ব্যবসায় পরিকল্পনার অন্যতম প্রথম পদেক্ষেপ হচ্ছে আপনার অভিষ্ট বাজার নির্ধারণ এবং কেন ক্রেতা আপনার পণ্য ক্রয় করবে তা নির্ধারন করা।
উদাহরনস্বরুপ, যে বাজারে আপনি আপনার পণ্য বা সেবা বিক্রি করবেন তা আপনার জন্য সর্বোত্তম কিনা? আপনার ব্যবসার সুযোগ-সুবিধাসমূহ এবং রীতিনীতিসমূহ স্বচ্ছ কিনা এবং সেগুলো কি ক্রেতা বা ভোক্তাদের চাহিদার সাথে সামঞ্জস্যর্পূন? যদি আপনি এই প্রশ্নগুলোর একটির ব্যাপারেও সন্দিহান থাকেন তবে একধাপ পিছিয়ে গিয়ে আপনার ব্যবসায় পরিকল্পনার কাঠামো পুর্নবিবেচনা করুন।
নিম্নোক্ত পরামর্শগুলো আপনার ব্যবসায়কে যেসব অফারসমূহ প্রদান করতে হবে তা বিশ্লেষন এবং এর জন্য সঠিক ও কাংঙ্খিত বাজার নির্ধারণ এবং নিজস্ব যথাযোগ্য মর্যাদা তৈরিতে সাহায্য করতে পারে।
নির্দিষ্ট করুন যা আপনাকে প্রদান করতে হবে
নিজেকে প্রশ্ন করুনঃ মূল পণ্য বা সেবার বাইরে আপনি সত্যিকার অর্থে কি বিক্রি করছেন? এই উদাহরনটি বিবেচনা করুনঃ আপনার শহরে বহু সংখ্যক রেস্তোরা রয়েছে যারা সবাই মৌলিক পণ্য- খাবার বিক্রি করছে। কিন্তু এরা প্রত্যেকেই ভিন্ন চাহিদা তৈরি এবং ভিন্ন শ্রেনীর ক্রেতা সৃষ্টির মাধ্যমে তাদের ব্যবসায়িক লক্ষ্য অর্জন করছে।
একটি হতে পারে ফাস্টফুড রেস্তোরা, সম্ভবতো অন্যটি সাদামাটা ইটালিয়ান কিচেনে পিৎজা বিক্রি করা রেস্তোরা এবং অন্য আর একটি হতে পারে সামুদ্রিক খাবারের বিশেষায়িত রেস্তোরা যা উড-গ্রিলড মেন্যুর জন্য বিখ্যাত।
এই সকল রেস্তোরাগুলোই খাবার বিক্রি করে, কিন্তু তারা ভিন্ন ভিন্ন চাহিদা সম্পন্ন ক্রেতাদের কাছে তাদের ভিন্ন ভিন্ন খাবার (ক্রেতাদের নিজস্ব চাহিদানুযায়ী) বিক্রি করছে। প্রকৃতপক্ষে তারা যা বিক্রি করছে তা হলো পণ্য, মূল্য, পরিবেশ এবং ব্র্যান্ড অভিজ্ঞতার সংমিশ্রণ।
যখন একটি ব্যবসায় শুরু করছেন, নিশ্চিত হয়ে নিন যে কি আপনার ব্যবসায়কে অদ্বিতীয় কর তুলবে? আপনার পণ্য বা সেবাকে পরিপূর্নতা দিতে কি প্রয়োজন? কি কি প্রক্রিয়া এবং পার্থক্য সৃষ্টিকারী উপাদান আপনার ব্যবসায়কে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে আলাদাভাবে পরিচয় করিয়ে দিতে সাহায্য করবে?
সকল ব্যবসায়ের সবজান্তা হবেন না- কৌশল শিখুন
আপনি কি বিক্রি করছেন তা স্বচ্ছভাবে নির্ধারন করা খুব গুরুত্বপূর্ন। আপনি সকল ব্যবসায়ের সবজান্তা হতে চাইবেন না কারন এতে ব্যবসায় উন্নয়নের উপর একটি খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। একটি ক্ষুদ্রতম ব্যবসায় হিসেবে আপনার পণ্য বা সেবাকে নিয়ন্ত্রনসাধ্য বাজারে যথাযথভাবে বিনস্ত্য করা প্রায়শই একটি সর্বোত্তম কৌশল বা নীতি হতে পারে। ছোট ছোট বিভাজন/অপারেশন পরবর্তীতে বিশেষায়িত পন্য বা সেবা অফার করতে পারে যা নির্দিষ্ট শ্রেনীর সম্ভাব্য ক্রেতাদের নিকট আকর্ষণীয় হবে।
আপনার ব্যবসার জন্য উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করুন
আপনার ব্যবসার জন্য যথাযোগ্য স্থান নির্বাচন করা ব্যবসায়ের সফলতার জন্য অত্যাবশকীয়। প্রায়শই ব্যবসার মালিকরা তাদের নিজস্ব ব্যবসায়িক জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে স্হান নির্বাচন করতে পারেন। কিন্তু গুরুত্বপূর্ন ক্রেতাদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে বাজার পর্যালোচনা করে স্থান নির্বাচন করা হলে তা আরো বেশি ফলপ্রসু হতে পারে। আর এতে গুরুত্বপূর্ন ক্রেতাদের অজানা প্রয়োজনগুলো উন্মোচিত হয়। আপনার গবেষনা প্রক্রিয়াতে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো চিহ্নিত করুনঃ
- কোন কোন এলাকায় আপনার প্রতিযোগীরা ইতিমধ্যে সুপ্রতিষ্ঠিতকোন এলাকাসমূহ আপনার প্রতিযোগীদের দ্বারা অবহেলিত
- আপনার ব্যবসার জন্য সম্ভাব্য সুযোগ সুবিধাসমূহ
কোম্পানীর বর্ণনা
ব্যবসায় পরিকল্পনার এই অধ্যায়টি আপনার ব্যবসায়ের সকল উপাদানগুলোর উপর একটি উচ্চ পর্যায়ের পুনর্বিবেচনার সুযোগ প্রদান করবে। ইহা একটি বর্ধিত এলিভেটর পিচ এর সমগোত্রীয় যা পাঠকদের এবং সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদেরকে দ্রুত তাদের ব্যবসায়িক লক্ষ্য এবং এর অনন্য বিবৃতি বুঝতে সাহায্য করতে পারে।
আপনার কোম্পানীর বর্ণনায় যা অন্তভুক্ত করতে হবে
- আপনার ব্যবসায়ের প্রকৃতি বর্ণনা করুন এবং বাজারের যেসকল চাহিদাসমূহ মেটানোর চেষ্টা করছেন তার একটি তালিকা তৈরি করুন।
- ব্যাখা করুন কিভাবে আপনার পণ্য বা সেবা এসব চাহিদাসমূহ মেটাবে।
- আপনার কোম্পানী যেসকল নির্দিষ্ট ভোক্তা, প্রতিষ্ঠান এবং ব্যবসায়কে সেবা প্রদান করছে এবং করবে তাদের একটি তালিকা তৈরি করুন।
- প্রতিযোগিতামূলক সুবিধাসমূহ বর্ণনা করুন যা আপনার প্রতিষ্ঠানকে সাফল্যমন্ডিত করবে বলে আপনি বিশ্বাস করেন। যেমন- আপনার অবস্থান, অভিজ্ঞ কর্মিবৃন্দ, দক্ষ কার্যবিধি অথবা সামর্থ্য যা আপনার ক্রেতাদের কাছে আপনার মূল্যায়ন এনে দেবে।
বাজার বিশ্লেষন
আপনার ব্যবসায়ের পরিকল্পনায় বাজার বিশ্লেষন অধ্যায়টি আপনার যেকোনো গবেষনালব্ধ বিষয় এবং সিদ্ধান্তের পাশাপাশি আপনার শিল্প এবং বাজার সংক্রান্ত জ্ঞান বৃদ্ধি করবে।
আপনার বাজার বিশ্লেষনে কি বিষয়সমূহ সংযুক্ত করতে হবে
- শিল্পেরবর্ণনা এবং আউটলুক- বতর্মান আয়তন এবং ঐতিহাসিক বৃদ্ধির হার এর পাশাপাশি গতিধারা এবং বৈশিষ্ট্যসহ আপনার শিল্পকে বর্ণনা করুন। যেমন- জীবনচক্রের স্তর, পরিকল্পিত উৎপাদনহার ইত্যাদি। পরবর্তীতে, আপনার শিল্পের গুরুত্বর্পূন ক্রেতাদের তালিকা তৈরি করুন।
- আপনার ব্যবসায়ের অভিষ্ট বাজার সর্ম্পকে তথ্য- আপনার ব্যবসায়ের অভিষ্ট বাজারকে একটি নিয়ন্ত্রনসাধ্য আকারে সংকুচিত করুন। অনেক ব্যবসায়-ই অসংখ্য অভিষ্ট বাজারে আবেদন তৈরি করতে গিযে ভুল করে। গবেষনা করুন এবং বাজার সম্পর্কে নিম্নোক্ত তথ্যসমূহ সংযুক্ত করুন।
- পার্থক্যসৃষ্টিকারী বৈশিষ্ট্যসমূহ- আপনার সম্ভাব্য ক্রেতাদের জরুরী চাহিদসমূহ কি? সেগুলো কি পূরণ করা যাচ্ছে? ঐ শ্রেনীর সংখ্যাতত্ত্বগুলো কি এবং তারা কোথায় বাস করে? আপনার ব্যবসায়কে প্রভাবিত করতে পারে এমন কোনো ঋতুভিত্তিক অথবা চক্রাকার ক্রয়ের প্রবনতা সেখানে রয়েছে কিনা?
- প্রাথমিক অভিষ্ট বাজারের আয়তন- আপনার বাজারের আয়তনের ব্যাপারে একটু বিস্তারিত বলতে গেলে যা বুঝায়, আপনার শিল্প থেকে বাজার বার্ষিক কি পরিমাণ পন্য বা সেবা ক্রয় করে থাকে তার কি তথ্য আপনি অর্ন্তভুক্ত করতে পেরেছেন? এই শ্রেনীর জন্য ভবিষৎ বাজার প্রবৃদ্ধি কি হবে?
- বাজারের কতটুকু অংশ আপনি অর্জন করতে পারবেন?- নির্দিষ্ট ভৌগলিক এলাকার মধ্যে বাজারের শতকরা কতটুকু অংশ এবং ক্রেতার সংখ্যা আপনি অর্জন করতে পারবেন বলে আশা রাখেন? আপনার গণনার পক্ষে যুক্তি প্রর্দশন করুন।
- মূল্য নির্ধারণ এবং মোট প্রান্তিক লক্ষসমূহ- মূল্য নির্ধারনী কাঠামো, মোট প্রান্তিক স্তর এবং মূল্য হ্রাসের পরিকল্পনা যা আপনি ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা নির্দিষ্ট করুন।
- যখন আপনাকে কোনো বাজার এর উপর পরীক্ষা বা গবেষনা সম্পন্ন করতে হবে এবং তথ্য সংযুক্ত করতে হবে তখন আপনি কেবল মাত্র এর ফলাফলের উপর গুরুত্ব দিবেন। এক্ষেত্রে অন্য সব বিস্তারিত বর্নণাগুলো পরিশিষ্ট অংশে সংযুক্ত করা উচিৎ।
- প্রতিযোগিতামূলক বিশ্লেষণ- আপনার প্রতিযোগিতামূলক বিশ্লেষন আপনার প্রতিযোগিতাকে প্রোডাক্ট লাইন অথবা সেবা এবং বাজার বিভাজনের মাধ্যমে চিহ্নিত করা উচিৎ।
- বাজার বিভাজন
- সবলতা এবং দূর্বলতা
- আপনার প্রতিযোগীর তুলনায় আপনার অভিষ্ট বাজার কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ?
- বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোনো বাধা আছে কি যা আপনাকে বাধাগ্রস্থ করতে পারে?
- বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে আপনার “উইন্ডো অব অপরচ্যুনিটি” কি?
- সেখানে কি কোনো পরোক্ষ বা দ্বিতীয় কোনো প্রতিযোগী রয়েছে যা আপনার সাফল্যকে প্রভাবিত করতে পারে?
- বাজারে কি ধরনের বাধা রয়েছে (যেমন- পরিবর্তনশীল প্রযুক্তি, উচ্চ বিনিয়োগ ব্যয়, মানসম্মত কর্মীর অভাব)?
আইনগত সীমাবদ্ধতাসমূহ-
কোনো ক্রেতার বা সরকারী আইনগত শর্ত যা আপনার ব্যবসায়কে প্রভাবিত করছে এবং কিভাবে আপনি তাতে সম্মত হবেন তা অর্ন্তভুক্ত করুন। এছাড়াও আপনার ব্যবসায়ের উপর যেকোনো ব্যবহারযোগ্য এবং সম্মত্তি প্রক্রিয়ায় মূল্য প্রভাব উল্লেখ করুন।
সংগঠন এবং ব্যবস্থাপনা
সংগঠন এবং ব্যবস্থাপনার এই অংশে অন্তর্ভুক্ত করতে হবেঃ
আপনার কোম্পানীর সাংগঠনিক কাঠামো, কোম্পানীর মালিকানার বিস্তারিত বিবরন, ব্যবস্থাপনা দলের সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত এবং পরিচালকমন্ডলীদের যোগ্যতার বিবরন।
এছাড়াও আপনার ব্যবসায়ে কে কি করবে? তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড কি এবং কেন আপনি তাদেরকে আপনার ব্যবসায়ে বোর্ডসদস্য হিসেবে অথবা চাকুরিজীবি হিসেবে নিয়ে এসেছেন? তাদের দায়িত্বসমূহ কি? দু-একজনের কাছে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়া অপ্রয়োজনীয় মনে হতে পারে কিন্তু যে ব্যক্তি আপনার ব্যবসায় পরিকল্পনা পড়ছে সে জানতেই চাইতে পারে কে দায়িত্বরত আছে?
সুতরাং তাদেরকে বলুন। প্রত্যেক বিভাগের বর্ননা এবং তাদের কার্যাবলীর বিস্তারিত বর্ননা দিন।
এই বিভাগে আপনার পরিচালনা পর্ষদে কারা আছেন (যদি আপনার কোনো উপদেষ্টা পর্ষদ থাকে) এবং তাদেরকে আপনি এখানে রাখার ব্যাপারে কেন আগ্রহী তা অন্তর্ভুক্ত করা উচিৎ। কি ধরনের বেতন কাঠামো এবং অন্যান্য সুবিধাদি আপনার কমকর্তা এবং কর্মচারীদের জন্য রেখেছেন? কি ধরনের উৎসাহমূলক ব্যবস্থা রেখেছেন? পদোন্নতিরপদ্ধতি কি হবে? আপনার পাঠকগনকে পুনঃনিশ্চিত করুন যে আপনার স্টাফরা কোম্পানীর জন্য তাদের পদবী থেকেও অনেক বেশী মূল্যবান।
সাংগঠনিক কাঠামো
সাংগঠনিক চার্ট এর সাথে বিস্তারিত বর্ণনা করা কোম্পানীর কাঠামোগত চিত্র তুলে ধরার একটি সহজ অথচ কার্যকরী পদ্ধতি। এটা প্রমাণ করবে যে, কোন কিছু আপনি সুযোগের অপেক্ষায় ফেলে রাখেননি, আপনার কোম্পানীতে কে কি করবে এবং কে সকল কাজকর্মের ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিসেবে কর্মরত থাকবেন সেটা আপনি সঠিকভবেই ঠিক করেছেন। কোন কিছুতেই ফাকফোকর থাকবেনা এবং কোনো কিছুই তিন বা চার বার করা হবেনা। এটা একজন সম্ভাব্য উদ্যোক্তা অথবা চাকুরীজীবির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন।
মালিকানা সংক্রান্ত তথ্য
এ অধ্যায়ে আইনি কাঠামোর সাথে সাথে আপনার ব্যবসায়ের উত্তরসূরী মালিকানার তথ্যও সংযুক্ত করা উচিৎ। আপনি কি আপনার ব্যবসা নিগমবদ্ধ/সমসংস্থাভুক্ত করিয়াছেন? যদি করে থাকেন, তবে এটা কি সি অথবা এস করপোরেশন? অথবা সম্ভবতো আপনি কারো সাথে অংশীদারি ব্যবসায় গঠন করেছেন। যদি তাই হয়, এটা কি সাধারন অথবা লিমিটেড অংশীদারি ব্যবসায়? অথবা হয়তো আপনিই এর একমাত্র সত্ত্বাধিকারী।
নিম্নোক্ত গুরুত্বপূর্ন মালিকানা সংক্রান্ত তথ্যগুলো আপনার ব্যবসায় পরিকল্পনার সাথে অর্ন্তুভুক্ত করা উচিৎঃ
- মালিকদের নাম
- শতকরা মালিকানার পরিমাণ
- কোম্পানীর সাথে সম্পৃক্ততার সীমারেখা
- মালিকানার ধরন (সাধারন স্টক, প্রিফারেড স্টক, সাধারন অংশীদার, সীমাবদ্ধ অংশীদার)
- অপরিশোধিত সমতুল্য ইক্যুইটি (অর্থাৎ, অপশনস, ওয়ারেন্টস, পরিবর্তনীয় ঋণ)
- সাধারন স্টক (অর্থাৎ অনুমোদিত অথবা জারিকৃত/ইস্যুকৃত)
ব্যবস্থাপনার প্রোফাইল
বিশেষজ্ঞগন একমত যে প্রতিষ্ঠিত একটি কোম্পানীর সফলতার অন্যতম একটি শক্তিশালী উপাদান হলো সক্ষমতা এবং ঐ কোম্পানীর মালিক অথবা ব্যবস্থাপনা দলের ট্রেক রেকর্ড বা কর্মপন্থা, সুতরাং আপনার পাঠকদের আপনার কোম্পানীর গুরুত্বপূর্ন ব্যক্তি এবং তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড সর্ম্পকে জানতে দিন। এবং এই গুরুত্বপূর্ন ব্যক্তিদের নিম্নলিখিত তথ্যসংবলিত জীবনবৃত্তান্ত আপনার পাঠকদের নিকট সরবরাহ করুনঃ
- নাম
- পদমর্যাদা (প্রাথমিক দায়িত্বসমূহসহ পদমর্যাদার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা অর্ন্তভুক্ত করুন)
- প্রাথমিক কর্তৃত্ব এবং দায়িত্বসমূহ
- শিক্ষাগত যোগ্যতা
- অনন্য অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতাসমূহ
- পূববর্তী চাকুরির বর্ণনা
- বিশেষ দক্ষতাসমূহ
- পূর্ব কর্মপন্থার ইতিবৃত্ত
- শিল্প স্বীকৃতি
- সামাজিক সম্পৃক্ততা
- কোম্পানীতে চাকুরির সময়কাল
- বেতন কাঠামো এবং স্তর (নিশ্চিত হয়ে নিন এগুলো যেন অবশ্যই খুব কম বা বেশি না হয়)
- নিশ্চিত হউন যে অর্জনগুলো পরিমাপ করা হয়েছে (যেমন- দশজন সদস্য বিশিষ্ট একটি বিক্রয় দল গঠন করা হয়েছে, পনের সদস্য বিশিষ্ট একটি বিভাগ গঠন করা হয়েছে, প্রথম ৬ মাসের মধ্যে ১৫% আয় বৃদ্ধি পেয়েছে, প্রত্যেক বছরে ২টি করে খুচরা বিক্রয়কেন্দ্র বেড়েছে, কাস্টমার সার্ভিসের উন্নয়ন হয়েছে এবং এতে কাস্টমার সংখ্যা ৬০% থেকে ৯০% হারে বেড়েছে)। আপনার আশেপাশের লোকজন কিভাবে আপনার নিজের দক্ষতার প্রশংসা করছে তাও তুলে ধরুন। আর যদি আপনি মাত্র শুরু করে থাকেন, তবে প্রত্যেকের অসাধারন অভিজ্ঞতা কিভাবে আপনার ব্যবসার সাফল্যের ক্ষেত্রে অবদান রাখবে তা তুলে ধরুন।
পরিচালক মন্ডলীদের যোগ্যতা
একটি অবৈতনিক উপদেষ্টামন্ডলীর প্রধান সুবিধা হলো এটা কোম্পানীর জন্য যে বিশেষজ্ঞ মতামত দিতে পারে তা আপনার কোম্পানী অন্য কোথা থেকে সরবরাহ করতে পারবেনা। একটি সুপরিচিত, সফল ব্যবসায়ের মালিকগন বা ব্যবস্থাপকগন এর তালিকা আপনার কোম্পানীর বিশ্বাসযোগ্যতা এবং ব্যবস্থাপনা দক্ষতার উপলদ্ধিকে বৃদ্ধি করতে সুদূর প্রসারী ফলাফল এনে দিতে পারে।
আপনার যদি পরিচালনা পর্ষদ থাকে, তবে আপনার ব্যবসায় পরিকল্পনার রুপরেখা উন্নয়নের সময় নিশ্চিতভাবে নিম্নোক্ত তথ্যসমূহ সংগ্রহ করে নিন।
- নামসমূহ
- পরিচালনা পর্ষদে অবস্থান
- কোম্পানীর সাথে সম্পৃক্ততার সীমারেখা
- ব্যাকগ্রাউন্ড/ইতিবৃত্ত
- কোম্পানীর সফলতার ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক এবং ভবিষতব্য অবদান
সেবা বা পন্য সমূহ
- আপনার ব্যবসায় পরিকল্পনার সাংগঠনিক এবং ব্যবস্থাপনা বিষয়ক অধ্যায়ের সমাপ্তির পর পরবর্তী ধাপ হলো বিদ্যমান ও সম্ভাব্য ক্রেতাদের প্রতি সুবিধাসমূহ গুরুত্বারোপ করে কোথায় আপনার পন্য অথবা সেবা’র বর্ণনা করবেন তা নির্ধারন করা। এক্ষেত্রে কেন আপনার পণ্যটি অভিষ্ট ক্রেতাদের চাহিদা পূরণ করবে তার উপর গুরুত্বারোপ করুন।
- আপনার পণ্য বা সেবা’র এই অধ্যায়ে যা অর্ন্তভুক্ত করতে হবে
- আপনার পণ্য বা সেবার বর্ণনা
- আপনার পণ্য বা সেবার সুনির্দিষ্ট সুবিধাসমূহ ক্রেতাদের চাহিদার আলোকে সংযুক্ত করুন। ক্রেতাদের চাহিদা পূরনের জন্য আপনার পণ্য বা সেবার সক্ষমতা, যেকোনো অতিরিক্ত সুবিধা এবং পণ্যের বর্তমান উন্নয়নের ধারা (যেমন- ধারনা, মূলরুপ) ইত্যাদি বিষয়গুলো আপনার বর্ণনা করা উচিৎ।
- আপনার পণ্যের জীবনচক্রের বা উৎপাদন প্রক্রিয়ার বিস্তারিত বর্ণনা
- আপনার পণ্যের উৎপাদন প্রক্রিয়া কোথায় হচ্ছে এর পাশাপাশি যেসব উপাদান এই উৎপাদন প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে এই তথ্যসমূহ নিশ্চিতভবে অর্ন্তভুক্ত করুন।
- সুনাম
- যদি আপনার বিদ্যমান, অমিমাংসিত অথবা কোনো প্রত্যাশিত কপিরাইট অথবা সত্ত্বাধিকার থেকে থাকে তাহলে তাদের একটি তালিকা তৈরি করুন। এছাড়াও পণ্যের যে কোনো একটি প্রধান দিক যা বাণিজ্যিক গোপণীয়তা হিসেবে স্বীকৃত তা প্রকাশ করুন। সবশেষে, বিদ্যমান আইন চুক্তি সমূহের সাথে যে কোনো তথ্য অর্ন্তভুক্ত করুন যেমন- গোপণীয়তা চুক্তি অথবা অপ্রতিদ্বন্দ্বিতা চুক্তি।
- গবেষনা এবং উন্নয়নমূলক কার্যাবলী (আর এন্ড ডি)
- কোনো গবেষণা ও উন্নয়নমূলক কার্যাদি যাতে আপনি অর্ন্তভুক্ত আছেন কিংবা ভবিষৎে অর্ন্তভুক্ত থাকার পরিকল্পনা করছেন তা আলোকপাত করুন। ভবিষৎ “আর এন্ড ডি” কার্যাবলী থেকে কতটুকু ফলাফল আপনি আশা করেন? শুধুমাত্র আপনার নিজের ব্যবসার “আর এন্ড ডি” সামর্থ্য নিয়েই বিশ্লেষন নয়, আপনার শিল্পের অন্যান্য সবার “আর এন্ড ডি” সামর্থ্য বিশ্লেষনও নিশ্চিত করুন।
- আপনার বাজার বিশ্লেষন
- একটি সফল ব্যবসায় পরিচালনা করার জন্য আপনাকে আপনার ক্রেতা, প্রতিযোগী এবং শিল্প সর্ম্পকে জানতে হবে। বাজার গবেষনা হচ্ছে এমন একটি পদ্ধতি যা আপনাকে বাজারে কোন পণ্য বা সেবাগুলো চাহিদাপূর্ণ এবং কিভাবে পণ্য বা সেবাকে প্রতিযোগিতামূলক করা যায় তা বিশ্লেষন করতে সাহায্য করে। এছাড়াও বাজার গবেষনা আপনাকে মূল্যবান অর্ন্তদৃষ্টি সরবরাহ করে সাহায্য করতে পারেঃ
- ব্যবসায়ের ঝুকি কমাতে
- আপনার শিল্পের চলমান এবং আসন্ন সমস্যাসমূহ চিহ্নিত করতে
- বিক্রয় সুযোগগুলো চিহ্নিত করতে
কিভাবে বাজার গবেষনা পরিচালনা করবেন
আপনার ব্যবসায় শুরু করার পূর্বে নিন্মোক্ত পদক্ষেপগুলোর মাধ্যমে বাজার গবেষণার মৌলিক বিষয়গুলো বুঝুন।
১. বাজার এবং শিল্পের সরকারী উৎসের তথ্য চিহ্নিত করা
সরকার ব্যবসা, শিল্প এবং অর্থনৈতিক অবস্থা সর্ম্পকে একটি তথ্যভান্ডার সরবরাহ করে থাকে যা বাজার গবেষণায় সহায়ক হতে পারে। এই উৎসগুলো আপনাকে ক্রেতা এবং প্রতিযোগীদের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য সরবরাহ করেঃ
আর্থিক সূচক
চাকরির পরিসংখ্যান
আয় এবং উপার্জন
২. বিশ্লেষনের অতিরিক্ত উৎস খুজে বের করা
বাণিজ্যিক দল, ব্যবসায়িক ম্যাগাজিন, শিক্ষা প্রথিষ্ঠান এবং অন্যান্য তৃতীয় পক্ষসমূহ ব্যবসায়িক গতিধার সর্ম্পকে তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষন এবং গবেষণা করে থাকে। আপনার অবস্থান এবং শিল্প সর্ম্পকে তথ্য অনুসন্ধানের জন্য ইন্টারনেট এবং তথ্যপুঞ্জ ব্যবহার করুন।
৩. আন্তজার্তিক বাজারকে বুঝতে হবে
আজকের অর্থনীতি হচ্ছে একটি বৈশ্বিক বাজার। সুতরাং আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিসমূহ বোঝা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যা আপনার ব্যবসায়কে প্রভাবিত করবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন