এক সপ্তাহ ধরে সেই গ্যাসে চা ও অন্যান্য খাবার বানিয়ে খাচ্ছেন নৌকার মাঝিসহ আশপাশের কৌতূহলী মানুষ।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, যে গ্যাসটি বের হচ্ছে তা বায়োজেনিক গ্যাস।
দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
এদিকে গ্যাস উদ্গিরণের পর থেকে রান্নার সুবিধার্থে মাঝিরা পাশাপাশি পাঁচটি লোহার পাইপও পুঁতেছেন।
এদিকে গ্যাস উদ্গিরণের পর থেকে রান্নার সুবিধার্থে মাঝিরা পাশাপাশি পাঁচটি লোহার পাইপও পুঁতেছেন।
এর মধ্যে ইট দিয়ে একটি পাইপের চারপাশ ঘিরে চলছে রান্নার কাজ।
বাকি চারটি পাইপের মুখ বন্ধ রাখা হচ্ছে।
প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে পাইপগুলো চিহ্নিত করেও রাখা হয়েছে।
বিষয়টি দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন আশপাশের উৎসুক মানুষ।
শুক্রবার সকালে সরজমিনে গিয়ে গ্যাস উদ্গিরণের দৃশ্য দেখা যায়।
একটি পাইপের ওপর হাঁড়ি বসিয়ে সেখানে চা বানাচ্ছিলেন ওই এলাকার মাঝি রাজু আহমেদ।
তিনি জানালেন, গত সপ্তাহ ধরেই তারা এখানে চা বানাচ্ছেন।
নদী থেকে প্রথম গ্যাস উঠতে দেখেছিলেন নগরীর ভাটাপাড়া এলাকার বাসিন্দা হারুন-অর-রশিদ। পেশায় তিনি মাঝি।
পাশাপাশি পাইপলাইনের কাজও করেন।
হারুন জানান, যে স্থান দিয়ে গ্যাস উঠছে সেখানে আগে সামান্য পানি ছিল।
তিনি জানান, পানিতে প্রথমে তিনি কয়েকটি স্থান থেকে বুঁদবুঁদ উঠতে দেখেন। তখন তার নাকে গ্যাসেরও গন্ধ আসে।
পরে দিয়াশলাইয়ের কাঠি দিয়ে আগুন জ্বালালে দেখেন- সামান্য পানির ওপরেই জ্বলছে আগুন।
হারুন জানান, গ্যাস ওঠার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে তিনি বাড়ি থেকে তিন-চার ফুট লম্বা পাঁচটি লোহার পাইপ নিয়ে যান।
সেগুলো বুঁদবুঁদ ওঠা স্থানগুলোতে পুঁতে দেন।
এরপর ইট ঘিরে বানিয়ে ফেলেন চুলা।
চুলাগুলোর একটিতে এখন বেশ কয়েকজন মাঝি রান্না করছেন।
রায়হান আলী নামে আরেক মাঝি জানান, গ্যাস সবসময়ই উঠছে।
তবে কখনও বেশি, কখনও কম।
তিনি আরও জানান, অন্য চারটি পাইপের মুখ বন্ধ রেখে শুধু একটিতে আগুন জ্বালিয়ে রান্না করলে সময় কম লাগছে।
মাঝিরা জানান, সকালে খুব শীত পড়লে তারা গ্যাসে আগুন জ্বালিয়ে শরীরও গরম করছেন। আশপাশের লোকজন তা দেখতে আসছেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ব ও খনিজবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার বলছেন, নদীপাড়ের এই গ্যাসের অর্থনৈতিক কোন ভিত্তি নেই।
এর মজুদ খুব কম।
কয়েকদিনের মধ্যেই তা শেষ হয়ে যাবে।
তবে এক সঙ্গে অতিরিক্ত গ্যাস বের হলে ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা।
প্রফেসর গোলাম সাত্তার জানান, এ ধরনের গ্যাসকে বলা হয় ‘বোগ’ গ্যাস।
দীর্ঘদিন ধরে জলাশয়ের তলদেশে জমে থাকা শামুক, গাছের পাতা ও কাঠের গুঁড়ি পচে এই গ্যাস তৈরি হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন