোর্ট রি-ইস্যুর ক্ষেত্রে মূল পাসপোর্ট প্রদর্শন করতে হবে।
২১। হারানো পাসপোর্টের ক্ষেত্রে মূল জিডির কপি প্রদর্শন/দাখিল করতে হবে। পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে অথবা চুরি হলে দ্রুত নিকটস্থ থানায় জিডি করতে হবে। পুনরায় পাসপোর্টের জন্য আবেদনের সময় পুরাতন পাসপোর্টের ফটোকপি এবং জিডি কপিসহ আবেদনপত্র দাখিল করতে হবে ।
২২। ০৬ বছর বয়সের নিম্নের আবেদনের ক্ষেত্রে ৩ আর (3R Size) সাইজের ( ল্যাব প্রিন্ট গ্রে ব্যাকগ্রউন্ড ) ছবি দাখিল করতে হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন