মাথা ব্যাথা, মাথা ঘোরানো, মাথা যন্ত্রণা ও মাথা ভার
মাথা শরীরের একটি গুরুত্বপুর্ন অঙ্গ, যা সমস্ত শরীরকে নিনিয়ন্ত্রণ করে। শরীরের প্রতিটি অঙ্গের নিয়ন্থনের জন্য মাথার ভেতরে একটি নিদিষ্ট স্থান আছে। মাথা ও ঘাড়ের ওপরের অংশে ব্যাথাকেই মাথা ব্যাথা বলা হয়। এই ব্যাথা চোখ কানের ওপরে ও মাথার পেছনে অনুভৃত হয়। মানুষের জীবনে মাথাব্যাথা হয়নি এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। সবচেয়ে বেশে ব্যথা শরীরের এ অংশেই হয়ে থাকে। মাথা ব্যাথা কত প্রকার ?
মাথা ব্যাথা, মাথা ঘোরানো, মাথা যন্ত্রণা ও মাথা ভার
মাথা ব্যাথা সাধারনত দু প্রকার।
১। প্রাথমিক মাথা ব্যথা।
২। অন্যান্য কারণে মাথা ব্যাথা ।
মস্তিস্কে নিউরালজিয়া, মুখ মন্ডলের অন্যান্য অঙ্গর অসুখের কারণে মাথা ব্যাথা।
প্রাথমিক মাথা ব্যাথায় অন্য কোনো অসুখের সংশ্লিষ্টতা থাকে না।
মাথা ব্যথার কারণ কী কী ?
প্রাথমিক মাথা ব্যাথার কারণ ঃ মাইগ্রেন , টেনশন মাথা ব্যাথা ও ক্লাস্টার মাথা ব্যাথা ।
অন্যান্য কারণ ঃ অন্যান্য অসুখের কারণে ও মাথা ব্যাথা হয়ে থাকে। যেমন মস্তিস্কে টিউমার, স্টোক , মেনিনজাইসিস, মস্তিস্কে সাবআরাকনয়েড রক্তক্ষরণ, ক্যাফিন বা অন্যান্য ব্যাথার ওষুধ বন্ধ করলে। তা ছাড়া মাথায় আঘাত পেলে, উচ্চ রক্তচাপ হলে, মাইনোসাইটিস, গ্লুকোমা, রক্তশূন্যতা, যে কোনো জ্বরে মাথা ব্যাথা হতে পারে ।
টেনশন মাথা ব্যাথা :
প্রাথমিক মাথা ব্যাথার প্রধান কারণই হয়েছে টেনশন। শতকরা ৯০ জন বয়স্কদের এ ব্যাথা হয়ে থাকে বা হবে। পুরুষদের চেয়ে বেশি হয় মহিলাদের।
মাইগ্রেন মাথা ব্যাথা ঃ
প্রাথমিক মাথা ব্যাথার দ্বিতীয় প্রধান কারণ। শতকরা ১২ জন এ ধরনের মাথা ব্যাথা ভোগ করে থাকেন। এ ধরনের ব্যাথা বড়দের মতো ছোটদেরও হয়ে থাকে। শতকরা ৬ জন পুরুষ ও ১৮ জন মেয়ে জীবনে এ ব্যাথা ভোগ করে থাকেন।
মাথা ধরা, যন্তনা, মাথা ঘোড়ান ইত্যাদি রোগ অনেকেরই হয়ে থাকে । এ সমস্ত রোগ সাধারনতঃ অন্য রোগের লক্ষণ মাত্থ। তাই প্রকৃত রোগের চিকিংসা করা দরকার।
দেশীয় গাছ গাছড়া দিয়ে চিকিংসা।
১। সর্দির কারণে মাথা ব্যথায় ২/৩ ফোঁটা পেঁয়াজের রসেরস নস্যি নিতে হয়।
২। সর্দি ছাড়া মাথা ব্যথায় ( বায়ুর জন্য ) ২/১ ফোঁটা রসুনের রসের নর্স্যি নিতে হয়।
৩। এরেন্ডার ৫/৬ গ্রাম কচি পাতা সিদ্ধ পানি ছেঁকে খেলে মাথা ভার ও ব্যথা কমে যায়।
৪। জ্বর সাথে হাতে পায়ে জ্বালা, মাথঅয় যন্তনা, গা Ñ বাম বা বমনেচ্ছা, তাহলে খোসা চড়ানো পটল উনুনে সেকে রস করে ২/৫ ফোঁটা মধু মিশিয়ে খাওয়াতে হয়।
৫। মাথার যন্তনা ও সর্দির কারনে যদি প্রায়ই নাক বন্দ হয়ে যায় বা সান্নিপাতিক দোষে গাল, গলা ও কানের গোড়ার ব্যথায় কষ্ট হয়, তাহলে নিসিন্দা পাতা শুকিয়ে বালিশের মত করে মাথায় দিতে হবে।
৬। খাটুনির কারনে যদি বিকালে প্রায়ই মাথা ধরে, তাহলে গোটা মসুর ডাল ২৫ গ্রাম, ১ লিটার পানিতে সিদ্ধ করে ১/৪ ভাগ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে, পানিটা কয়েকদিন খেতে হবে।
৭। রোদ বা আগনের কারণে যদি হঠাৎ জ্বর হয় সাথে মাথার যন্তণা, তাহলে কুলের ( বড়ই) কচি পাতা ও ডগা বেটে প্রলেপ দিলে উপশম হয়।
৮। মাথার যন্তণা যদি কফের কারণে হয় তাহলে বকুল ফুলের গুড়ো সাথে ১/৮ ভাগ ফিটকিরির গুড়ো মিশিয়ে নিতে হয়।
৯। দুর্বলতার কারণে যদি মাথা ঘোড়ে তাহলে ৫/৬ বছরের ছেঅট খেজুর গাছের মাথার কাছে ভিতর দিককার নরম শাকক Ñ আলুর মত অংশটি থেঁতো করে সেই রস ১ বা ১ ১/২ চা চাসচ খেতে হয়।
১০। চল্তে চল্তে মাথা ঘুড়ালে এবং কোন কিছুর ধারাবাহিকতা ভুলে গেলে গোক্ষুরের গুড়ো ৩ গ্রাম গরম দুধের সাথে দুবার খেতে হবে।
১১। কোন কারণ ছাড়া যে মাথঅ ধরা তার জন্য রক্তকাঞ্চন শিকড়ের ছাল ৫/৭ গ্রাম কুটে ৩/৪ কাপ পানিতে সিদ্ধ করে , ১ কাপ থাকতে নামিয়ে , ছেঁকে
সপ্তাহে ৩/৪ দিন খেতে হবে।
১২। জ্বরে বা জ্বরের আগে যদি যন্তণা হয় তাহলে দারুচিনির গুড়ো ১/৪ গ্রাম সকালে ও বিকালে খেতে হবে। খুব মিহি গুড়ো করে ২/১ বার নস্যি নিতে হনে।
১৩। লবঙ্গের গুড়ো ১/৪ গ্রাম দিনে ২/৩ বার গরম পানির সাথ খেলে মাথা ব্যথা ভঅল হয়।
১৪। ঠান্ডার কারণে যে মাথার ব্যথা তাতে কাচাঁ ঝিঙের রস ২/৩ ফোঁটা করে নাকে টেনে নিলে এবং সাথে ২ চা চামচ করে রস একটু গরম করে ৭/৮ চা চামচ পানিতে মিশিয়ে খেতে হয়।
১৫। নেশার মত কিছু খাওয়ার পর মাথঅ ঘুরালে বা বমি হলে পালং শাকের রস ৪/৫ চা চামচ অল্প গরম করে বা ৫০ গ্রাম শাক অলাপ সিদ্ধ করে পানিটা ফেলে দিয়ে আবার ৩/৪ কাপ পানিতে সিদ্ধ করে ১ কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে খাওয়াতে হয়।
১৬। ঠান্ডার জন্য মাথা ধরা হলে চাঁপা গাছের ছালের গুড়ো ৫০০ মি. গ্রাম সকএল ও বিকালে দুবার খাওয়াতে হবে।
১৭। বায়ু ও শেস্মার জন্য অনেক দিন ব্যথায় কষ্ট হলে , চাপা ফলের মিহি গুড়ো তিল তেলের সাথে মিশিয়ে আস্তে আস্তে কিছুদিন মালিশ করতে হবে।
১৮। সর্দির কারণে মাথা ব্যথা হলে, কালোজিরা পুটুলি করে শকতেক হগবে।
১৯। মহুয়া বীজের তেল মালেশ করলে ব্যথা কমে।
২০। সেগুন কাঠের গুড়ো , পানি দিয়ে বেটে কপালে লেপে দিতে হয়।
২১। নিমের তেল মাথঅয় দিলে ও নস্যি দিলে মাথা ব্যথঅ ভাল হয়।
আধাকপালের ব্যথায় ঃ
২২। শিরীষ শিকড়ের ছালের বা বীজের গুড়ো নস্যি নিতে হয়।
২৩। অপরাজিতার এক টুকরো শিকড় ও গাছ এক সাথে থেতো করে রসের নস্যি ২/৩ দিন নিতে হয়।
২৪। চাকুন্দের বীজ ২/৩ দিন ভিজিয়ে রাখা ভঅতের টক পানিতে বেটে কপালে লাগাতে হয়।
২৫। নারিকেলের পানিতে ১০/১২ দানা চিনি মিশিয়ে অল্প অল্প করে নাক দিয়ে টেনে নিতে হয়।
অ্যালোপ্যাথি চিকিংসা ঃ
অভিজ্ঞ ডাক্তারের মতামতে রোগের কারণ জেনে আসল রোগের চিকিংসা করাতে হবে। সাময়িক আরামের জন্য বিভিন্য রকমের ব্যাথা নাশক
যেমন, নাপা , প্যারাসিটামল ইত্যাদি দেয়া যেতে পারে ।
হোমিওপ্যাথিকক চিকিংসা ঃ
অভিজ্ঞ ডাক্তারের মতামতে অথবা লক্ষণ ও কারণ অনুযায়ী বেলাডোনা, ফেলিÑ কার্ব¦, এ্যাকোনাইট, নাক্স, ব্রাইয়োনিয়া, ন্যাট্রাম মিউর, লাইকো ইত্যাদি দেয়া যেতে পারে।
আনুষাঙ্গিক ব্যবস্থাদি ঃ
অতিরিক্ত পরিশ্রম, রোদে বেড়ানো, ঠান্ডা লাগান বন্ধ করতে হবে। দুঃশ্চিন্তাও কম করতে হবে। বেশি পানি খাওয়া ভাল।
গাছ গাছড়া দিয়ে চিকিংসা
লেখক ঃ মোহাম্মদক আবুল হাসান। উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
জসিম উদ্দিন চেীধুরী , উদ্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, বি. সি. এস. আই . আর গবেষনাগার , চট্টগ্রাম। পৃষ্টা ঃ ১২০, ১২১, ১২২।
মাথা ধরা ও শরি : পীড়া
১. লম্বা ধরনরে ১টা কাপড়রে টুকরো ভজিয়িে কপালদশে আব্ত করে রাখলে ধৗরে ধৗরে মাথা ধরা সরেে যায় ।
২. শশিরি কনায় রক্ত চন্দন ঘুষয়িা কপালে প্রলপে দলিে শরিঃপীড়া শান্তি হয় ।
৩. কুড় ও রক্ত চন্দন ঘষে প্রলপে দলিওে শরিঃপীড়া ভালো হয় ।
৪. অপরাজতিার মৃল অথবা বাকল কানে বধেে দলিে শরিঃপীড়া ভালো হয় ।
৫. সাজনিা গাছরে ছাল পানতিে ঘষে কপালে প্রলপে দলিে আশু মাথা ধরার ুপকার হবে ।
৬. মমিুলরে কুড়ি মাখনে মশিায়ে তার প্রলপে দলিে মাথা ধরা সরেে যায় ।
৭. কদুর তলে ব্যবহারে মাথা ধরা আঞমন করতে পারে না ।
৮. হরতিকীর মোরববা চাদরি পাতে জড়ায়ে জড়ায়ে প্রাতে ও শয়ন কালে সবেন করলে মাথা ঘোরা ভালাে হয় ।
৯. বরফ গলা পানি বা ঠান্ডা পানতিে মীেরি ভজিায়ে সবেন করলওে মাথা ধরা ঘোরা সরেে যায়।
১০. কদুর বীজ ও তরমুজ বীজরে শাস বটেে কাথ বরে করে সবেন করলে শরি বদেনা শান্তি হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন