ধলপুরের ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্মচারী স্টাফ কোয়াটারে পুলিশ মাদকবিরোধী অভিযান চালায়। অভিযান শেষে আটককৃতদের এনে র্যাব ১০-এর কার্যালয়ের সামনে জড়ো করা হয়। ধলপুর, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা, ২৮ মে। ছবি: আবদুস সালাম
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান চালাচ্ছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। আজ সোমবার সকাল ১০টা থেকে যাত্রাবাড়ীর ধলপুর এলাকায় এই অভিযান শুরু হয়। এরই মধ্যে অর্ধশত লোককে আটক করা হয়েছে।
ডিএমপির ডেমরা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) ইফতেখারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, অভিযানে ইয়াবাসহ বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযান শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।
গত শনিবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে প্রায় এক হাজার র্যাব সদস্য দুই ঘণ্টাব্যাপী মাদকবিরোধী অভিযান চালান। যদিও সেই অভিযানে ক্যাম্পের মূল মাদক ব্যবসায়ীদের কেউ ধরা পড়েনি। আটক করা হয় ১৫৩ জনকে। আর সেই রাতেই রীতিমতো আয়োজন করে রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ। অভিযানে অংশ নেন সহস্রাধিক পুলিশ সদস্য।
গতকালও কারওয়ান বাজার রেলবস্তিতে অভিযান চালায় পুলিশ। ভাসমান মাদকের হাট হিসেবে পরিচিত কারওয়ান বাজার থেকে পুলিশ ৪ হাজার ৪০০টি ইয়াবা, ৮ কেজি গাঁজা ও ৪৪০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করে। আটক করা হয় ৫৩ জনকে। আর ঢাকা সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের আবাসিক এলাকা গণকটুলী সিটিপল্লিতে বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত মাদকবিরোধী অভিযান চালায় পুলিশের রমনা বিভাগ। অভিযানে ডগ স্কোয়াড ব্যবহার করা হয়। দুই ঘণ্টার অভিযানে পুলিশ মোট ১০৫ জন নারী-পুরুষকে ধরে পাশের লেদার টেকনোলজি ইনস্টিটিউটের মাঠে জড়ো করে। অভিযানের সময় পুলিশ সিটিপল্লির বিভিন্ন জায়গায় ‘মাদকবিরোধী অভিযান চলছে’ লেখা সাইনবোর্ড লাগায়। পরে অবশ্য আটক ৫৫ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আর ৩৬৩টি ইয়াবা বড়ি, ২৯ বোতল ফেনসিডিল ও দেড় হাজার লিটার চোলাই মদ জব্দ ও কারখানা সিলগালা করা হয়।
রাজধানীসহ সারা দেশে মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এই অভিযানে এরই মধ্যে ১৪ দিনে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০১। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দাবি নিহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই মাদক ব্যবসায়ী।
গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল নিজ মন্ত্রণালয়ে মাদকবিরোধী অভিযান প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, যতক্ষণ না মাদকের ভয়াবহতা নিয়ন্ত্রণে আসবে, তত দিন পর্যন্ত এ অভিযান চলবে। এটি নিয়মিত অভিযান। মাদক নিয়ন্ত্রণ না হওয়া পর্যন্ত এই ‘যুদ্ধ’ অব্যাহত থাকবে।
চলমান ‘বন্দুকযুদ্ধ’ মাদকের আগ্রাসন বন্ধ করবে কি না, জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যে পদ্ধতি ভালো হয়, সেটাই করে যাব। আমরা কাউকে ছাড় দেব না। আমাদের এক সাংসদ (আমানুর রহমান খান) জেলে আছেন। প্রধানমন্ত্রী মাদকের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। তাই মাদকবিরোধী অভিযান চলবে।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, আমরা অল আউট যুদ্ধে নেমেছি। এ যুদ্ধে আমাদের জয়ী হতেই হবে।’ কত দিন এই অভিযান চলবে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নির্দিষ্ট সময়সীমা এটার মধ্যে নেই। আমরা সব ধরনের প্রচেষ্টা নেব। কোনো চেষ্টাই চূড়ান্ত নয়।’
দেশে চলমান মাদকবিরোধী অভিযানকে ‘বিশেষ অভিযান’ বলতে নারাজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তিনি বলেন, যতক্ষণ না মাদকের ভয়াবহতা নিয়ন্ত্রণে আসবে, তত দিন পর্যন্ত এ অভিযান চলবে। এটি নিয়মিত অভিযান। মাদক নিয়ন্ত্রণ না হওয়া পর্যন্ত এই ‘যুদ্ধ’ অব্যাহত থাকবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন