যদি আপনার জিহ্বার রঙ স্বাভাবিক থাকে তার অর্থ হলো আপনার শরীরে বিশেষ কোনো রোগ নেই। পরিপাকতন্ত্রও ঠিকমতো কাজ করছে। শরীর খারাপ হলে চিকিৎসকরা রোগীর জিহ্বা একবার হলেও দেখে থাকেন।
জিহ্বার রঙ ও আকার দেখে শারীরিক সমস্যার কথা জানার চেষ্টা করেন।
কারণ জিহ্বা প্রধানত আমাদের পরিপাকতন্ত্রের খবর জানায়।
কয়েক শতাব্দী পুরানো এই পন্থা আসলে চীনাদের চিকিৎসা পদ্ধতির অঙ্গ ছিল।
শরীরের কোনো স্থানে সমস্যা আছে কিনা তা জানতে পারেন নিজের জিহ্বা দেখেই।
(ক) জিহ্বায় পাতলা সাদা আবরণ থাকলে বুঝতে হবে হজমে কোনো সমস্যা নেই। পরিপাকতন্ত্র ঠিকমতো কাজ করছে।
(খ) মোটা সাদা আস্তরন : এটা শরীর খারাপের সংকেত।
এটা হলে বুঝবেন ভেতরে ভেতরে শরীর খারাপ হচ্ছে। শরীরের কোনো একটা অংশ ঠিকমতো কাজ করছে না।
(গ) উপরিভাগে লাল চাকা চাকা চামড়া উঠে যাওয়া : এর অর্থ শরীরে এনার্জি বলতে কিছুই অবশিষ্ট নেই। আবার কোনো এলার্জির কারণেও এমনটা হতে পারে।
(ঘ) জিহ্বা ফ্যাকাশে হলে বুঝতে হবে হজম ঠিকমতো হচ্ছে না।
ভেতরে ভেতরে ঠা- লেগে রয়েছে।
এর সঙ্গে যদি জিহ্বা বারবার শুকিয়ে যায় তাহলে রক্তস্বল্পতার লক্ষণ হতে পারে।
(ঙ) জিহ্বা উজ্জল লাল রঙ হলে বুঝবেন শরীরের কোথাও ইনফেকশন বা সংক্রমণ রয়েছে।
প্রথমে জিহ্বার ডগায় লাল হয়ে পুরো জিহ্বায় বিস্তৃতি লাভ করে।
(চ) জিহ্বার লাল রঙ : মশলাযুক্ত খাবার বেশি খেলে, প্রচুর ফ্যাট জাতীয় এবং এলকোহলের মাত্রা শরীরে বেশি হলে এমন রঙ হয়।
কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা থাকলেও জিহ্বার রঙ এমন হতে পারে।
(ছ) নীল রঙ : শরীরে অক্সিজেনের অভাব দেখা দিলে জিহ্বার রঙ পরিবর্তিত হয়ে নীল বর্ণ হতে পারে। ডাক্তারি ভাষায় যা সায়ানোসিস নামে পরিচিত।
রক্তে সমস্যা এবং হৃদযন্ত্রের সমস্যার মতো রোগ থাকতে পারে। ফুসফুসের জটিলতার কারণেও এমন ঘটনা ঘটতে পারে।
তবে অন্যান্য লক্ষণ এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া নিশ্চিতভাবে কোনো সিদ্ধান্তে আসা ঠিক নয়।
(জ) কালো রঙ : যদি কালো হঠাৎ কালো রঙ দেখেন তাহলে বুঝবেন এক সঙ্গে বিপুল পরিমাণ ব্যাকটেরিয়া জিহ্বায় জমা হয়েছে।
এছাড়া কিছু ওষুধের পাশর্^প্রতিক্রিয়ার কারণেও জিহ্বার রঙ কালো হতে পারে।
(ঝ) হলুদ রঙ : জিহ্বার রঙ হলুদ হলে বুঝতে হবে লিভারে বড় সমস্যা রয়েছে।
সম্ভবত জন্ডিস হলেও হয়ে যেতে পারে। আবার জ¦র হলেও জিহ্বার রঙ মাঝে মাঝে এমন হয়।
(ঞ) পার্পল রঙ : এর অর্থ শরীরে ভিটামিনের ভীষণ ঘাটতি রয়েছে।
মনে রাখতে হবে শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো জিহ্বা।
তবে আমরা জিহ্বার কোনো যত্ন নেই না।
প্রতিদিন জিহ্বা পরিষ্কার রাখলে অনেক রোগের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
দাঁত ব্রাশ করার সময় জিহ্বা ও মাড়ি পরিষ্কার করতে হবে।
তবে একটি কথা সবার মনে রাখতে হবে যে, জিহ্বা নিজে নিজে দেখতে পারেন ঠিকই কিন্তু জিহ্বা দেখে কোনো সিদ্ধান্তে না আসাই ভাল।
কারণ জিহ্বা পরীক্ষা করার কিছু নিয়ম রয়েছে যা কেবল অভিজ্ঞ মুখের ডাক্তারই করতে পারেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন