ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে সাগর উত্তাল থাকায় পায়রা ও মোংলা সমুদ্র বন্দরকে সাত নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের জরুরি বার্তায় নতুন করে এই সংকেত দেখানোর কথা বলা হয়।
এই দুই বন্দরে আগে চার নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেওয়া হয়েছিল।
আজ চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরে আগের চার নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে ছয় নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, ফণীর আঘাত বেশ মারাত্মক হতে পারে। ফণীর প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসও হতে পারে। ডুবে যেতে পারে নিম্নাঞ্চল।
আজ সকাল পর্যন্তও বেশির ভাগ সমুদ্র বন্দরে চার নম্বর সতর্কতা সংকেত জারি ছিল। গতকাল বুধবার রাতে আবহাওয়া অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘ফণীর গতিপথ ঠিক থাকলে বা এটি আরও ঘনীভূত হলে কাল (আজ বৃহস্পতিবার) বিকেলে পাঁচ, ছয় বা সাত নম্বর বিপদ সংকেত দেওয়া হতে পারে।’
আজ সকালেই এ সংকেত দেওয়া হলো।
প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন, ফণী আগামী শনিবার সকালে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে।
তবে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামসুদ্দীন আহমেদ আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, ধীরে এগিয়ে আসলেও ফণী বেশ শক্তিশালী হয়ে গেছে। এখন তার গতি বেড়ে গেছে।
তাই ফণী ৪ মের আগেও বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ফণী বাংলাদেশে আছড়ে পড়ার আগে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ওডিশা রাজ্যের উপকূলে আঘাত করতে পারে। তাই কিছুটা দুর্বল অবস্থায় ফণী বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় এলাকার দিকে আসবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামসুদ্দীন আহমেদ বলেন, ফণীর শক্তি কেমন হবে, সেটি আজ দুপুরে বোঝা যাবে।
জলবায়ু বিশেষজ্ঞ আইনুন নিশাত বলেন, ফণী কখন আঘাত হানবে, তার ওপর ক্ষয়ক্ষতি নির্ভর করবে। আঘাত যদি জোয়ারের সময় হয়, তাহলে জলোচ্ছ্বাসের মাত্রা বেশ বেশি হবে।
ফণী আজ সকাল ছয়টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড়টি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর, উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার সব নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। স্বল্প সময়ের নোটিশে তারা যাতে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারে, সে জন্য সতর্ক করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি প্রায় এক সপ্তাহ আগে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়। নাম হয় তার ফণী।
{প্রথম আলো}
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন