Recent post

বৃহস্পতিবার, ৬ জুলাই, ২০১৭

সন্তান তার বাবা-মায়ের যা দেখে, তা-ই শেখে

প্রায়ই অনেককে আক্ষেপ করতে দেখা যায় যে, সচেতন অভিভাবক হয়েও সন্তানকে মনের মতো করে তৈরি করতে পারলাম না! 
আগে তাও কথা শুনত, কিন্তু এখন একেবারে বখে গেছে! 
কিন্তু সন্তানের এমন আচরণ নিয়ে চিন্তিত অভিভাবকদের অনেকেই জানেন না তাঁদের কিছু ভুলের কারণে এমন হতে পারে। 
এসব সমস্যা এড়াতে তাঁরা যা করতে পারেন, সে বিষয়ে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, সন্তান তার বাবা-মায়ের যা দেখে, তা-ই শেখে। সন্তানের সামনে নিজের ত্রুটিপূর্ণ অভ্যাস বা কাজ করা থেকে বিরত থাকুন। পরচর্চা তো করবেনই না। 
যেকোনো বিষয় নিয়ে সন্তানকে একই কথা বা উপদেশ বারবার দেওয়া হয় অনেক সময় একই কথা বারবার শুনলে শিশুদের মধ্যে ‘সত্তাহীনতার’ প্রবণতা দেখা দেয়। 
তখন নিজ থেকে কাজ করার তাড়না অনুভব করে না।

বাবা-মা হলে যা করবেন না

অতিরিক্ত নজরদারি

সন্তানের সব কাজে অত্যন্ত সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন কোনো কোনো অভিভাবক। মূলত সন্তানের জন্য অতিরিক্ত উদ্বেগ, কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিজস্ব হতাশা এবং নিয়ন্ত্রণ করার মনোভাব থেকে এ ধরনের আচরণ তাঁরা করে থাকেন। এতে শিশুর মধ্যে হীনম্মন্যতা তৈরি হতে থেকে। কয়েক বছর পর ওই শিশুর যখন পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে আচরণ করার কথা, তখনো সে অন্যের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল থাকে।

অতিরিক্ত চাপ
‘তুমি কিছু করতে পারবে না’ বা ‘সবাই পারে তুমি কেন পারো না’—এই কথাগুলো কমবেশি সবাইকেই শুনতে হয়েছে। সন্তানের মনের ভেতরের জেদকে আরেকটু উসকে দিতে এমন বলা হয়। এখানেও একটা ভুল হয়ে যায়। 
কোনো বাবা-মায়েরই উচিত না নিজের সন্তানকে অন্যের সন্তানের সঙ্গে তুলনা করা। আমরা ভুলে যাই সন্তান একজন আলাদা সত্তা, সে সবার মতো হবে না।
 সন্তানকে ভালো কিছু করার তাগিদ দিতে গিয়ে তাকে উল্টো দুর্বল করে দিই এবং এটাই একসময় কাল হয়ে দাঁড়ায়। সে হতাশ হয়ে পড়ে। 
মা-বাবার আচরণ সন্তানের মধ্যে সৃষ্টি করতে পারে দূরত্ব। নিজের প্রতি বিতৃষ্ণা থেকে আশ্রয় নিতে পারে নেশাজাতীয় দ্রব্যের। 
অনেক সময় একরোখা স্বভাবেরও হয়ে ওঠে এই শিশুরা।

অতিরিক্ত পরিশ্রম

ছেলেবেলা থেকে বেশি বেশি কাজ করলে, অনেক পড়ালেখা আর খেলাধুলা করলে সন্তান ভবিষ্যতে অনেক উদ্যমী হবে—এভাবে ভাবা ঠিক নয়। সব শিশুর ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য নয়। 
অনেক সময় সন্তানদের ব্যস্ত রাখতে গিয়ে তাদের দিয়ে অতিরিক্ত পরিশ্রম করিয়ে ফেলি, কঠিন ছকে বেঁধে ফেলি সন্তানের জীবন। শৈশবে পা দেওয়া বাচ্চারা পরবর্তী সময়ে ঝিমিয়ে পড়ে, কাজের প্রতি তীব্র অনীহা এবং একগুঁয়ে স্বভাবের হয়।
 সন্তানকে বুঝে তার সক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে ঠিক করুন তার পরিশ্রমের পাল্লা।

ব্যক্তিগত অভিমত চাপিয়ে দেওয়া

ব্যক্তিগত বিশ্বাস কিংবা অভিমত থেকে অপরকে পরিচালনা করা উচিত নয়। আমরা অনেকেই জীবনে অনেক ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি, নানা ধরনের অভিজ্ঞতা হয়েছে; তাই বলে সেই অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করে সেটাই ঠিক ধরে নেওয়া ঠিক না।
 যেমন, আপনি ছেলেবেলায় খুব ভোরে উঠে পড়তে বসলে আপনার পড়া খুব ভালো হতো; তাই বলে আপনার সন্তানেরও একইভাবে পড়া হবে, তা ধরে নেওয়া ঠিক নয়। 
আবার আপনি যদি খুব খুঁতখুঁতে স্বভাবের হন, কোনো কাজে অন্যকে বিশ্বাস করতে পারেন না।
 এটিও আপনার সন্তানের ওপর প্রভাব ফেলবে।
 এতে হয়তো আপনার সন্তান নিজের কাজ সম্পর্কে অসন্তুষ্ট থাকবে অথবা যেকোনো কাজ নিয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।

কোন মন্তব্য নেই:

Popular Posts